যাবার বেলায়

থাক, নাশিদা, ওষুধ রাখো—কী আর হবে ওতে?
রাখতে ধরে পারবে না আর আমায় কোনোমতে!
আবার ও কী! ছিঃ…ছিঃ ছিঃ ছিঃ! কান্না আসে কীসে?
এ শরীর আমার থাকবে তো গো এই মাটিতেই মিশে!




দিয়ো তুমি ফুল ছড়িয়ে রোজ প্রভাতে উঠে—
সারাদেহে তোমার পরশ থাকবে রোজই ফুটে।
মাটির বুকেই আমায় পাবে সকল কাজের মাঝে,
চোখ বুজলেই দেখবে আমায়, সকালে কি সাঁঝে।




আমার হাতে তোমার তো সুখ হয়নি কোনোকালে,
সেই খেদেতে বুকের মধ্যে কে যেন তুষের আগুন জ্বালে।
অশ্রু মোছো, আমার পাশে একটু বসো এসে,
বিগত দিনের কত-না স্মৃতি আসছে মনে ভেসে!




তোমার কী রূপ ছিল, নাশি, আজ হয়েছে কী!
কেমন করে মনের কাছে আজকে জবাব দি'?
তোমার ব্যথার উৎস যে কী, জানি সবই আমি,
অনুশোচনায় যাচ্ছি ক্ষয়ে, সময় সত্যিই দামি!




যা গেছে যাক! যাচ্ছি চলে, আমায় ক্ষমা কোরো,
আজকে, নাশি, হাসিমুখে একটু জড়িয়ে ধরো!
সুখে কি দুঃখে, আল্লাহকে ডেকো মনে মনে;
মনের যত কথা আছে, বোলো না জনে জনে।




সময় তো নেই, যাবার বেলায় এটুক শুধু কথা—
ছেলেটিকে মানুষ কোরো, থাকবে না আর ব্যথা!
কঠিন বড়ো, তবু বলি—মাঝে মাঝে কবরপাশে এসো,
কেঁদো না ভুলেও, শক্ত থেকো আর একটু ভালোবেসো!