ভাবনার বনসাই: এক-শো তিন

১. প্রাচীন অন্ধকার কুয়ো ফুঁড়েও
সেখানকার নবীন অধিবাসী
ব্যাংটা চারিদিকে জল ছিটিয়ে
হঠাৎ লাফিয়ে ওঠে!


২. আমার ছায়ায়-ঢাকা পথ,
তোমার আলোয়-ভরা রথ;
কেননা গন্তব্য আমার...
আরও একটু দূরে।


৩. একসময়, আকাশে ঝড়োমেঘ দেখলে
বাবার জন্য দুশ্চিন্তা হতো।
এখন আর হয় না;
বাবা অসুস্থ, সারাক্ষণ ঘরেই থাকেন।


৪. ভিখিরির বিছানা...
শক্ত কোথায়? নোংরাও তো নয়!
অমন হলে অত আরামে
পোকারা সেখানে হাসত কী করে!?


৫. ব্যাঙের দল, বেরিয়ে আসো!
অন্ধকারের রাজ্য দাপিয়ে বেড়াও
তারাদের দিকে চোখ রেখে।


৬. তোমাকে কেউই ভুল বোঝে না।
তোমাকে বোঝার সময়ই তো কারও নেই!
ভুল বোঝার ব্যাপারটা তখনই আসে,
যখন কেউ তোমাকে বুঝতে চায়।


৭. পাহাড়ের উপরে
পূর্ণচাঁদটা এখন হেসেই চলেছে...
ফুলচোরেদের দিকে তাকিয়ে।


৮. ঘরে একা আছি বলে
ডাকছি ভেবো না।
আমার বাগানের ফুলে ফুলে ওড়া
প্রজাপতিগুলি দেখতেই ডাকছি।


৯. প্রিয় ফড়িং!
আমার মৃত্যুর পর
আমার কবরের গায়ে গায়ে
ঠিক এভাবেই নাচবে তো?


১০. ছোট্ট শিশু পথ হারিয়ে
অন্ধকার পথে পথে
হোঁচট খায় ক্রমাগত
জোনাকি ধরতে চেয়ে...


১১. সাপ চলে যাবার পরও,
লোকে সেই ঘাসের ডগায়
জমে-থাকা নিষ্পাপ শিশিরের
ধারেকাছেও ঘেঁষে না।


১২. তাকে খুন করব ভেবে
হাতের ছুরিটা উঁচিয়ে ধরেও...
কী যেন ভেবে, দূরে ছুড়ে মেরে
নিজেকেই খুন করে ফেললাম।


১৩. ফড়িং, সামলে লাফাও!
আলোর ফাঁদে আটকে-পড়া
মুক্তোগুলির...শিশিরবেশী
এ ঘুমটা ভুলেও না ভাঙে যেন!


১৪. যখন চামড়া কুঁচকে,
শরীর ভেঙে এই অবয়ব বিবর্ণ হবে,
তখন সূর্যের আলোতেও, ক্যামেরার লেন্সে
এমন ঝকঝকে তারুণ্য ফুটবে কি আর?


১৫. ছোট্ট ছোট্ট বাক্য।
একটু একটু আশা।
মৃদু মৃদু কণ্ঠ।
দীর্ঘ দীর্ঘ স্বস্তি।


১৬. তারাদের আয়না হয়ে যখন
পুকুর হাসে, তখন
রাত বাড়ে, আর
পুকুরের গালে যেন টোল পড়ে!


১৭. তুমি দূরে চলে গেছ
যে গোধূলিতে,
তার পরের...প্রতি গোধূলিতেই
আকাশের গা বেয়ে দুঃখ নামে।


১৮. ওঠো! আলো এসেছে!
চলো, রাস্তায় নামি...
অন্ধকার হবার আগেই
আলো ছুঁয়ে দিই!


১৯. ব্যাটসম্যান সাঁই করে
ব্যাট চালিয়ে...বেয়াড়া হাওয়াকে
এফোঁড়-ওফোঁড় করে দিলেন!
সাথে উড়ল স্ট্যাম্প...বলের অভিমানে।


২০. এখন আমার একাকিত্ব...
খসে-পড়া কিছু তারার গায়ে
হেলান দিয়ে ঠায় বেঁচে আছে।