ভাবনাদেয়ালের পলেস্তারা (৪৯ৎ অংশ)

ভাবনা: তিনশো সাইত্রিশ

…………………………………

এক। হাতে অস্ত্র এলে মাথায় বুদ্ধি কমে যায়। স্বাভাবিক। যার হাতে অস্ত্র আছে, সে আত্মরক্ষার জন্য অস্ত্র চালালেই পারে! কী দরকার বুদ্ধি খাটানোর! বুদ্ধি খাটানোর চাইতে ট্রিগার চাপা সহজ তো! কিন্তু যার হাতে অস্ত্র নেই, তাকে আত্মরক্ষার জন্য মাথা খাটাতেই হয়! অন্য উপায় নেই যে! ফলে তার মস্তিষ্ক দিনেদিনে শানিত হয়।

দুই। অসহায় কারো কথায় নাচার আগে নিজের নিরাপত্তার কথাটাও ভেবে নিন। কারণ, আপনি গর্তে পড়লে প্রথম যে লাথিটা খাবেন, সেটা আসবে তার কাছ থেকেই। যত বেশি অসহায়দের পাশে দাঁড়াবেন, আপনার নিজের ভবিষ্যৎ তত বেশি বিপন্ন হবে। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রধান সমস্যা হল, যেহেতু অসহায় মানুষমাত্রই বিভ্রান্ত ও হুজুগে, তারা যেকোনো সময়ই আপনার ক্ষতি করে ফেলতে পারে, কিংবা আপনার শত্রুর পাশে দাঁড়াতে পারে। সাধারণত অসহায় মানুষের কোনো নির্দিষ্ট আদর্শ, দল, মত বা চরিত্র থাকে না। জন্মালে মরতে হবে, এটা সত্য; আর উপকার করলে মরার আগেই কয়েকবার মরতে হবে, এটা আরো বড় সত্য। যারা কখনোই কারো উপকার করে না, তারা সবচাইতে বেশি নিরাপদ। যাঁদের জন্য বুক পেতে দেবেন, তাঁরাই আপনার বুকে ছুরি বসাবে সবার আগে।……এই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাঁদের যেতে হয়নি, তাঁরা আমার এই পোস্টের অর্থ বুঝবেন না।

তিন। কখনওই, এমন কারও কথা শুনে নিজেকে নতুন কোনও বিপদে ফেলো না, যে বিপদের সময় তোমার পাশে ছিল না।

চার। অ্যান্ড্রয়েডের পুণ্যে—রেজাল্ট আসে শুন্যে! বিশ্বাস হল না? এসএসসি আর এইচএসসি পরীক্ষার রেজাল্টের দিকে তাকান, বুঝে যাবেন। টাকা পকেটে রাখুন—সন্তানের নয়, নিজের।

পাঁচ। To know how a man really is, you must marry him. To know how a woman really is, you must marry her. You can never know the real face of anyone until and unless you marry them.

ছয়। হুমায়ূনকে নিয়ে সমরেশের লেখা পড়ছি। একজন ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে আরেক জন ভালোবাসার মানুষের কলমে ভাল কথা পড়তে খুব আরাম লাগে।

সাত। ভালভাবে শুরু করার চাইতে ভালভাবে শেষ করা জরুরি। আবারও দেখলাম! দুইজন গোলকিপার নিয়ে গোলকিপারবিহীন (!) ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ফ্রান্সের জয়!! বিশ্বকাপ গেল সুনীলের ছবির দেশে, কবিতার দেশে! অভিনন্দন, ফ্রান্স! ভালোবাসা, ক্রোয়েশিয়া! খুব আফসোস হচ্ছে তোমাদের জন্য। Only your result is rewarded, not your efforts! সবকিছুর পর, জেতাটাই বড় কথা!

আট। ইনকাম যত বাড়ে, খাওয়া তত কমে। ভাবছি, ইনকাম বাড়াতে খাওয়া কমিয়ে দেবো!

নয়। অনুপ্রেরণা দিয়ে তেমন কিছুই হয় না, যতক্ষণ না আপনি নিজে কাজটি শুরু করছেন এবং শত প্রতিকূলতার মধ্যেও করে যাচ্ছেনই! তবু বলব, যদি জীবনে পাঁচটি অনুপ্রেরণামূলক লেখা পড়বেন, ভাবেন, তবে বেলজিয়ামের রোমেল লুকাকুর নোবডি থেকে সামবডি হয়ে ওঠার গল্পটা পড়ুন। জীবনে কাজে দেবে।

দশ। যারা তোমাদের মারছে, তারা যখন আমাদের মেরেছিল, তখন তোমরা তাদের পাশে ছিলে। এখন তোমরা আমাদের তোমাদের পাশে চাও। আমাদের নির্লিপ্ততা তোমাদের চোখে আমাদের বাজে মানসিকতার পরিচায়ক। আমরা যে এখন ওদের পাশে নেই, এটা কি প্রমাণ করে না, আমরা তোমাদের চাইতে উন্নত মানসিকতা ধারণ করি? (খ্রিস্টপূর্ব কয়েকশ’ বছর আগে কোনো এক গোত্রযুদ্ধের সময়ে এক গোত্রপিতার স্বগতোক্তি)

এগারো। আমরা অনেক কিউট একটা জাতি। যাকে কাজে লেগেছে, লাগে, লাগবে, তাকেই গালি দিই, আঘাত করি। পিঠে ছুরি বসিয়ে বলি, বাবা, আমার জন্য তোর বুকটা পেতে দে! এইসব ভেবে লাভ নেই। আমরা বদলাবো না কখনওই। তার চাইতে আসুন, গজল শুনি। গালির চাইতে গজল উত্তম।

বারো। কাউকে ফলো করার আগে জানতে হবে কী করে ফলো করতে হয়। আপনি যদি কারো বর্তমান লাইফস্টাইলটা পেতে চান, তবে আপনাকে উনার বর্তমানের নয়, বরং অতীত সময়ের সেই লাইফস্টাইলটা ফলো করতে হবে, যেটা উনাকে বর্তমান লাইফস্টাইলটা পেতে সাহায্য করেছে। রাতারাতি বড় কিছু হওয়ার অর্থ কিন্তু এক রাতেই বড় কিছু হয়ে যাওয়া নয়, বরং অনেক রাতের সাধনার বিনিময়ে এক রাতেই বড় কিছু হয়ে যাওয়া।

তেরো। ভাইয়া, আপনি যে আমাকে জন্মদিনে ফোন করে উইশ করেন, তারিখ মনে রাখেন কীকরে? ভাই, তোমার জন্মদিন মনে না রাখলে তো আমার সংসার ভেঙে তছনছ হয়ে যাবে! মানে? তোমার আর আমার বউয়ের জন্মদিন তো একই ডেটে! হাহাহাহা………… এমনি করে আর কেউ ফোন করবেন না। ঢাকা মেডিক্যালের ফজলে রাব্বি হলের ক্যান্টিনের সামনে দাঁড়িয়ে কেউ বলবেন না, “সুশান্ত, তুমি কি ঢাকায়? ফজলে রাব্বি হলে চলে আসো!” পলাশ ভাই চলে গেছেন। যত কষ্টই হোক, এটাও এখন থেকে বিশ্বাস করতে হবে। আমাদের কত কিছু বিশ্বাস করে বেঁচে থাকতে হয়! আমার মাথা ফাঁকা হয়ে গেসে খবরটা শুনে। ভাইয়ার সাথে কত সুন্দর সময় কাটিয়েছি। সব স্মৃতি একএক করে মনে এসে যাচ্ছে। পলাশ ভাই নেই, এটাও মেনে নিতে হবে??? মানুষ এভাবে স্মৃতি হয়ে যায়! জলজ্যান্ত মানুষটা এমন করে ছবি হয়ে গেলেন! মাঝেমধ্যে ভাইয়া ফোন করতেন। এমনিই, খোঁজখবর নিতে। এই কয়েকদিন আগে ফোন করে বললেন, লালমনিরহাটও তো আমি দেখি, ওখানে ভিজিটে আসব, তোমার সাথে দেখা হয়ে যাবে। তোমাকে নিয়ে পুরা কুড়িগ্রাম আর লালমনিরহাট ঘুরে ফেলবো। তুমি তো মিয়া যশোরে আসতে পারতেসো না!………ভাইয়া আর আসবেন না। সকাল থেকে পলাশ ভাইয়ের মুখটা চোখের সামনে স্থির হয়ে আছে! আমি জাস্ট কিছু ভাবতে পারছি না। ভাইয়ার ছবিগুলো দেখে এখনো বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে, ভাইয়া নেই। এমন একজন মানুষের প্রতি কারো রাগ থাকার কথা নয়। তারপরও পলাশ ভাইয়ের প্রতি যদি কারো বিন্দুমাত্রও রাগ থেকে থাকে, উনাকে ক্ষমা করে দিন। যদি অভিশাপ দিতেই হয়, সেই অভিশাপটা আমাকে দিন। উনার জন্য আমি শাস্তি পেতে রাজি আছি। আমরা সবাই একদিন ছবি হয়ে যাবো, ফোনের একটা নাম্বার হয়ে যাবো। সেই দিনটা আজকেও হতে পারে। ঈশ্বর আমাদের ভাল মানুষ করে বাঁচিয়ে রাখুন।

চৌদ্দ। আপনি আপনার বন্ধুকে আজ যার সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন, দেখবেন, কাল তার জন্যই আপনার বন্ধু আপনার কাছ থেকে দূরে সরে যাবে। বন্ধু সেই তৃতীয় ব্যক্তিকে আপনার চাইতে আপন হিসেবে ধরে নেবে। আপনার হাত ধরে যার সাথে যোগাযোগ হল, তার সাথে যোগাযোগ রাখতে গিয়ে আপনার সাথে যোগাযোগ কমিয়ে দেবে। লোকে আপনকে আপন রাখার চাইতে পরকে আপন করতে বেশি উৎসাহিত হয়। আর সেই তৃতীয় ব্যক্তি যদি আপনার বন্ধুর বিপরীত লিঙ্গের কেউ হয়, তাহলে এ দূরত্ব অনেকটাই অবধারিত! (ছেলেরা মেয়েদের জন্য প্রায়ই বন্ধুকে দূরে সরিয়ে দেয়। আচ্ছা, মেয়েরাও কি ওরকম করে?) এবং, সেই তৃতীয় ব্যক্তির সাথেও আপনার এক ধরনের শীতলতা তৈরি হবে। (আমার জীবনে এরকম অসংখ্যবার হয়েছে।)

ভাবনা: তিনশো আটত্রিশ

…………………………………

এক। হে ঈশ্বর! পৃথিবীর সব প্রেমিকার দেহপল্লব টনি ক্রুসের পায়ের মতন সময়মত হঠাৎ জাগুক!

আর ঘণ্টা দুয়েক। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পায়ের দিকে তাকিয়ে আছি……..

দুই। একজন কৌশিকী যদি ভুলেও এসে হাতটা ধরে, নতুন পথে হাঁটতে পুরনো সব সম্পর্ককে ‘না’ বলে দেয়া যায়! ……….জানি, ভুল ভাবছি। হায়, কিছু ভুল করতে না পারার দুঃখ সারাজীবনেও যায় না!

তিন। The basic difference between men & women: For sex, Men need a place, Women need a reason.

চার। Some overrated things:

Wedding photography

Facebook friendship

Virginity . . . . . . . . Add more…………..

(কিছু জিনিস, যা নিয়ে আমরা প্রয়োজনের অতিরিক্ত মাতামাতি করি: ওয়েডিং ফটোগ্রাফি, ফেসবুক বন্ধুত্ব, সতীত্ব . . . . . . . . আপনিও কিছু যোগ করুন।)

পাঁচ। Winner’s smile always talks louder than loser’s shout. Winners speak by actions, losers speak by words. Let’s smile while they’re shouting. Always only losers have to shout. Winning is sexier than playing well. Go, Brazil, Go!!!

At the end of the day, Brazil remains Brazil!!! That’s the beauty!!! Well done, Champs!!! Thumbs up for the Costa Rican goalkeeper!!! When life gives you an extra chance, prove your extra worth!!! The game is still ON!!!

It’s not a goal, it’s a feeling!!! Love you, Coutinho!!!

মুখ লুকালেই কি আর লজ্জা লুকানো যায় রে, গাধা?

Feeling the old rhythm of Brazil! Yes, it’s the style we’re familiar with! Let’s shout…….Go, go, Brazil! Good luck, boys!

আমার করার কিছু ছিল না, নাগো……আমার করার কিছু ছিল না। চেয়েচেয়ে দেখলাম, গোল দিয়ে দিলে………… গান শুনুন, রাগ কমান। জানেনই তো, রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন। (অবশ্য আপনারা রেগে যাওয়ার আগেই হেরে বসে আছেন!)

প্রিয় ব্রাজিলের সাপোর্টাররা, কালকের ম্যাচে ব্রাজিল জিতলেও কি এত সুখ পাবেন, যত সুখ এখন পাচ্ছেন? পাবেন না। কেন, জানেন? আমরা যতটা ব্রাজিলের সাপোর্টার, তার চাইতে বেশি অ্যান্টি-আর্জেন্টিনা সাপোর্টার; যতটা আর্জেন্টিনার সাপোর্টার, তার চাইতে বেশি অ্যান্টি-ব্রাজিল সাপোর্টার।

ছয়। জীবনে প্রথম কোনো বিয়েতে ঘটকালি করলাম। আমার নতুন ক্যারিয়ারের জন্য সকলের কাছে দোয়াপ্রার্থী। কেউ কমেন্টে ‘ঘটক পাখিভাই’ না লিখে যাবেন্না, প্লিজ। সেদিন আমার এক বন্ধু তার ঘটকালির ছবি শেয়ার করার পর যারা ‘ঘটক পাখিভাই’ না লিখে চুপচাপ চলে গেছে, তাদের সবারই বড় বাথরুমের সাথে ডিপ অ্যাফেয়ার হয়ে গেছে। কিডিং অ্যাপার্ট, নবদম্পতির জন্য আমাদের শুভ কামনা রইল।

সাত। “কুকুর কিন্তু সবসময় হাঁটুর নিচেই কামড় দিবে, কারণ এর থেকে উপরে কুকুর কখনওই উঠতে পারবে না।”

আট। ইতর চিনবেন কীভাবে? প্রথম আলো বা কোনো জনপ্রিয় পেইজের বিভিন্ন পোস্টের কমেন্টথ্রেডে যান। কমেন্টগুলি পড়ুন, শিক্ষিত/ অর্ধশিক্ষিত মূর্খদের মানসিকতা দেখুন, বাংলাদেশকে চিনুন। আমরা ইতরামির কোন পর্যায়ে নেমে যেতে পারি, দেখে আসুন। বড় কোনো সেলিব্রিটির পেইজের ওয়ালে গিয়েও অনেক ইতর পেয়ে যাবেন। আমরা মূর্খ, ইতর, কপট, কৃতঘ্ন, হিংসুটে, অকৃতজ্ঞ, জাজমেন্টাল। বাংলাদেশিদের চরিত্র নিয়ে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র কিছু অংশ না চাইতেও বারবার মনে এসে যায়।

এই বিশ্বকাপ ফুটবল চলাকালে আপনি খুব সহজেই আপনার ফ্রেন্ডলিস্ট আর ফলোয়ারলিস্ট থেকে কিছু ইতর সনাক্ত করতে পারবেন। খেলা হচ্ছে। আপনি খেলা, খেলোয়াড় কিংবা ম্যাচ নিয়ে কোনো পোস্ট দিলেন। ইতররা খেলা, খেলোয়াড় কিংবা ম্যাচ নিয়ে কমেন্ট করবে না। ওরা কেমন কমেন্ট করবে? আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে। কেন? কেননা, ওরা কখনোই আপনার মত হতে পারবে না। এটাকে বলে অক্ষমের ক্রোধ। কমেন্টে আপনার কোনো অর্জনকে অপ্রাসঙ্গিকভাবে টেনে আনবে। কেন? কারণ, ওদের পক্ষে সেটা অর্জন করা সম্ভব নয়। সিম্পল। হারেমে যা হচ্ছে, তা দেখে খোজারা রেগে যাবেই। স্বাভাবিক। ‘খোজা ইতিহাস’ বইটা পড়ে দেখুন। তাও খোজাদের বেশিরভাগকেই জোরপূর্বক খোজা করে রাখা হতো বলে ওদের ভেতরে একটা চাপারাগ ছিল। আর আমরা? আমাদের কেউ খোজা করে রাখেনি। ভাবনা ও কাজের অধোগমনের কারণে আমাদের অবস্থা ও অবস্থানের এই ছিরি! তাতেও আমাদের রাগ, সে রাগ আবার নিজের উপর নয়, অন্যের উপর! এমন চিড়িয়াজাতি দুনিয়ায় আরেক পিস পাবেন না। যে নিজের রাগ নিজের উপর ঝাড়তে পারে না, সে বড়ই দুর্বল। আপনার লিস্টের ইতরদের আনফ্রেন্ড করুন, ব্লক করুন। ইতরের সাথে থাকার চাইতে একা থাকা ভাল। আমি বিশ্বকাপ ফুটবলে ব্রাজিল টিমের সাপোর্টার। খেলা নিয়ে আমার উন্মাদনা আছে, তবে তা বেহুঁশ উন্মত্ততার পর্যায়ে কখনোই যায় না। সম্পূর্ণ সজ্ঞানে বলছি, আমাকে যদি কেউ বলেন, তুমি ৫০০ টাকা দিলে ব্রাজিল কাপ পাবে, আমি দেবো না। ব্রাজিল জিতলে আমার কোনো ব্যক্তিগত বা জাতিগত লাভ নেই। ওই টাকা দিয়ে ফুচকা খাওয়াও ভাল। আমি আবেগপ্রবণ, কিন্তু পাগল না। হ্যাঁ, বাংলাদেশ বিশ্বকাপ ফুটবল খেললে ধার করে হলেও টাকাটা দিতাম। অনেক দিনই ক্রিকেট খেলায় আমাদের জয়ের পর বাসার কিংবা অফিসের সবাইকে ভরপেট মিষ্টি খাইয়েছি। একমাত্র নিজের দেশের জন্য পাগল, ছাগল, মাতাল সবকিছুই হওয়া যায়। এদেশ আমাকে খাওয়ায়, পরায়, বাঁচায়। আমি খেলা দেখি নিছকই আনন্দ পেতে, বাংলাদেশ খেললে সেই আনন্দকে পাগলামি সঙ্গ দেয়।

আমার আপন মামাত ভাই ইন্ডিয়া থাকে। বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া টিটোয়েন্টি ম্যাচে ইন্ডিয়ার কোনোমতে কষ্টেসৃষ্টে জয়ের পর ও বাংলাদেশ নিয়ে কিছু বাজে কথা বলে। ওকে উচিত জবাব দেয়ার পর ফেসবুকে ব্লক করে দিয়েছি। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি, ও যেন এ জীবনে কখনোই আমার সাথে যোগাযোগের কোনো চেষ্টা না করে, অমিও করবো না। ও এ জেনারেশনের অল্প ঘিলুর স্মার্ট ছেলে। তাই ও যুক্তিতে পেরে না উঠলে আজেবাজে বকতে আরম্ভ করে। বেয়াদব দূরে রাখাই ভাল। দুইদিন ধরে কিছু কিউট ইমোশনাল বাংলাদেশিদের ইতরামি আর নোংরামি দেখছি, অবাক হচ্ছি না। আমাকে, আমার অবস্থানকে অহেতুক আক্রমণ করে অশালীন কথাবার্তা বলে যাচ্ছেন। বলতে হলে খেলা, খেলোয়াড়, ম্যাচ নিয়ে কথা বলুন। আমার পোস্টের বক্তব্যকে আক্রমণ করে একেবারে ধুয়ে দিন। আমি স্বাগত জানাবো। কিন্তু ইতরামি করছেন কেন? আমি আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে কথা বলেছি? (অবশ্য আপনাকে গোনার টাইমই আমার নাই, থাকলেও আমি আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে কথা বলতাম না, ওটা আমার স্বভাববিরুদ্ধ। আসলে আমাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে বাঁচতে হয় না।) আপনি কেন বলছেন? লোকের মাথায় ঘিলু না থাকলে লোকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে কথা বলে। আমার সব পোস্টেই আমার বিসিএস পরীক্ষায় প্রথম হওয়াকে বিশ্রীভাবে টেনে আনেন কেন কোনো কারণ ছাড়াই? ওটা আমার রিজিক তো, ভাই!………বেশি জ্বলে? জ্বললে কাজের কিছু করে দেখান। শুধু কমেন্ট করে দেখিয়ে লাভ কী? বাপের ব্যাটা করে দেখায়, গাধার ব্যাটা বলে শোনায়।

ইতরদের বলছি, আমি খেলা কম বুঝি? ঠিকই বলেছেন। কেবল খেলা নিয়ে পড়ে থাকিনি বলেই আমি Sushanta Paul, আর আপনি আমার ফলোয়ার। ব্যাপারটা বোঝা গেছে তো, না? অনেক ইতরকে পেইজ থেকে ব্যান করে দিয়েছি। দুইদিন পর আবার আনব্যান করে দেবো। কেন, জানেন? এটা একটা খেলা। ওই ইতরগুলি আবারো আমার ওয়ালে আসবে, আমার পোস্ট দেখবে—নীরবে বা সরবে। Love me or hate me………..but you cannot ignore me. গুরু শাহরুখ সবসময়ই সত্য, অন্তত আমার বেলায়—ছিলেন, আছেন, থাকবেন। It’s my challenge………to myself! আমি ফ্রেন্ডলি, এর মানে এই নয় যে, আমি আপনার ফ্রেন্ড। নিজের লিমিটটা বুঝতে শিখুন। ফ্রেন্ড মানে কিন্তু রিয়েল-লাইফ ফ্রেন্ড, ফেসবুক ফ্রেন্ড একটা ভুয়া জিনিস। আমার ওয়ালে আপনি এলেন কি এলেন না, আই ডোন্ট কেয়ার।

আপনি আমাকে সম্মান করেন, আপনি আমার ফ্যান, আপনি আমার স্পিচ শোনেন, আপনি আমার লেখা পড়েন…………এইসব আপনি করেন এসব করতে আপনার ভাল লাগে, তাই। ওতে আমার কিচ্ছুটি এসে যায় না। ইতরামি করলে সোজা ব্যান করে দেবো, এবং আবারো আনব্যান করবো। কেন? ওই যে বললাম, আপনার নির্লজ্জ প্রত্যাবর্তন আমাকে বিনোদন দেয়, অনুপ্রেরণা যোগায়। ………… আপনি আমার অমুক আইডিটা ব্যান করে দিয়েছেন, কোনো সমস্যা নাই। শুধু জেনে রাখুন………… ব্লা ব্লা ব্লা। ইনবক্স সমাচার। উনি আমাকে সহ্যই করতে পারেন না, আবার আমার ওয়ালে না এসে থাকতেই পারেন না। কিউট না ব্যাপারটা? আচ্ছা, আমরা এমন মেরুদণ্ডহীন বলদ কেন? গুরু ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর একটা কথা দিয়ে শেষ করছি: Your love makes me strong, your hate makes me unstoppable.

ভাবনা: তিনশো উনচল্লিশ

…………………………………

এক। ব্রাটিনা, পার্লিনা! ভাইদুই, আইসুই! Dear Brazil, we missed your original flavour. It’s disappointing. Best match so far: Ger-Mex match! If Brazil or Argentina had to face Mexico, God would have to receive more prayers & tears! ব্রাজিল আর্জেন্টিনা ভাই-ভাই, জার্মানিরও দেখি খাওন নাই!

দুই। ব্রাজিল জাতীয় ফুটবল টিম বনাম সুইজারল্যান্ড জাতীয় কাবাডি টিম!

It’s the Brazil Style! Go, Brazil, Go!!

তিন। টিমে এক্সট্রাঅর্ডিনারি কোনো ফিনিশার না থাকলে জিততে হলে খেলতে হয় এগারো জনকেই। লাভলি গেম বিট্যুইন জার্মানি অ্যান্ড মেক্সিকো! থাম্বস্ আপ ফর ওচোয়া! ইউ আর বিউটিফুল, ম্যান! ফিঙ্গারস্ ক্রসড্ ফর দ্য সেকেন্ড হাফ!

Well deserved defeat, Germany! Well earned victory, Mexico! Lovely match! Thank you, boys, for keeping it alive till the end! Mexico, loved your defense! Loved your goalkeeper! Ochoa is a masterpiece! Hats off! Had you an excellent finisher like Ronaldo, you could score 2 more for sure! Now fingers crossed for the BraSwi match!!!

চার। ‘আপনারা কেউ আমাকে একটা থানকাপড় দিতে পারেন!’ এমন আশ্চর্য নিষ্ঠুর লাইন কী করে লিখে ফেললে সমরেশ? তোমায় প্রণাম করি আর ভাবি, আহা, তোমার পায়ের নিচে এই একটা অথর্ব জীবন কাটিয়ে দিতে পারতাম! ‘জ্যোৎস্নায় বর্ষার মেঘ’ পড়লাম। ভীষণ বিষাদমাখা একটা উপন্যাস। পরিবারের যে ছেলেটি কিংবা মেয়েটির কাঁধে পুরো পরিবারের ভার, তাঁদের বলছি, জীবনে যদি মাত্র ১০টি বাংলা উপন্যাস পড়ার সুযোগ থাকে, আমি আপনাকে এই বইটি আপনার পড়ার তালিকায় রাখতে বলবো। বুক ফেটে কান্না পাচ্ছে। কাঁদছিও। শেষ এমন অনুভূতি হয়েছিল ঋত্বিক ঘটকের ‘মেঘে ঢাকা তারা’ দেখার পর।

পাঁচ। মেয়েদের সংস্পর্শে এলে সবচাইতে সত্যবাদী ছেলেটিও মিথ্যুক হয়ে যায়। এর উল্টোটাও সত্য।

ছয়। ব্রাজিলকে সাপোর্ট করি বলে চাকরিতে আমার বেতন বেড়েছে কয়েক গুণ। আপনি আর্জেন্টিনাকে সাপোর্ট করে জীবনে কী পেলেন? আর্জেন্টিনা বেকারদের চাকরি দিয়েছে? নাকি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়িয়ে দিয়েছে? ব্রাজিল তো আমাদের সবই দিল, আর আর্জেন্টিনা আপনাদের কী দিল? আমরা ব্রাজিলের নুন খাই বলে ব্রাজিলের গুণ গাই, ব্রাজিলের জন্য খুনোখুনি পর্যন্ত করতে রাজি! কিন্তু আর্জেন্টিনার প্রতি আপনাদের এমন অন্ধ আনুগত্যের কী কারণ? এই যে আপনারা আমাকে সম্মান করেন, ভালোবাসা দেন, ফলো করেন, আমাকে পড়েন—এসব ধুয়ে পানি খেয়েই তো এখনো বেঁচে আছি! মাঝেমধ্যে যে ওরকম আনফলো, অসম্মান, ঘৃণা করার ভয় দেখান, এই গরীবের জন্য কি একটুও দয়ামায়া হয় না আপনাদের? আপনারা আমাকে আইডল না কী চুল জানি বলে, ওইটা না মানলে আমি যে মরেই যাবো! আপনারা আমার পোস্ট না দেখলে আমি যে স্প্রাইট দিয়ে ভিজিয়ে সুইসাইড খেয়ে বসে থাকবো! প্লিজ প্লিইজ প্লিইইজ আমার পুরুষ ও মহিলা জানেমানগণ, অমন করে আর কক্খনো বলবেন না, একেবারে বুকের ভিতরে এসে লাগে! আপনি আমার ওয়ালে না এলে আমি যে পথের ভিখিরি হয়ে যাবো!

সাত। ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। আজকের বহু কষ্টে হার এড়ানো ম্যাচ আর্জেন্টিনার সমর্থকদের জন্য ঈদ উপহার। আর্জেন্টিনার সমর্থকদের হৃদয়ের আবেগ আমাদের বারবারই কাঁদায়। জানি, হয়তো আজ ছেলেটি বেকার বলে মেয়েটির অন্য কোথাও বিয়ে হয়ে যাবে, হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস বাদে অন্য সব জায়গায় সবসময়ই এমন হয়ে আসছে, হবেও; তবু…… মেয়েটির ভালোবাসায় তো কোনো খাদ ছিল না! মেয়েটি এমনি করে ভালোবেসেই যাবে আর টিস্যুর ব্যবসা বাড়তেই থাকবে।

আইসল্যান্ড, উই লাভ ইয়োর ডিফেন্স, উই লাভ ইয়োর গোলকিপার। থ্যাংক ইউ ফর দ্য লাভলি গেম! ভায়ারা, তোমাদের জন্য টুপিটা খুলে রাখলাম। চিয়ার্স!!

প্রিয় মেসি, ঈদ মুবারক। আসেন, কোলাকুলি করি। আজ আপনাকে দেখে আমার সেই বন্ধুটির কথা বারবার মনে পড়ে যাচ্ছিল, যে পাঁচবার বিসিএস ভাইভা বোর্ড ফেস করেও ভাগ্যদোষে চাকরি পেল না। জানি, ডিবক্সের শট আর মেয়েদের মন—দুটোই বড় গোলমেলে, তবে ফ্রিকিকগুলো? চৌধুরী সাহেব, ইউ হ্যাভ টু বুঝতে হবে, ফ্রিকিক তো আর অতো ফ্রি জিনিস না! আর্জেন্টিনার ভক্তমণ্ডলী! আজ বড় বাঁচা বেঁচে গেছেন! সবাই মিলে কেক দিয়ে কোক খান, উদযাপন করেন! ধন্যবাদ। আবার আসবেন।

মেসি, নেইমার—আগে ভাল খেলতেন, এখন ভাল অভিনয় করেন।

আট। আমাদের সময়ের (২০০২ সাল) এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ২৭.০৯%, যখন ‘নুডলস কিনলেই বাটি ফ্রি, পরীক্ষায় বসলেই এপ্লাস ফ্রি’-এর যুগ ছিল না। আহা, এই ২৭.০৯%-এ আমিও আছি!! বড়ই সুখের বিষয়, বাংলাদেশ এই অথর্ব জেনারেশনের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে। এখন এদেশে একদম সব্বাই অ্যাত্ত অ্যাত্তগুলা মেধাবী! ঈদ মুবারক।

নয়। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর একটা কথা আমার খুব প্রিয়: “You will go and say that I have a big head, but when you’re at the top, it’s normal that you’re criticised. … I am the best player in history, in both good and bad times.” ওরা কোথায়, যারা বলে, অহংকার পতনের মূল? আরে বাবা, বিনয়ও কি গর্দভ আর স্টুপিড-দের পতনের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে? বরং শুধরে বলুন, অক্ষমের অহংকার অক্ষমের পতনের মূল।

দশ। যে মানুষটা একসময় সম্পর্ক গড়তে মরিয়া ছিল, সেই মানুষটাই আবার সম্পর্ক ভাঙতে মরিয়া হয়ে ওঠে! একই মানুষ! তবু কেন? নতুনের টানে? নাকি না-পাওয়া কোনো পুরনোর মোহে? নাকি যে পুরনো বর্তমান, তার মধ্যে আর নতুন কিছু আবিষ্কার করার নেই বলে? সে চলে গেছে। আমি যে খুব আটকে রাখতে চেয়েছিলাম, তা নয়। যেতে দিয়েছি সহজেই। তবু কেন তার জন্য এত শূন্যতায় বুকটা কাঁদে? পুরুষ নাকি কাঁদে না! কারা বলে একথা? যে পুরুষ ভালোবেসেছে, তার কাছে ওদের পাঠিয়ে দাও! মানুষ বিপরীত পৃথিবীতে বাঁচে। তাকে বিপরীত পৃথিবীতে বাঁচতে হয়।

এগারো। আহা, সুমনা হক! উনার কণ্ঠে জিঙ্গেলগুলির কথা মনে আছে? আমাদের ছোটবেলার কত্ত ঝকঝকে সব অ্যাড! ☺️ (কমেন্টথ্রেডে লিংক দিলাম।) এই গানটা (মায়াবী এ রাতে গোপনে দু’জনে……..) শুনলে উনাকে অনুভব করা যেন! কত হাজারবার শুনেছি! আমার ছোটবেলার ক্রাশ!

বারো। নরসুন্দরের দোকানে সুন্দরনর হওয়ার জন্য অপেক্ষা করি।

তেরো। দৃষ্টি প্রদীপ জ্বেলে খুঁজেছি তোমায়। কী ভীষণ রকমের জ্যান্ত একটা গান!! আহা, একসময় কত ভাল গান তৈরি হত! (আরো কিছু ভাললাগা পুরনো গান কমেন্টে দিচ্ছি।)

ভাবনা: তিনশো চল্লিশ

…………………………………

এক। যে জাতি কোনো মেয়ে হেসে তাকালেও ধরে নেয়, মেয়েটি তার প্রেমে পড়ে গেছে, সে জাতি কেউ ফ্রেন্ডলি আচরণ করলে উনাকে তার ইয়ারদোস্তো ভেবে ফেলবে, এটাই স্বাভাবিক।

দুই। কখনো-কখনো ভুল মানুষটিই তোমাকে ঠিক জায়গায় পৌঁছে দেবে।

তিন। বউ বলে কিছু নাই, বউ একটি মিডিয়ার সৃষ্টি।

চার। The more I know about the boys, the more I find myself an angel. The more I know about the girls, the more I find myself an idiot.

পাঁচ। আপনি ঠাণ্ডা মাথায় খুনও করতে পারবেন, কিন্তু বিয়ে করতে পারবেন না। বিয়ে করার সময় উটকো লোকের অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রণা আপনাকে বিচলিত করবেই।

ছয়। ফ্রিতে দুধ খেতে চাও তো গরুর কাছে যাও, গোয়ালার কাছে নয়।*

*শর্ত প্রযোজ্য। কী শর্ত? গরুটিকে আগে পয়সা কিংবা কিছুর বিনিময়ে কিনতে হবে, ওটির যত্ন নিতে হবে। মাথায় এও রেখো, কেনা গরুও সানন্দে দুধ দেয় না, দুধ নেয়ার কায়দা জানতে হয়। গরুকে সময় দাও, দুধ পাবে। বলদকে সারাজীবন দিয়ে দিলেও গোবর ছাড়া আর কিছুই পাবে না।

সাত। চলছে উত্তম-যাপন! শঙ্খবেলা (১৯৬৬) দেখলাম। লতা-মান্না’র ‘কে প্রথম কাছে এসেছে’, লতার ‘আজ মন চেয়েছে’ গান দুটো এ মুভির। এরপর দেখলাম, নগর দর্পণে (১৯৭৫)। ভাল কাহিনি। এ মুভিতে নিজেকে একটুখানি পেলাম বোধ হল। এখন দেখছি, যদি জানতেম (১৯৭৪)। এ মুভিতে সৌমিত্রও আছেন! (আমার জানামতে) উত্তম কুমার ও সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় দুইজনই আছেন, এমন মুভি ৫টি। সেগুলির মধ্যে যদি জানতেম (১৯৭৪) একটি। উত্তম-যাপন আরো চলবে! হয় একা থাকব, নতুবা ভাল কিছুর সাথে! অর্ডিনারির সান্নিধ্য মানুষকে অর্ডিনারি করে দেয়।

ম্যায় শায়র তো ন্যাহি। এই মুভির আরো একটা চমৎকার গান কমেন্টে দিলাম। সুরে ভেসে যাক কষ্ট।

আট। চুম্বন, ক্ষণিকের যে সুখ—এটাও তো অচেনা কারো কাছ থেকে প্রথম আলাপেই চেয়ে ফেলা যায় না। লোকে কত ভণিতায় ফ্রি চুমু পায়! (অবশ্য পেইড কিস হলে ভিন্ন কথা!) আর সঠিক ক্যারিয়ার প্ল্যানিং তো সারাজীবনেরই সুখ এনে দিতে পারে!—এটা কীকরে আপনি অচেনা কারো কাছ থেকে প্রথম আলাপেই চেয়ে ফেলেন দুম করে? (তাও ফ্রিতেই?) এমন আশাওয়ালা মাথামোটা বেআক্কেল নিষ্পাপ বলদ লইয়া এ জাতি কী করিবে!

নয়। উত্তম-সুপ্রিয়ার সূর্য্যশিখা (১৯৬৩) দেখছি। মুভির একটা দৃশ্যে ঘটনাচক্রে উত্তম কুমার (ডাক্তার দীপ্ত রয়) সুপ্রিয়া দেবী (অচেনা বোস)’র বাসায় যান। (তখনো উনাদের মধ্যে প্রেম হয়নি।) সুপ্রিয়া দেবীর বাসার ড্রয়িংরুমের এককোণায় একটা ম্যান্ডোলিন ছিল, যেটা সুপ্রিয়া দেবী বাজানো শিখবেন বলে কিনেছিলেন, কিন্তু কখনো শেখা হয়নি। তো সুপ্রিয়া দেবী ভেতরের রুমে গেলে উত্তম কুমার ম্যান্ডোলিনটিতে অপূর্ব সুর তুলতে থাকেন, যা শুনে সুপ্রিয়া দেবী মুগ্ধ হয়ে উত্তম কুমারের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। উনাদের আলাপ হতে জানা যায়, উত্তম কুমার একসময় সখ করে ম্যান্ডোলিন বাজাতেন। এইটুকু দেখে মাথায় এল, আহা, আমি যদি অমন কোনো সুপ্রিয়া দেবীর ড্রইংরুমে গিয়ে অপেক্ষা করতাম, তবে সেখানে ঢোল বাদে অন্য কোনো বাদ্যযন্ত্র থাকলে আমার পক্ষে নায়িকাকে মুগ্ধ করার কোনো উপায়ই থাকত না!

দশ। কাল থেকে দেখলাম: উস্তাদ হোটেল (২০১২) বোরাত (২০০৬) ট্রি উইদাউট লিভস্ (১৯৮৬) শেষ অঙ্ক (১৯৬৩) চিড়িয়াখানা (১৯৬৭) পিয়াসা (১৯৫৭) এখন দেখছি: সূর্য্যশিখা (১৯৬৩) (নামের বানানটা ‘সূর্য্য’ হিসেবেই আছে। বাংলা বানানে কোনো বর্ণের সাথে য-ফলা আর রেফ একসাথে বসে না—এই নিয়মটা তখন ছিল না।)

এগারো। বাঙালি— মধু খেতে দেয় কিছু না পেয়েই, মধু খেতে চায় কিছু না দিয়েই!

বারো। চট্টগ্রাম কলেজে পড়ার সময় বাংলা ভাষার প্রতি অগাধ নেশা থেকে হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বঙ্গীয় শব্দকোষ’ (২ খণ্ড) কিনেছিলাম। তখন আমি ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে। এখনো মনে আছে, কেনার সময় চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লার জেনুইন লাইব্রেরি’র দোকানি জিজ্ঞেস করেছিলেন, “কলেজের লাইব্রেরির জন্য কিনছ?” “না, আমার নিজের জন্য!” শুনেই উনি “কীইইইই? তুমি এই বই নিয়ে কী করবে?” বলে আমার দিকে চোখ বড়বড় করে তাকিয়েছিলেন। লোকে আলাদা কিছু দেখতে ও মানতে অভ্যস্ত নয়। ওই বয়সে অতো দামি একটা ‘অদরকারি’ বইকেনার টাকা দেয়ার সময় মা কোনো প্রশ্ন করেননি। মাকে বলেছিলাম, “মা, বইটা আমার খুব দরকার। এবারের পুজোয় কিছু কিনব না। সে টাকা দিয়ে আমাকে বইটা কিনে দাও।” মা হেসে বলেছিলেন, “বইটা আগে কিনে ফেল, পুজো আসুক, দেখা যাবে।” (পরে জেনেছি, মা বাবার কাছ থেকে একটা পছন্দের শাড়ি কেনার জন্য টাকা নিয়েছিলেন ওই সময়ে, শাড়ি না কিনে সে টাকা উনি আমার হাতে তুলে দিয়েছেন।) সে অভিধানের পাতা উল্টাতাম, ঘণ্টার পর ঘণ্টা শব্দের সাগরে ডুব মেরে থাকতাম, আর অপার বিস্ময়ে ভাবতাম, এতটা অধ্যবসায়ী মানুষ কীকরে হয়! কত পরিশ্রম করে প্রণেতা এমন কাজ করেছেন! উনার পাণ্ডিত্যের প্রতি সবসময়ই শ্রদ্ধাবনত হয়ে থাকতাম। এমন মানুষই ছিল আমার চোখে হিরো, সেলিব্রিটি, স্মার্ট মানুষ। যাঁর মাথায় তেমন কিছু নেই, সে ব্যক্তি বাহ্যিকভাবে যত আকর্ষণীয়ই হোন না কেন, তাঁর প্রতি আমার বিন্দুমাত্রও মোহ বা শ্রদ্ধাবোধ কাজ করত না, এখনো করে না। সেই তখন থেকেই অক্ষম কারো দম্ভ আর ঈর্ষা আমাকে খুব হাসায়! রবীন্দ্রনাথের অনুপ্রেরণায় হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় এমন একটি প্রায়-অসাধ্য কাজ সম্পন্ন করেছিলেন। তাঁর কাছে বাঙালির অশেষ ঋণ। তাঁর জীবনের ছায়ায় লেখা বুদ্ধদেব বসুর গল্প ‘একটি জীবন ও কয়েকটি মৃত্যু’ (১৯৬০)-কে সেলুলয়েডের ফিতেয় রেখেছেন রাজা মিত্র। একটি জীবন (১৯৮৮) তাঁর ক্যারিয়ারের প্রথম কাজ। সৌমিত্রের অপূর্ব অভিনয়ে একা একটি মানুষের নিষ্ঠা, ত্যাগ ও সংগ্রাম দেখে অভিভূত হয়ে গেছি! স্বপ্নের প্রতি একান্ত অনুরাগ মানুষকে পারিপার্শ্বিক জগত নিয়ে একেবারেই নির্লিপ্ত করে দেয়—একেএকে কন্যা, পুত্র, স্ত্রীর মৃত্যুও তাঁর যাত্রা থামাতে পারেনি, তিনি যেন বেঁচে ছিলেনই কেবল স্বপ্নপূরণের জন্য। এখন দেখছি আদালত ও একটি মেয়ে (১৯৮২)

তেরো। নতুন পাতা (১৯৬৯) দেখলাম। এমন সাবলীল মুভি খুব বেশি দেখিনি। পথের পাঁচালী (১৯৫৫), সুবর্ণরেখা (১৯৬৫), অপরাজিত (১৯৫৬) দেখলে যেমন অনুভব হয়—আজো………’নতুন পাতা’ দেখার সময় তেমনই অনুভব করেছি। এত সারল্যমাখা এই মুভির নামটা পর্যন্ত আজকের আগে জানতাম না! আসলে দামি রত্ন আড়ালেই থেকে যায়। দীনেন গুপ্তর এই মুভিটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিল। খুব কাকতালীয় একটা ব্যাপার ঘটল–আগে থেকে জানতাম না, কীভাবে যেন হয়ে গেছে! আজকে যে দুটো মুভি মনে রেখাপাত করেছে, সে দুটো মুভির কাহিনি এসেছে একই ঘর থেকে, লেখক স্বামীর ‘আপন’ লেখিকা স্ত্রীর লেখা থেকে! এটা যখন মাথায় এল, খুব মজা পেয়েছি। নতুন পাতা (১৯৬৯) বানানো হয়েছে প্রতিভা বসুর কাহিনি অবলম্বনে একটি জীবন (১৯৮৮) বানানো হয়েছে বুদ্ধদেব বসুর কাহিনি অবলম্বনে দুটো মুভিই মাস্টারপিস! এমন দম্পতির কথা মাথায় এলেও শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে আসে! ভাল কথা, আদালত ও একটি মেয়ে (১৯৮২) দেখে না-দেখলে-মিস-হয়ে-যাবে টাইপের কিছু মনে হয়নি। ঘুম, ঘুম থেকে জাগল………আসি!

ভাবনা: তিনশো একচল্লিশ

…………………………………

এক। যত যত্ন, তত যন্ত্রণা। এরই নাম ভালোবাসা।

দুই। A Peck on the Cheek (2002) দেখলাম। তামিল মুভি। অরিজিনাল টাইটেল Kannathil Muthamittal; সিনেমাগুরু মণি রত্নমের লেখা, উনারই ফিল্মোগ্রাফি, উনারই পরিচালনা। এমন অসাধারণ কাজ, অনুভব করার মত! দেখুন, ভাল লাগবে। অনেককেই দেখি, মুভির ডাউনলোড লিংক চেয়ে বসেন কমেন্টথ্রেডে। সিরিয়াসলি, আপনারা এমন খ্যাতমার্কা অলস কেন? একটু স্মার্ট হলে কী হয়! টরেন্ট আছে কী করতে?

এখন দেখব মালায়ালাম মুভি Manichithrathazhu (1993)। ওদের মতন করে আমরা ভাবতে পারি না, তাই ওদের কাছাকাছিও কিছু আমরা বানাতে পারি না! সুন্দর কাজের প্রথম ধাপ—সুন্দর ভাবনা। যে সুন্দর করে ভাবতে জানে না, তার পক্ষে সুন্দর করে কাজ করা অসম্ভব।

তিন। Mucize (2015) দেখলাম। খুব ভাল লাগল। ভালোবাসায় অসীম শক্তি আছে—সে শক্তি, অনেকটাই অসম্ভব যা, সেটাকেও সম্ভব করে দেয়! মুভির শেষ ডায়লগটা মনে গেঁথে গেছে………আহা!

মা: আজিজ, তুমি কথা বলতে পারছ! ঈশ্বরকে ধন্যবাদ!

আজিজ: মা, আমি কথা বলতে পারি।

………………………………………………………………

বাবা: তুমি এখন পুরোপুরি সুস্থ হয়ে গেছো! সার্জারি করিয়েছ?

আজিজ: না, বাবা। আমি………….(স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে) আমি আমার স্ত্রীর প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম! আজিজের চরিত্রে যিনি অভিনয় করেছেন, তাঁর অভিনয় দেখে বেকুব হয়ে গেছি! আহা, আমাদের যদি এমন একজন অভিনেতা থাকত!!! এখন দেখছি La La Land (2016)।

চার। আমন্ত্রণ জানাই, ময়ূরাক্ষী (২০১৭) দেখুন। এ মুভিতে আমি আমার বাবাকে পেলাম। হয়ত আপনিও পাবেন। একজন সৌমিত্র এ বয়সেও কীকরে এতটা গ্রেট হয়ে থাকেন, সত্যিই বুঝতে পারি না। অমন স্মার্ট আমরা কেউই নই, কখনো হতে পারবোও না।

পাঁচ। এমন কি, যে-রেকর্ড কম্পেনিগুলো রবরবা ব্যবসা করেছিলো নজরুল-গীতির রেকর্ড প্রকাশ এবং বিক্রি করে, সেই কম্পেনিগুলো তাঁর চরম বিপদের দিনে বিন্দুমাত্র সাহায্য করেনি, অথবা তাঁর খোঁজখবরও নেয়নি। যেসব প্রকাশক তাঁর বই বিক্রি করে নিজেদের আর্থিক অবস্থা বদলে ফেলেছিলেন, তাঁদের সম্পর্কেও একই কথা বলা যায়। —গোলাম মুরশিদ, বিদ্রোহী রণক্লান্ত: নজরুল-জীবনী, পৃষ্ঠা ৪৮১

ইতিপূর্বে বলেছি যে, নজরুল অমন স্থায়ী এবং দুরারোগ্য রোগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ার পর গ্রামোফোন কম্পেনির কর্তাব্যক্তিরা এবং শিল্পীরা কবির প্রতি নিষ্ঠুর অবহেলা দেখিয়েছিলেন। কবি অসুস্থ হওয়ার পরবর্তী প্রায় দু দশক গ্রামোফোন রেকর্ডের ক্ষেত্রে যা ঘটেছিলো, তা থেকে এমন মনে করলে খুব ভুলের হবে না যে, গীতিকার-সুরকার নজরুল অসুস্থ হওয়ায় তখনকার অপ্রধান এবং উঠতি গীতিকার-সুরকারেরা আসলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলেন। —প্রাগুক্ত উৎস, পৃষ্ঠা ৪৯৭

শুভ জন্মদিন, নজরুল। আমাদের আচরণে মনে কোনো কষ্ট রেখো না, তোমায় বড় ভালোবাসি বলেই তো আঘাত করি! অকৃতজ্ঞতাকে বাদ দিলে আমাদের অস্তিত্বই-বা কোথায়, বলো! তুমি অমন করে চলছিলে বলে আমাদের চলাটা কারুর চোখেই পড়ছিল না, তাইতো তুমি থেমে যাওয়ায় খুশি হয়েছিলাম খুউব! এতে কতটা লাভ, সে হিসেব মহাকালই দিয়ে দেয়, দিয়েছে, দেবে!

ছয়। ছাগলের জন্য বেড়া লাগে, স্যার।

সাত। এখন দেখছি……মেমসাহেব (১৯৮৩) এরপর দেখব………অগ্নীশ্বর (১৯৭৫) ঘুম না এলে………চালচিত্র (১৯৮১) লেখা আর পড়ার ক্লান্তি কাটাতে মুভি।

বহুদিন পর কোনো মুভি দেখে ভীষণ কাঁদলাম। অগ্নীশ্বর (১৯৭৫)। এ মুভি এতদিন দেখিনি!

দেখছি, তিন ভুবনের পারে (১৯৬৯) (তনুজাকে দেখছি, মাথা ঘুরছে; মাথাকে আরো ঘুরতে দেয়ার লোভে খুব মন দিয়ে দেখেই যাচ্ছি………) দেখব, জয় জয়ন্তী (১৯৭১) আমার কালকের পোস্টের পর কেউ অগ্নীশ্বর (১৯৭৫) দেখেছেন? কেমন লাগল? না দেখলে অবশ্যই দেখুন। আমার বিচারে, উত্তমকুমারের সেরা ৫টি মুভির একটি ‘অগ্নীশ্বর’।

আট। (সম্ভবত) বাংলাদেশের সেরা রসমঞ্জরী গাইবান্ধা মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের রসমঞ্জরী আগের মত আর খেতে পারি না, একবসায় মাত্র আধা কেজি সাবড়ালাম। আহা, অমৃত! ছোট্ট একটা জীবন—মিষ্টি খেয়েই দিব্যি কাটিয়ে দেয়া যায়! কী বলেন!

নয়। আমার দেখা সেরা ৫টি অ-বাংলা অ-হিন্দি ভারতীয় মুভি: Drishyam (2013) (এই মুভির কথা ভাবলে এখনও নিঃশ্বাস আটকে আসে………এমন মুভিও মানুষ বানাতে পারে!) Charlie (2015) Anbe Sivam (2003) Premam (2015) Pushpak (1987)……….এখন দেখব Sairat (2016)।

দশ। To have anything in the world, you need either money or a reason. If you don’t have any of those 2, don’t expect to have it.

এগারো। যার কাছ থেকে আমি কখনোই উপকৃত হইনি, সে ভাল। যার কাছ থেকে আমি আগের তুলনায় কম উপকৃত হচ্ছি, সে খারাপ; অতআএব, তাকে আঘাত করো।

এমন জাতি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি,

যত অকৃতজ্ঞের খনি সে যে আমার জন্মভূমি!

বারো। শুনলাম, Berklee College of Music-এর Berklee Indian Ensemble পরিবেশিত জিয়া জালে।

রবীন্দ্রনাথের ছিন্নপত্র-য়েই বোধহয় পড়েছিলাম ………………একটা দুর্জ্জয় খাঁদা নাকওয়ালী পাহাড়ি মেয়ে…………এমন কোনও অংশ। এ গানের দুর্জ্জয় লম্বা নাকওয়ালী মায়াবী মেয়েটার প্রেমে পড়ে গেছি, আরও পড়ে যেতে ইচ্ছা করছে…………। গানটা এ নিয়ে তিনবার শুনলাম, এখনও শুনছি, আর বারবারই নিজেকে প্রবোধ দিয়ে যাচ্ছি…………বাপ্পি, কাম অন! সে তোমার নয়…………প্রণাম নিয়ো, হে ঈশ্বরী!

অ্যালিজী! আমার তরুণবেলার ক্রাশ! আহা, সে সময় কত কোটিবার যে দেখেশুনে ফেলতাম উনার কণ্ঠে ‘লা ইস্লা বনিতা’ গানটা!

গভীর হয়েছে রাত, পৃথিবী ঘুমায়। কত নির্ঘুম রাত কেটে গেছে এ গানটা বারবার শুনে…..এখন শুনবো, তপন চৌধুরীর যেতে যেতে কেনো পড়ে বাধা…..পুরনো গান পুরনো স্মৃতি এনে দেয়।

তেরো। যখন লড়াইটা নিজের মানুষের সাথে, তখন হেরে যাওয়া জরুরি। যখন লড়াইটা নিজের সাথে, তখন জিতে যাওয়া জরুরি।

চৌদ্দ। যেতে পারি

যে-কোন দিকেই আমি চলে যেতে পারি

কিন্তু, কেন যাবো?

— শক্তি চট্টোপাধ্যায়

দিতে পারি

যে-কোন মানুষকেই আমি সময় দিতে পারি

কিন্তু, কেন দেবো?

— সুশান্ত পাল।

এই ‘কেন’টা বোঝার নামই ম্যাচ্যুরিটি।

পনেরো। পণ্ডিত তুষার দত্তের কণ্ঠে না মিটিতে সাধ মোর নিশি পোহায়……… বাঁচতে হলে বাঙালির নজরুলকে লাগবেই। আহা, কী বৈভব! কী সম্মোহন!

ষোলো। গাধার সাথে গাধা, সিংহের সাথে সিংহ। গাধার সাথে হেঁটে আর যা-ই হোক, কখনও সিংহ হওয়া সম্ভব নয়।

সতেরো। কিছু অসামান্য মানুষ আছেন, যাঁদের কথা মাথায় এলে মনের অবচেতনেই মাথা নত হয়ে যায় তাঁদের পায়ের ধুলায়। কত আনন্দ আর বিস্ময় দিয়ে তাঁরা আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছেন! এমন মানুষের প্রতি আমার এক ধরনের অন্ধ মোহ কাজ করে, ফলে তাঁদের নিয়ে কোনও অতিপণ্ডিত কীটেরও কটূক্তি আমার মাথায় রক্ত চড়িয়ে দেয়। এঁদের দেখলে মনে হয়, কেবল সাধনায়ই হয় না, সাথে কিছু প্রতিভাও লাগে। একলক্ষ পণ্ডিতদের চাইতেও একজন জিনিয়াস বেশি দামি। ভালোবাসা। কৃতজ্ঞতা। প্রণাম। শুভ জন্মদিন, গুরু সত্যজিৎ!

আঠারো। Veer-Zaara দেখলাম। দারুণ ছোঁয়! কয়েকটা ডায়লগ তো রীতিমতো নাড়িয়ে দেয়! হৃদয়ের ব্যায়ামের জন্য বেশ ভাল মুভি।

উনিশ। দামি কিছু পেতে হলে দামি কিছু ছাড়তে হয়।

বিশ। বেশিরভাগ লোকই এমন কাউকে পেলে খুশি হয়, যার সাথে সে ইচ্ছেমত অভদ্র আচরণ করতে পারবে আর অমন আচরণের জবাবে সে সবসময়ই কেবল ভদ্রভদ্র মিউঁমিউঁ পাবে। নিজে বেয়াদবের মতো আচরণ করলেও সে অন্যের প্রতিক্রিয়াটাই কেবল দেখে, নিজের ক্রিয়াটার কথা মাথায় আনতে চায় না। মুখে যা-ই কিছু বলুক না কেন, লোকে মেরুদণ্ডহীন সম্মত বন্ধুই বেশি পছন্দ করে।

ভাবনা: তিনশো বিয়াল্লিশ

…………………………………

এক। যাব কোয়ি বাত বিগাড় যায়ি…….এই গানটা বারবার শুনতে থাকি, আর নিজেকে বারবার বলতে থাকি……….না, ও আমায় ভালোবাসতো না, আমিও ওকে ভালোবাসতাম না, ভালোবাসি না, ভালোবাসবোও না। এসবের কোনও মানে হয়? গানটা কি ও এখনো মনখারাপ হলে আগের মতো শোনে? শুনতেই থাকে? …………আর বরকে পাঠিয়ে বলে, এই রাগি হনুমান, নাও, শোনো!

ও যা ইচ্ছে করুক গিয়ে! আমার কী! আমিই বা কেন এতকিছু ভাবছি? আশ্চর্য! এতো বেহায়া কেন আমি?

দুই। দুই ধরনের লোকের ব্যাপারে সাবধান থেকো: এক। কেবল জিভ ব্যবহার করে কথা বলে যারা দুই। কেবল কান ব্যবহার করে শোনে যারা।

তিন। আমরা যারা বিসিএস ক্যাডার হতে পারাটাই জীবনের সবকিছু ভাবি, তাদের জন্য সুবীর স্যারের জন্য শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, শুভ কামনা দুইদিন ছুটি নিয়ে এক সপ্তাহের জন্য চট্টগ্রাম আসছি। আমার এলাকার এই মানুষটির কথা পড়ে মাথা নত হয়ে এল, আপনাদের সাথে শেয়ার করতে ইচ্ছে হল।

চার। এ পারে মুখর হল কেকা ওই…….ইমন, জানো, আমি ভয়েই দেখি-শুনি না তোমার এই গানটা! পুরোই নেশা ধরিয়ে দেয়! কতবার যে শুনে ফেলি! ভালোবাসা জেনো!

ভেজা হাওয়ার সাথে এই গানটা ছোঁয়া যায় যেন! শরীর আর মন দুইই জেগে ওঠে! মন কী যেন পেতে চায়! এ ঠোঁটযুগলে এক ফোঁটা বৃষ্টির জল নাকি!

আকাশ ঝরছে, চোখ নেশাচ্ছে, কফি ধুমছে, খিচুড়ি ডাকছে! আহা!

পাঁচ। লিও রোজাসের El Condor Pasa…………আহা! এমন একটা সুর কয়েকটা মৃত্যুর চাইতেও সুন্দর!

ছয়। ঢাকো যত না নয়ন দু’হাতে………আহা, মেহদী হাসান! কী জ্যান্ত……………এখনও! (উনার কণ্ঠে আরও কিছু প্রিয় গান কমেন্টে দিচ্ছি।)

সাত। Toto Cutugno – L’Italiano (1983)

এককাপ কফির ধোঁয়ায় শুনতে বসে যান। গানটা অপরিচিত? ব্যাপার নাহ্! সুরটা তো পরিচিতই, তাই না! এখনো মনে পড়ছে না? নাশা ইয়ে প্যায়ার কা নাশা হ্যায়………

আট। ৭-৮টা ছেলের সাথে প্রেম করে বেড়ানো মেয়েটিও নিজ থেকে কোনও ছেলে তাকে নক করলে ছেলেটিকে ‘খারাপ’ ভাবে।

নয়। ভীষণ বিরক্ত হয়ে লিখছি। বাংলাদেশ এখনও প্রিপেইড কাস্টমারদের যথাযথ মূল্যায়ন করার পর্যায়ে পৌঁছায়নি। কীরকম? ধরুন, আপনি অনলাইনে বই অর্ডার করলেন। যদি বই হাতে পাওয়ার পর টাকা পরিশোধ করেন, নো প্রবলেম। আপনি দশটা বই অর্ডার করলেন, হয়ত ২টা পাওয়া গেল না। আপনি ৮টা বই হাতে পেয়ে সেই ৮টারই দাম পরিশোধ করবেন। কোনও ঝামেলা নাই। আর যদি বই হাতে পাওয়ার আগেই কোনোভাবে টাকা পরিশোধ করে দেন, তাহলে আপনার খবর আছে। ওরা বই পাঠাতে দেরি করবে। নিজ থেকে কোনও আপডেট তো জানাবেই না, উল্টো আপনি ওদের ফোন করলে ওরা এমন একটা ভাব দেখাবে যেন আপনি ওদেরকে টাকা দিয়ে ফেঁসে গেছেন। কিছু বই ওদের স্টকে না থাকলে স্বাভাবিকভাবে সেগুলি বাদে বাকি বইগুলি পাঠিয়ে দেবে আর যে বইগুলি পাওয়া যায়নি সেগুলির টাকা, যেটা আপনি অগ্রিম পরিশোধ করে দিয়েছেন, সেটা আপনাকে ফোন করেকরে আদায় করতে হবে, ওরা নিজ থেকে ততটা ফোন করবে না, কারণ টাকা যার হাতে যায় তার হয়ে যায়। যখন ওরা আপনাকে টাকাটা ফেরত দিচ্ছে বলে জানাবে, তখন ওদের ব্যবহারে আপনার মনে হবে, বড় করুণা করে টাকাটা ওরা ওটা ফেরত দিচ্ছে। প্রিপেইড পদ্ধতিতে অর্ডার করে দেখুন। অভিজ্ঞতা মোটামুটি এমনই হবে। আপনি বই হাতে পাওয়ার পর টাকা দিলে আপনাকে কোনও কথাই বলতে হবে না, বরং ওরাই আপনাকে স্যার স্যার করে টাকাটা গ্রহণ করবে।

আমার কথা হল, আমাকে কেন নগদ টাকা পরিশোধ করে এতো কৈফিয়ত দিতে হবে? আমি কি টাকা কম দিয়েছি? নাকি দেরি করে টাকা দিয়েছি? আমি কোনও এক প্রকাশনী থেকে রচনাবলি অর্ডার করেছিলাম। মিনিটের মধ্যেই টাকা পাঠিয়ে দিই, সাথে আমার ক্যুরিয়ার ঠিকানা। এরপর খেলা শুরু। ওদের ফোন দিই, ওদের পেইজে মেসেজ পাঠাই, আর ওরা এমন ভাবে কথা বলে যেন আমি একটা অপরাধ করে ফেলেছি। বিশ্বাস করুন আর না-ই করুন, ওদেরকে আমার ঠিকানা পাঠাতে হয়েছে চারবার! এরপর বইগুলি পাঠানোর জন্য অনুরোধ করে মনে করিয়ে দিতে হয়েছে অন্তত পাঁচবার। ওরা নাকি ভুলে গিয়েছিল! আমি বই-সংগ্রাহক, আমার লাইব্রেরির জন্য বইগুলি আমার খুব দরকার, বই পাঠিয়ে দিলে কৃতজ্ঞ হবো, এ জাতীয় কথাবার্তা বলতে হয়েছে বিনীতভাবে, বহু আগেই পুরো টাকাটা পরিশোধ করা সত্ত্বেও! অথচ যে বই হাতে পাওয়ার পর টাকা দেয়, তাকে কোনও কথাই বলতে হয় না। যে টাকা আগেই দিয়ে দেয়, সে ধরা খায়। এ দেশ ভদ্রলোকের দেশ না। কেন? কারণ, ওরা হাতে টাকা পেয়ে গেছে!

কাহিনী আরও আছে। আপনি যদি বই হাতে পাওয়ার আগে টাকা দিয়ে দেন, তাহলে আপনাকে ক্যুরিয়ার সার্ভিসের অফিসে গিয়ে বই নিয়ে আসতে হবে, আর যদি বই হাতে পাওয়ার পর টাকা দেন, তাহলে ওরাই আপনার কাছে বইগুলি নিয়ে আসবে; যদিও শিপিং চার্জ দুই ক্ষেত্রেই একই। অথচ আপনি বই হাতে পেয়ে টাকা পরিশোধ করলে কোনও সমস্যা নাই। বই ঠিক অবস্থায় আছে কি না দেখে যা বই পাবেন, তার মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন। আপনি অর্ডার করেছেন, কিন্তু এখনও টাকা দেননি, অতএব ওরাই আপনাকে ফোন করে খুব বিনীতভাবে বলবে, স্যার, আপনার অমুকঅমুক বই পাওয়া যায়নি, বাকিগুলি আমরা পাঠিয়ে দিয়েছি।

আরেকটা সমস্যার কথা বলি। যদি আপনি কম বই কিনেন, তাহলে আপনার তেমন কোনও ভোগান্তি পোহাতে হবে না। এ দেশের অনেক ব্যবসায়ীই এখনও বেশি পরিমাণে বিক্রির জন্য প্রস্তুত নন। আপনি বেশি পণ্য অর্ডার করবেন, সেক্ষেত্রে আপনার হওয়ার কথা ভ্যালুড কাস্টমার এবং কিছু বাড়তি সুবিধা পান না পান, অন্তত দ্রুত সেবা আপনার প্রাপ্য। বাস্তবে হয় এর উল্টো! আপনি দেরিতে সেবা পাবেন, সেখানে কিছু অব্যবস্থাপনাও থাকবে, কারণ একটাই: অতো বেশি পণ্য ডেলিভারি দেয়ার জন্য ওরা প্রস্তুত না। তবে অতো বেশি পণ্যের অর্ডার নিতে ওরা পুরোপুরিই প্রস্তুত! বোঝেন ঠ্যালা!

আমি গত একুশে বইমেলার সময় থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় চারশোর বেশি বই কিনেছি অনলাইনে। এবং বেশি বইকেনার কারণে বেশি পেইন পেতে হয়েছে। এ হল আমাদের দেশের কিছু ব্যবসায়ীর প্রফেশনালিজমের অবস্থা! এ দেশে লয়াল কাস্টমারদের বাড়তি সুবিধা দূরে থাক, প্রাপ্যটাই ঠিকভাবে দেয়া হয় না।

আপনি লয়াল কাস্টমার মানেই হল বাড়তি কিছু প্যারা অপেক্ষা করছে আপনার জন্য। আমি জিপি ব্যবহার করি সেই ২০০২ সাল থেকে। জিপি’র যত অফার, সবই নতুন ইউজারদের জন্য কিংবা যারা সিমটা অনেকদিন ইউজ না করে ফেলে রেখেছেন, ওদের জন্য। আরও কাহিনী আছে। আমি একমাসে যত টাকা রিচার্জ করি, অনেক ইউজার এক বছরেও তার চারভাগের একভাগও রিচার্জ করেন না। তবে ওরা কম ব্যবহার করার কারণে জিপি থেকে যে বাড়তি সুবিধা পান, আমি তার সিকিভাগও পাই না। ওরা এর নাম দিয়েছে প্রণোদনা। শালা, ফাজিলের ফাজিল! এ কালচার থেকে আমরা যত তাড়াতাড়ি বেরিয়ে আসতে পারব, ততই মঙ্গল। সবাই তো আর রাম-সাম-যদু-মধু টাইপের কাস্টমার না, তাই না? স্পেশাল কাস্টমারস শুড বি ট্রিটেড স্পেশালি। কোম্পানি যদি গ্রাহকসেবাটাই ঠিকভাবে দিতে না পারে, তাহলে সে কোম্পানি টিকবে কেমন করে?

দশ। রাস নারে তু, কাহেনা বোলে রাম……… শুনলে ভাল কিছু শোনাই ভাল। জীবন ছোটো তো! এ নিয়ে কতবার যে শুনে ফেললাম! ভাল কিছু সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে ইচ্ছে করে, তাই শেয়ার করছি। কিছু মেঘে আকাশ ঝরে, কিছু কণ্ঠে হৃদয় ঝরে। শিশুটির জন্য শ্রদ্ধায় মাথা নোয়ালাম, অহংকারের টুপিটা খুলে রাখলাম।

এগারো। The Cinematic Orchestra – Arrival of The Birds & Transformation………. সুরটি শুনুন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। বুকের ভেতরে জমেথাকা সমস্ত বরফ তুষারবৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়বে। কথা দিচ্ছি।

বারো। কিছু বেহালার সুর ওষুধের মতো। যেমন এটি। (Sound of an Angel) কিছু ওষুধ সুরের মতো। যেমন, বাবাকে, মাকে যে ওষুধ খেতেই হয়। দুটোই লাগে—বাঁচতে! এমন সুরের স্রষ্টারা আজীবন আনন্দে বাঁচুক!

বারো। এমন কয়েক টুকরো আঙুল ঈশ্বর আমার হাতের সাথেও জোড়া লাগিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। হায়, সে উপহার কখনো ঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারিনি! A Breathtaking Piano Piece – Jervy Hou সুরটা গিললাম, টুপিটা খুলে রাখলাম। শ্রদ্ধা। ভালোবাসা।

তেরো। টিনএজারদের দেখি। ওরা একদিন বড় হবে এবং কোনো এক Sushanta Paul-কে বলবে, ভাইয়া, আমি অনেক মেধাবী কিন্তু হতাশায় ভুগছি। কীভাবে আমি বিসিএস পরীক্ষায় প্রথম হতে পারি, শিখিয়ে দিন। একটা ফাউল ডাম্ব শ্যালো জেনারেশনের ছেলেমেয়েদের বাংলাদেশ বড় করছে। প্লিজ, বলবেন না, নিশ্চয়ই মিরাকল ঘটবে আর এরাই বিশাল কিছু হয়ে যাবে! মিরাকল ঘটে ঠিকই, কিন্তু প্রতিদিন ঘটে না, প্রতিজনের ক্ষেত্রে ঘটে না। প্রায়ই, মিরাকলও ঘটে কারণেই, অকারণে নয়। এদের দেখলে করুণা হয়। (উল্লেখ্য, পরামর্শ চাওয়ার টেক্সটটি ইংরেজি ভাষায় লিখলে তা পড়তে হবে খুব ভয়াবহ! স্টুপিডগুলা শুদ্ধ ইংরেজিতে এক লাইন লিখতে পারে না, আবার চাকরি চায়!)

চৌদ্দ। ম্যায় আগার কাহুঁ……..গানটা শোনার সময় মনে পড়ে গেল, এই মুভিটা রিলিজ হওয়ার পরপর ওম-শান্তি-ওম গ্লাসবল ডল বের হল, সেটার চাহিদাও ছিল খুব বেশি। বিভিন্ন সাইজের চাবিদেয়া গ্লাসবল ডল। চাবি দিলে বলের ভেতরে হাতে হাতরাখা শাহরুখ-দীপিকা ঘুরত, নাচত, আর এই গানের মিউজিক বাজত। আমাদের গিফটশপ দোভানা’তে এই গ্লাসবল ডল বিক্রি করেছি অন্তত কয়েক হাজার পিস। কাস্টমারদের সাথে কনভিন্সিং ওয়েতে (পটায়েপটায়ে) কথাবলা, কেনা গিফটটি প্যাকেট করে দেয়া, কিছু কিনুক না কিনুক, দোকান থেকে চলে যাওয়ার সময় হাসিমুখে থ্যাংকস বলে ‘আবারও আসবেন’ বলা-র দিন ছিল তখন–অন্য রকমের সেইসব দিন! ভাবলে আজও শিহরণ জাগে! আজ বুঝতে পারি, কারও চাইতে বড় হওয়ার প্রথম শর্ত—প্রথমে উনার চাইতে নিজেকে ছোট করে উপস্থাপন করতেই হবে!

পনেরো। ও এমন কী আর মেধাবী? ও কি এখনও বিসিএস ক্যাডার হতে পারসে? হুহ্!

ষোলো।

: চাকরি কেমন লাগে, দাদা?

: একদম চাকরির মতন।

: মানে, ভাল, না মন্দ?

: আমি গরীব মানুষ, গরীবদের কোনও ভালমন্দ পছন্দ থাকতে নেই। গরীবদের যা থাকে, তা হল প্রয়োজন।

সতেরো। শুনছি লতার কণ্ঠে আগার তুম না হোতে……. তুমি না থাকলে, প্রিয়, বেঁচে থাকার কী-ই বা আর অর্থ থাকত, বলো! (এমনই তো অর্থটা, না? আহা, হিন্দিটা বুঝতাম! কত মধুর গান আছে হিন্দিতে! কেউ একটু শিখিয়ে দিন না হিন্দিটা!)

আঠারো। আমার ছোটভাই Prashanta তার নতুন চাকরির প্রথম মাসের বেতন দিয়ে পাঞ্জাবি কিনে দিল। ওকে হয়ত অনেকে চেনেন, ভাল কবিতা লেখে।

উনিশ। (মুহম্মদ জাফর ইকবালের একটি লেখার জনপ্রতিক্রিয়ার প্রতিক্রিয়ায়) অনুগ্রহ করে লেখাটি ‘আবারও’ পড়ুন। স্যার যা বলেছেন, তার মধ্যে ভুলটা কোথায়? স্যারের বক্তব্য স্বচ্ছ, অকপট, যৌক্তিক। অনেকে স্যারের সম্পর্কে যাচ্ছেতাই বলে যাচ্ছেন, নিউজফিডে আসে, তাই জেনেছি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এ মূর্খ জাতির জন্য ‘আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে’ লেখার পর তার অর্থটা আর ভেঙে দিলেন না। আফসোস! আপনার আমার মতন কয়েক লক্ষ লোকের সস্তা কপিপেস্ট কমেন্টের চাইতে স্যারের একটা লেখা অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে। বাংলাদেশের মঙ্গল নিয়ে সত্যি যাঁরা এখনও ভাবেন, তাঁদের মধ্যে স্যার একজন। উনি যা লিখেছেন, তা আপনার আমার মত স্থূল বুদ্ধি নিয়ে চলা মানুষের পক্ষে বোঝা একটু শক্ত। তাই বলে ভুল বুঝে লাফাচ্ছি কেন? ওটা আমাদের কালচার বলে? আমরা শুধু অকৃতজ্ঞই নই, তদুপরি অসহায়, অতএব, সুবিধাবাদী। বেশিরভাগ অসহায় লোকের সুনির্দিষ্ট কোনও চরিত্র থাকে না। পরিতাপের বিষয়, অসহায় লোকদের সুস্থ বুদ্ধিও প্রায়ই লোপ পায়। আবারও অনুরোধ করছি, লেখাটি ‘আবারও’ পড়ুন। পুনশ্চ। বাংলাদেশ একটি অদ্ভুত দেশ। এখানে ‘কিন্তু’বিহীন কোনও আন্দোলন হয় না। কেন বলেছি এ কথা, সে কথা থাক।

বিশ। ফেসবুক ফ্রেন্ডশিপের চাইতে যে রিক্সায় চড়ি, সেটির চালকের সাথে ক্ষণিকের যে পরিচয়, সেটা বেশি জ্যান্ত।

ভাবনা: তিনশো তেতাল্লিশ

…………………………………

এক। ইন কেইস ইউ এক্সপেক্ট ট্রু লাভ অ্যান্ড লয়ালটি, ডোন্ট ম্যারি, হ্যাভ অ্যা ডগ ইনস্টিড!

দুই। আপনাদের নববর্ষের হৃদয়মথিত উপহারের ঠ্যালায় আমি বিহ্বল, বিব্রত, বিরক্ত। মাফ চাই, দোয়াও চাই। ভাইলোগ, এইবার পারলে কিছু কাগজটাগজ পাঠান। খালি দেখে আর পোষায় না, ছুঁইতে মঞ্চায়!

বিঃ দ্রঃ আমি চেকও রিসিভ করি।

তিন। André Rieu এবংGheorghe Zamfir এর পরিবেশনায় The Lonely Shepherd শুনুন, অনুভব করুন। জগতের আনন্দযজ্ঞে স্বাগতম! (সত্যিই শুনুন! জানি, এই ভিডিও থেকে বিসিএস পরীক্ষায় কোনও প্রশ্ন আসবে না, তবুও শুনুন।)

চার। কোটা-ব্যবস্থার বর্তমান কাঠামো বহাল রাখলে বা বাতিল/ সংশোধন করলে তা সংবিধানের কোনও ধারার সাথেই সাংঘর্ষিক হবে না, ভাই/বোন-রা! সংবিধান না পড়ে চিলের পিছে মিছেই ছুটবেন নাতো! ভবিষ্যৎ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীর কাছ থেকে এমন অবোধ আচরণ আমরা আশা করি না। যে ধারাগুলির রেফারেন্স দিচ্ছেন, সেগুলি আবারও পড়ুন। ভুলটা বুঝতে পারবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন, তা করা পুরোপুরিই সম্ভব। আসুন, আমরা ভাল কিছুর জন্য অপেক্ষা করি।

পাঁচ। একা থাকার চাইতে ভুল কারো সাথে থাকা অনেক বেশি নিঃসঙ্গতার জন্ম দেয়।

ছয়। ঘুমভেঙে Anoushka Shankar এর কণ্ঠে Raga Manj Khamaj শুনলাম।

মহাসমুদ্রের শত বৎসরের কল্লোল কেহ যদি এমন করিয়া বাঁধিয়া রাখিতে পারিত…………ওই যে গুরুদেব লাইব্রেরি নিয়ে কী যেন লিখেছেন না! এমন অসামান্য সুর এক-লাইব্রেরি বইয়ের সমান আনন্দ দেয়, প্রার্থনার সমান সুখ দেয়। আমি জানি না এমন একটা সুরের জন্য কতটা লিখলে সঙ্গত হয়। মানুষ এতটা প্রণম্যও হয়! আহা! এত অপূর্ব!! আর ওরা বলে কিনা ঈশ্বর আকাশে থাকেন!!

সাত। এলো দিল্লিতে নিজামউদ্দিন আউলিয়া। ইউটিউবে এ গানের যত ভার্সন আছে, সেগুলির মধ্যে, আমার কানে, ফকিরা ব্যান্ডেরটাই বেস্ট! ধন্যবাদ, তিমিরদা! তবে আমার শোনা সেরা ভার্সনটি আমার ছোটভাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের Fakir Saheb-এর কণ্ঠে, যা ইউটিউবে নেই। এই পাগলা নিজেই জানে না সে কী জিনিস!! যাদের কথা ভাবলে ভালোবাসা আর শ্রদ্ধায় আমার মাথা নত হয়ে আসে, ফকির তাদের একজন। ভাই, বহুদিন ধরে গানটা তোর কণ্ঠে শুনতে ভীষণ ইচ্ছে করছে! গানের শান্তি বড় শান্তি! একটু গেয়ে রেকর্ড করে পাঠাবি?

আট। First deserve that ‘এক্সট্রা-খাতির’, then expect it. As a human being, you deserve only ‘খাতির’ from another human being. Do remember, no one ever walks an extra-mile for you without some extra-reasons unless and until you are a friend, a near one, a relative, a colleague or a family member to them. Ask your heart, aren’t you in the same boat as well? Be honest, dear; of course, you are! Accept it. Rather, be thankful to everyone around you for everything you are getting from them though you neither deserve nor demand it. Well, maybe you need sunshine at a cold night for keeping yourself warm, but why should the sun shine for you at night without any reason? Don’t claim it, if you don’t deserve or can’t earn it. Come on! Be practical! Life is as it is, not as you dream it to be. A scorpion always stung, still stings, will sting forever. If you expect it to kiss you, it’s your problem, not its!

And another thing to remember: Please please please never ever market or publicize your emotions and sorrows. Trust me, almost no one really cares. Who cares, can do nothing for you; who can do something for you, does not truly care. As only you have walked in your shoes, only you know how they comfort or pain. Then what’s the use of revealing your pains to others, especially to a wrong person? It will only make you more vulnerable. People expect only a smile from you, not your tears. Maybe your tears mean a lot to you, but to others, they mean nothing! People are already busy with their own tears; no time to care about anyone else’s tears! Showing your tears to them is just killing your time. You think, your own pains are the greatest pains on earth, you are the unluckiest creature in the world, you deserve (!) immediate attention, let the world stop moving for the time being for solving your problem, bla bla bla…………. Hey kid! Stop whining! Enough is enough! You pain is ONLY your pain, you problem is ONLY your problem, your emotion is ONLY your emotion, your suffering is ONLY your suffering! When you suffer, only you know how it hurts! So, the better approach is, keep trying to get rid of it, or show them the meaning of being extra-kind to you. At the end of the day, everyone is a stranger to you except yourself.

নয়। বেশিরভাগ মানুষই, কিছুই না দিয়ে কিছু পেতে চেয়ে কিছুই পায় না। যা প্রাপ্য নয়, তা পেতে চাইলে কিছু দিতেই হয়—পার্থিব বা অপার্থিব। যা দামি, তা কখনওই এমনিই পাওয়া যায় না। যা এমনিই পাওয়া যায়, তা কখনওই দামি নয়। আমার নিজের অভিজ্ঞতা বলে, আমার যা দরকার, তা যার কাছে পেয়েছি, তাকে আমার এমন কিছু দিতেই হয়েছে, যা তার দরকার। এটা বোঝার আগ পর্যন্ত আমি সবসময়ই নির্বোধ ও পরাজিত ছিলাম। তো, ফ্রি লাঞ্চ বলে কি কিছু নেই? আছে। সেটা কেমন? যখন আপনার মাছভাত লাগবে, তখন আপনি পাবেন শাকভাত। ফ্রি! হ্যাঁ, মরে যাবেন না, বেঁচে থাকবেন ঠিকই, তবে তেমনিভাবে, যেমনিভাবে বাঁচতে আপনি চান না। আপনার জমি কর্ষণ করতে হবে। আপনার কাছে ছাগল আছে। গরু কেনার পয়সা বাঁচাতে আপনি ছাগল দিয়েই কাজ চালানোর ক্রমাগত চেষ্টা করে যাচ্ছেন, পারছেন না আর ছাগলটাকে সমানে পিটাচ্ছেন। ভেবে দেখুন, ছাগল দিয়ে তো আর হালচাষ হয় না, ছাগলেরই বা কী দোষ?

দশ। : মাথা নোয়াও, মাথা নোয়ানো প্র্যাকটিস করো! আরে ভাই, বাচ্চা না কাঁদলে তো মাও দুধ দেয় না। : বাচ্চা কাঁদে, কারণ বাচ্চার আর কোনও অপশন নেই। আমার তো আছে! মাথা না নুইয়ে অল্পে বাঁচাও আনন্দের।

এগারো। যারা নিঃসঙ্গতাকে ভয় পায়, তারাই নিঃসঙ্গ হয়ে যায় সবার আগে। হারিয়ে ফেলার ভয় যার যত বেশি, সে তত বেশি হারিয়ে ফেলে। ওদিকে, যে একা হাঁটতে চায়, তার হাত ধরে যেন পৃথিবীসুদ্ধ মানুষ টানাটানি করে। যে একা থাকতে চায়, তাকে একা থাকতে দিই। যে একা করতে চায়, তাকে একা করতে দিই। পৃথিবীতে চলার জন্য যারা অপরিহার্য, তাদের কেউই ওপরের দুই দলের কোনওটিতেই পড়েন না। ভালোবাসাহীনতায় বাঁচার চেয়ে অশান্তিতে বাঁচা বেশি যন্ত্রণার।

বারো। আপনার আবেগ, আপনার সংস্কার, আপনার নিয়ম, আপনার ধর্মাধর্ম, আপনার শখআহ্লাদ, সবই পালন ও পূরণ করুন নিজের টাকায়, অন্যের টাকায় নয়। টাকাপয়সা খরচের ক্ষেত্রে বাপকে আপন ভেবে বাপের টাকার শ্রাদ্ধ করে বেআক্কেলরা। বাপের টাকা, বাপের টাকা; আমার টাকা, আমার টাকা আর বাপের টাকা।

তেরো। যার যত অল্প, তার তত শোঅফ।

চৌদ্দ। First, learn to earn. Then, earn to learn.

পনেরো। কিছু ভারতীয় বন্ধুর আক্রমণাত্মক স্ট্যাটাস দেখে খুব কষ্ট পেয়ে কিছু কথা লিখতে ইচ্ছে করল: বীর হতে শিখুন। বীরকে পরাজিতের লাশের ওপর নেচে উৎসব করতে হয় না, ভায়া! ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, বীররা যে সবসময়ই জিতেছে, এমন নয়। তবে বীরের অভিব্যক্তি শেষ পর্যন্ত বীরোচিতই থেকে গেছে। আপনারা জয়ী হয়েছেন, এজন্য অভিনন্দন। বুকে হাত দিয়ে বলুন তো, খুব হেসেখেলেই এলাম, দেখলাম, জিতলাম স্টাইলে জয়টা এসে গেছে? শেষ বলটা পর্যন্ত বুক কাঁপতে থাকেনি? জিতেছেন, ভাল কথা। উল্লাস করছেন, আরও ভাল কথা। তবে এটা ব্যাপার কী, জানেন, নিজের মাকে বড় করতে অন্য কারও মাকে ছোট করতেই হয় না। আপনার মা আজকে পোলাও-কোর্মা রেঁধেছে, আমার মায়ের সাধ্যে নাহয় আজ শাক-ভাত বাদে আর কিছুই কুলোয়নি—তবু তো আমার মা। আপনার মায়ের বিত্ত আপনার কাছে যতটা গৌরবের, আমার মায়ের দারিদ্র্যও আমার কাছে ঠিক ততটাই গৌরবের। কেন অহেতুক আমায় আঘাত করে নিজের কাপুরুষতার ঢাক পেটাচ্ছেন?

ষোলো। আহা, সাগ্নিক! তারে বলে দিয়ো………তাই— যারা গায়, ভালোবাসা পায়।

সতেরো। Thank you, mom, for being very very very strict in my childhood. (আগেই বলসিলাম, মাইরের উপর ওষুধ নাই। বাচ্চা পোলাপান—হয় ঠিকমতো চলবে, নয় থাপ্পড় খাবে। সিম্পল!)

আঠারো। আপনি আমায় খারাপ বললেও আপনাকে আমার ভাল বলতেই হবে, জগতে ভাল লোকের সংকট এখনও অতো বেশি হয়ে যায়নি, সে আপনি যতই ভাল হন না কেন!

উনিশ। A chained dog is happier than a married man as the dog knows he is chained.

বিশ। সময়ে লাফায়, সময়ে হাঁপায়।

একুশ। সাফল্যের জন্য অনুপ্রেরণার চাইতেও বেশি প্রয়োজন একগুঁয়েমি, ধৈর্য আর পরিশ্রমের। আমি কিছু লোককে চিনি, যারা একই সাথে অনুপ্রাণিত ও অলস কিংবা ভুল কাজে উদ্যমী। এমন অনুপ্রেরণা কাউকে কিছু দিতে পারে না। অনুপ্রেরণা গিলে খাওয়ার জিনিস নয়, কাজে লাগানোর জিনিস। (এ নিয়ে কখনো বিশদ লেখার ইচ্ছে রইল।)

Sushanta Paul·Thursday, March 21, 2019·5 minutes

ভাবনা: তিনশো সাইত্রিশ

…………………………………

এক। হাতে অস্ত্র এলে মাথায় বুদ্ধি কমে যায়। স্বাভাবিক। যার হাতে অস্ত্র আছে, সে আত্মরক্ষার জন্য অস্ত্র চালালেই পারে! কী দরকার বুদ্ধি খাটানোর! বুদ্ধি খাটানোর চাইতে ট্রিগার চাপা সহজ তো! কিন্তু যার হাতে অস্ত্র নেই, তাকে আত্মরক্ষার জন্য মাথা খাটাতেই হয়! অন্য উপায় নেই যে! ফলে তার মস্তিষ্ক দিনেদিনে শানিত হয়।

দুই। অসহায় কারো কথায় নাচার আগে নিজের নিরাপত্তার কথাটাও ভেবে নিন। কারণ, আপনি গর্তে পড়লে প্রথম যে লাথিটা খাবেন, সেটা আসবে তার কাছ থেকেই। যত বেশি অসহায়দের পাশে দাঁড়াবেন, আপনার নিজের ভবিষ্যৎ তত বেশি বিপন্ন হবে। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রধান সমস্যা হল, যেহেতু অসহায় মানুষমাত্রই বিভ্রান্ত ও হুজুগে, তারা যেকোনো সময়ই আপনার ক্ষতি করে ফেলতে পারে, কিংবা আপনার শত্রুর পাশে দাঁড়াতে পারে। সাধারণত অসহায় মানুষের কোনো নির্দিষ্ট আদর্শ, দল, মত বা চরিত্র থাকে না। জন্মালে মরতে হবে, এটা সত্য; আর উপকার করলে মরার আগেই কয়েকবার মরতে হবে, এটা আরো বড় সত্য। যারা কখনোই কারো উপকার করে না, তারা সবচাইতে বেশি নিরাপদ। যাঁদের জন্য বুক পেতে দেবেন, তাঁরাই আপনার বুকে ছুরি বসাবে সবার আগে।……এই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাঁদের যেতে হয়নি, তাঁরা আমার এই পোস্টের অর্থ বুঝবেন না।

তিন। কখনোই এমন কারো কথা শুনে নিজেকে নতুন কোনো বিপদে ফেলো না যে বিপদের সময় তোমার পাশে ছিল না।

চার। অ্যান্ড্রয়েডের পুণ্যে—রেজাল্ট আসে শুন্যে! বিশ্বাস হল না? এসএসসি আর এইচএসসি পরীক্ষার রেজাল্টের দিকে তাকান, বুঝে যাবেন। টাকা পকেটে রাখুন—সন্তানের নয়, নিজের।

পাঁচ। To know how a man really is, you must marry him. To know how a woman really is, you must marry her. You can never know the real face of anyone until and unless you marry them.

ছয়। হুমায়ূনকে নিয়ে সমরেশের লেখা পড়ছি। একজন ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে আরেক জন ভালোবাসার মানুষের কলমে ভাল কথা পড়তে খুব আরাম লাগে।

সাত। ভালভাবে শুরু করার চাইতে ভালভাবে শেষ করা জরুরি। আবারও দেখলাম! দুইজন গোলকিপার নিয়ে গোলকিপারবিহীন (!) ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ফ্রান্সের জয়!! বিশ্বকাপ গেল সুনীলের ছবির দেশে, কবিতার দেশে! অভিনন্দন, ফ্রান্স! ভালোবাসা, ক্রোয়েশিয়া! খুব আফসোস হচ্ছে তোমাদের জন্য। Only your result is rewarded, not your efforts! সবকিছুর পর, জেতাটাই বড় কথা!

আট। ইনকাম যত বাড়ে, খাওয়া তত কমে। ভাবছি, ইনকাম বাড়াতে খাওয়া কমিয়ে দেবো!

নয়। অনুপ্রেরণা দিয়ে তেমন কিছুই হয় না, যতক্ষণ না আপনি নিজে কাজটি শুরু করছেন এবং শত প্রতিকূলতার মধ্যেও করে যাচ্ছেনই! তবু বলব, যদি জীবনে পাঁচটি অনুপ্রেরণামূলক লেখা পড়বেন, ভাবেন, তবে বেলজিয়ামের রোমেল লুকাকুর নোবডি থেকে সামবডি হয়ে ওঠার গল্পটা পড়ুন। জীবনে কাজে দেবে।

দশ। যারা তোমাদের মারছে, তারা যখন আমাদের মেরেছিল, তখন তোমরা তাদের পাশে ছিলে। এখন তোমরা আমাদের তোমাদের পাশে চাও। আমাদের নির্লিপ্ততা তোমাদের চোখে আমাদের বাজে মানসিকতার পরিচায়ক। আমরা যে এখন ওদের পাশে নেই, এটা কি প্রমাণ করে না, আমরা তোমাদের চাইতে উন্নত মানসিকতা ধারণ করি? (খ্রিস্টপূর্ব কয়েকশ’ বছর আগে কোনো এক গোত্রযুদ্ধের সময়ে এক গোত্রপিতার স্বগতোক্তি)

এগারো। আমরা অনেক কিউট একটা জাতি। যাকে কাজে লেগেছে, লাগে, লাগবে, তাকেই গালি দিই, আঘাত করি। পিঠে ছুরি বসিয়ে বলি, বাবা, আমার জন্য তোর বুকটা পেতে দে! এইসব ভেবে লাভ নেই। আমরা বদলাবো না কখনওই। তার চাইতে আসুন, গজল শুনি। গালির চাইতে গজল উত্তম।

বারো। কাউকে ফলো করার আগে জানতে হবে কী করে ফলো করতে হয়। আপনি যদি কারো বর্তমান লাইফস্টাইলটা পেতে চান, তবে আপনাকে উনার বর্তমানের নয়, বরং অতীত সময়ের সেই লাইফস্টাইলটা ফলো করতে হবে, যেটা উনাকে বর্তমান লাইফস্টাইলটা পেতে সাহায্য করেছে। রাতারাতি বড় কিছু হওয়ার অর্থ কিন্তু এক রাতেই বড় কিছু হয়ে যাওয়া নয়, বরং অনেক রাতের সাধনার বিনিময়ে এক রাতেই বড় কিছু হয়ে যাওয়া।

তেরো। ভাইয়া, আপনি যে আমাকে জন্মদিনে ফোন করে উইশ করেন, তারিখ মনে রাখেন কীকরে? ভাই, তোমার জন্মদিন মনে না রাখলে তো আমার সংসার ভেঙে তছনছ হয়ে যাবে! মানে? তোমার আর আমার বউয়ের জন্মদিন তো একই ডেটে! হাহাহাহা………… এমনি করে আর কেউ ফোন করবেন না। ঢাকা মেডিক্যালের ফজলে রাব্বি হলের ক্যান্টিনের সামনে দাঁড়িয়ে কেউ বলবেন না, “সুশান্ত, তুমি কি ঢাকায়? ফজলে রাব্বি হলে চলে আসো!” পলাশ ভাই চলে গেছেন। যত কষ্টই হোক, এটাও এখন থেকে বিশ্বাস করতে হবে। আমাদের কত কিছু বিশ্বাস করে বেঁচে থাকতে হয়! আমার মাথা ফাঁকা হয়ে গেসে খবরটা শুনে। ভাইয়ার সাথে কত সুন্দর সময় কাটিয়েছি। সব স্মৃতি একএক করে মনে এসে যাচ্ছে। পলাশ ভাই নেই, এটাও মেনে নিতে হবে??? মানুষ এভাবে স্মৃতি হয়ে যায়! জলজ্যান্ত মানুষটা এমন করে ছবি হয়ে গেলেন! মাঝেমধ্যে ভাইয়া ফোন করতেন। এমনিই, খোঁজখবর নিতে। এই কয়েকদিন আগে ফোন করে বললেন, লালমনিরহাটও তো আমি দেখি, ওখানে ভিজিটে আসব, তোমার সাথে দেখা হয়ে যাবে। তোমাকে নিয়ে পুরা কুড়িগ্রাম আর লালমনিরহাট ঘুরে ফেলবো। তুমি তো মিয়া যশোরে আসতে পারতেসো না!………ভাইয়া আর আসবেন না। সকাল থেকে পলাশ ভাইয়ের মুখটা চোখের সামনে স্থির হয়ে আছে! আমি জাস্ট কিছু ভাবতে পারছি না। ভাইয়ার ছবিগুলো দেখে এখনো বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে, ভাইয়া নেই। এমন একজন মানুষের প্রতি কারো রাগ থাকার কথা নয়। তারপরও পলাশ ভাইয়ের প্রতি যদি কারো বিন্দুমাত্রও রাগ থেকে থাকে, উনাকে ক্ষমা করে দিন। যদি অভিশাপ দিতেই হয়, সেই অভিশাপটা আমাকে দিন। উনার জন্য আমি শাস্তি পেতে রাজি আছি। আমরা সবাই একদিন ছবি হয়ে যাবো, ফোনের একটা নাম্বার হয়ে যাবো। সেই দিনটা আজকেও হতে পারে। ঈশ্বর আমাদের ভাল মানুষ করে বাঁচিয়ে রাখুন।

চৌদ্দ। আপনি আপনার বন্ধুকে আজ যার সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন, দেখবেন, কাল তার জন্যই আপনার বন্ধু আপনার কাছ থেকে দূরে সরে যাবে। বন্ধু সেই তৃতীয় ব্যক্তিকে আপনার চাইতে আপন হিসেবে ধরে নেবে। আপনার হাত ধরে যার সাথে যোগাযোগ হল, তার সাথে যোগাযোগ রাখতে গিয়ে আপনার সাথে যোগাযোগ কমিয়ে দেবে। লোকে আপনকে আপন রাখার চাইতে পরকে আপন করতে বেশি উৎসাহিত হয়। আর সেই তৃতীয় ব্যক্তি যদি আপনার বন্ধুর বিপরীত লিঙ্গের কেউ হয়, তাহলে এ দূরত্ব অনেকটাই অবধারিত! (ছেলেরা মেয়েদের জন্য প্রায়ই বন্ধুকে দূরে সরিয়ে দেয়। আচ্ছা, মেয়েরাও কি ওরকম করে?) এবং, সেই তৃতীয় ব্যক্তির সাথেও আপনার এক ধরনের শীতলতা তৈরি হবে। (আমার জীবনে এরকম অসংখ্যবার হয়েছে।)

ভাবনা: তিনশো আটত্রিশ

…………………………………

এক। হে ঈশ্বর! পৃথিবীর সব প্রেমিকার দেহপল্লব টনি ক্রুসের পায়ের মতন সময়মত হঠাৎ জাগুক!

আর ঘণ্টা দুয়েক। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পায়ের দিকে তাকিয়ে আছি……..

দুই। একজন কৌশিকী যদি ভুলেও এসে হাতটা ধরে, নতুন পথে হাঁটতে পুরনো সব সম্পর্ককে ‘না’ বলে দেয়া যায়! ……….জানি, ভুল ভাবছি। হায়, কিছু ভুল করতে না পারার দুঃখ সারাজীবনেও যায় না!

তিন। The basic difference between men & women: For sex, Men need a place, Women need a reason.

চার। Some overrated things:

Wedding photography

Facebook friendship

Virginity . . . . . . . . Add more…………..

(কিছু জিনিস, যা নিয়ে আমরা প্রয়োজনের অতিরিক্ত মাতামাতি করি: ওয়েডিং ফটোগ্রাফি, ফেসবুক বন্ধুত্ব, সতীত্ব . . . . . . . . আপনিও কিছু যোগ করুন।)

পাঁচ। Winner’s smile always talks louder than loser’s shout. Winners speak by actions, losers speak by words. Let’s smile while they’re shouting. Always only losers have to shout. Winning is sexier than playing well. Go, Brazil, Go!!!

At the end of the day, Brazil remains Brazil!!! That’s the beauty!!! Well done, Champs!!! Thumbs up for the Costa Rican goalkeeper!!! When life gives you an extra chance, prove your extra worth!!! The game is still ON!!!

It’s not a goal, it’s a feeling!!! Love you, Coutinho!!!

মুখ লুকালেই কি আর লজ্জা লুকানো যায় রে, গাধা?

Feeling the old rhythm of Brazil! Yes, it’s the style we’re familiar with! Let’s shout…….Go, go, Brazil! Good luck, boys!

আমার করার কিছু ছিল না, নাগো……আমার করার কিছু ছিল না। চেয়েচেয়ে দেখলাম, গোল দিয়ে দিলে………… গান শুনুন, রাগ কমান। জানেনই তো, রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন। (অবশ্য আপনারা রেগে যাওয়ার আগেই হেরে বসে আছেন!)

প্রিয় ব্রাজিলের সাপোর্টাররা, কালকের ম্যাচে ব্রাজিল জিতলেও কি এত সুখ পাবেন, যত সুখ এখন পাচ্ছেন? পাবেন না। কেন, জানেন? আমরা যতটা ব্রাজিলের সাপোর্টার, তার চাইতে বেশি অ্যান্টি-আর্জেন্টিনা সাপোর্টার; যতটা আর্জেন্টিনার সাপোর্টার, তার চাইতে বেশি অ্যান্টি-ব্রাজিল সাপোর্টার।

ছয়। জীবনে প্রথম কোনো বিয়েতে ঘটকালি করলাম। আমার নতুন ক্যারিয়ারের জন্য সকলের কাছে দোয়াপ্রার্থী। কেউ কমেন্টে ‘ঘটক পাখিভাই’ না লিখে যাবেন্না, প্লিজ। সেদিন আমার এক বন্ধু তার ঘটকালির ছবি শেয়ার করার পর যারা ‘ঘটক পাখিভাই’ না লিখে চুপচাপ চলে গেছে, তাদের সবারই বড় বাথরুমের সাথে ডিপ অ্যাফেয়ার হয়ে গেছে। কিডিং অ্যাপার্ট, নবদম্পতির জন্য আমাদের শুভ কামনা রইল।

সাত। “কুকুর কিন্তু সবসময় হাঁটুর নিচেই কামড় দিবে, কারণ এর থেকে উপরে কুকুর কখনওই উঠতে পারবে না।”

আট। ইতর চিনবেন কীভাবে? প্রথম আলো বা কোনো জনপ্রিয় পেইজের বিভিন্ন পোস্টের কমেন্টথ্রেডে যান। কমেন্টগুলি পড়ুন, শিক্ষিত/ অর্ধশিক্ষিত মূর্খদের মানসিকতা দেখুন, বাংলাদেশকে চিনুন। আমরা ইতরামির কোন পর্যায়ে নেমে যেতে পারি, দেখে আসুন। বড় কোনো সেলিব্রিটির পেইজের ওয়ালে গিয়েও অনেক ইতর পেয়ে যাবেন। আমরা মূর্খ, ইতর, কপট, কৃতঘ্ন, হিংসুটে, অকৃতজ্ঞ, জাজমেন্টাল। বাংলাদেশিদের চরিত্র নিয়ে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র কিছু অংশ না চাইতেও বারবার মনে এসে যায়।

এই বিশ্বকাপ ফুটবল চলাকালে আপনি খুব সহজেই আপনার ফ্রেন্ডলিস্ট আর ফলোয়ারলিস্ট থেকে কিছু ইতর সনাক্ত করতে পারবেন। খেলা হচ্ছে। আপনি খেলা, খেলোয়াড় কিংবা ম্যাচ নিয়ে কোনো পোস্ট দিলেন। ইতররা খেলা, খেলোয়াড় কিংবা ম্যাচ নিয়ে কমেন্ট করবে না। ওরা কেমন কমেন্ট করবে? আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে। কেন? কেননা, ওরা কখনোই আপনার মত হতে পারবে না। এটাকে বলে অক্ষমের ক্রোধ। কমেন্টে আপনার কোনো অর্জনকে অপ্রাসঙ্গিকভাবে টেনে আনবে। কেন? কারণ, ওদের পক্ষে সেটা অর্জন করা সম্ভব নয়। সিম্পল। হারেমে যা হচ্ছে, তা দেখে খোজারা রেগে যাবেই। স্বাভাবিক। ‘খোজা ইতিহাস’ বইটা পড়ে দেখুন। তাও খোজাদের বেশিরভাগকেই জোরপূর্বক খোজা করে রাখা হতো বলে ওদের ভেতরে একটা চাপারাগ ছিল। আর আমরা? আমাদের কেউ খোজা করে রাখেনি। ভাবনা ও কাজের অধোগমনের কারণে আমাদের অবস্থা ও অবস্থানের এই ছিরি! তাতেও আমাদের রাগ, সে রাগ আবার নিজের উপর নয়, অন্যের উপর! এমন চিড়িয়াজাতি দুনিয়ায় আরেক পিস পাবেন না। যে নিজের রাগ নিজের উপর ঝাড়তে পারে না, সে বড়ই দুর্বল। আপনার লিস্টের ইতরদের আনফ্রেন্ড করুন, ব্লক করুন। ইতরের সাথে থাকার চাইতে একা থাকা ভাল। আমি বিশ্বকাপ ফুটবলে ব্রাজিল টিমের সাপোর্টার। খেলা নিয়ে আমার উন্মাদনা আছে, তবে তা বেহুঁশ উন্মত্ততার পর্যায়ে কখনোই যায় না। সম্পূর্ণ সজ্ঞানে বলছি, আমাকে যদি কেউ বলেন, তুমি ৫০০ টাকা দিলে ব্রাজিল কাপ পাবে, আমি দেবো না। ব্রাজিল জিতলে আমার কোনো ব্যক্তিগত বা জাতিগত লাভ নেই। ওই টাকা দিয়ে ফুচকা খাওয়াও ভাল। আমি আবেগপ্রবণ, কিন্তু পাগল না। হ্যাঁ, বাংলাদেশ বিশ্বকাপ ফুটবল খেললে ধার করে হলেও টাকাটা দিতাম। অনেক দিনই ক্রিকেট খেলায় আমাদের জয়ের পর বাসার কিংবা অফিসের সবাইকে ভরপেট মিষ্টি খাইয়েছি। একমাত্র নিজের দেশের জন্য পাগল, ছাগল, মাতাল সবকিছুই হওয়া যায়। এদেশ আমাকে খাওয়ায়, পরায়, বাঁচায়। আমি খেলা দেখি নিছকই আনন্দ পেতে, বাংলাদেশ খেললে সেই আনন্দকে পাগলামি সঙ্গ দেয়।

আমার আপন মামাত ভাই ইন্ডিয়া থাকে। বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া টিটোয়েন্টি ম্যাচে ইন্ডিয়ার কোনোমতে কষ্টেসৃষ্টে জয়ের পর ও বাংলাদেশ নিয়ে কিছু বাজে কথা বলে। ওকে উচিত জবাব দেয়ার পর ফেসবুকে ব্লক করে দিয়েছি। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি, ও যেন এ জীবনে কখনোই আমার সাথে যোগাযোগের কোনো চেষ্টা না করে, অমিও করবো না। ও এ জেনারেশনের অল্প ঘিলুর স্মার্ট ছেলে। তাই ও যুক্তিতে পেরে না উঠলে আজেবাজে বকতে আরম্ভ করে। বেয়াদব দূরে রাখাই ভাল। দুইদিন ধরে কিছু কিউট ইমোশনাল বাংলাদেশিদের ইতরামি আর নোংরামি দেখছি, অবাক হচ্ছি না। আমাকে, আমার অবস্থানকে অহেতুক আক্রমণ করে অশালীন কথাবার্তা বলে যাচ্ছেন। বলতে হলে খেলা, খেলোয়াড়, ম্যাচ নিয়ে কথা বলুন। আমার পোস্টের বক্তব্যকে আক্রমণ করে একেবারে ধুয়ে দিন। আমি স্বাগত জানাবো। কিন্তু ইতরামি করছেন কেন? আমি আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে কথা বলেছি? (অবশ্য আপনাকে গোনার টাইমই আমার নাই, থাকলেও আমি আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে কথা বলতাম না, ওটা আমার স্বভাববিরুদ্ধ। আসলে আমাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করে বাঁচতে হয় না।) আপনি কেন বলছেন? লোকের মাথায় ঘিলু না থাকলে লোকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে কথা বলে। আমার সব পোস্টেই আমার বিসিএস পরীক্ষায় প্রথম হওয়াকে বিশ্রীভাবে টেনে আনেন কেন কোনো কারণ ছাড়াই? ওটা আমার রিজিক তো, ভাই!………বেশি জ্বলে? জ্বললে কাজের কিছু করে দেখান। শুধু কমেন্ট করে দেখিয়ে লাভ কী? বাপের ব্যাটা করে দেখায়, গাধার ব্যাটা বলে শোনায়।

ইতরদের বলছি, আমি খেলা কম বুঝি? ঠিকই বলেছেন। কেবল খেলা নিয়ে পড়ে থাকিনি বলেই আমি Sushanta Paul, আর আপনি আমার ফলোয়ার। ব্যাপারটা বোঝা গেছে তো, না? অনেক ইতরকে পেইজ থেকে ব্যান করে দিয়েছি। দুইদিন পর আবার আনব্যান করে দেবো। কেন, জানেন? এটা একটা খেলা। ওই ইতরগুলি আবারো আমার ওয়ালে আসবে, আমার পোস্ট দেখবে—নীরবে বা সরবে। Love me or hate me………..but you cannot ignore me. গুরু শাহরুখ সবসময়ই সত্য, অন্তত আমার বেলায়—ছিলেন, আছেন, থাকবেন। It’s my challenge………to myself! আমি ফ্রেন্ডলি, এর মানে এই নয় যে, আমি আপনার ফ্রেন্ড। নিজের লিমিটটা বুঝতে শিখুন। ফ্রেন্ড মানে কিন্তু রিয়েল-লাইফ ফ্রেন্ড, ফেসবুক ফ্রেন্ড একটা ভুয়া জিনিস। আমার ওয়ালে আপনি এলেন কি এলেন না, আই ডোন্ট কেয়ার।

আপনি আমাকে সম্মান করেন, আপনি আমার ফ্যান, আপনি আমার স্পিচ শোনেন, আপনি আমার লেখা পড়েন…………এইসব আপনি করেন এসব করতে আপনার ভাল লাগে, তাই। ওতে আমার কিচ্ছুটি এসে যায় না। ইতরামি করলে সোজা ব্যান করে দেবো, এবং আবারো আনব্যান করবো। কেন? ওই যে বললাম, আপনার নির্লজ্জ প্রত্যাবর্তন আমাকে বিনোদন দেয়, অনুপ্রেরণা যোগায়। ………… আপনি আমার অমুক আইডিটা ব্যান করে দিয়েছেন, কোনো সমস্যা নাই। শুধু জেনে রাখুন………… ব্লা ব্লা ব্লা। ইনবক্স সমাচার। উনি আমাকে সহ্যই করতে পারেন না, আবার আমার ওয়ালে না এসে থাকতেই পারেন না। কিউট না ব্যাপারটা? আচ্ছা, আমরা এমন মেরুদণ্ডহীন বলদ কেন? গুরু ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর একটা কথা দিয়ে শেষ করছি: Your love makes me strong, your hate makes me unstoppable.

ভাবনা: তিনশো উনচল্লিশ

…………………………………

এক। ব্রাটিনা, পার্লিনা! ভাইদুই, আইসুই! Dear Brazil, we missed your original flavour. It’s disappointing. Best match so far: Ger-Mex match! If Brazil or Argentina had to face Mexico, God would have to receive more prayers & tears! ব্রাজিল আর্জেন্টিনা ভাই-ভাই, জার্মানিরও দেখি খাওন নাই!

দুই। ব্রাজিল জাতীয় ফুটবল টিম বনাম সুইজারল্যান্ড জাতীয় কাবাডি টিম!

It’s the Brazil Style! Go, Brazil, Go!!

তিন। টিমে এক্সট্রাঅর্ডিনারি কোনো ফিনিশার না থাকলে জিততে হলে খেলতে হয় এগারো জনকেই। লাভলি গেম বিট্যুইন জার্মানি অ্যান্ড মেক্সিকো! থাম্বস্ আপ ফর ওচোয়া! ইউ আর বিউটিফুল, ম্যান! ফিঙ্গারস্ ক্রসড্ ফর দ্য সেকেন্ড হাফ!

Well deserved defeat, Germany! Well earned victory, Mexico! Lovely match! Thank you, boys, for keeping it alive till the end! Mexico, loved your defense! Loved your goalkeeper! Ochoa is a masterpiece! Hats off! Had you an excellent finisher like Ronaldo, you could score 2 more for sure! Now fingers crossed for the BraSwi match!!!

চার। ‘আপনারা কেউ আমাকে একটা থানকাপড় দিতে পারেন!’ এমন আশ্চর্য নিষ্ঠুর লাইন কী করে লিখে ফেললে সমরেশ? তোমায় প্রণাম করি আর ভাবি, আহা, তোমার পায়ের নিচে এই একটা অথর্ব জীবন কাটিয়ে দিতে পারতাম! ‘জ্যোৎস্নায় বর্ষার মেঘ’ পড়লাম। ভীষণ বিষাদমাখা একটা উপন্যাস। পরিবারের যে ছেলেটি কিংবা মেয়েটির কাঁধে পুরো পরিবারের ভার, তাঁদের বলছি, জীবনে যদি মাত্র ১০টি বাংলা উপন্যাস পড়ার সুযোগ থাকে, আমি আপনাকে এই বইটি আপনার পড়ার তালিকায় রাখতে বলবো। বুক ফেটে কান্না পাচ্ছে। কাঁদছিও। শেষ এমন অনুভূতি হয়েছিল ঋত্বিক ঘটকের ‘মেঘে ঢাকা তারা’ দেখার পর।

পাঁচ। মেয়েদের সংস্পর্শে এলে সবচাইতে সত্যবাদী ছেলেটিও মিথ্যুক হয়ে যায়। এর উল্টোটাও সত্য।

ছয়। ব্রাজিলকে সাপোর্ট করি বলে চাকরিতে আমার বেতন বেড়েছে কয়েক গুণ। আপনি আর্জেন্টিনাকে সাপোর্ট করে জীবনে কী পেলেন? আর্জেন্টিনা বেকারদের চাকরি দিয়েছে? নাকি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়িয়ে দিয়েছে? ব্রাজিল তো আমাদের সবই দিল, আর আর্জেন্টিনা আপনাদের কী দিল? আমরা ব্রাজিলের নুন খাই বলে ব্রাজিলের গুণ গাই, ব্রাজিলের জন্য খুনোখুনি পর্যন্ত করতে রাজি! কিন্তু আর্জেন্টিনার প্রতি আপনাদের এমন অন্ধ আনুগত্যের কী কারণ? এই যে আপনারা আমাকে সম্মান করেন, ভালোবাসা দেন, ফলো করেন, আমাকে পড়েন—এসব ধুয়ে পানি খেয়েই তো এখনো বেঁচে আছি! মাঝেমধ্যে যে ওরকম আনফলো, অসম্মান, ঘৃণা করার ভয় দেখান, এই গরীবের জন্য কি একটুও দয়ামায়া হয় না আপনাদের? আপনারা আমাকে আইডল না কী চুল জানি বলে, ওইটা না মানলে আমি যে মরেই যাবো! আপনারা আমার পোস্ট না দেখলে আমি যে স্প্রাইট দিয়ে ভিজিয়ে সুইসাইড খেয়ে বসে থাকবো! প্লিজ প্লিইজ প্লিইইজ আমার পুরুষ ও মহিলা জানেমানগণ, অমন করে আর কক্খনো বলবেন না, একেবারে বুকের ভিতরে এসে লাগে! আপনি আমার ওয়ালে না এলে আমি যে পথের ভিখিরি হয়ে যাবো!

সাত। ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। আজকের বহু কষ্টে হার এড়ানো ম্যাচ আর্জেন্টিনার সমর্থকদের জন্য ঈদ উপহার। আর্জেন্টিনার সমর্থকদের হৃদয়ের আবেগ আমাদের বারবারই কাঁদায়। জানি, হয়তো আজ ছেলেটি বেকার বলে মেয়েটির অন্য কোথাও বিয়ে হয়ে যাবে, হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস বাদে অন্য সব জায়গায় সবসময়ই এমন হয়ে আসছে, হবেও; তবু…… মেয়েটির ভালোবাসায় তো কোনো খাদ ছিল না! মেয়েটি এমনি করে ভালোবেসেই যাবে আর টিস্যুর ব্যবসা বাড়তেই থাকবে।

আইসল্যান্ড, উই লাভ ইয়োর ডিফেন্স, উই লাভ ইয়োর গোলকিপার। থ্যাংক ইউ ফর দ্য লাভলি গেম! ভায়ারা, তোমাদের জন্য টুপিটা খুলে রাখলাম। চিয়ার্স!!

প্রিয় মেসি, ঈদ মুবারক। আসেন, কোলাকুলি করি। আজ আপনাকে দেখে আমার সেই বন্ধুটির কথা বারবার মনে পড়ে যাচ্ছিল, যে পাঁচবার বিসিএস ভাইভা বোর্ড ফেস করেও ভাগ্যদোষে চাকরি পেল না। জানি, ডিবক্সের শট আর মেয়েদের মন—দুটোই বড় গোলমেলে, তবে ফ্রিকিকগুলো? চৌধুরী সাহেব, ইউ হ্যাভ টু বুঝতে হবে, ফ্রিকিক তো আর অতো ফ্রি জিনিস না! আর্জেন্টিনার ভক্তমণ্ডলী! আজ বড় বাঁচা বেঁচে গেছেন! সবাই মিলে কেক দিয়ে কোক খান, উদযাপন করেন! ধন্যবাদ। আবার আসবেন।

মেসি, নেইমার—আগে ভাল খেলতেন, এখন ভাল অভিনয় করেন।

আট। আমাদের সময়ের (২০০২ সাল) এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ছিল ২৭.০৯%, যখন ‘নুডলস কিনলেই বাটি ফ্রি, পরীক্ষায় বসলেই এপ্লাস ফ্রি’-এর যুগ ছিল না। আহা, এই ২৭.০৯%-এ আমিও আছি!! বড়ই সুখের বিষয়, বাংলাদেশ এই অথর্ব জেনারেশনের হাত থেকে মুক্তি পেয়েছে। এখন এদেশে একদম সব্বাই অ্যাত্ত অ্যাত্তগুলা মেধাবী! ঈদ মুবারক।

নয়। ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর একটা কথা আমার খুব প্রিয়: “You will go and say that I have a big head, but when you’re at the top, it’s normal that you’re criticised. … I am the best player in history, in both good and bad times.” ওরা কোথায়, যারা বলে, অহংকার পতনের মূল? আরে বাবা, বিনয়ও কি গর্দভ আর স্টুপিড-দের পতনের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে? বরং শুধরে বলুন, অক্ষমের অহংকার অক্ষমের পতনের মূল।

দশ। যে মানুষটা একসময় সম্পর্ক গড়তে মরিয়া ছিল, সেই মানুষটাই আবার সম্পর্ক ভাঙতে মরিয়া হয়ে ওঠে! একই মানুষ! তবু কেন? নতুনের টানে? নাকি না-পাওয়া কোনো পুরনোর মোহে? নাকি যে পুরনো বর্তমান, তার মধ্যে আর নতুন কিছু আবিষ্কার করার নেই বলে? সে চলে গেছে। আমি যে খুব আটকে রাখতে চেয়েছিলাম, তা নয়। যেতে দিয়েছি সহজেই। তবু কেন তার জন্য এত শূন্যতায় বুকটা কাঁদে? পুরুষ নাকি কাঁদে না! কারা বলে একথা? যে পুরুষ ভালোবেসেছে, তার কাছে ওদের পাঠিয়ে দাও! মানুষ বিপরীত পৃথিবীতে বাঁচে। তাকে বিপরীত পৃথিবীতে বাঁচতে হয়।

এগারো। আহা, সুমনা হক! উনার কণ্ঠে জিঙ্গেলগুলির কথা মনে আছে? আমাদের ছোটবেলার কত্ত ঝকঝকে সব অ্যাড! ☺️ (কমেন্টথ্রেডে লিংক দিলাম।) এই গানটা (মায়াবী এ রাতে গোপনে দু’জনে……..) শুনলে উনাকে অনুভব করা যেন! কত হাজারবার শুনেছি! আমার ছোটবেলার ক্রাশ!

বারো। নরসুন্দরের দোকানে সুন্দরনর হওয়ার জন্য অপেক্ষা করি।

তেরো। দৃষ্টি প্রদীপ জ্বেলে খুঁজেছি তোমায়। কী ভীষণ রকমের জ্যান্ত একটা গান!! আহা, একসময় কত ভাল গান তৈরি হত! (আরো কিছু ভাললাগা পুরনো গান কমেন্টে দিচ্ছি।)

ভাবনা: তিনশো চল্লিশ

…………………………………

এক। যে জাতি কোনো মেয়ে হেসে তাকালেও ধরে নেয়, মেয়েটি তার প্রেমে পড়ে গেছে, সে জাতি কেউ ফ্রেন্ডলি আচরণ করলে উনাকে তার ইয়ারদোস্তো ভেবে ফেলবে, এটাই স্বাভাবিক।

দুই। কখনো-কখনো ভুল মানুষটিই তোমাকে ঠিক জায়গায় পৌঁছে দেবে।

তিন। বউ বলে কিছু নাই, বউ একটি মিডিয়ার সৃষ্টি।

চার। The more I know about the boys, the more I find myself an angel. The more I know about the girls, the more I find myself an idiot.

পাঁচ। আপনি ঠাণ্ডা মাথায় খুনও করতে পারবেন, কিন্তু বিয়ে করতে পারবেন না। বিয়ে করার সময় উটকো লোকের অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রণা আপনাকে বিচলিত করবেই।

ছয়। ফ্রিতে দুধ খেতে চাও তো গরুর কাছে যাও, গোয়ালার কাছে নয়।*

*শর্ত প্রযোজ্য। কী শর্ত? গরুটিকে আগে পয়সা কিংবা কিছুর বিনিময়ে কিনতে হবে, ওটির যত্ন নিতে হবে। মাথায় এও রেখো, কেনা গরুও সানন্দে দুধ দেয় না, দুধ নেয়ার কায়দা জানতে হয়। গরুকে সময় দাও, দুধ পাবে। বলদকে সারাজীবন দিয়ে দিলেও গোবর ছাড়া আর কিছুই পাবে না।

সাত। চলছে উত্তম-যাপন! শঙ্খবেলা (১৯৬৬) দেখলাম। লতা-মান্না’র ‘কে প্রথম কাছে এসেছে’, লতার ‘আজ মন চেয়েছে’ গান দুটো এ মুভির। এরপর দেখলাম, নগর দর্পণে (১৯৭৫)। ভাল কাহিনি। এ মুভিতে নিজেকে একটুখানি পেলাম বোধ হল। এখন দেখছি, যদি জানতেম (১৯৭৪)। এ মুভিতে সৌমিত্রও আছেন! (আমার জানামতে) উত্তম কুমার ও সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় দুইজনই আছেন, এমন মুভি ৫টি। সেগুলির মধ্যে যদি জানতেম (১৯৭৪) একটি। উত্তম-যাপন আরো চলবে! হয় একা থাকব, নতুবা ভাল কিছুর সাথে! অর্ডিনারির সান্নিধ্য মানুষকে অর্ডিনারি করে দেয়।

ম্যায় শায়র তো ন্যাহি। এই মুভির আরো একটা চমৎকার গান কমেন্টে দিলাম। সুরে ভেসে যাক কষ্ট।

আট। চুম্বন, ক্ষণিকের যে সুখ—এটাও তো অচেনা কারো কাছ থেকে প্রথম আলাপেই চেয়ে ফেলা যায় না। লোকে কত ভণিতায় ফ্রি চুমু পায়! (অবশ্য পেইড কিস হলে ভিন্ন কথা!) আর সঠিক ক্যারিয়ার প্ল্যানিং তো সারাজীবনেরই সুখ এনে দিতে পারে!—এটা কীকরে আপনি অচেনা কারো কাছ থেকে প্রথম আলাপেই চেয়ে ফেলেন দুম করে? (তাও ফ্রিতেই?) এমন আশাওয়ালা মাথামোটা বেআক্কেল নিষ্পাপ বলদ লইয়া এ জাতি কী করিবে!

নয়। উত্তম-সুপ্রিয়ার সূর্য্যশিখা (১৯৬৩) দেখছি। মুভির একটা দৃশ্যে ঘটনাচক্রে উত্তম কুমার (ডাক্তার দীপ্ত রয়) সুপ্রিয়া দেবী (অচেনা বোস)’র বাসায় যান। (তখনো উনাদের মধ্যে প্রেম হয়নি।) সুপ্রিয়া দেবীর বাসার ড্রয়িংরুমের এককোণায় একটা ম্যান্ডোলিন ছিল, যেটা সুপ্রিয়া দেবী বাজানো শিখবেন বলে কিনেছিলেন, কিন্তু কখনো শেখা হয়নি। তো সুপ্রিয়া দেবী ভেতরের রুমে গেলে উত্তম কুমার ম্যান্ডোলিনটিতে অপূর্ব সুর তুলতে থাকেন, যা শুনে সুপ্রিয়া দেবী মুগ্ধ হয়ে উত্তম কুমারের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। উনাদের আলাপ হতে জানা যায়, উত্তম কুমার একসময় সখ করে ম্যান্ডোলিন বাজাতেন। এইটুকু দেখে মাথায় এল, আহা, আমি যদি অমন কোনো সুপ্রিয়া দেবীর ড্রইংরুমে গিয়ে অপেক্ষা করতাম, তবে সেখানে ঢোল বাদে অন্য কোনো বাদ্যযন্ত্র থাকলে আমার পক্ষে নায়িকাকে মুগ্ধ করার কোনো উপায়ই থাকত না!

দশ। কাল থেকে দেখলাম: উস্তাদ হোটেল (২০১২) বোরাত (২০০৬) ট্রি উইদাউট লিভস্ (১৯৮৬) শেষ অঙ্ক (১৯৬৩) চিড়িয়াখানা (১৯৬৭) পিয়াসা (১৯৫৭) এখন দেখছি: সূর্য্যশিখা (১৯৬৩) (নামের বানানটা ‘সূর্য্য’ হিসেবেই আছে। বাংলা বানানে কোনো বর্ণের সাথে য-ফলা আর রেফ একসাথে বসে না—এই নিয়মটা তখন ছিল না।)

এগারো। বাঙালি— মধু খেতে দেয় কিছু না পেয়েই, মধু খেতে চায় কিছু না দিয়েই!

বারো। চট্টগ্রাম কলেজে পড়ার সময় বাংলা ভাষার প্রতি অগাধ নেশা থেকে হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘বঙ্গীয় শব্দকোষ’ (২ খণ্ড) কিনেছিলাম। তখন আমি ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে। এখনো মনে আছে, কেনার সময় চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লার জেনুইন লাইব্রেরি’র দোকানি জিজ্ঞেস করেছিলেন, “কলেজের লাইব্রেরির জন্য কিনছ?” “না, আমার নিজের জন্য!” শুনেই উনি “কীইইইই? তুমি এই বই নিয়ে কী করবে?” বলে আমার দিকে চোখ বড়বড় করে তাকিয়েছিলেন। লোকে আলাদা কিছু দেখতে ও মানতে অভ্যস্ত নয়। ওই বয়সে অতো দামি একটা ‘অদরকারি’ বইকেনার টাকা দেয়ার সময় মা কোনো প্রশ্ন করেননি। মাকে বলেছিলাম, “মা, বইটা আমার খুব দরকার। এবারের পুজোয় কিছু কিনব না। সে টাকা দিয়ে আমাকে বইটা কিনে দাও।” মা হেসে বলেছিলেন, “বইটা আগে কিনে ফেল, পুজো আসুক, দেখা যাবে।” (পরে জেনেছি, মা বাবার কাছ থেকে একটা পছন্দের শাড়ি কেনার জন্য টাকা নিয়েছিলেন ওই সময়ে, শাড়ি না কিনে সে টাকা উনি আমার হাতে তুলে দিয়েছেন।) সে অভিধানের পাতা উল্টাতাম, ঘণ্টার পর ঘণ্টা শব্দের সাগরে ডুব মেরে থাকতাম, আর অপার বিস্ময়ে ভাবতাম, এতটা অধ্যবসায়ী মানুষ কীকরে হয়! কত পরিশ্রম করে প্রণেতা এমন কাজ করেছেন! উনার পাণ্ডিত্যের প্রতি সবসময়ই শ্রদ্ধাবনত হয়ে থাকতাম। এমন মানুষই ছিল আমার চোখে হিরো, সেলিব্রিটি, স্মার্ট মানুষ। যাঁর মাথায় তেমন কিছু নেই, সে ব্যক্তি বাহ্যিকভাবে যত আকর্ষণীয়ই হোন না কেন, তাঁর প্রতি আমার বিন্দুমাত্রও মোহ বা শ্রদ্ধাবোধ কাজ করত না, এখনো করে না। সেই তখন থেকেই অক্ষম কারো দম্ভ আর ঈর্ষা আমাকে খুব হাসায়! রবীন্দ্রনাথের অনুপ্রেরণায় হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় এমন একটি প্রায়-অসাধ্য কাজ সম্পন্ন করেছিলেন। তাঁর কাছে বাঙালির অশেষ ঋণ। তাঁর জীবনের ছায়ায় লেখা বুদ্ধদেব বসুর গল্প ‘একটি জীবন ও কয়েকটি মৃত্যু’ (১৯৬০)-কে সেলুলয়েডের ফিতেয় রেখেছেন রাজা মিত্র। একটি জীবন (১৯৮৮) তাঁর ক্যারিয়ারের প্রথম কাজ। সৌমিত্রের অপূর্ব অভিনয়ে একা একটি মানুষের নিষ্ঠা, ত্যাগ ও সংগ্রাম দেখে অভিভূত হয়ে গেছি! স্বপ্নের প্রতি একান্ত অনুরাগ মানুষকে পারিপার্শ্বিক জগত নিয়ে একেবারেই নির্লিপ্ত করে দেয়—একেএকে কন্যা, পুত্র, স্ত্রীর মৃত্যুও তাঁর যাত্রা থামাতে পারেনি, তিনি যেন বেঁচে ছিলেনই কেবল স্বপ্নপূরণের জন্য। এখন দেখছি আদালত ও একটি মেয়ে (১৯৮২)

তেরো। নতুন পাতা (১৯৬৯) দেখলাম। এমন সাবলীল মুভি খুব বেশি দেখিনি। পথের পাঁচালী (১৯৫৫), সুবর্ণরেখা (১৯৬৫), অপরাজিত (১৯৫৬) দেখলে যেমন অনুভব হয়—আজো………’নতুন পাতা’ দেখার সময় তেমনই অনুভব করেছি। এত সারল্যমাখা এই মুভির নামটা পর্যন্ত আজকের আগে জানতাম না! আসলে দামি রত্ন আড়ালেই থেকে যায়। দীনেন গুপ্তর এই মুভিটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছিল। খুব কাকতালীয় একটা ব্যাপার ঘটল–আগে থেকে জানতাম না, কীভাবে যেন হয়ে গেছে! আজকে যে দুটো মুভি মনে রেখাপাত করেছে, সে দুটো মুভির কাহিনি এসেছে একই ঘর থেকে, লেখক স্বামীর ‘আপন’ লেখিকা স্ত্রীর লেখা থেকে! এটা যখন মাথায় এল, খুব মজা পেয়েছি। নতুন পাতা (১৯৬৯) বানানো হয়েছে প্রতিভা বসুর কাহিনি অবলম্বনে একটি জীবন (১৯৮৮) বানানো হয়েছে বুদ্ধদেব বসুর কাহিনি অবলম্বনে দুটো মুভিই মাস্টারপিস! এমন দম্পতির কথা মাথায় এলেও শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়ে আসে! ভাল কথা, আদালত ও একটি মেয়ে (১৯৮২) দেখে না-দেখলে-মিস-হয়ে-যাবে টাইপের কিছু মনে হয়নি। ঘুম, ঘুম থেকে জাগল………আসি!

ভাবনা: তিনশো একচল্লিশ

…………………………………

এক। যত যত্ন, তত যন্ত্রণা। এরই নাম ভালোবাসা।

দুই। A Peck on the Cheek (2002) দেখলাম। তামিল মুভি। অরিজিনাল টাইটেল Kannathil Muthamittal; সিনেমাগুরু মণি রত্নমের লেখা, উনারই ফিল্মোগ্রাফি, উনারই পরিচালনা। এমন অসাধারণ কাজ, অনুভব করার মত! দেখুন, ভাল লাগবে। অনেককেই দেখি, মুভির ডাউনলোড লিংক চেয়ে বসেন কমেন্টথ্রেডে। সিরিয়াসলি, আপনারা এমন খ্যাতমার্কা অলস কেন? একটু স্মার্ট হলে কী হয়! টরেন্ট আছে কী করতে?

এখন দেখব মালায়ালাম মুভি Manichithrathazhu (1993)। ওদের মতন করে আমরা ভাবতে পারি না, তাই ওদের কাছাকাছিও কিছু আমরা বানাতে পারি না! সুন্দর কাজের প্রথম ধাপ—সুন্দর ভাবনা। যে সুন্দর করে ভাবতে জানে না, তার পক্ষে সুন্দর করে কাজ করা অসম্ভব।

তিন। Mucize (2015) দেখলাম। খুব ভাল লাগল। ভালোবাসায় অসীম শক্তি আছে—সে শক্তি, অনেকটাই অসম্ভব যা, সেটাকেও সম্ভব করে দেয়! মুভির শেষ ডায়লগটা মনে গেঁথে গেছে………আহা!

মা: আজিজ, তুমি কথা বলতে পারছ! ঈশ্বরকে ধন্যবাদ!

আজিজ: মা, আমি কথা বলতে পারি।

………………………………………………………………

বাবা: তুমি এখন পুরোপুরি সুস্থ হয়ে গেছো! সার্জারি করিয়েছ?

আজিজ: না, বাবা। আমি………….(স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে) আমি আমার স্ত্রীর প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম! আজিজের চরিত্রে যিনি অভিনয় করেছেন, তাঁর অভিনয় দেখে বেকুব হয়ে গেছি! আহা, আমাদের যদি এমন একজন অভিনেতা থাকত!!! এখন দেখছি La La Land (2016)।

চার। আমন্ত্রণ জানাই, ময়ূরাক্ষী (২০১৭) দেখুন। এ মুভিতে আমি আমার বাবাকে পেলাম। হয়ত আপনিও পাবেন। একজন সৌমিত্র এ বয়সেও কীকরে এতটা গ্রেট হয়ে থাকেন, সত্যিই বুঝতে পারি না। অমন স্মার্ট আমরা কেউই নই, কখনো হতে পারবোও না।

পাঁচ। এমন কি, যে-রেকর্ড কম্পেনিগুলো রবরবা ব্যবসা করেছিলো নজরুল-গীতির রেকর্ড প্রকাশ এবং বিক্রি করে, সেই কম্পেনিগুলো তাঁর চরম বিপদের দিনে বিন্দুমাত্র সাহায্য করেনি, অথবা তাঁর খোঁজখবরও নেয়নি। যেসব প্রকাশক তাঁর বই বিক্রি করে নিজেদের আর্থিক অবস্থা বদলে ফেলেছিলেন, তাঁদের সম্পর্কেও একই কথা বলা যায়। —গোলাম মুরশিদ, বিদ্রোহী রণক্লান্ত: নজরুল-জীবনী, পৃষ্ঠা ৪৮১

ইতিপূর্বে বলেছি যে, নজরুল অমন স্থায়ী এবং দুরারোগ্য রোগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ার পর গ্রামোফোন কম্পেনির কর্তাব্যক্তিরা এবং শিল্পীরা কবির প্রতি নিষ্ঠুর অবহেলা দেখিয়েছিলেন। কবি অসুস্থ হওয়ার পরবর্তী প্রায় দু দশক গ্রামোফোন রেকর্ডের ক্ষেত্রে যা ঘটেছিলো, তা থেকে এমন মনে করলে খুব ভুলের হবে না যে, গীতিকার-সুরকার নজরুল অসুস্থ হওয়ায় তখনকার অপ্রধান এবং উঠতি গীতিকার-সুরকারেরা আসলে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলেন। —প্রাগুক্ত উৎস, পৃষ্ঠা ৪৯৭

শুভ জন্মদিন, নজরুল। আমাদের আচরণে মনে কোনো কষ্ট রেখো না, তোমায় বড় ভালোবাসি বলেই তো আঘাত করি! অকৃতজ্ঞতাকে বাদ দিলে আমাদের অস্তিত্বই-বা কোথায়, বলো! তুমি অমন করে চলছিলে বলে আমাদের চলাটা কারুর চোখেই পড়ছিল না, তাইতো তুমি থেমে যাওয়ায় খুশি হয়েছিলাম খুউব! এতে কতটা লাভ, সে হিসেব মহাকালই দিয়ে দেয়, দিয়েছে, দেবে!

ছয়। ছাগলের জন্য বেড়া লাগে, স্যার।

সাত। এখন দেখছি……মেমসাহেব (১৯৮৩) এরপর দেখব………অগ্নীশ্বর (১৯৭৫) ঘুম না এলে………চালচিত্র (১৯৮১) লেখা আর পড়ার ক্লান্তি কাটাতে মুভি।

বহুদিন পর কোনো মুভি দেখে ভীষণ কাঁদলাম। অগ্নীশ্বর (১৯৭৫)। এ মুভি এতদিন দেখিনি!

দেখছি, তিন ভুবনের পারে (১৯৬৯) (তনুজাকে দেখছি, মাথা ঘুরছে; মাথাকে আরো ঘুরতে দেয়ার লোভে খুব মন দিয়ে দেখেই যাচ্ছি………) দেখব, জয় জয়ন্তী (১৯৭১) আমার কালকের পোস্টের পর কেউ অগ্নীশ্বর (১৯৭৫) দেখেছেন? কেমন লাগল? না দেখলে অবশ্যই দেখুন। আমার বিচারে, উত্তমকুমারের সেরা ৫টি মুভির একটি ‘অগ্নীশ্বর’।

আট। (সম্ভবত) বাংলাদেশের সেরা রসমঞ্জরী গাইবান্ধা মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের রসমঞ্জরী আগের মত আর খেতে পারি না, একবসায় মাত্র আধা কেজি সাবড়ালাম। আহা, অমৃত! ছোট্ট একটা জীবন—মিষ্টি খেয়েই দিব্যি কাটিয়ে দেয়া যায়! কী বলেন!

নয়। আমার দেখা সেরা ৫টি অ-বাংলা অ-হিন্দি ভারতীয় মুভি: Drishyam (2013) (এই মুভির কথা ভাবলে এখনও নিঃশ্বাস আটকে আসে………এমন মুভিও মানুষ বানাতে পারে!) Charlie (2015) Anbe Sivam (2003) Premam (2015) Pushpak (1987)……….এখন দেখব Sairat (2016)।

দশ। To have anything in the world, you need either money or a reason. If you don’t have any of those 2, don’t expect to have it.

এগারো। যার কাছ থেকে আমি কখনোই উপকৃত হইনি, সে ভাল। যার কাছ থেকে আমি আগের তুলনায় কম উপকৃত হচ্ছি, সে খারাপ; অতআএব, তাকে আঘাত করো।

এমন জাতি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি,

যত অকৃতজ্ঞের খনি সে যে আমার জন্মভূমি!

বারো। শুনলাম, Berklee College of Music-এর Berklee Indian Ensemble পরিবেশিত জিয়া জালে।

রবীন্দ্রনাথের ছিন্নপত্র-য়েই বোধহয় পড়েছিলাম ………………একটা দুর্জ্জয় খাঁদা নাকওয়ালী পাহাড়ি মেয়ে…………এমন কোনও অংশ। এ গানের দুর্জ্জয় লম্বা নাকওয়ালী মায়াবী মেয়েটার প্রেমে পড়ে গেছি, আরও পড়ে যেতে ইচ্ছা করছে…………। গানটা এ নিয়ে তিনবার শুনলাম, এখনও শুনছি, আর বারবারই নিজেকে প্রবোধ দিয়ে যাচ্ছি…………বাপ্পি, কাম অন! সে তোমার নয়…………প্রণাম নিয়ো, হে ঈশ্বরী!

অ্যালিজী! আমার তরুণবেলার ক্রাশ! আহা, সে সময় কত কোটিবার যে দেখেশুনে ফেলতাম উনার কণ্ঠে ‘লা ইস্লা বনিতা’ গানটা!

গভীর হয়েছে রাত, পৃথিবী ঘুমায়। কত নির্ঘুম রাত কেটে গেছে এ গানটা বারবার শুনে…..এখন শুনবো, তপন চৌধুরীর যেতে যেতে কেনো পড়ে বাধা…..পুরনো গান পুরনো স্মৃতি এনে দেয়।

তেরো। যখন লড়াইটা নিজের মানুষের সাথে, তখন হেরে যাওয়া জরুরি। যখন লড়াইটা নিজের সাথে, তখন জিতে যাওয়া জরুরি।

চৌদ্দ। যেতে পারি

যে-কোন দিকেই আমি চলে যেতে পারি

কিন্তু, কেন যাবো?

— শক্তি চট্টোপাধ্যায়

দিতে পারি

যে-কোন মানুষকেই আমি সময় দিতে পারি

কিন্তু, কেন দেবো?

— সুশান্ত পাল।

এই ‘কেন’টা বোঝার নামই ম্যাচ্যুরিটি।

পনেরো। পণ্ডিত তুষার দত্তের কণ্ঠে না মিটিতে সাধ মোর নিশি পোহায়……… বাঁচতে হলে বাঙালির নজরুলকে লাগবেই। আহা, কী বৈভব! কী সম্মোহন!

ষোলো। গাধার সাথে গাধা, সিংহের সাথে সিংহ। গাধার সাথে হেঁটে আর যা-ই হোক, কখনও সিংহ হওয়া সম্ভব নয়।

সতেরো। কিছু অসামান্য মানুষ আছেন, যাঁদের কথা মাথায় এলে মনের অবচেতনেই মাথা নত হয়ে যায় তাঁদের পায়ের ধুলায়। কত আনন্দ আর বিস্ময় দিয়ে তাঁরা আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছেন! এমন মানুষের প্রতি আমার এক ধরনের অন্ধ মোহ কাজ করে, ফলে তাঁদের নিয়ে কোনও অতিপণ্ডিত কীটেরও কটূক্তি আমার মাথায় রক্ত চড়িয়ে দেয়। এঁদের দেখলে মনে হয়, কেবল সাধনায়ই হয় না, সাথে কিছু প্রতিভাও লাগে। একলক্ষ পণ্ডিতদের চাইতেও একজন জিনিয়াস বেশি দামি। ভালোবাসা। কৃতজ্ঞতা। প্রণাম। শুভ জন্মদিন, গুরু সত্যজিৎ!

আঠারো। Veer-Zaara দেখলাম। দারুণ ছোঁয়! কয়েকটা ডায়লগ তো রীতিমতো নাড়িয়ে দেয়! হৃদয়ের ব্যায়ামের জন্য বেশ ভাল মুভি।

উনিশ। দামি কিছু পেতে হলে দামি কিছু ছাড়তে হয়।

বিশ। বেশিরভাগ লোকই এমন কাউকে পেলে খুশি হয়, যার সাথে সে ইচ্ছেমত অভদ্র আচরণ করতে পারবে আর অমন আচরণের জবাবে সে সবসময়ই কেবল ভদ্রভদ্র মিউঁমিউঁ পাবে। নিজে বেয়াদবের মতো আচরণ করলেও সে অন্যের প্রতিক্রিয়াটাই কেবল দেখে, নিজের ক্রিয়াটার কথা মাথায় আনতে চায় না। মুখে যা-ই কিছু বলুক না কেন, লোকে মেরুদণ্ডহীন সম্মত বন্ধুই বেশি পছন্দ করে।

ভাবনা: তিনশো বিয়াল্লিশ

…………………………………

এক। যাব কোয়ি বাত বিগাড় যায়ি…….এই গানটা বারবার শুনতে থাকি, আর নিজেকে বারবার বলতে থাকি……….না, ও আমায় ভালোবাসতো না, আমিও ওকে ভালোবাসতাম না, ভালোবাসি না, ভালোবাসবোও না। এসবের কোনও মানে হয়? গানটা কি ও এখনো মনখারাপ হলে আগের মতো শোনে? শুনতেই থাকে? …………আর বরকে পাঠিয়ে বলে, এই রাগি হনুমান, নাও, শোনো!

ও যা ইচ্ছে করুক গিয়ে! আমার কী! আমিই বা কেন এতকিছু ভাবছি? আশ্চর্য! এতো বেহায়া কেন আমি?

দুই। দুই ধরনের লোকের ব্যাপারে সাবধান থেকো: এক। কেবল জিভ ব্যবহার করে কথা বলে যারা দুই। কেবল কান ব্যবহার করে শোনে যারা।

তিন। আমরা যারা বিসিএস ক্যাডার হতে পারাটাই জীবনের সবকিছু ভাবি, তাদের জন্য সুবীর স্যারের জন্য শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, শুভ কামনা দুইদিন ছুটি নিয়ে এক সপ্তাহের জন্য চট্টগ্রাম আসছি। আমার এলাকার এই মানুষটির কথা পড়ে মাথা নত হয়ে এল, আপনাদের সাথে শেয়ার করতে ইচ্ছে হল।

চার। এ পারে মুখর হল কেকা ওই…….ইমন, জানো, আমি ভয়েই দেখি-শুনি না তোমার এই গানটা! পুরোই নেশা ধরিয়ে দেয়! কতবার যে শুনে ফেলি! ভালোবাসা জেনো!

ভেজা হাওয়ার সাথে এই গানটা ছোঁয়া যায় যেন! শরীর আর মন দুইই জেগে ওঠে! মন কী যেন পেতে চায়! এ ঠোঁটযুগলে এক ফোঁটা বৃষ্টির জল নাকি!

আকাশ ঝরছে, চোখ নেশাচ্ছে, কফি ধুমছে, খিচুড়ি ডাকছে! আহা!

পাঁচ। লিও রোজাসের El Condor Pasa…………আহা! এমন একটা সুর কয়েকটা মৃত্যুর চাইতেও সুন্দর!

ছয়। ঢাকো যত না নয়ন দু’হাতে………আহা, মেহদী হাসান! কী জ্যান্ত……………এখনও! (উনার কণ্ঠে আরও কিছু প্রিয় গান কমেন্টে দিচ্ছি।)

সাত। Toto Cutugno – L’Italiano (1983)

এককাপ কফির ধোঁয়ায় শুনতে বসে যান। গানটা অপরিচিত? ব্যাপার নাহ্! সুরটা তো পরিচিতই, তাই না! এখনো মনে পড়ছে না? নাশা ইয়ে প্যায়ার কা নাশা হ্যায়………

আট। ৭-৮টা ছেলের সাথে প্রেম করে বেড়ানো মেয়েটিও নিজ থেকে কোনও ছেলে তাকে নক করলে ছেলেটিকে ‘খারাপ’ ভাবে।

নয়। ভীষণ বিরক্ত হয়ে লিখছি। বাংলাদেশ এখনও প্রিপেইড কাস্টমারদের যথাযথ মূল্যায়ন করার পর্যায়ে পৌঁছায়নি। কীরকম? ধরুন, আপনি অনলাইনে বই অর্ডার করলেন। যদি বই হাতে পাওয়ার পর টাকা পরিশোধ করেন, নো প্রবলেম। আপনি দশটা বই অর্ডার করলেন, হয়ত ২টা পাওয়া গেল না। আপনি ৮টা বই হাতে পেয়ে সেই ৮টারই দাম পরিশোধ করবেন। কোনও ঝামেলা নাই। আর যদি বই হাতে পাওয়ার আগেই কোনোভাবে টাকা পরিশোধ করে দেন, তাহলে আপনার খবর আছে। ওরা বই পাঠাতে দেরি করবে। নিজ থেকে কোনও আপডেট তো জানাবেই না, উল্টো আপনি ওদের ফোন করলে ওরা এমন একটা ভাব দেখাবে যেন আপনি ওদেরকে টাকা দিয়ে ফেঁসে গেছেন। কিছু বই ওদের স্টকে না থাকলে স্বাভাবিকভাবে সেগুলি বাদে বাকি বইগুলি পাঠিয়ে দেবে আর যে বইগুলি পাওয়া যায়নি সেগুলির টাকা, যেটা আপনি অগ্রিম পরিশোধ করে দিয়েছেন, সেটা আপনাকে ফোন করেকরে আদায় করতে হবে, ওরা নিজ থেকে ততটা ফোন করবে না, কারণ টাকা যার হাতে যায় তার হয়ে যায়। যখন ওরা আপনাকে টাকাটা ফেরত দিচ্ছে বলে জানাবে, তখন ওদের ব্যবহারে আপনার মনে হবে, বড় করুণা করে টাকাটা ওরা ওটা ফেরত দিচ্ছে। প্রিপেইড পদ্ধতিতে অর্ডার করে দেখুন। অভিজ্ঞতা মোটামুটি এমনই হবে। আপনি বই হাতে পাওয়ার পর টাকা দিলে আপনাকে কোনও কথাই বলতে হবে না, বরং ওরাই আপনাকে স্যার স্যার করে টাকাটা গ্রহণ করবে।

আমার কথা হল, আমাকে কেন নগদ টাকা পরিশোধ করে এতো কৈফিয়ত দিতে হবে? আমি কি টাকা কম দিয়েছি? নাকি দেরি করে টাকা দিয়েছি? আমি কোনও এক প্রকাশনী থেকে রচনাবলি অর্ডার করেছিলাম। মিনিটের মধ্যেই টাকা পাঠিয়ে দিই, সাথে আমার ক্যুরিয়ার ঠিকানা। এরপর খেলা শুরু। ওদের ফোন দিই, ওদের পেইজে মেসেজ পাঠাই, আর ওরা এমন ভাবে কথা বলে যেন আমি একটা অপরাধ করে ফেলেছি। বিশ্বাস করুন আর না-ই করুন, ওদেরকে আমার ঠিকানা পাঠাতে হয়েছে চারবার! এরপর বইগুলি পাঠানোর জন্য অনুরোধ করে মনে করিয়ে দিতে হয়েছে অন্তত পাঁচবার। ওরা নাকি ভুলে গিয়েছিল! আমি বই-সংগ্রাহক, আমার লাইব্রেরির জন্য বইগুলি আমার খুব দরকার, বই পাঠিয়ে দিলে কৃতজ্ঞ হবো, এ জাতীয় কথাবার্তা বলতে হয়েছে বিনীতভাবে, বহু আগেই পুরো টাকাটা পরিশোধ করা সত্ত্বেও! অথচ যে বই হাতে পাওয়ার পর টাকা দেয়, তাকে কোনও কথাই বলতে হয় না। যে টাকা আগেই দিয়ে দেয়, সে ধরা খায়। এ দেশ ভদ্রলোকের দেশ না। কেন? কারণ, ওরা হাতে টাকা পেয়ে গেছে!

কাহিনী আরও আছে। আপনি যদি বই হাতে পাওয়ার আগে টাকা দিয়ে দেন, তাহলে আপনাকে ক্যুরিয়ার সার্ভিসের অফিসে গিয়ে বই নিয়ে আসতে হবে, আর যদি বই হাতে পাওয়ার পর টাকা দেন, তাহলে ওরাই আপনার কাছে বইগুলি নিয়ে আসবে; যদিও শিপিং চার্জ দুই ক্ষেত্রেই একই। অথচ আপনি বই হাতে পেয়ে টাকা পরিশোধ করলে কোনও সমস্যা নাই। বই ঠিক অবস্থায় আছে কি না দেখে যা বই পাবেন, তার মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন। আপনি অর্ডার করেছেন, কিন্তু এখনও টাকা দেননি, অতএব ওরাই আপনাকে ফোন করে খুব বিনীতভাবে বলবে, স্যার, আপনার অমুকঅমুক বই পাওয়া যায়নি, বাকিগুলি আমরা পাঠিয়ে দিয়েছি।

আরেকটা সমস্যার কথা বলি। যদি আপনি কম বই কিনেন, তাহলে আপনার তেমন কোনও ভোগান্তি পোহাতে হবে না। এ দেশের অনেক ব্যবসায়ীই এখনও বেশি পরিমাণে বিক্রির জন্য প্রস্তুত নন। আপনি বেশি পণ্য অর্ডার করবেন, সেক্ষেত্রে আপনার হওয়ার কথা ভ্যালুড কাস্টমার এবং কিছু বাড়তি সুবিধা পান না পান, অন্তত দ্রুত সেবা আপনার প্রাপ্য। বাস্তবে হয় এর উল্টো! আপনি দেরিতে সেবা পাবেন, সেখানে কিছু অব্যবস্থাপনাও থাকবে, কারণ একটাই: অতো বেশি পণ্য ডেলিভারি দেয়ার জন্য ওরা প্রস্তুত না। তবে অতো বেশি পণ্যের অর্ডার নিতে ওরা পুরোপুরিই প্রস্তুত! বোঝেন ঠ্যালা!

আমি গত একুশে বইমেলার সময় থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় চারশোর বেশি বই কিনেছি অনলাইনে। এবং বেশি বইকেনার কারণে বেশি পেইন পেতে হয়েছে। এ হল আমাদের দেশের কিছু ব্যবসায়ীর প্রফেশনালিজমের অবস্থা! এ দেশে লয়াল কাস্টমারদের বাড়তি সুবিধা দূরে থাক, প্রাপ্যটাই ঠিকভাবে দেয়া হয় না।

আপনি লয়াল কাস্টমার মানেই হল বাড়তি কিছু প্যারা অপেক্ষা করছে আপনার জন্য। আমি জিপি ব্যবহার করি সেই ২০০২ সাল থেকে। জিপি’র যত অফার, সবই নতুন ইউজারদের জন্য কিংবা যারা সিমটা অনেকদিন ইউজ না করে ফেলে রেখেছেন, ওদের জন্য। আরও কাহিনী আছে। আমি একমাসে যত টাকা রিচার্জ করি, অনেক ইউজার এক বছরেও তার চারভাগের একভাগও রিচার্জ করেন না। তবে ওরা কম ব্যবহার করার কারণে জিপি থেকে যে বাড়তি সুবিধা পান, আমি তার সিকিভাগও পাই না। ওরা এর নাম দিয়েছে প্রণোদনা। শালা, ফাজিলের ফাজিল! এ কালচার থেকে আমরা যত তাড়াতাড়ি বেরিয়ে আসতে পারব, ততই মঙ্গল। সবাই তো আর রাম-সাম-যদু-মধু টাইপের কাস্টমার না, তাই না? স্পেশাল কাস্টমারস শুড বি ট্রিটেড স্পেশালি। কোম্পানি যদি গ্রাহকসেবাটাই ঠিকভাবে দিতে না পারে, তাহলে সে কোম্পানি টিকবে কেমন করে?

দশ। রাস নারে তু, কাহেনা বোলে রাম……… শুনলে ভাল কিছু শোনাই ভাল। জীবন ছোটো তো! এ নিয়ে কতবার যে শুনে ফেললাম! ভাল কিছু সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে ইচ্ছে করে, তাই শেয়ার করছি। কিছু মেঘে আকাশ ঝরে, কিছু কণ্ঠে হৃদয় ঝরে। শিশুটির জন্য শ্রদ্ধায় মাথা নোয়ালাম, অহংকারের টুপিটা খুলে রাখলাম।

এগারো। The Cinematic Orchestra – Arrival of The Birds & Transformation………. সুরটি শুনুন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত। বুকের ভেতরে জমেথাকা সমস্ত বরফ তুষারবৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়বে। কথা দিচ্ছি।

বারো। কিছু বেহালার সুর ওষুধের মতো। যেমন এটি। (Sound of an Angel) কিছু ওষুধ সুরের মতো। যেমন, বাবাকে, মাকে যে ওষুধ খেতেই হয়। দুটোই লাগে—বাঁচতে! এমন সুরের স্রষ্টারা আজীবন আনন্দে বাঁচুক!

বারো। এমন কয়েক টুকরো আঙুল ঈশ্বর আমার হাতের সাথেও জোড়া লাগিয়ে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। হায়, সে উপহার কখনো ঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারিনি! A Breathtaking Piano Piece – Jervy Hou সুরটা গিললাম, টুপিটা খুলে রাখলাম। শ্রদ্ধা। ভালোবাসা।

তেরো। টিনএজারদের দেখি। ওরা একদিন বড় হবে এবং কোনো এক Sushanta Paul-কে বলবে, ভাইয়া, আমি অনেক মেধাবী কিন্তু হতাশায় ভুগছি। কীভাবে আমি বিসিএস পরীক্ষায় প্রথম হতে পারি, শিখিয়ে দিন। একটা ফাউল ডাম্ব শ্যালো জেনারেশনের ছেলেমেয়েদের বাংলাদেশ বড় করছে। প্লিজ, বলবেন না, নিশ্চয়ই মিরাকল ঘটবে আর এরাই বিশাল কিছু হয়ে যাবে! মিরাকল ঘটে ঠিকই, কিন্তু প্রতিদিন ঘটে না, প্রতিজনের ক্ষেত্রে ঘটে না। প্রায়ই, মিরাকলও ঘটে কারণেই, অকারণে নয়। এদের দেখলে করুণা হয়। (উল্লেখ্য, পরামর্শ চাওয়ার টেক্সটটি ইংরেজি ভাষায় লিখলে তা পড়তে হবে খুব ভয়াবহ! স্টুপিডগুলা শুদ্ধ ইংরেজিতে এক লাইন লিখতে পারে না, আবার চাকরি চায়!)

চৌদ্দ। ম্যায় আগার কাহুঁ……..গানটা শোনার সময় মনে পড়ে গেল, এই মুভিটা রিলিজ হওয়ার পরপর ওম-শান্তি-ওম গ্লাসবল ডল বের হল, সেটার চাহিদাও ছিল খুব বেশি। বিভিন্ন সাইজের চাবিদেয়া গ্লাসবল ডল। চাবি দিলে বলের ভেতরে হাতে হাতরাখা শাহরুখ-দীপিকা ঘুরত, নাচত, আর এই গানের মিউজিক বাজত। আমাদের গিফটশপ দোভানা’তে এই গ্লাসবল ডল বিক্রি করেছি অন্তত কয়েক হাজার পিস। কাস্টমারদের সাথে কনভিন্সিং ওয়েতে (পটায়েপটায়ে) কথাবলা, কেনা গিফটটি প্যাকেট করে দেয়া, কিছু কিনুক না কিনুক, দোকান থেকে চলে যাওয়ার সময় হাসিমুখে থ্যাংকস বলে ‘আবারও আসবেন’ বলা-র দিন ছিল তখন–অন্য রকমের সেইসব দিন! ভাবলে আজও শিহরণ জাগে! আজ বুঝতে পারি, কারও চাইতে বড় হওয়ার প্রথম শর্ত—প্রথমে উনার চাইতে নিজেকে ছোট করে উপস্থাপন করতেই হবে!

পনেরো। ও এমন কী আর মেধাবী? ও কি এখনও বিসিএস ক্যাডার হতে পারসে? হুহ্!

ষোলো।

: চাকরি কেমন লাগে, দাদা?

: একদম চাকরির মতন।

: মানে, ভাল, না মন্দ?

: আমি গরীব মানুষ, গরীবদের কোনও ভালমন্দ পছন্দ থাকতে নেই। গরীবদের যা থাকে, তা হল প্রয়োজন।

সতেরো। শুনছি লতার কণ্ঠে আগার তুম না হোতে……. তুমি না থাকলে, প্রিয়, বেঁচে থাকার কী-ই বা আর অর্থ থাকত, বলো! (এমনই তো অর্থটা, না? আহা, হিন্দিটা বুঝতাম! কত মধুর গান আছে হিন্দিতে! কেউ একটু শিখিয়ে দিন না হিন্দিটা!)

আঠারো। আমার ছোটভাই Prashanta তার নতুন চাকরির প্রথম মাসের বেতন দিয়ে পাঞ্জাবি কিনে দিল। ওকে হয়ত অনেকে চেনেন, ভাল কবিতা লেখে।

উনিশ। (মুহম্মদ জাফর ইকবালের একটি লেখার জনপ্রতিক্রিয়ার প্রতিক্রিয়ায়) অনুগ্রহ করে লেখাটি ‘আবারও’ পড়ুন। স্যার যা বলেছেন, তার মধ্যে ভুলটা কোথায়? স্যারের বক্তব্য স্বচ্ছ, অকপট, যৌক্তিক। অনেকে স্যারের সম্পর্কে যাচ্ছেতাই বলে যাচ্ছেন, নিউজফিডে আসে, তাই জেনেছি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এ মূর্খ জাতির জন্য ‘আমরা সবাই রাজা আমাদের এই রাজার রাজত্বে’ লেখার পর তার অর্থটা আর ভেঙে দিলেন না। আফসোস! আপনার আমার মতন কয়েক লক্ষ লোকের সস্তা কপিপেস্ট কমেন্টের চাইতে স্যারের একটা লেখা অনেক বেশি গুরুত্ব বহন করে। বাংলাদেশের মঙ্গল নিয়ে সত্যি যাঁরা এখনও ভাবেন, তাঁদের মধ্যে স্যার একজন। উনি যা লিখেছেন, তা আপনার আমার মত স্থূল বুদ্ধি নিয়ে চলা মানুষের পক্ষে বোঝা একটু শক্ত। তাই বলে ভুল বুঝে লাফাচ্ছি কেন? ওটা আমাদের কালচার বলে? আমরা শুধু অকৃতজ্ঞই নই, তদুপরি অসহায়, অতএব, সুবিধাবাদী। বেশিরভাগ অসহায় লোকের সুনির্দিষ্ট কোনও চরিত্র থাকে না। পরিতাপের বিষয়, অসহায় লোকদের সুস্থ বুদ্ধিও প্রায়ই লোপ পায়। আবারও অনুরোধ করছি, লেখাটি ‘আবারও’ পড়ুন। পুনশ্চ। বাংলাদেশ একটি অদ্ভুত দেশ। এখানে ‘কিন্তু’বিহীন কোনও আন্দোলন হয় না। কেন বলেছি এ কথা, সে কথা থাক।

বিশ। ফেসবুক ফ্রেন্ডশিপের চাইতে যে রিক্সায় চড়ি, সেটির চালকের সাথে ক্ষণিকের যে পরিচয়, সেটা বেশি জ্যান্ত।

ভাবনা: তিনশো তেতাল্লিশ

…………………………………

এক। ইন কেইস ইউ এক্সপেক্ট ট্রু লাভ অ্যান্ড লয়ালটি, ডোন্ট ম্যারি, হ্যাভ অ্যা ডগ ইনস্টিড!

দুই। আপনাদের নববর্ষের হৃদয়মথিত উপহারের ঠ্যালায় আমি বিহ্বল, বিব্রত, বিরক্ত। মাফ চাই, দোয়াও চাই। ভাইলোগ, এইবার পারলে কিছু কাগজটাগজ পাঠান। খালি দেখে আর পোষায় না, ছুঁইতে মঞ্চায়!

বিঃ দ্রঃ আমি চেকও রিসিভ করি।

তিন। André Rieu এবংGheorghe Zamfir এর পরিবেশনায় The Lonely Shepherd শুনুন, অনুভব করুন। জগতের আনন্দযজ্ঞে স্বাগতম! (সত্যিই শুনুন! জানি, এই ভিডিও থেকে বিসিএস পরীক্ষায় কোনও প্রশ্ন আসবে না, তবুও শুনুন।)

চার। কোটা-ব্যবস্থার বর্তমান কাঠামো বহাল রাখলে বা বাতিল/ সংশোধন করলে তা সংবিধানের কোনও ধারার সাথেই সাংঘর্ষিক হবে না, ভাই/বোন-রা! সংবিধান না পড়ে চিলের পিছে মিছেই ছুটবেন নাতো! ভবিষ্যৎ প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীর কাছ থেকে এমন অবোধ আচরণ আমরা আশা করি না। যে ধারাগুলির রেফারেন্স দিচ্ছেন, সেগুলি আবারও পড়ুন। ভুলটা বুঝতে পারবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন, তা করা পুরোপুরিই সম্ভব। আসুন, আমরা ভাল কিছুর জন্য অপেক্ষা করি।

পাঁচ। একা থাকার চাইতে ভুল কারো সাথে থাকা অনেক বেশি নিঃসঙ্গতার জন্ম দেয়।

ছয়। ঘুমভেঙে Anoushka Shankar এর কণ্ঠে Raga Manj Khamaj শুনলাম।

মহাসমুদ্রের শত বৎসরের কল্লোল কেহ যদি এমন করিয়া বাঁধিয়া রাখিতে পারিত…………ওই যে গুরুদেব লাইব্রেরি নিয়ে কী যেন লিখেছেন না! এমন অসামান্য সুর এক-লাইব্রেরি বইয়ের সমান আনন্দ দেয়, প্রার্থনার সমান সুখ দেয়। আমি জানি না এমন একটা সুরের জন্য কতটা লিখলে সঙ্গত হয়। মানুষ এতটা প্রণম্যও হয়! আহা! এত অপূর্ব!! আর ওরা বলে কিনা ঈশ্বর আকাশে থাকেন!!

সাত। এলো দিল্লিতে নিজামউদ্দিন আউলিয়া। ইউটিউবে এ গানের যত ভার্সন আছে, সেগুলির মধ্যে, আমার কানে, ফকিরা ব্যান্ডেরটাই বেস্ট! ধন্যবাদ, তিমিরদা! তবে আমার শোনা সেরা ভার্সনটি আমার ছোটভাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের Fakir Saheb-এর কণ্ঠে, যা ইউটিউবে নেই। এই পাগলা নিজেই জানে না সে কী জিনিস!! যাদের কথা ভাবলে ভালোবাসা আর শ্রদ্ধায় আমার মাথা নত হয়ে আসে, ফকির তাদের একজন। ভাই, বহুদিন ধরে গানটা তোর কণ্ঠে শুনতে ভীষণ ইচ্ছে করছে! গানের শান্তি বড় শান্তি! একটু গেয়ে রেকর্ড করে পাঠাবি?

আট। First deserve that ‘এক্সট্রা-খাতির’, then expect it. As a human being, you deserve only ‘খাতির’ from another human being. Do remember, no one ever walks an extra-mile for you without some extra-reasons unless and until you are a friend, a near one, a relative, a colleague or a family member to them. Ask your heart, aren’t you in the same boat as well? Be honest, dear; of course, you are! Accept it. Rather, be thankful to everyone around you for everything you are getting from them though you neither deserve nor demand it. Well, maybe you need sunshine at a cold night for keeping yourself warm, but why should the sun shine for you at night without any reason? Don’t claim it, if you don’t deserve or can’t earn it. Come on! Be practical! Life is as it is, not as you dream it to be. A scorpion always stung, still stings, will sting forever. If you expect it to kiss you, it’s your problem, not its!

And another thing to remember: Please please please never ever market or publicize your emotions and sorrows. Trust me, almost no one really cares. Who cares, can do nothing for you; who can do something for you, does not truly care. As only you have walked in your shoes, only you know how they comfort or pain. Then what’s the use of revealing your pains to others, especially to a wrong person? It will only make you more vulnerable. People expect only a smile from you, not your tears. Maybe your tears mean a lot to you, but to others, they mean nothing! People are already busy with their own tears; no time to care about anyone else’s tears! Showing your tears to them is just killing your time. You think, your own pains are the greatest pains on earth, you are the unluckiest creature in the world, you deserve (!) immediate attention, let the world stop moving for the time being for solving your problem, bla bla bla…………. Hey kid! Stop whining! Enough is enough! You pain is ONLY your pain, you problem is ONLY your problem, your emotion is ONLY your emotion, your suffering is ONLY your suffering! When you suffer, only you know how it hurts! So, the better approach is, keep trying to get rid of it, or show them the meaning of being extra-kind to you. At the end of the day, everyone is a stranger to you except yourself.

নয়। বেশিরভাগ মানুষই, কিছুই না দিয়ে কিছু পেতে চেয়ে কিছুই পায় না। যা প্রাপ্য নয়, তা পেতে চাইলে কিছু দিতেই হয়—পার্থিব বা অপার্থিব। যা দামি, তা কখনওই এমনিই পাওয়া যায় না। যা এমনিই পাওয়া যায়, তা কখনওই দামি নয়। আমার নিজের অভিজ্ঞতা বলে, আমার যা দরকার, তা যার কাছে পেয়েছি, তাকে আমার এমন কিছু দিতেই হয়েছে, যা তার দরকার। এটা বোঝার আগ পর্যন্ত আমি সবসময়ই নির্বোধ ও পরাজিত ছিলাম। তো, ফ্রি লাঞ্চ বলে কি কিছু নেই? আছে। সেটা কেমন? যখন আপনার মাছভাত লাগবে, তখন আপনি পাবেন শাকভাত। ফ্রি! হ্যাঁ, মরে যাবেন না, বেঁচে থাকবেন ঠিকই, তবে তেমনিভাবে, যেমনিভাবে বাঁচতে আপনি চান না। আপনার জমি কর্ষণ করতে হবে। আপনার কাছে ছাগল আছে। গরু কেনার পয়সা বাঁচাতে আপনি ছাগল দিয়েই কাজ চালানোর ক্রমাগত চেষ্টা করে যাচ্ছেন, পারছেন না আর ছাগলটাকে সমানে পিটাচ্ছেন। ভেবে দেখুন, ছাগল দিয়ে তো আর হালচাষ হয় না, ছাগলেরই বা কী দোষ?

দশ। : মাথা নোয়াও, মাথা নোয়ানো প্র্যাকটিস করো! আরে ভাই, বাচ্চা না কাঁদলে তো মাও দুধ দেয় না। : বাচ্চা কাঁদে, কারণ বাচ্চার আর কোনও অপশন নেই। আমার তো আছে! মাথা না নুইয়ে অল্পে বাঁচাও আনন্দের।

এগারো। যারা নিঃসঙ্গতাকে ভয় পায়, তারাই নিঃসঙ্গ হয়ে যায় সবার আগে। হারিয়ে ফেলার ভয় যার যত বেশি, সে তত বেশি হারিয়ে ফেলে। ওদিকে, যে একা হাঁটতে চায়, তার হাত ধরে যেন পৃথিবীসুদ্ধ মানুষ টানাটানি করে। যে একা থাকতে চায়, তাকে একা থাকতে দিই। যে একা করতে চায়, তাকে একা করতে দিই। পৃথিবীতে চলার জন্য যারা অপরিহার্য, তাদের কেউই ওপরের দুই দলের কোনওটিতেই পড়েন না। ভালোবাসাহীনতায় বাঁচার চেয়ে অশান্তিতে বাঁচা বেশি যন্ত্রণার।

বারো। আপনার আবেগ, আপনার সংস্কার, আপনার নিয়ম, আপনার ধর্মাধর্ম, আপনার শখআহ্লাদ, সবই পালন ও পূরণ করুন নিজের টাকায়, অন্যের টাকায় নয়। টাকাপয়সা খরচের ক্ষেত্রে বাপকে আপন ভেবে বাপের টাকার শ্রাদ্ধ করে বেআক্কেলরা। বাপের টাকা, বাপের টাকা; আমার টাকা, আমার টাকা আর বাপের টাকা।

তেরো। যার যত অল্প, তার তত শোঅফ।

চৌদ্দ। First, learn to earn. Then, earn to learn.

পনেরো। কিছু ভারতীয় বন্ধুর আক্রমণাত্মক স্ট্যাটাস দেখে খুব কষ্ট পেয়ে কিছু কথা লিখতে ইচ্ছে করল: বীর হতে শিখুন। বীরকে পরাজিতের লাশের ওপর নেচে উৎসব করতে হয় না, ভায়া! ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, বীররা যে সবসময়ই জিতেছে, এমন নয়। তবে বীরের অভিব্যক্তি শেষ পর্যন্ত বীরোচিতই থেকে গেছে। আপনারা জয়ী হয়েছেন, এজন্য অভিনন্দন। বুকে হাত দিয়ে বলুন তো, খুব হেসেখেলেই এলাম, দেখলাম, জিতলাম স্টাইলে জয়টা এসে গেছে? শেষ বলটা পর্যন্ত বুক কাঁপতে থাকেনি? জিতেছেন, ভাল কথা। উল্লাস করছেন, আরও ভাল কথা। তবে এটা ব্যাপার কী, জানেন, নিজের মাকে বড় করতে অন্য কারও মাকে ছোট করতেই হয় না। আপনার মা আজকে পোলাও-কোর্মা রেঁধেছে, আমার মায়ের সাধ্যে নাহয় আজ শাক-ভাত বাদে আর কিছুই কুলোয়নি—তবু তো আমার মা। আপনার মায়ের বিত্ত আপনার কাছে যতটা গৌরবের, আমার মায়ের দারিদ্র্যও আমার কাছে ঠিক ততটাই গৌরবের। কেন অহেতুক আমায় আঘাত করে নিজের কাপুরুষতার ঢাক পেটাচ্ছেন?

ষোলো। আহা, সাগ্নিক! তারে বলে দিয়ো………তাই— যারা গায়, ভালোবাসা পায়।

সতেরো। Thank you, mom, for being very very very strict in my childhood. (আগেই বলসিলাম, মাইরের উপর ওষুধ নাই। বাচ্চা পোলাপান—হয় ঠিকমতো চলবে, নয় থাপ্পড় খাবে। সিম্পল!)

আঠারো। আপনি আমায় খারাপ বললেও আপনাকে আমার ভাল বলতেই হবে, জগতে ভাল লোকের সংকট এখনও অতো বেশি হয়ে যায়নি, সে আপনি যতই ভাল হন না কেন!

উনিশ। A chained dog is happier than a married man as the dog knows he is chained.

বিশ। সময়ে লাফায়, সময়ে হাঁপায়।

একুশ। সাফল্যের জন্য অনুপ্রেরণার চাইতেও বেশি প্রয়োজন একগুঁয়েমি, ধৈর্য আর পরিশ্রমের। আমি কিছু লোককে চিনি, যারা একই সাথে অনুপ্রাণিত ও অলস কিংবা ভুল কাজে উদ্যমী। এমন অনুপ্রেরণা কাউকে কিছু দিতে পারে না। অনুপ্রেরণা গিলে খাওয়ার জিনিস নয়, কাজে লাগানোর জিনিস। (এ নিয়ে কখনো বিশদ লেখার ইচ্ছে রইল।)