লিপি ধূসরিত: দশ

১৩৬।
এত ভালো হয়েও পেলে নিয়তির কেমনতর দান!
ভালো যাকে বেসেছিলে, দিলে তার‌ই জন্য প্রাণ!




১৩৭।
বাসো সত্যিই যদি ভালো, মরার আগেই আমায় শান্তি দিয়ো তবে।
যদি শান্তি না দাও, আমি মরার পরে অশ্রুভেজা ফুল দিয়ে কী হবে?




১৩৮।
ভালো থাকার নেশায় থাকি দূরে,
আজ বিদেশে ভালোই আছি দেখি!
মা গেল আজ, হচ্ছে বাবারও সময়;
আমি দূরদেশে, জীবন তবে এ কি?




১৩৯।
কেন এভাবে মরার পরেই কাঁদো?
কেন তাহলে বাঁচতে চাইলে বাঁধো?




১৪০।
বেঁচে আছি দেখে ভাবছে যারা,
এই ব্যাটার ঘাড়েই বাঁচি!
মরে গেলে সেদিন ভাববে তারাই,
আজ কার ঘাড়টা যাচি?
এমন‌ই জীবন! দেখে না ওরা,
এ ঘাড়ে যে কতটা সয়!
দু-চোখ বুজে খুঁজে চলে শুধু,
এতে বোঝা কতটা বয়!




১৪১।
আমার মৃত্যুর পর খুঁজতে আমায় যেয়ো না কবরে।
আমি বেঁচে থাকতেই আমায় তুমি খুঁজে পাবে ঘরে।




১৪২।
মরার পরে ওঠে চিতায়, হায়, মরার আগেও বাঁচে চিতায়;
এমন জীবন যার, হে ঈশ্বর, দিয়ো না তারে নরকের দায়!




১৪৩।
কবরের গায়ে যে ক-ফোঁটা অশ্রু ফেলো,
তার পুরোটাই এক তোমার হৃদয়‌ই পেল!




১৪৪।
সেদিন কেঁদো না ভুলেও, যেদিন কবরে নামিয়ে দেবে;
প্রতিদিন খুঁড়ছ যে-কবর, আর কোথায়‌ই-বা তা নেবে?




১৪৫।
সত্যিই তুমি ভালোবাসো যাকে,
তাকে মরার আগে ফেলো না মেরে;
মরার বহু আগেই মরে যে-জন,
তেমন কাউকে কবর নেয় না কেড়ে!




১৪৬।
মরার আগেই মৃত্যুযন্ত্রণা অদৃষ্টে যার জোটে,
মরার পরে চিতায় তার শরীর‌ই কেবল ওঠে।




১৪৭।
অন্যের মুখে রাখতে হাসি,
সারাজীবন‌ই যাকে বাঁচতে হয় কেঁদে,
যেদিন থাকবে না সে, সেদিন
তোমাদের কপট অশ্রু রেখো বেঁধে।




১৪৮।
জীবনে যদি বুঝতে না পারো, কী করেছি তোমার জন্য,
মরণে কখনও স্মরে কৃতজ্ঞতায় কোরো না আমায় ধন্য।




১৪৯।
ভালোই হতো ঠিক এমন হলে,
বাবার পরেই মরত যদি ছেলে।
চোখের সামনে প্রিয়জনকে দেখত যদি বাঁচতে,
তবে অতটা কষ্ট কি আর হতো কার‌ও মরতে?




১৫০।
কে কাকে মনে রাখে আর গেলে কবরের তলে?
বেঁচে থাকতে মুখেই ওরকম হাজার কথা বলে!
Content Protection by DMCA.com