ভাবনার বনসাই: এক-শো চার

১. পুরনো শহর...চুপচাপ।
হাসনাহেনার ঘ্রাণ...হাওয়ায় হাওয়ায়।
সন্ধের ঘণ্টাধ্বনি...আজও বাঁচিয়ে রাখে।


২. হাতপাখা ফেরি করে বেড়াত
যে লোকটা,
সে আজ সন্ধ্যায়
ভ্যাপসা গরমে মারা গেছে।


৩. দুই মন্দিরের মধ্যকার
কথোপকথন,
ঘণ্টার ধনির মধ্য দিয়ে।
কী এক মধুর সন্ধে!


৪. জঙ্গলের গহিনে
কাঠুরিয়ার ভোঁতা কুঠার
গাছের শরীর বিদ্ধ করে না...
শুধুই যন্ত্রণা দেয়।


৫. ভোরের কুয়াশায়
গাছের দৃষ্টির অগোচরে
এক-একটা শুকনো পাতা
মড়মড় করে ভাঙে।


৬. সূর্যডোবার মুহূর্তের বৃষ্টিতে
ধুয়ে যায়...
পৃথিবীর সমস্ত পাপের রং।


৭. বন্ধু তো সে-ই,
যে মুখ খুললে
তোমার ভেতরের সমস্ত
কারুকার্য ও কদর্যতা বেরিয়ে যাবে।


৮. প্রজাপতিরা ঘুমিয়ে গেছে।
প্রিয় হাওয়া,
খুব ধীরে ধীরে নরম হাতে
ওদের আদর করো।


৯. ভিখিরিটার কী সৌভাগ্য!
আজ হতদরিদ্র বলেই
ধনী লোকটার মুখে মুখে
সে স্বর্গের টিকিট পেয়ে গেল!


১০. ঝরনার পাশে যে ফুল ফোটে
ঝরনার জল খেয়ে খেয়ে,
ঝরে পড়ার পর তাকেই আবার
ঝরনার জল খেয়ে নেয়।


১১. চলে যাচ্ছি...
কখনও সময় পেলে
আমার প্রতি করা অন্যায়গুলির
কথা ভেবে...কেঁদো।


১২. কণ্ঠেও নয়, চোখেও নয়,
অন্ধকার লেপটে থাকে
শুধুই...পথেঘাটে, রাস্তায় রাস্তায়।


১৩. কখনওবা, ফুলগুলি,
সুগন্ধ খুঁজতে
মৌমাছির পথের দিকে
তাকিয়ে থাকে...


১৪. ভয় দেখাতে এসো না।
যে পথে হাঁটতেও তোমার ভয় করে,
সে পথটাও...
আমার ভয়ে অস্থির হয়ে থাকে।


১৫. সন্ধে নামলে,
পাখিদের খুঁজে খুঁজে
রাস্তায় রাস্তায়...কাকতাড়ুয়ার
ছায়া ও শ্বাস, দুই-ই দীর্ঘ হয়।


১৬. সেই মেয়েটির জন্য
গোলাপ নিয়ে গিয়েছিলাম,
যার নাকে তুলো গুঁজে
তুমি চলে গিয়েছিলে।


১৭. রাতেও দু-একটা পাখি ডাকে;
শোনার কান লাগে।
পাপের শরীরেও কিছু পুণ্য থাকে;
দেখার চোখ লাগে।


১৮. এসো, সহজ বিশ্বাসে বাঁচি।
এসো, আমাদের দু-জনের
কণ্ঠ, চোখ, স্পর্শ...
বদলে না ফেলি।


১৯. তারাদের আলোয় আলোয়...
কী যে উজ্জ্বল রাত!
আর তুমি কিনা চাইছ আলো জ্বালতে!
এমন বোকাও মানুষ হয়!


২০. কেবল ঝড় এলেই বুঝি
জড়িয়ে ধরতে আমাকে খোঁজো?!
এ বুকে যা ঝড়...তা থামায় না যে,
সে একটু থাকুক নাহয় ঝড়ের মুখে!