মায়ের প্রিয় কিছু ভুল

সদ্যসমাপ্ত রেশের মতো নিভে গেছে
আমার পুরোনো বিশ্বস্ত দরিদ্র দীপ—
সময়ের আবছা ঘরে; বহুদিন হয়ে গেল সে-ও।
আশ্বিনের সমস্ত আয়োজনের আলো উপেক্ষা করে
ফসলের আশিস আসেনি উঠোনে, গোলায়; তাই 
কোনো দূর হতে আসা আলো কি না-আলো'র
ক্রোধহীন স্নেহ ভিক্ষে করে খাই শূন্য পাত্র হাতে।




ঈশ্বরের অপার্থিব ক্ষমাই আত্মার মৃদু সুবাতাস
ব‌ইয়ে দেয় আমাকে আবৃত করে; পবিত্র আলো এসে
আমায় আঁধার ঘর থেকে টেনে আলোয় নিয়ে আসে—
ওখানে জীবন অমৃতের‌ও অধিক।




সেই ক্ষমা, সেই আলো, সেই আবাহন
মন্ত্রের সুর হয়ে বাজেনি এ-প্রাণে; তবু
দিন কাটে ঠিক‌ই। নদীতে ঝড় ওঠার আগেই
বিপন্ন হয় খেয়া। ধীরে ধীরে মাঠের পরাজিত ঘাসে
গোধূলি নেমে আসে; বিরহ আজ মৃত্যুতে নয়,
দিনান্তে কিংবা সূর্যের প্রস্থানেই।




মনে হয় যেন গান থেমে গেল আলোর প্রার্থনা শেষ হতেই—
ঘরে যাব এবার…ভাবার আগেই শেষ খেয়া এসে
ফিরেও গেল মৃত বা পরিত্যাজ্য ঘাট থেকে!




উঠোনের অন্ধকার ঠেলে হঠাৎ আলোর ঘা!
সেই শব্দে শিউলির ঘ্রাণ, একধারে দেখা যায় বাগান।
সকালের জয়পিয়াসী রৌদ্রে নম্রতা, স্নেহ, ক্ষমা—
ওরা সবাই প্রতিশ্রুতির অবয়বে হাসে; স্তব্ধতার বিনিময়…
ভুল হলো বুঝি…শূন্যতা হতে
কোথায় কার ঘরে আলো জ্বলে, বাজে শঙ্খধ্বনি;
ঘরের দেয়ালের পলেস্তারা খসে খসে পড়ে, আর
নোনাদাঁত বের করে হাসে উজ্জ্বল দুপুররাশি—
আমাদের মায়ের প্রিয় কিছু ভুল যেন!