যাপনের জাকাত

১. মাঝে মাঝে ভাবি, ওদের মতন চরিত্রহীন হবার অধিকার তো আমার‌ও ছিল! তবে কেন এমন বিষাদযাপন করছি?

২. দীর্ঘদিন প্রেম করার পর বিচ্ছেদ। সমপরিমাণ সময় ঘর করার পর বিচ্ছেদ। এই দুইয়ের হিসেব তো মোটামুটি একই। তবুও কেন দ্বিতীয় ধরনের মানুষের দিকে অন্যচোখে তাকায় সমাজ? সাত মাসের সংসারের পর ডিভোর্স হয়েছে যার, তাকে নিয়ে যে-সমাজ হ‌ইচ‌ই শুরু করে দেয়, সেই সমাজ‌ই, সাত বছরের প্রেমের পর ব্রেক‌আপ হয়েছে যার, তাকে নিয়ে একটি কথাও বলে না। ২০২৩ সালে এসেও এতটা নির্বুদ্ধিতার অভিনয় করে বাঁচাটা ঠিক মানায় না। বিয়ে নিয়ে এত বাড়াবাড়ি যেখানে, সে-সমাজ অসুখী হবে না তো কোন সমাজ অসুখী হবে?

৩. শুরুর দিকে বলতে ভয় পেতাম। ভাবতাম, থাক্, একদিন সে বুঝতে পারবে। এরপর একদিন সে ঠিকই বুঝল। তখন আমি তাকে হারিয়ে ফেললাম। বুঝলাম, বোঝাতে বড্ড দেরি হয়ে গেছে!

৪. কিছু ভালোবাসা একদিন দয়ায় রূপান্তরিত হয়। তখন থেকেই মানুষ ঝড়ের মধ্যেও বাঁচতে শেখে।

৫. ঝগড়া করতে পারি না বলেই একা একা মদ খাই।

৬. বয়স বাড়লে মানুষ তা-ই করতে চায়, যা সে অল্প বয়সে করতে পারেনি সেই ব্যস্ততার কারণে, যে-ব্যস্ততার সুফল বেশি বয়সে সে নিজে যতটা ভোগ করে, তার চাইতে অনেক বেশি ভোগ করে অন্যরা।

৭. হ্যাঁ, আমি স্বীকার করছি, আমি একজন বিরক্তিকর মানুষ। কিন্তু তুমিই বলো, আমাকে ফিরিয়ে দিলে আমি কার কাছে যাব? আমি যে আর কাউকেই ভালোবাসতে শিখিনি!

৮. আমার প্রাক্তনদের উপর তোমার এত ক্ষোভ কীসের? আমি যদি প্রেমে পড়ার মতন মানুষ না হতাম, তবে তুমি নিজেও কি আমার প্রেমে পড়তে?

৯. মাঝে মাঝে, যা খেলে ক্ষতি হবে জানি, তা-ই খাই। এর নাম কি দুঃসাহস? না কি নিজের প্রতি মায়াহীনতা?

১০. আমি লিখতে ভালোবাসি। আমার প্রেম চাইলে আমাকে নয়, আমার লেখার প্রেমে পড়ো।

১১. যে আবেগ কখনোই বিপদসীমা অতিক্রম করে না, তার কোনো মূল্য আমার কাছে নেই।

১২. আমার সাথে মিশতে চাইলে আমার নিয়মে মিশতে হবে; তোমার সাথে মেশার ইচ্ছে কখনো হলে তোমার নিয়মেই মিশব।

১৩. নিজের অপছন্দকে পাত্তা দিতে মন চাইলে আমি দুটো কাজ করি: অপছন্দের মানুষ সম্পর্কে নীরব থাকি এবং তার ধারেকাছেও না ঘেঁষে অন্যদিকে ঘেঁষি। অপছন্দের মানুষ সম্পর্কে শব্দ খরচ করার সময় বা রুচি, কোনোটাই আমার নেই।

১৪. কার‌ও যে-পাপের কথা জেনেও তুমি তাকে ছেড়ে যাওনি, তোমার এক‌ই ধরনের পাপের কথা জেনে যদি সে তোমাকে ছেড়ে যেতে চায়, তাহলে অবিলম্বেই তাকে ছেড়ে দাও। কপটতা কোনো ভুল নয়, বরং মানুষের একটা বৈশিষ্ট্য; তাই এর কোনো ক্ষমা হয় না।

১৫. আজ অবধি কখনোই কার‌ও ক্ষতি করিনি মানে কিন্তু এ নয় যে, ওই পথে হাঁটতে জানতাম না বা জানি না।

১৬. আমার সব দুঃখই আমার নিজস্ব সম্পত্তি। ওসবের ব্যাখ্যা চাইবার তুমি কে?

১৭. এখন আর সিগারেট খাই না; পুড়িয়ে ছাই করার জন্য সিগারেটের চেয়ে আমি নিজেই বেটার অপশন।

১৮. পুরুষেরা স্ত্রীর জন্মদিন মনে রাখে ভয়ে, প্রাক্তন প্রেমিকার জন্মদিন মনে রাখে ভালোবাসায়। মানুষ যাকে বাধ্যতায় বাঁধতে চায়, তার কাছ থেকে সে ভালোবাসা নয়, ভয় ও বিরক্তি পায়।
১৯. গাধার কাছে, ধার্মিক হবার মানেই হচ্ছে: আরও বেশি বোঝা বহন করা। চোরের কাছে, চুরিই পরম ধর্ম; তাই চোরকে ধার্মিক হতে বলা আর চুরি করতে বলা, একই কথা।

২০. কাউকে ঠিক হতে বলার আগে ভেবে নাও, তুমি যেটাকে ভুল ভাবো, সেটাকে সে-ও ভুল ভাবে কি না। যদি না ভাবে, তাহলে তুমি যত যা-ই কিছু বলো না কেন, সে কখনোই তোমার পছন্দের পথে আসবে না। যে ভাবেই না যে, সে ভুল করছে, সে শোধরাতে চাইবে কেন?