রাজা ও সেনাপতি

তুমি মেরে ফেলার পরও এই যে বেঁচে আছি,
বলতে পারো কীভাবে?




উঁহু, এত তাড়াতাড়ি বলতে পারার কথা নয় তোমার।
অবশ্য কোনও তাড়া নেই আমার। তুমি ধীরেসুস্থেই উত্তর খোঁজো।
আমি তোমার মতন হুট করেই ধৈর্যহারা হয়ে যাই না। একতরফা ভালোবাসে যে, তার কাছে যুদ্ধে টিকে থাকার জন্য এক ধৈর্য বাদে আর কোনও অস্ত্র থাকে না।
তাই বলছি, আমার ধৈর্যের পরীক্ষা নিতে কখনও এসো না।




তুমি কি জানো, দাবা খেলায় কে রাজা?
খুব সহজ প্রশ্ন করে ফেললাম, তাই তো?
নাও, আবার জিজ্ঞেস করছি…
এবার প্রশ্নটা ভালো করে আবার পড়ো।
তুমি কি জানো, দাবা খেলায় আসলে রাজা কে?
উত্তর পাওনি তো? জানতাম, পাবে না।




দাবা খেলায় একমাত্র রাজা হচ্ছে ‘সেনাপতি’। অবাক হলে?
আরে, আশপাশের মাত্র চারটা ঘর যার দখলে থাকে, সে কখনও রাজা হতে পারে?
অথচ দ্যাখো, সেনাপতি কিন্তু যে-কোনও জায়গায়, যে-কোনোভাবে যেতে পারে।
তো সেই হিসেবে, রাজা হচ্ছেন সেনাপতি মশাই!




বাস্তবজীবনেও কিন্তু দুটো ভালোবাসার মানুষের মধ্যে ওই রাজা আর সেনাপতির ঘটনাই ঘটে।
এটা বোঝাতে হলে আমাকে আরেকটু গভীরে যেতে হয়। যাব?




শোনো তাহলে, এতক্ষণ তোমাকে মুদ্রার এপিঠ দেখালাম, এবার ওপিঠ দেখাই, কেমন?
রাজা কিন্তু ঠিকই জানেন, তাঁর ক্ষমতা মাত্রই চারঘর। তবুও এত ক্ষমতাধর সেনাপতিকে তিনি নিজের নিয়ন্ত্রণেই রাখেন। তিনি সেনাপতিকে কখনও বুঝতেই দেন না, সে-ও চাইলে রাজা হতে পারত!
যে কৌশলে রাজা বশ করে রাখেন সেনাপতিকে, এই কৌশল যিনি জানেন, তিনি বাদে পৃথিবীর আর কেউই রাজা হবার যোগ্যতা রাখেন না।




কনফিউজড করে দিলাম না তো আবার?
এবার বলো, আমাদের মধ্যে কে রাজা, আর কে সেনাপতি?