তোমায় ছুঁই না বহুকাল, তোমায় দেখি না অনন্ত বর্ষ। মহাবিশ্ব সৃষ্টির আদিলগ্নে তখনও মাটিরা ঘুমিয়ে অগ্নিগর্ভে, তুমি উত্তাল সাগর হয়ে শান্ত করলে হৃদয়ভূমি। তারপর কত উত্থান, পতন; কত জন্ম, মৃত্যু— ভুলেছ কি আমায় তুমি?
কতকাল দেখি না তোমায়! মাত্র বারোটা দিন…অথচ মনে হয়, জীবনের বারোআনাই ফুরিয়ে গেছে তোমায় ছাড়া, স্রোতস্বিনীর তীব্র উত্তাপে বাষ্প হয়ে হয়ে গেছে যেন বর্ষাধারা!
মনে পড়ে, আমি যখন বৃক্ষ ছিলাম—সবুজ রঙের বাকল-শাড়ি, শিকড়ে-শিকড়ে আমাদের অনুভব, কত কথা, কত আড়ি। খুব ইচ্ছে করে জানো, তোমায় তুমি…একটু তুমি করে ডাকতে, একটুখানি তোমার বুকে লুকিয়ে মুখ রাখতে।
তুমি তো মানো না… তোমারি জন্য নশ্বর এই পৃথিবীতে ফিরে আসি! যে বুকে আমার নেইকো ঠাঁই, সেই বুক ভালোবাসি।
তুমি ভুলে যাও সব, থাকে মনে যত স্মৃতি—ওরা যে বড়ো দামি! তোমার মনে সবই আছে, নেই শুধু মিথ্যে আমি!
যদি এমন হতো, তোমায় পেতাম অনন্তকাল, অন্তহীন জীবনের সবটা সময় জুড়ে… যদি এমন হতো, তুমি রাত, আমি অন্ধকারের অদেখা ভালোবাসা; তুমি জীবন, আমি জীবনের যত আশা!
কিন্ত হয় না তো…জীবন হাঁটে উলটো পথে, তুমি অন্য ঘর; তুমি আমার ভীষণ আপন, এক আমিই তোমার পর।
ইচ্ছে করে, তোমার গালে ভেজাই চোখের জল, তা-ও যদি বুঝতে তুমি, বুকের ব্যথা কী যে টলমল! ইচ্ছেকে তাই কবর দিলাম—তোমার সুখেই সুখ, পূর্ণ হোক তোমারি আকাশ, আর আমার শূন্য বুক।