যে ছায়া আলোর অধিক/ ছয়

 
- রাতের সব তারাই আছে, দিনের আলোর গভীরে!...মনে থাকবে? কখন‌ও মন চাইলে খুঁজে নেবেন আমায়?
- খেয়েছ রাতে? না কি কেবল কাব্যই করে চলেছ?
- একটু পড়তেই পারতেন পুরোটা, যা লিখেছি। থাক, ব্যাপার না! আপনি কখনও আমার লেখা পড়েন না! হয় আপনি ব্যস্ত, কিংবা আপনি আমার বেলায় ব্যস্ত। পৃথিবীর সবচাইতে ব্যস্ত মানুষটির‌ও সময় থাকে তার জন্য, যাকে সে সময় দিতে চায়। সবাই সবাইকে সময় দেয় না, দেওয়া সম্ভব‌ও নয়। কাউকে সবচেয়ে দামি যে জিনিসটা আমরা দিতে পারি, তা হচ্ছে সময়। এই এক সময়ের অভাবে জীবনের কত কাজ খুব ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও করা যায় না। আমরা যখন কারও কাছ থেকে সময় চাই, তখন সবার আগে মাথায় আনতে হবে, সে আমায় তার সময়টা কেন দেবে? এমনকি সে যদি ওই মুহূর্তে ব্যস্ত নাও হয়, দরকার হলে সে রুমের সিলিংয়ের দিকে ঠায় তাকিয়ে থাকবে, তবুও আমায় কেন দেবে ২৭ সেকেন্ড‌ও? Who am I to deserve his time? অপরিচিত কারও কাছ থেকে সময় নিতে চাইলে বুদ্ধি করে নিতে হয়। সে বুদ্ধিটা আমি জানি না। সময় দেওয়া না দেওয়া নির্ভর করে তিনটি বিষয়ের উপর: সম্পর্ক, ইচ্ছে, সুযোগ। হয়তো আমাকে সময় দেবেন যে সময়ে, সে সময়ে করার মতো আপনার হাতে অন্য কাজ আছে--এমন কোন‌ও কাজ, যা আপনার করতে ভালো লাগে বা যা আপনার করা দরকার। তার পরও, যদি আমি এমন কোনও কারণ তৈরি করে ফেলতে পারতাম যাতে আপনি সব কিছুর পরও যে করেই হোক, আমার জন্য সময় বের করতেন, তেমন কিছুও তো আমি করতে পারছি না বা পারলেও করছি না। আমি আপনার ব্যস্ত চেহারাটাই ডিজার্ভ করি। খুবই স্বাভাবিক! আমি আপনাকে কোনও দিন আর কিছু লিখব না।
- দুইবার পড়েছি, ম্যাম!! অনেক রাগ ম্যামের! নক তো আমিই দিলাম, তাই না? শত ইগো ভেঙেচুরে কাউকে নকটা দিয়ে দেওয়ার মানে বোঝেন আপনি? হুহ্‌!!
- ‘শব্দ’ মুভির কথাটা পড়লেন না! আপনি কেন আমার লেখা পড়েন না? আমি আপনার মতো লিখতে পারি না বলে? আমার লেখায় কি একটুও জীবনবোধ নেই? আমি যা লিখি, সবই কি ফেলনা? জীবনে আর কিছু পাই না পাই কষ্ট তো পেয়েছি! তার কি কোনও দাম নেই? কষ্টের চাইতে ভালো শিক্ষক আর কে? কিছুই কি শিখিনি আমি এতগুলি ক্লান্ত-বছর পার করে?
- সত্যিই পড়েছি! সব পড়েছি। দুইবার!
- তা হলে আমাকে বলবেন, ওই টেক্সটটির কোথায় রাগ ছিল? লাইন মেনশন করে বলুন! যা বলি, সেটাই বলেন রাগ, প্রত্যাশা! এই দুই ধারণার বাইরে কি আমার কথা কিছুই প্রকাশ করে না? আবেগের সহজ প্রকাশ একটুও নেই ওখানে? আপনি কখনও ভালোবেসে আমার লাইনগুলো পড়েন না। আমি হয়তো কাব্য করে 'ভালোবাসি' বলতে জানি না, তাই বলে কি ভালোবাসিও না? আমার ঠোঁটে নয়, চোখে লেপটে থাকে ভালোবাসা। আপনি বোঝেন না কেন?
- তোমার ভুল ধারণা এসব। না পড়েই চলে যাওয়ার মতো টেক্সট তোমার কাছ থেকে এখনও আসেনি। আমি ধুলো মাড়িয়ে চলি, তবে রত্ন তো ঠিকই আঁকড়ে রাখি বুকের মধ্যে!
- ভুল নয়, আমার ধারণা ঠিক! বলুন দেখি, কোন লাইনগুলোতে রাগ ছিল!
- একটা ওয়েবসাইট বানালাম। মতামত দাও।
- সাইটের ছবিটা কি অ্যাপস দিয়ে করা? না কি হাতেআঁকা আর্ট?
- হাতেআঁকা। ২২ ঘণ্টা শ্রমের বিনিময়ে এক ছোট ভাই ভালোবেসে এঁকে দিয়েছে। সে ছবিতে কেবলই আমার অবয়ব আঁকেনি, সে আমার ভেতরটাকেই এঁকেছে। লোকে কীভাবে যে মানুষটাকে না বুঝেই স্রেফ চেহারা এঁকে ফেলে, আমার মাথায় আসে না। ভালো আঁকে যারা, তারা প্রথমেই অবজেক্টটাকে বোঝে, এর পর অবজেক্টের শরীর আঁকে। ওরকম না হলে অনেক ফাঁকি থেকে যায়।
- ছবিটা কি আপনার কাছে থাকে? না কি উনি রেখে দিয়েছেন?...একটু কথা বললে কী হয়…হুঁ? আপনাকে সবাই দেখেছে ক্যাম্পাসের! শুধু আমিই দেখিনি! দেখিনি বলেই কত যে তৃষ্ণা আটকে আছে চোখের ভেতর, যদি বুঝতেন!
- তোমাকে ছবিটা দেবো। তোমার ইমেইল আইডি বলো। ওটা আমার অনেক প্রিয়। প্রিয় কিছু তোমাকে দিই...
- ইমেল আইডি নেই! ফেসবুকটা অন্য একজন বান্ধবী খুলে দিয়েছিল। হা হা হা…হাসলাম কেন জিজ্ঞেস করলে বলব না! আমি জানতাম আপনার কোন জিনিসটি পছন্দের হতে পারে! সেজন্যই...থাক, বললাম না!
- ওটা আমার অনেক প্রিয়! সত্যি! দুই কারণে প্রিয়। এক, যে এঁকেছে, সে আমার প্রিয়। দুই, যা এঁকেছে, তা আমার প্রিয়।
- ছবিটা কি ঘরে আছে?
- কেমন লাগে ছবিটা? অনেক আগের কিন্তু। ছবিটার হার্ডকপি নাই, ইমেইলে আছে। আর্টিস্ট আমাকে হার্ডকপিটা দেয়নি, আর আমিও চাইনি। কখন‌ও কখনও প্রিয় কিছু নিজের কাছে রাখতে নেই। বরং এমন কারও কাছে রেখে দিতে হয়, যে ওটাকে খুব যত্নে রাখবে তা আমার প্রিয় বলেই। আমি আমার প্রিয় মানুষটিকে আমার প্রিয় কিছু যত্নে রাখার দায়ে বেঁধে ফেলতে ভালোবাসি।
- ছবিটা অনেক সুন্দর।…আমার কিছু ছবি দিই? এটা কেমন? মিথ্যে করে হলেও বলবেন…সু্ন্দর! আমার সব পছন্দের ছবি একসাথে পাঠিয়ে দিলাম। এখন বলুন…সুন্দর! আমি দেখতে সুন্দর নই? আমাকে ভালোবাসা যায় না? যাদের ভালোবাসা যায় না, আমি কি ওদের দলে? আচ্ছা, আপনি কি ওই দলের কাউকে চেনেন? যাকে কেউ কখনও ভালোবাসেনি, যাকে কেউ কখনও ভালোবাসবে না, এমন কারও সাথে আপনার দেখা হয়েছে?
- ভালোবাসি গো, ভালো থেকো! সত্যি সত্যি ছবিগুলি অনেক সুন্দর! সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো করে বলতে ইচ্ছে করছে: রৌদ্রে এসে দাঁড়িয়েছে রৌদ্রের প্রতিমা...! তোমাকে সত্যিই ভারি সুন্দর দেখাচ্ছে! এর চেয়ে বেশি কিছু বলা ঠিক নয়। এমন ছবি নিয়ে বেশি বললেই বরং কম হয়ে যায়।
- আপনার ওই লেখাটা…সং অব অ্যা রিভার…অনেক সুন্দর ছিল! এই কয়েক দিন রাগ করে আপনার প্রোফাইলে যাইনি! আজ গিয়ে দেখলাম। আর একটা কমেন্টও করলাম। ভীষণ তীব্র একটা ধাক্কা এসে লাগে বুকের মধ্যে…পড়ে শেষ করার পরপর! সমাজকে নিয়ে লেখা ওটা!
- কোন লেখা গো?
- ইংরেজিতে যেটা। খুবই সুন্দর!
- আচ্ছা। অনেক আগের লেখা ওটা, পুরনো ডায়রি হাতড়ে পেয়েছি। আহা, একসময় কী সুন্দর একটা মন নিয়ে বেঁচে ছিলাম! কী করছ? একা?
- আপনার লেখা পড়ছিলাম। একাই তো থাকি আমি! কারও সাথে মিশি না, তবে নিজের মনের মতো কাউকে পেলে মেশার চেষ্টা করি। যে কার‌ও সাথে মেশার চেয়ে একা থাকা অনেক অনেক ভালো। আর আমি তো একা থাকতেই পৃথিবীতে এসেছি!
- না মানে, আমি তো আছি তোমার পাশে...
- আমার মতো যত্ন নিয়ে আপনার লেখা সবাই পড়ে না। আপনার বেশিরভাগ পাঠকই ছাগল! প্রেমের কবিতার নিচেও কমেন্ট করে--আমি ইংরেজিতে দুর্বল, আমাকে ধরে একখান দুর্বলতা-বিরতিকরণ পিল খাওয়ায়ে দেন, স্যার! আপনার মৃত্যুর পূর্বমুহূর্তেও আপনার হাত ধরে বলবে, স্যার, মরার আগে চৌবাচ্চার অঙ্কগুলো করার কিছু শর্টকাট টেকনিক বলে যান, প্লিজ!...আর আপনি কিন্তু সত্যিই আমার পাশে আছেন! আপনি আমার ছোঁয়ার দূরত্বেও নেই, তবু আমি আপনাকে অনুভব করতে পারি। যে ছোঁয়ার দূরত্বে আছে, তাকে ছোঁয়াই যায় না। আর যে ছোঁয়ার দূরত্বে নেই, তাকে জাপটে ধরেও অনন্তকাল কাটিয়ে দেওয়া যায়। তোমায় ভালোবাসি শতরূপে, শতবার!
- ছোঁও তবে!
- ছুঁই তো! অনুভবে, কল্পনাতে! তুমি রবে নীরবে, হৃদয়ে মম।
- শক্ত করে ছোঁও! কাউকে অনেক শক্ত করে জড়িয়ে ধরলে বুকের ভেতর থেকে একটা একটা করে পাথর নেমে যায়, সংশয় কি দ্বিধা চলে যায়, এক ধরনের অসীম শক্তি এসে ভর করে যেন! নীরবে থেকে কাজ হবে না, ছোঁয়াছুঁয়ি চলুক!
- ডোন্ট লিভ মি! আর কতবার বলতে হবে?
- আছি তো, বুকের মধ্যে চেপে ধরো শক্ত করে!
- চলে যাবেন জেনেও ধরে আছি জোর করে। ঝগড়া হলেও আবার নক করি! আপনার প্রতিটি শব্দ বুকের মধ্যটা কীভাবে ওলট-পালট করে দেয়, সেটা বোঝাতে অপারগ আমি। আপনি রাগ করে কিছু বললেও আমার ভালো লাগে! আপনার উপেক্ষা, আপনার ক্রোধ, আপনার অপমান…সবই ভালো লাগে। কাছে টানতে ইচ্ছে করে, অপলক চোখে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করে। দেখুন না, আমি চলে যাইনি, কেন জানি থেকে গেছি!...তোমার বুকের মধ্যখানে মন যেখানে হৃদয় যেখানে…সেইখানে আমাকে রেখো আর কোথাও যাব না জীবনে! আমার বুকের হৃৎস্পন্দন শুনছেন কি? ওরা পাগলের মতো তুমি তুমি করছে! ওদের আজ কোনও ছুটি নেই, ক্লান্তি নেই। এই রাত্রির শেষ কি হবে কোনও দিন! আজকে যা হচ্ছে, সেটা বিশুদ্ধ ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ মাত্র! মুহূর্তের জন্য ভেঙেচুরে গেলাম। নিজের বলতে কিছুই আর রইল না! একটা মানুষের কাছে পুরো জল হয়ে গেলাম! পুরো পৃথিবী আমাকে জানে একরোখা গোঁয়ার ইল-টেম্পারড হিসেবে! আর সেই আমিই কিনা আপনার পায়ের কাছে পথের কুকুর হয়ে বসে আছি! যে মেয়েটা কারও একটি কথারও পরোয়া করে না, সে-ই কিনা আপনার বলা না-বলা প্রতিটি কথাকে ইষ্টমন্ত্রের মতো করে জপে চলেছি! আমি জানি, এখান থেকে আমি কিছুই পাব না। এতটা আশা বুকের মধ্যে বেঁধে না পাওয়ার যন্ত্রণা সহ্য করতে পারব তো? আপনার প্রতিটি কথা আমাকে অস্থির করে দেয়! অনন্তকাল ধরে অস্থির করেই রাখে! এর নাম ভালোবাসা নয়? এর চাইতে সত্য, সুন্দর, শুদ্ধ আছে কি কিছু?
- শুভ সকাল!
- How poignantly you can write! শুভ দুপুর!
- কোন লেখার কথা বলছ?
- সমাজের মানুষ, rules and regulations, impulsive instincts এসব নিয়ে যা লিখলেন। খেয়েছেন?
- লেখার নামটা বলো। খেয়েছি। তুমি খেয়েছ?
- Looking back at myself লেখাটা। হ্যাঁ, খেয়েছি। আপনি একজন সহজাত লেখক! আমার প্রিয় লেখক! আপনার জয় হোক! আপনার সোনার দোয়াত-কলম হোক। আর কাভার ফটোটা সুন্দর হয়েছে! Aesthetic beauty!
- শুভ রাত্রি!
- নতুন প্রোফাইল পিকচারে কেমন লাগছে আমাকে?
- ভীষণ সুন্দর লাগছে। কেমন আছ? শুভ সকাল! কোথায় এখন? কী করছ?
- পড়াতে যাব! যেতে ইচ্ছে করছে না! কী করব, বুঝতে পারছি না।
- যাও। জীবন যে ইচ্ছেমাফিক চলে না! আমরা পড়াতে যাই, আমরা পড়তে যাই। দুটো কাজই করার সময় শরীরে আলসেমি ভর করে, অথচ দুইয়ের মধ্যে কত পার্থক্য!
- কী যে করি! সত্যিই ইচ্ছে করছে না যেতে! যাব যাব প্ল্যান করছি আরও একঘণ্টা আগে থেকে! দ্বন্দ্বের মধ্যে আছি জীবনের সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে! গোটা জীবনটাই ‘To be or not to be, that is the question.’ হয়ে বসে আছে!
- Always that is the only question!
- কালকে থেকে শুধু ভেবেই যাচ্ছি, কী করব, কী করব না! একবার মনে হয়, এটা করি। পরক্ষণেই মনে হয়, এটা করলে যদি ওটা হয়, তখন? আচ্ছা, একটি প্রশ্ন করি?
ধরুন, আপনার সামনে আগুন, আপনি জানেন হাত দিলে পুড়ে যাবে, তবুও সেখানেই আপনি হাত দিয়ে বসে আছেন? হাতটা পুড়ছে চোখের সামনে, তবুও আপনি সেখান থেকে হাত সরাচ্ছেন না। আপনার মতো মানুষকে কী বলে? কাণ্ডজ্ঞানহীন, না কি বেকুব?
- এমন মানুষকে অসহায় মানুষ বলে। মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও মৃত্যুর দিকে হেঁটে চলছে যে, সে অসহায় নয় তো কী! সবাই ওকে দেখে বোকা, অথর্ব, ফালতু কত কী-ই তো বলে, শুধু সে-ই জানে, কতটা অসহায় হয়ে পড়লে মানুষ মৃত্যুকেও স্বেচ্ছায় আলিঙ্গন করতে চায়!
- সত্যিই ‘অসহায়’ই বলে! অন্য কোনও শব্দ এই মুহূর্তে আমার সাথে যায় না। এই অসহায়ত্ব কীভাবে কাটিয়ে ওঠা যায়? আমি এমন‌ই এক অসহায় অবস্থার মধ্যে নিজেকে আটকে রাখছি প্রতিদিনই! এর গভীরে তলিয়ে যাচ্ছি ক্রমশই। সেখান থেকে বের হতে পারছি না কিছুতেই!
- খুলে বলো। কী হচ্ছে তোমার সাথে?
- আপনি সময় পেলে নিচের প্রশ্নের উত্তরগুলো জানাবেন, প্লিজ!
ধরুন, আপনি কোনও জায়গায় মেনটালি ইনভলভড হয়ে যাচ্ছেন। ইগনোর করে হোক, বাজে ব্যবহার করে হোক, কিছুতেই সে মানুষটাকে অ্যাভয়েড করতে পারছেন না! কিন্তু আপনি জানেন, যতই আপনি এখানে অ্যাটাচড হয়ে পড়ছেন, ততই আপনি মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এখান থেকে দুঃখ বাদে আর কিছুই পাওয়ার নেই আপনার। ধরুন, যার জন্য এমনটা করছেন, সে আপনাকে বিশেষ কিছু ভাবছে না, অন্য পাঁচজনের মতোই নিচ্ছে। আপনার থাকা না থাকায় তার কোনও কিছুই এসে যায় না! কিন্তু তার চলে-যাওয়া আপনার পুরো জীবনটাকে অর্থশূন্য করে দেবে! যেখানে কষ্ট বা নিজের ক্ষতি ছাড়া পাওয়ার মতো আর কিছু নেই, সেখানে শুধু শুধু থেকে যাওয়ার কি কোনও মানে আছে?
- খুলে বলো।
- বলেছি। যা বলার বলেছি।
- বলছ না তো খুলে! বলো!
- যা লিখেছি, ওটা কী তা হলে?
- ওটা পড়েছি। ধোঁয়াশার মতো লাগছে! একাধিক মানুষের কথা মাথায় আসছে। বি স্পেসিফিক!
- আমি ওটারই উত্তর চাইছি। প্লিজ, বলুন। এখন বলতে না চাইলে পরে ভেবে বলুন! সময় নিন, তবু উত্তরটা দরকার। খামখেয়ালি করে উত্তর দেবেন না!
- এই ক্ষেত্রে আমার কিছু ব্যক্তিগত দর্শন আছে। এক কথায়, আমি এটাকে স্বাভাবিক ও সুন্দর মনে করি।
- এভাবে ধুঁকে ধুঁকে কষ্ট পাওয়া সুন্দর? বাস্তবতাটা বলুন! আমি সিদ্ধান্তে পৌঁছতে চাই! এই ‘To be or not to be’-এর মধ্যে থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে উঠেছি আমি। সত্যিই আর পারছি না!
- এটাই বাস্তবতা। এরকম হয়। আমারও হয়েছে। তুমি যাদের চিন, ওদের অনেকের জীবনেই এমন হয়েছে, খোঁজ নিলে জানতে পারবে। এটা সত্যিই অভিনব কিছু নয়। মানুষের মন এমনি করেই ভুল পথে চলে। এই চলাটা স্বাভাবিক।
- কী করা উচিত আমার? সেটা জানতে চাইছি! আমি কি একটা দিকনির্দেশনা পেতে পারি না, প্রিয়? ভালোবাসলে কি মৃত্যুই নিয়তি?
…সুন্দর না ছবিটা? ঠিক আমার মতন!
- সত্যিই অনেক সুন্দর! দেখলেই ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করে।
- খেয়েছেন? আপনার এই ছবিটা কেমন লাগে আপনার?
- খুব খুব খুব প্রিয় ছবি এটা।
- সত্যি তো? কেবলই অন্য দিকে তাকিয়ে থেকে ছবি তুলতে ভালো লাগে আপনার?
- হ্যাঁ।
- আমি যদি একটা গিফট পাঠাই, নিবেন?
- কীরকম?
- এই ধরুন, আপনার পছন্দের কিছু! আমি নিশ্চয়ই এমন কিছু পাঠাব না, যেটাতে আপনার সম্মান যায়! নেবেন না আমার উপহার? আমাকে এতদিনে এইটুক চিনলেন! এত প্রশ্ন কেন যে করেন! একটা পাখি অবশেষে মুক্তি পেল! কিন্তু হায়, ততদিনে সে উড়তে ভুলে গেছে। পাখিটা ছেড়ে চলে যাচ্ছে না, নিজ থেকেই আবারও খাঁচায় ঢুকে যেতে চাইছে! সে আজ আর কোথাও যাবে না, এখানেই থেকে যাবে। পাখিটার যাওয়ার আর কোনও জায়গা নেই। থাকলেও সেখানে যাবার কোনও ক্ষমতা পাখিটার নেই। পাখিটা উড়তে ভুলে গেছে, পাখিটা স্বেচ্ছায় বন্দি হয়ে থাকতে চাইছে। স্বাধীন হয়ে বাঁচার সামর্থ্য কিংবা ইচ্ছে, কোনওটাই আর নেই পাখিটার। কী কষ্ট! কী কষ্ট! After being separated from you, I will forget how to love. Don’t leave me! How would I forget you? Please suggest me…আমি জানি না, কোন মায়ায় আমি জড়িয়ে যাচ্ছি! কেন মাত্র ৭৫ দিনে একজন মানুষকে আমি এত ভালোবেসে ফেললাম! যাকে কোনও দিনই দেখলাম না, তাকেও এতটা মায়ায় কেন বাঁধলাম? ভার্চুয়াল জগতের কাউকে ভালোবাসা যায় না, এমন বলে কারা? ওরা একবার এসে নীরজাকে দেখে যাক! মানসিক ম্যাচুরিটি তো আঘাতের মধ্য থেকে আসে! আমি কি জীবনে আঘাত কম পেয়েছি? এতটা যন্ত্রণা ভোগ করে বড় হতে হয়েছে আর কোন মেয়েটাকে? তবুও কেন আমি এমন একটা ভুল করে বসলাম? আচ্ছা, এই বয়সে এসেও কি এমন একটা ধাক্কা খেয়ে উঠে দাঁড়ানো যায়?
আপনি কখনও আমার জন্য দুইএকটা শব্দ ছাড়া আর কিছুই লিখেন না! তার মানে কি আমি ধরে নেব, আপনি আমার লেখা আসলে পড়েনই না? না কি আমাকে অ্যাভয়েড করছেন? হয়তো এটাই আপনার সাথে যায়, এটাই আপনার ক্ষেত্রে স্বাভাবিক। কিন্তু আপনার এমন নিঃস্পৃহতা আমাকে যন্ত্রণা দেয়! আমি আপনার মতো কষ্ট গিলে বাঁচতে পারিনি এখনও! অনেকের দেওয়া পাহাড়সমান কষ্ট আমাকে স্পর্শও করতে পারে না, অথচ আপনার দেওয়া একটু উপেক্ষাও আমাকে একেবারে মেরে ফেলে, তছনছ করে দেয়! আমি আপনাকে ভুলে যাওয়ার জন্য আপনার সাথে দুর্ব্যবহার করেছি, আপনাকে সব জায়গা থেকে ব্লক করেছি, আনফ্রেন্ড করেছি! কিন্তু পারিনি! যাকে হৃদয়ে এত শক্ত আসন পেতে রেখে দিয়েছি খুব আদরে, তাকে সামান্য মুঠোফোনের সব জায়গা থেকে বিদায় করে দিলেই-বা কী! এটা কি আমার ফেসবুকের নষ্টামি? না কি এটা অবেলায় আসা ভালোবাসা? কোনটা? নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ আমার এত কম! আমি এমন কেন!
আর ওদিকে আপনি আমাকে আর পাঁচজনের মতোই ভাবেন, আমার জন্য আপনার মধ্যে কিছুই নেই! আমার মেসেজটাও আপনি সিন করে দেখেন না! আপনাকে ভগবান কেন পাঠাল আবার? আমাকে আর একবার কষ্ট দেবার জন্য? কী অপরাধ করেছি আমি? কেন আমাকেই বারবার ভুল মানুষের প্রেমেই পড়তে হবে? ভালোবাসার দহন আমাকেই কেন দগ্ধ করে যাচ্ছে এমনি করে? ভালোবাসা হয় দুইপক্ষের ভালোবাসাতে! একপক্ষের ভালোবাসাতে যেটা হয়, সেটা হলো--বিরক্তি! আমি আপনাকে বিরক্ত করছি, সেটাও যদি মনে হয়, তবে সরাসরি বলুন, তুমি আমায় এভাবে বিরক্ত কোরো না! আমি চলে যাই! আমি জানি ওটা, তবুও আপনার কাছ থেকেই শুনতে চাই। অবশ্য আপনি অনেকবারই বলেছেন, আমি আপনার মানসিক শান্তি ব্যাহত করি! নিজের হাতে একবার লিখে পাঠান, তুমি আমায় বিরক্ত করবে না তো এভাবে! আমি সত্যিই চলে যাব! দুইটা লাইনই তো…লিখে পাঠান না! আপনি যখন দেখছেন, অপরপক্ষের মানুষটা আপনাকে ভালোবেসে ভুল করছে, তখন আপনি তার জন্য হলেও দুইটা কথা লিখে তাকে দূরে সরিয়ে দিন একেবারে! এটা তো অনেক সহজ কাজ! অত কথা লিখেন ফেসবুকে, আর এই অভাগীর জন্য দুটো লাইন লিখতে পারবেন না? আমি জীবনে কিছুই পাইনি, আজ আপনার কাছ থেকে একটুকরো ব্যক্ত-অবহেলা চাইছি। দেবেন না আমায় এইটুকুও? হাজার হাজার মানুষকে স্টেজে দাঁড়িয়ে স্বপ্ন দেখাতে পারেন, আর একটা বিরক্তিকর মানসিক কষ্ট-দেওয়া মানুষকে এই সহজ কথাটা বলে দূরে সরিয়ে দিতে পারেন না?
আপনি চুপ থাকবেন না, প্লিজ! কথা বলুন! আমার পৃথিবীতে আমি আপনাকে দেখতে চাই না আর! আমি ক্লান্ত হয়ে গেছি। আমি হার মানছি। আমি হাতজোড় করে অনুরোধ করছি। এই ৭৫ দিনে আমি ৭৫ ঘণ্টাও ঠিকমতো ঘুমাইনি! আমি আমার চাকরির বইটা মেলেও দেখি না একবার! বেঁচে থাকতে হলে আমার একটা চাকরির খুব দরকার। আমাদের মতো মানুষের ছোটখাট হলেও একটা চাকরি লাগে। আমাকে তাও পেতে দেবেন না আপনি? আপনার জন্য আমার পৃথিবীটা ওলটপালট হয়ে যাচ্ছে! মনে হচ্ছে, আমারে দুদণ্ড শান্তি দিয়েছিল নাটোরের বনলতা সেন! আপনি আমার জীবনের বনলতা সেন হয়ে কেন এলেন? কেন আমার জীবনে এমন মানুষই আসে, যে আমার জীবনে থেকে যেতে পারবে না, যার হাত ধরে আমি বাকিটা জীবন হাঁটতে পারব না? আপনি একটা ছোট্ট রিপ্লাই করলেও আমি হো হো করে হেসে উঠি! সারাদিনই কাটিয়ে দিতে পারি আপনার সেই ছোট্ট রিপ্লাইয়ের দিকে তাকিয়ে থেকে। ভালো থাকতে আমার আর কিছু লাগে না, আপনার কাছ থেকে আসা দুটো কথাও আমার কাছে অমূল্য রত্নের মতো! কিন্তু আপনি আমাকে একবিন্দুও মূল্য দিলেন না! আপনি আমার জীবনে ‘মেমোরিজ ইন মার্চ’-এর মতো আমার ‘মেমোরিজ ইন নভেম্বর’ হয়ে থাকবেন!
আমি দূর থেকে আপনার পা জড়িয়ে ধরে বলছি, সত্যি আমি আপনাকে ভালোবেসে ফেলেছি! আমি আপনার পায়ে লুটিয়ে পড়ে আপনার চোখের দিকে তাকিয়ে বলছি, সত্যি আমি আপনাকে ভালোবাসি। মানুষের চোখের জল মিথ্যে বলে না। আমাকে ফিরিয়ে দেবেন না আপনি! আপনার সাথে থাকতে চাইব না, কোনও অধিকার চাইব না, কোনও দাবি নিয়ে সামনে গিয়ে দাঁড়াব না…তবু আমায় তাড়িয়ে দেবেন না! আপনি প্লিজ আমাকে অপমান করুন, এতটাই অপমান করুন (ঠিক আগের মতন) যেন আমি আপনার নামটাও ভুলে যাই! ভালোবাসতে না পারেন, এই বেয়াড়া মেয়েটার গালে কষে দুইটা চড় বসিয়ে দিতে পারবেন না? কাছে টানতে না পারেন, দূরে ঠেলে দিতে পারবেন না? জায়গা দিতে না পারেন, ছুড়ে ফেলে দিতে পারবেন না?
এইটুক করুন আমার জন্য প্লিজ প্লিজ, প্লিজ প্লিজ, প্লিজ প্লিজ…। এই ‘To be or not to be’-এর মধ্যে আমি আর থাকব না! আমি এপথেও হাঁটতে পারছি না, ওপথেও যেতে পারছি না। অনেক হয়েছে! এনাফ ইজ এনাফ! আর নাহ্!
আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমি আর ফেসবুক চালাব না! একবার আমি খুউব খুউব কষ্ট পেয়েছি! আপনি জানেন, আমি ৪০তম বিসিএস-এ বসতে পারিনি শুধু এইজন্য! আমার সব ক্লাসমেট জীবনের প্রথম বিসিএস-এ অংশগ্রহণ করেছে, আর আমি দরজা বন্ধ করে পাগলের মতো কেঁদেছি, রাস্তার মাঝখানে গিয়ে বাসের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছি! আশ্চর্যের বিষয়, কখনও গাড়িচাপা পড়িনি। কেন, আমি জানি না। আমি মরে গেলে আমার জন্য কাঁদার কেউ নেই তো, তাই ঈশ্বরও আমাকে মরতে দিতে চান না। আপনি আমাকে যেমন ভাবেন, মানে আমি ইনহিউম্যান, স্টাবর্ন ইত্যাদি, আমি সত্যিই ওরকম কিছুই নই! আমি নিজের ক্ষতি নিজেই করা চরম সেনসিটিভ একজন মানুষ! আমার সুন্দর চোখের (সবাই সুন্দর বলে) নিচে কালোদাগ আছে শুধু সারারাত কান্না করার কারণে! আমার জীবনটা কেটে যাচ্ছে কাঁদতে কাঁদতেই।
আমি পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতাম আমার বাবাকে! বাবাকে কোনও দিন সেটা বলার সুযোগ হয়নি! সেই বাবার নামে শপথ করে বলছি, আমি কোন‌ও কিছু চিন্তাভাবনা না করেই আপনাকে ভালোবেসে ফেলেছি! খুউব...কিন্তু আমি বুঝতে পারছি, এখান থেকে আমার বের হওয়া দরকার! এখান থেকে বের হতে না পারলে আমার সব কিছু শেষ হয়ে যাবে। আমি একেবারে বরবাদ হয়ে যাব!
আমি কাকে ভালোবাসলাম? এমন একজনকে যে আমার ধরা-ছোঁয়ার বাইরে, যে আমার লেখাটাও ঠিকমতো পড়ে দেখে না, যে আমার জীবনে স্রেফ টিভিতে-দেখা এক সেলিব্রেটির মতো? আমি ভুলব, এবং ভুলতে চাই...চাই...আপনাকে! আপনি আমাকে বরং অপমানই করুন, প্লিজ! প্লিজ! অনেক বেশি অপমান করুন! না হলে বলুন, এই বেয়াদব, তুই কেন আমাকে বিরক্ত করছিস! তোর লজ্জা নেই? তুই কি রাস্তার মেয়ে? তুই এখান থেকে দূর হ!...প্লিজ, বলুন না এমনি করে! আমার ভালোর জন্য আমাকে আপনার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিন! আপনার জীবনে একজন মানুষ না থাকলে আপনার কিংবা পৃথিবীর কোনও ক্ষতিই হবে না! ‘আপনার’ শব্দটা কেন যে লিখলাম…আপনার তো কিছুই হবে না! হয়তো ভাবতে ইচ্ছে করে আমি চলে গেলে আপনার একটু হলেও খারাপ লাগবে, আপনি আমাকে মিস করবেন, আপনার কিছু হলেও এসে যাবে…তাই লিখে ফেলেছি।
- শুভ সকাল! এতটা অস্থির হয়ে আছ কেন? তুমি আমায় ভালোবাস, মানুষখুন তো আর করোনি।
- এত কথার রিপ্লাইয়ে মাত্র এতটুকই কথা? আচ্ছা, এবার আমাকেই চিন্তা করতে হবে!
- অনেক কথা লিখলেই অনেক ভালোবাসা হয়? এই থিওরি কোথায় পেয়েছ?
- ভালো আমি বাসি না…এই তো? ভালোবাসা মাপতে এত নিক্তি নিয়ে বসার কোনও ইচ্ছে আমার নেই! আমাকে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছতে হবে! এবং সেটা করতে হবে খুব দ্রুত! আমাকে ব্লক করে দিন। এক্ষুনি! আচ্ছা, আমি তো একটা জিনিসই বুঝি না, আমাকে ব্লক করে দিতে কী প্রবলেম আপনার! একসময় তো খুব ব্লক করতেন লোকজনকে। উঠতে বসতে ব্লক করতেন, কত মানুষ বসবাস করত আপনার ব্লকলিস্টে আর ওরা দলবেঁধে আপনাকে ঘৃণা করত! আপনি নিজেই তো একবার বলেছিলেন, আপনার ব্লকলিস্টে অন্তত ২৫ হাজার মানুষ আছেন! আমি কি আপনার ব্লকেরও অযোগ্য? ফেসবুকে ছোটবেলায় ব্লক দিতেন বলে বড়বেলায় তা আর দেওয়া যাবে না, তা তো না!
আপনি কি শুনছেন আমার কথা? I want to get separated from your name, fame everything. You don’t listen to the agony of a wounded heart. You are a selfish man! If you had listened to the untold pain, you would have felt me, you would have realized the intrinsic meaning of the line--Memories in November! I want to forget you. Help me forget you. পা ধরি আপনার আমি! Block me! Start hurting me with your forceful words!
- ফোন ধরছ না কেন?
- ইচ্ছে নেই…আর ধরবও না। You will ever be remembered as Memories in November! How would I forget you? No genuine lover can ever do it. I won’t forget you, believe me.
- ফোন ধরছ না কেন?
- Block me!…Simply block me!
- আবার শুরু হয়েছে! তোমার কী হয় মাঝেমাঝে?
- আমি এরকমই! আমি খারাপ। আমি এক উন্মাদিনী…চিলেকোঠার উন্মাদিনী! ব্লক মি! আপনি আমাকে ফোন করছেন কেন? আমাকে ফোন করবেন না। ব্লক করতে কী সমস্যা? এখনই আপনি আমাকে ব্লক করবেন! রাইট নাউ! আমার ভালো কিছু পেয়েছেন এই তিনমাসে? পাননি তো! তা হলে আমাকে যেতে দিতে চাইছেন না কেন? আমার সব খারাপ খারাপ আর খারাপ! যা বলার, যা অপমান করার…লিখে পাঠান। আপনার মনের তীব্রতম ক্রোধ আমার উপর বর্ষণ করুন! ফোন করে সুন্দর করে অপমান করলে কষ্ট হয়! আমি ফোন ধরব না, যা বলার এখানেই লিখে পাঠান। আমিও যে মানুষ! আমারও কষ্ট হয়, বুকফেটে কান্না আসে!
- Facebook blocking! Does it matter at all? As I’ve told you many times, it’s just a feature of a website. It signifies nothing to me.
- আমার কাছে অনেক কিছু! আমাকে ব্লক করলে আমি আপনাকে আর দেখতে পারব না। ব্লক মি! আবারও পা ধরে বললাম!
- হা হা হা! এই ফেসবুক জিনিসটা এত বড় কেন হয়ে উঠেছে তোমার জীবনে?
- কারণ আমি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ধাক্কা এখান থেকে পেয়েছি, আর দ্বিতীয়টা পেতে যাচ্ছি নিজের ইচ্ছেতে! হাসবেন না! আজকেই ব্লক করবেন! প্লিজ, এরকম স্যাডিস্টিক প্লেজার পাওয়া বন্ধ করুন! I am serious! মানুষের আবেগ নিয়ে হাসাহাসি করার কোনও অধিকার আপনার নেই।
- একটা পরামর্শ দিই। তোমার অনুভূতি ও নিয়ন্ত্রণকে ফেসবুককেন্দ্রিক করে ফেলো না।
- আপনি তো আমাকে নিয়ে সেটাই ভাবেন! তাই আমার কোনও কথা পড়েন‌ই না, অনুভব করা দূরে থাক! ভাবেন, কী আর পড়ব এসব! আমার অনুভূতি ফেসবুককেন্দ্রিক হলে আমি অনেক ছেলের সাথে প্রেম করতে পারতাম! আপনাকে আমি কেবল ফেসবুকেই সীমাবদ্ধ করে রাখলে আপনার জন্য এমন তীব্র অনুভূতি জিইয়ে রাখতাম না! এত অপমানিত হবার পরও আপনাকে এই গাদা গাদা টেক্সট পাঠাতাম না!
- তোমার কী হয় মাঝেমাঝে?
- আর আপনি আমাকে ফোন দিয়েছিলেন কেন? মিষ্টি ভাষায় অপমান করার জন্য! আমার সাথে ভালো কথা বলতে তো আপনার খুউব কষ্ট! সব সময় একই কথা--আমি মানসিক কষ্ট দেই, আমি ব্যবহার খারাপ করি, আমি বেয়াদব, আমি অমানবিক…আরও কত কী! এই কথা কয়েকটি ছাড়া আমার সম্পর্কে বলার মতো কিছু আছে আপনার? নাই!
- আমি তোমার প্রতিটি কথাই পড়ি। Please be out of only what you think.
- আপনি আমাকে ফোন করছেন কেন? অপমান যা করার লিখে করুন! ওরকমভাবে মানুষকে ফোন করে অপমান করবেন না! আমারও কষ্ট হয়! আমিও মানুষ! আর কতবার বলব? পা ধরি আপনার, ব্লক দিয়ে দিন আমাকে! কাজটা আমি করতে পারছি না বলেই এতবার করে আপনাকে বলছি! আপনি আমায় ব্লক করে দিলে আমি অন্তত নিজেকে বোঝাতে পারব, মানুষটার মনের মধ্যে আমার জন্য বিন্দুমাত্রও অনুভূতি কাজ করে না বলেই তিনি আমাকে ব্লক করে দিয়েছেন! কাকে ভেবে ভেবে এতটা অস্থির হয়ে থাকি আমি? এমন কাউকে যিনি আমার অস্তিত্ব সহ্য করতে পারেন না বলে আমাকে ব্লক করে রেখেছেন? আমি যেমন বন্ধ ঘরে আগে থাকতাম, তেমন আবার থাকব! আমাকে বদ্ধঘরে বন্দি থাকতে দিন, প্লিজ! এই মুক্ত আলো-হাওয়ায় আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে। কেউ কি আপনার পা ধরে এর আগে কখনও বলেছে এমন করে? বলেনি! আমি পা ধরে বললাম--ব্লক মি!
কেন বারবার ফোন করেই যাচ্ছেন? আমার কষ্টটা কেন বাড়াচ্ছেন? এতে কী লাভ হচ্ছে আপনার? প্লিজ, আমার কষ্টটা বুঝুন! আপনিই তো বলেন, যে আপনাকে ছাড়া শান্তিতে নিঃশ্বাস নেয়, আপনি কেন তার জন্য দম বন্ধ হয়ে মারা যাচ্ছেন? আপনি এত বোঝেন, তা হলে আমার ব্যাপারটা কেন বোঝেন না? আপনার ভেতরে আমার জন্য যে চুল পরিমাণও অনুভূতি নেই, আমি তা জানি! আমি পজেসিভ না! তিথির নীল তোয়ালের মতো, আপনি রিপ্লাই না দিলেও আমার পৃথিবী ওলটপালট হয়ে যায়! আমি একতরফা আপনার জীবনে থেকে যাচ্ছি, যেখানে আপনার অবস্থান সম্পূর্ণ ভিন্ন কোথাও! এরকমভাবে কারও প্রতি দুর্বলতা আমাকে আমার লক্ষ্য থেকে দূরে সরিয়ে নিচ্ছে! আমি না পেলাম জীবনে কোনও কিছু, না পারব লক্ষ্যে পৌঁছতে। আমাকে এমন ব্যর্থ অথর্ব অসহায় দেখতে আপনার খুব ভালো লাগছে? আমি একজন ছাড়া কারও পা ধরিনি কখনও! তাকে বলেছিলাম আমাকে ছেড়ে না যাবার জন্য! আর আপনাকে বলছি আমাকে দূরে সরিয়ে দেবার জন্য! প্লিজ, আমায় দূরে সরিয়ে দিন।
- খেয়েছ সকালে? এখন কোথায় আছ? কী করছ? পড়ালেখার খবর বলো...
- এড়িয়ে যাচ্ছেন তো? যান, যান! একদিন ঠিকই টের পাবেন! পাবেনই! আমি ভাবছি, ফেসবুক ডিঅ্যাক্টিভেটেড করব! আর কিছু দিন পর সুইসাইড করব! ওইসব বিসিএস-টিসিএস নিয়ে আমার কোনও মাথাব্যথা নেই!
- আর কী কী ভাবছ? আমার সাথে শেয়ার করো। Maybe I can give you some better plans!
- Sadistic pleasure নিচ্ছেন! তাই না? নিন, নিন! কেউ যখন নিজের অতিগুরুত্ব বুঝতে পারে, তখন এমনই করে! ভাবে, ও তো আর আমাকে ছেড়ে যাবে না, ফেঁসে গেছে তো…অতএব, ভাব দেখাই! ছেলেদের কমন ফেস এটা! আর আমরা মেয়েরাও নির্লজ্জের মতো ভাব সহ্য করে যাই দিনের পর দিন!
- আমি ওরকম ন‌ই। You always overreact. একই সাথে জাজও করে ফেলো খুব দ্রুতই!
- সব দোষ! সব দোষ, সব দোষ! হায় ভগবান, এই মানুষটার চোখে নীরজার কেবলই দোষ! কী আশ্চর্য, আমার মধ্যে ভালো কিছুই নেই! তাই তো! আপনি সব সময় আমাকে মিসজাজ করেন! আমি ভালো না! আমি কেউ না! আমি ভালো বললেও খারাপ, খারাপ বললেও খারাপ! বাহ্!
- তোমার সব‌ই তো ভালো! উফফফ মেয়েটা পারেও!
- আইরনি! তাই তো? লাগবে না, আমি এগুলো বুঝি! অতটা গাধাও নই আমি!
- আর কী কী বুঝ, ম্যাম?
- আমি নাস্তিক হলেও ঈশ্বরের অদৃশ্যশক্তিকে মানি! সেই শক্তির উপর পূর্ণ বিশ্বাস রেখে বলছি, You have to recall me silently, I can assure you. You can never ever forget me. যদি সাহিত্যকে একটুও হৃদয়ে ধারণ করেন সত্যিকার অর্থে, তবে এই বিরক্তি, ওভাররিঅ্যাকশন, বেয়াদবি আপনাকে ভাবাবে একদিন হলেও! আমি আজকেই চলে যাব, এফবি থেকে! কিছুদিন পর সুইসাইড করব! I want to get relieved! Death is the gateway to eternal relief!
- এবার একটু শান্ত হ‌ও। প্লিজ! এত ঘনঘন সুইসাইড করা ঠিক না, শরীর খারাপ করবে।
- Delight in Disorder! রবার্ট হেরিকের কবিতা। পড়েছেন? পড়ে দেখবেন, হৃদয় ছুঁয়ে যাবে! সব সাজানো গোছানো ornamented ভালোবাসা হৃদয় ছুঁয়ে যায় সবার, মানলাম! কিন্তু সত্যিকার অর্থে হৃদয় ছোঁয়া উচিত পাগলের ভালোবাসা! He who does not know how to mask himself knows best how to love. কেউ যখন আপনাকে পাগলের মতো ভালোবাসে, জেনে রাখবেন, সে ভালোবাসায় কোনও মেকি কিছু নেই, কোনও পোশাকি আবরণ কিংবা চতুরতা নেই। সেখান যা-কিছুই আছে, তার পুরোটাই হৃদয়মথিত! যদি তা গ্রহণ করতে না পারেন, তবে আপনার চাইতে দুর্ভাগা আর কেউ নেই। আমি সেই পাগলটা, যে আপনাকে ভালোবেসেছে আগপাছ না ভেবেই! ‘শব্দ’ মুভির শেষ পার্ট--আমরা কথা বলি, কিন্তু কারও কথা কেউ শুনি না। ডাক্তার যখন চিৎকার করে বলে, কে অ্যাবনরমাল, তখন কে ঠিক বা কে ভুল, সেটা কে নির্ধারণ করে? কোন সমাজ করে! কোন যুক্তিতে বা অধিকারে করে! সমাজের আর দশটা মানুষের সাথে না মিললেই কি কেউ অ্যাবনরমাল হয়ে যায়? সেই দশজনই যে ঠিক, সেটাই-বা কে নির্ধারণ করে? সমাজ? না কি সময়?
আপনি আমার ৭৫ দিনের ভালোবাসা! আপনি আমার মেমোরিজ ইন নভেম্বর! যদি সাহিত্যকে হৃদয়ে ধারণ করেন সত্যিকার অর্থে, তবে একদিন আপনি ঠিকই ভাববেন, কে যেন আমাকে অনেক দিন বিরক্ত করে না! কে যেন আর ওভাররিঅ্যাক্ট করে না! কাকে যেন কতদিন বেয়াদব বলি না! You have to recall all my memories silently. এই মুখের দিক তাকিয়ে যার মনে হয়নি, she needs to be loved, তাকে বলার আর কিছুই নেই! আমার সাথে মিশেও যার কখনও মাথায় আসেনি, এই মেয়েটা গোটা অরনামেনটেড সমাজের বাইরে-থাকা সরল, অকপট, নির্ভেজাল একজন মানুষ--আমি বলব, সে জীবনের অনেক দিক এখনও দেখেইনি! সে পরীক্ষার খাতায় অনেক নম্বর পেলেও জীবনের খাতায় শূন্যই ডিজার্ভ করে! Your entire life is a zero…a big zero! গুডবাই ফরএভার! আমি কিছু দিন পর সুইসাইড করব!
- এই মেয়ে! শোনো! Let a zero hold a one!
- I will commit suicide today or tomorrow. It’s my last destination. You have ignored my feelings. You have never tried to understand the wounded heart.
- এই সব না ভেবে লাঞ্চ করে নাও। প্লিজ! কেউ তোমার অনুভূতির মূল্য না দিলে পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হবে, এর কোনও মানে নেই। পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার অর্থই হলো তাকে জিতিয়ে দেওয়া। বরং বেঁচে থেকে তাকে দেখিয়ে দাও যে তার মূল্যায়ন করা না করায় তোমার কিছুই এসে যায় না! আমি কি সত্যিই ওই লোকটা যে তোমার অনুভূতির কানাকড়িও দাম দেয় না?
- আমি বেঁচে না থাকলেও এই পৃথিবীতে কারও কিছু এসে যায় না! আচ্ছা, একটা প্রশ্ন করি, আমি যদি এমন লম্বা লম্বা মেসেজ না পাঠাই আর, আপনি কি খুশি হবেন আমার ব্যাপারে? সত্যিটাই বলবেন! আপনার মনে হয়, আমি মেনটালি স্টাবল না! আমার কথা শোনা যায় না, আমার কষ্ট অনুভব করা যায় না! আমার কষ্ট অনুভব করার মানুষটাই আপনি না। সবার কষ্টই অনুভব করার দায় তো আপনার নেই। মনে হয় এসব আপনার? জানেন, আমার কোনও নিজস্ব পৃথিবী নেই। একটা মানুষ তার পৃথিবীকে ছাড়া কীভাবে একজিস্ট করে! আপনি কি সত্যি বিরক্ত আমার উপর? একবার বলুন! সত্যিটা বলুন। সত্য কঠিন, তবু আমি নিতে পারব। আমি সত্যকে গ্রহণ করতে শিখেছি। আমার খুব প্রিয় একটা গান আছে, নচিকেতার। ক্ষয়ে ক্ষয়ে যাওয়া এ সময়/ মেনে নেয় তার পরাজয়/ জীবন পড়ে ধুলোতে, হারিয়ে সঞ্চয়/ যার কথা ভাসে মেঘলা বাতাসে/ তবু সে দূরে তা মানি না।
- তোমার কথা পড়তে ভালো লাগে। তবে তুমি প্রায়ই অনেক অস্থির হয়ে ওঠো। এটা ভয় লাগে।
- সরাসরি উত্তর দিন! আমি বিরক্ত করি কি না?
- না, কর না।
- তা হলে, আমার সব কথা এড়িয়ে যান কেন? আমি সাহিত্য নিয়ে পড়েছি! এবং কেবলই পাস করার জন্য সাহিত্য পড়িনি। আমি সাহিত্যের প্রেমে পড়েই সাহিত্য পড়েছি। আমি বইয়ের অক্ষরগুলো কেবলই চোখে পড়িনি, হৃদয় দিয়ে অনুভব করেছি। আমি লেখকের লেখা পড়েছি যত, লেখকের মন পড়েছি তার চেয়ে অনেক বেশি! যা লেখা আছে, তার চেয়ে অনেক বেশি পড়েছি যা লেখা নেই তা। আমি আমার নিজের ও চারপাশের মানুষের জীবন ছুঁয়ে ছুঁয়ে সাহিত্যের রসকে গ্রহণ করেছি। আপনার মতো জীবনকে নিয়ে লিখতে না পারলেও আমি অনেক কিছু বুঝি! আমি বিরক্ত না করলে আপনি খুশি হন? একটা উত্তর দেবেন।
- তুমি আমার সাথে থাকবে, এটাই বুঝি!
- আমি একটা উত্তর চাইছি! আমি জানি, আপনি আমার একটা লাইনও পড়েন না! একটা কথাও বোঝার চেষ্টা করেন না! কারণ আপনি ভাবেন, আমি মেনটালি স্টাবল না! সৎমানুষ হলে একটা উত্তর দেবেন, আমি যদি আর বিরক্ত না করি, আপনি খুশি হবেন কি না?
- আমি তোমার প্রতিটি লাইনই পড়ি। অবশ্যই পড়ি। ভালো লাগে, অনুভব করতে ভালো লাগে। আমি চাই, তুমি থাকো।