ভাবনাদেয়ালের পলেস্তারা: ১২৯

ভাবনা: আটশো সাতানব্বই
………………………………………………………

এক। জানো, এই যে দুই দিন ধরে জ্বর, কেউ খোঁজ না নিলেও একজন নিচ্ছেন। তিনি অফিসের লাঞ্চের সময়, ঘুম থেকে উঠে সকালে, বাসায় গিয়ে, ঘুমোতে যাবার আগে...প্রায় সময়ই খোঁজ নিচ্ছেন।

আমি পারিনি তাকে ভালোবাসতে! কারণ আমি সবাইকে ভালোবাসতে পারি না। আবার একবার যাকে ভালোবাসি, তাকে সহজে ভুলি না।

মানুষটা জানে, আমার পছন্দের রঙ কালো। এখন ব্লেজারও কালো রঙের বানিয়েছে, শার্টও কালো; আমার জন্য মানুষটা সব ড্রেসই কালো রঙের কিনে বসে আছে!

তার অফিসে সবাই জিজ্ঞেস করে, বস, আপনার হয়েছেটা কী! সব শুধু কালো রঙের পোশাক কেন!
তার সহজ উত্তর: খুব শান্তি লাগে কালো রঙের পোশাকে, তাই সব‌ই কালো!

মানুষটার সাথে এইবার ঢাকায় দেখা হয়েছিল খুব ব্যস্ত কোনও এক রেস্টুরেন্টে, প্রচণ্ড ভিড়ে...সে আমার সামনে বসে বলেছিল, তোমাকে আজও ভীষণ ভীষণ ভালোবাসি। তুমি কখনোই বুঝতে চাইলে না আমার ভালোবাসা! খুব কি ক্ষতি হতো, যদি বুঝতে!

সে দেখি রেস্টুরেন্টে কাচের দিকে তাকিয়ে বাইরে তাকিয়ে আছে। আমি এইবার বলেই ফেললাম, বাইরে তাকিয়ে আছেন কেন...আমি সামনে থাকার পরেও!? আমাকে অ্যাভয়েড করছেন?

সে তখন বলে বসল, তোমাকে অ্যাভয়েড করার শক্তি নেই আমার!

আমি সাথে সাথেই বলে ফেললাম, আজ সকল প্রস্তুতি নিয়ে এসেছেন বোঝা যাচ্ছে...আমাকে কথায় হারানোর!

তার উত্তর: কথায় জিতে-যাওয়াসহ সকল ধরনের জিতে-যাওয়া তুমি আমার কাছে সহজেই পারবে, কেননা আমি তোমাকে ভালোবাসি!

সে আমার সামনে বসেই সিগারেট ধরাল। এক বার শুধু জানতে চাইল, স্মোকিং-এর পারমিশন কি আছে তোমার সামনে?

আমি বললাম, না খেলে হয় না?

তার উত্তর: না খেলে কি তুমি আমার হবে...সারাজীবনের জন্য?

আমার আর কিছুই বলতে ইচ্ছে করেনি। জানি না কেন! একদমই চুপ হয়ে রইলাম।

স্রষ্টা মনে হয় নিঃস্বার্থ ভালোবাসা অস্বীকার করার শক্তি বা সাহস কোনোটাই দিয়ে আমাদের পাঠাননি! তাই মাঝেমধ্যে আমরা ভালো না বাসলেও তীব্র ভালোবাসা দেখার পরে চুপ হয়ে যাই... অবশ্য তুমি এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম!

দুই। আমি তোমাকে কতটা অনুভব করতে পারি, তুমি জানো না। জানলে‌ অমন করে বলতে পারতে না।

তোমাকে কতটা ধারণ করি, তা-ও তোমার ধারণার বাইরে, সেজন্যই অমন খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে যন্ত্রণা দিতে পারো।

তোমার মুখটা আমার কাছে কত প্রিয়, তা অনুমানও তুমি করতে পারবে না, আর সেজন্যই দেখা না করে বছরের পর বছর কাটিয়ে দিতে পারো।

তোমার ছোঁয়া যে আমার মনের ব্যথানাশক, এই পরম সত্য কথাটা তুমি বার বারই অবিশ্বাস করেছ, অথচ আমি তো জানি, তোমার ছোঁয়া না পেয়ে কত কত দিন ধরে আমি মনের ব্যথায় কাতর হয়ে আছি!

এইসব তুমি জানোই না! আমার মনের কোন‌ও খবরই তুমি জানো না। যদি জানতে, তাহলে অবাক হতে। আমিও আগ বাড়িয়ে আর কিছু বলতে যাইনি, তোমাকে ফেরাতে চাইনি। যে মানুষটা এতটা অবহেলা মনে পুষে রাখতে পারে, তাকে এইসব জানিয়েও-বা কী লাভ! যে মানুষ অন্যের অনুভূতির প্রতি এতটা উদাসীন, সে মানুষের কাছে নিজের মনের কথা প্রকাশ করতে যাওয়াই তো চরম বোকামো!

সেজন্যই আমি কিছু বলিনি, ফেরাতে যাইনি তোমাকে। জোর করে কি ফেরাতে পারতাম সত্যিই? এমন জোরের কি আদৌ কোনও ক্ষমতা আছে?

তুমি আমার কথায় কষ্ট পেয়ো না। মাঝেমধ্যে আমি একটু এলোমেলো বকি, তার পরে আবার ঠিক হয়ে যাই। যাকে পাগল বানিয়েছ, তার পাগলামি তো মাঝেসাঝে সহ্য একটু করতেই হবে, তাই না?

ভয় নেই, এখন আর ফিরতে বলব না। ফেরার মতন সময়ও তো আর নেই। শুধুই জানতে ইচ্ছে করে, এমন শীতের রাতগুলোয় স্মৃতি হাতড়ে হাতড়ে কি শুধু আমারই একা লাগে?

তিন। কাউকে কখনও এত বেশি প্রশ্ন করতে নেই। এই যেমন ধরো, তোমাকে কখনোই আমি জিজ্ঞেস করি না, কেমন আছ? কোথায় আছ? খেয়েছ কি না...

আমি জানি, তুমি ভালো আছ। তা-ই যদি হয়, জিজ্ঞেস করে কী হবে!

অথবা এখন তোমার মন ভালো নেই। তা-ই যদি হয়, জিজ্ঞেস করেও-বা কী হবে যদি তোমার মনটা ভালো করতে না পারি!

কেউ যখন তোমাকে খুব কাছের ভাবে, তখন তার কাছে কখনোই প্রশ্ন করে জানতে হয় না, কী কী হয়েছে সারাদিন, কেমন লাগছে ব্লা ব্লা ব্লা...

আমি জানি, যে মানুষটা আমাকে খুব বিশ্বাস করে এবং কাছের ভাবে, সে অন্তত তার দুঃখের সময়, মন খারাপের ক্ষণে, অস্থিরতার সময়ে ঠিকই আমার কাছে আসবে এবং বলবে কী হয়েছে আর কী হয়নি।

আমার কখনোই তার কাছে যেচে গিয়ে প্রশ্ন করতে হয় না...কী হয়েছে?

হ্যাঁ, আমার কাছে নিজের অনেক অনেক কথা অনেকে জমা রেখে যায়। আমি অনেকের কাছেই বিশ্বস্ত এবং প্রিয়। শুধু তোমার কাছেই আমি কিছুই ন‌ই!

চার। বৃষ্টি হচ্ছে বাইরে। দেখতে পাচ্ছ? জানি, দেখেছ কিংবা চাইলেই হুট করে দেখে নিবে।

আচ্ছা, তুমি কখনও আমার এই চোখে তাকিয়ে দেখেছ, কী পরিমাণে জল ফেলেছি শুধু তোমার জন্য?

অপেক্ষা কাকে বলে, বোঝো সেটা? কখনও জানতে চেয়েছ, কেন তোমার জন্য অধীর আগ্রহে এতগুলো বছর আমি অপেক্ষা করে ছিলাম?

আমার কাছে তুমি ছিলে না, কিন্তু আমার হৃদয় তুমি দিয়ে পরিপূর্ণ ছিল।

ভীষণ ধৈর্য ধরতে শিখিয়ে ফেলেছ আমাকে! সেই ধৈর্যশক্তি নিয়েই তোমার সঙ্গে এতটা সময় কাটিয়ে দিলাম!

ভার্চুয়াল জগতের বাকি মানুষদের মতো তুমি আমার টাইমপাস ন‌ও। বাস্তবজীবনে কেবল একটাই ভালোবাসার মানুষ তুমি আমার। এই সত্যটা অনেক দাম দিয়ে মেনে নিতে হয়েছে আমাকে।

পাঁচ। ধরো, একটা মানুষ তোমার প্রতি দুর্বল। সেই মানুষটার প্রতি তুমি প্রথম থেকে শেষঅবধি খুবই কঠোর!
আমরা তো অসীম সময়ের জন্য দুনিয়াতে আসিনি, কিছুটা সময়ের জন্য এসেছি।

একদিন তোমার প্রতি দুর্বল-থাকা মানুষটা তোমার কাছ থেকে অনেক দূরে সরে গেল। এতে করে কী হলো জানো? তুমি চিরকালের জন্য জিতে গেলে।

প্রথম থেকে শেষঅবধি জিত কিন্তু তোমারই। সেই মানুষও তোমাকে জিতিয়ে রাখল। তুমিও তোমার সিদ্ধান্তে প্রথম থেকে অটল থেকে গেলে। কে জিতল তবে? অবশ্যই তুমি!

বিরক্তি, ভালোবাসা, অবহেলা...একেকটা আলাদা আলাদা বিষয়।

যে আমাদের জিতিয়েই রাখে প্রতিযোগী না ভেবে, আমরা কিনা তার কাছেই জিতে যাই! খুব কি জিত এতে?!

অবহেলা জিনিসটা তুমি কেবল তাকেই দিতে পারবে, যে এক তোমাকেই তার পৃথিবী বানিয়ে বসে আছে। তা ছাড়া রাস্তাঘাটের কোনও লোক কিংবা তোমাকে যে ভালোই বাসে না, তাকে ডেকে সেধেও কিন্তু অবহেলাটা তুমি দিতে পারবে না। চাইলেও না। জোর করেও না।

ভালোবাসা নিয়ে অনেক কিছু বলো তুমি সবসময়। তোমার যুক্তি যেমন সঠিক, ঠিক তেমনি তোমাকে যে ভালোবাসে, তার ভালোবাসাটাও কিন্তু মিথ্যে নয়!


ভাবনা: আটশো আটানব্বই
………………………………………………………

এক। যে-কোন‌ও সম্পর্কের একটাই নিয়ম: হয় থাকো, নয় সরো।

পেইন দিয়ো না,
পেইন নিয়ো না।

পেইন সহ্য করে করে বাঁচার মতো অতটা বড়ো জীবন দিয়ে আমাদের এ পৃথিবীতে পাঠানো হয়নি।

দুই। যে মানুষটা তোমার সুখের দায়িত্ব নেয় না, তাকে নিয়ে... 'সে কী ভাববে!' এরকম কোনও ভাবনা থেকে সেই পথ থেকে ভুলেও ফিরে এসো না, যে পথটা তোমাকে সুখী করে। আয়ু ফুরোনোর খেলায় কেবল তাকেই দাম দাও, যার কাছে তোমার সুখের দাম আছে। জেনে রেখো, বাকিরা সবাই-ই তোমার জীবনে মূল্যহীন।

তিন। আপনি ভালো আছেন কি খারাপ আছেন, তা নিয়ে আসলে কেউই ভাবে না। 'কেমন আছেন?' প্রশ্নটাই একধরনের ঢং। আর 'ভালো আছি।' উত্তরটা আরও বড়ো একটা ঢং। যাকে নিয়ে আমাদের বিন্দুমাত্রও মাথাব্যথা নেই, তার‌ও কুশলাদি আমরা জিজ্ঞেস করি এবং মনে মনে চাই, সে সত্যিটা না বলে বলুক, 'ভালো আছি।' সত্যিটা শুনলে আমরা বরং বিরক্ত হ‌ই, কেননা যারা আমাদের জীবনে ম্যাটার করে না, তাদের দুঃখের গল্প শোনার সময় ও ধৈর্য আমাদের নেই। তাই যে আমাকে চেনে না, আমাকে সময় দেবার বাধ্যতা যার নেই, তাকে কখনও জোর করে নিজের দুঃখের কথা শুনিয়ে বিরক্ত করতে নেই।

চার। কখনোই ভাববেন না যে জীবনে অমুককে না পেলে, তমুকের সঙ্গে বিয়ে না হলে আপনি জ্ঞান হারাবেন, মরেই যাবেন! এ পৃথিবীতে পছন্দের মানুষটিকে না পেয়ে যত জন আত্মহত্যা করেছে, তার চাইতে অনেক বেশি মানুষ ধুঁকে ধুঁকে মরেছে ও মরছে কিংবা আত্মহত্যা করেছে ও করছে পছন্দের মানুষটিকে পেয়ে। না পেলে অনেক কিছুই মনে হয়, পেয়ে গেলে সব কুৎসিত সত্য একটা একটা করে বেরিয়ে আসে। মিউচুয়াল আন্ডারস্ট্যান্ডিং ব্যাপারটা সাধারণত পেয়ে যাবার আগ পর্যন্তই চমৎকার থাকে।

পাঁচ। গুণ থাকলে অনেকের কাছেই পৌঁছানো যায়। আর গুণ না থাকলে আফসোস কিংবা ঈর্ষা করেই কাটাতে হয়। এটাই নিয়ম।

ছয়। অনেক অনেক কষ্ট করার পর জীবনে একদিন সুখ আসে। আফসোস, সেদিন সেই মানুষগুলোর অনেকেই আর পাশে থাকে না, যাদের নিয়ে আমরা সুখী হতে চেয়েছিলাম। যাদের নিয়ে আমরা সুখী হতে চাই, সুখের দিনে তাদের পাশে পাওয়াটা বড়ো সৌভাগ্যের ব্যাপার।

সাত। যাদের কাছে এ পৃথিবীর সকল রোগের একমাত্র ওষুধ প্যারাসিটামল, তাদের সঙ্গে আপনার রোগের উৎস ও নিরাময় নিয়ে তর্ক করা তো দূরের কথা, কথা বলাও স্রেফ সময়নষ্ট ছাড়া আর কিছু নয়।

আট। জগতে তিন ধরনের মানুষ আছে:

যারা খালি আকাম‌ই করে, কোনও কামের কাম করে না
যারা কামের কাম করার জন্যই কিছু আকাম করে
যারা কোনও আকাম‌ই করে না, খালি কামের কাম করে

উল্লেখ্য, তৃতীয় ধরনের মানুষগুলো মানুষ না, ওরা ড্রাগন, ওদের মুখ থেকে আগুন বের হয়!

নয়। স্বর্গে "কমনসেন্স কোটা" চালু করলে খুবই ভালো হতো। এতে অনেকেই একটু শান্তিতে থাকতে পারত, কেননা তখন নিজের সঙ্গে অন্যদেরও স্বর্গে নেবার জন্য টানাহেঁচড়া করার পাবলিকের সংখ্যা কিছুটা হলেও কমত।

দশ। বাকের ভাই, মুনা যহন থাকবো না, তহন মুনার লাইগা আপনার পরানে ধুক ধুক করবো না? এই যেমন ধরেন, কাউরে যহন শক্ত কইরা জড়াইয়া ধইরা টানটান তীব্র উত্তেজনায় আদর করতে যাবেন, ঠিক তহনই কি হুট কইরা মনে পড়বো না যে, মুনা নামের এক মাইয়াও এমন শক্ত কইরা জড়াইয়া ধ‌ইরা কানতো? কহনও কি এমনটা মনে হ‌ইবো যে মুনার মতন এত কঠিনভাবে ভালোবাইসা কেউ কহন‌ও আপনার বুকে মাথা রাহে নাই?

এগারো। এ পৃথিবীতে তারাই সবচাইতে বেশি ক্ষতি করে, যাদের দেখলে শুধুই মনে হয়, এরকম একটা মানুষের সঙ্গে না মিশলেও তো পারতাম!

বারো। আমাদের সামান্য এইটুকু আক্কেল থাকুক: যে লোকটার পরামর্শের দরকার হলে সে আমার কাছে আসত না, আমি যেন গায়ে পড়ে তাকে পরামর্শ দিতে না যাই।

তেরো। কিছু কিছু মানুষ একদম হান্ড্রেড পার্সেন্ট অরিজিনাল চায়না মাল! নিজেকে ভালো রাখতে ওদের কাছ থেকে সবসময়ই এক-শো হাত দূরে থাকুন।

চৌদ্দ। ভালো হলেই ভালোবাসা পাওয়া যায় না। বেশিরভাগ মানুষই খারাপ মানুষকে ভালোবাসে, তাকে ভালো করার স্বপ্ন দেখে যায় আর দেখেই যায়, তাই অনেক দুঃখ পায়। সমস্যা হলো, এই দুঃখটাকেও সে ভালোবাসা হিসেবেই ধরে নেয়। অথচ দিনশেষে, দুঃখ কেবল দুঃখ‌ই, কিছুতেই ভালোবাসা নয়। কিন্তু তাকে কে বোঝাবে এই চরম সত্যটা! এ ধরনের মানুষ বোধ হয় দুঃখ পেতেই জন্মায়। না, ভুল বললাম! দুঃখ পেতে কেউই জন্মায় না, তবে কেউ কেউ দুঃখ দূর করতে চায় না কিংবা ঠিকভাবে চেষ্টাটুকুও করে না। অনেকে অবশ্য চেষ্টা করেও পারে না। ওদের মধ্যে মায়া বেশি। মায়া করে যে, মারা খায় সে।

পনেরো। লেখাপড়া করে বেকার থাকার চাইতে লেখাপড়া না করে বেকার থাকা অনেক ভালো।

ভাবনা: আটশো নিরানব্বই
………………………………………………………

এক। বাঁচতে চাইলে তা-ই করো, যা তোমার করা দরকার।
ভালো থাকতে চাইলে তা-ই করো, যা তুমি করতে চাও।

দুই। কেউ তোমাকে ভালোবাসে, এটা যেমনি তোমার দোষ নয়; ঠিক তেমনি তুমি কাউকে ভালোবাসো, এটাও তার দোষ নয়।

তিন। Always finish your pending works to motivate yourself for more works.

চার। শোনো, তুমি কখনোই আমাকে ভালোবেসো না, শুধু একটু করে বুঝবার চেষ্টা কোরো। ভালোটা শুধুই আমি বাসব তোমাকে...

তুমি কখনোই নিজের মনের বিরুদ্ধে গিয়ে এমন কিছু কোরো না আমার জন্য, যেটা তোমার জন্য অস্বস্তির কারণ হয়!

তোমার ভালো থাকাটা আমার কাছে জরুরি।

আমায় যদি ভুলেও যাও, তবুও কিছু মনে করব না আমি। আমায় যদি কখনোই ফোন না করো, তবুও অভিযোগ রাখব না এতটুকুও।

আমায় শুধু একটু করে মাঝেমধ্যে দেখা দিয়ো, তোমায় দেখলে আমার আত্মার শান্তি হয়। হয়তো আমাদের আর সুযোগ হবে না ভবিষ্যতে দেখা করার, তবে যখন যে সুযোগটা আসে, সেটা কাজে লাগাতে হয়...জানোই তো!

তোমার কাছে চাইবার নেই কিছুই, শুধু আমাকে একটু করে বুঝলেই হবে...

অ্যাই, তোমার কি ভীষণ মাথাব্যথা করছে? আসো, তবে মাথা ম্যাসাজ করে দিই।
ভীষণ ক্লান্ত লাগছে? আসো, তবে এক কাপ চা করে দিই। খেয়ে ক্লান্তিভাব দূর হবে।
তোমার কি শান্তি লাগবে? এবারও বলব, আসো, আমার কাছে শান্তি পাবে। ইনবক্সে শান্তি নেই, শুধুই ভুল বোঝাবুঝি আছে।

আচ্ছা, তোমার কি মনটা ভীষণ খারাপ? চলে আসো আমার কাছে। চলো, আড্ডা দিতে দিতে মন ভালো হয়ে যাবে।

তোমার জন্য করার মতো অনেক কিছুই আমি করতে পারি, তবে সে সুযোগটা তো দেবে আমায়, তাই না?

খুব একটা কাজ না থাকলে বের হয়ো না। শহরে করোনার অবস্থা ভালো না। আমার চিন্তাভাবনা সব‌ই তোমায় ঘিরে। প্লিজ, আমাকে বকা দিয়ো না। আমি চিন্তা করবই তোমাকে নিয়ে।

তুমি ঠিক আছ তো?
না, মানে চিন্তা হয় খুব, কেন হয় জানি না। তুমিও জানতে চেয়ো না, কারণ এর উত্তর আমার জানা নেই। 

হুম, তোমার জন্য আমার ভীষণ চিন্তা হয়। তোমার হয়তো হয় না অমন। কী আর করা বলো?

এ যে নিঃস্বার্থ ভালোবাসা, তাই আমি আর হিসেব করে বা ভেবে দেখি না, আমার জন্য তোমার মনে কী কী হয়!

মনের ভেতর যে অস্থির ওঠানামা হতে থাকে, এর কণামাত্রও তুমি বুঝতে পারো না, অথচ এই মনে তুমিই থাকো পুরোটা জায়গা দখল করে।

আমার কাছে, তোমাকে ভালোবাসা মানে...তোমার সমস্ত কিছু নিয়েই তোমাকে ভালোবাসা।

এই যে আপনি চুপ করে থাকেন, এদিকে আমার মনে ঝড় চলতে থাকে।
আমার বার বারই মনে হতে থাকে, কোথাও কি কোনও বড়ো ভুল হয়ে গেছে আমার!

তোমার নিস্তব্ধতা আমাকে তীব্রভাবে পোড়ায়!

তুমি যখন চোখ বড়ো বড়ো করে আমার দিকে তাকাও, আমার গলা শুকিয়ে যায়। এরপর ভুলে যাই কী বলতে চেয়েছিলাম। সেদিনও তা-ই হয়েছিল।

ওভাবে চোখ দিয়ে শাসন কোরো না তো! যদি পারো, চোখে চোখ রেখে বলে ফেলো...আমাকে ভীষণ মিস করেছ এই ক-দিন ধরে!

ভাবনা: নয়শো
………………………………………………………

এক। শুনে রাখো, আজ থেকে বছর বিশেক পর হঠাৎ যদি তোমার মনে প্রশ্ন আসে, আমি কি তোমায় তখনও ভালোবাসি কি না, তবে জেনে রেখো, আমি তোমাকে মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্তও ভালোবেসে যেতে চাই।

হঠাৎ যদি দু-জনের কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়, কিংবা তুমি এমন কিছু বলে বসো আমাকে, যেটা আমি সহ্য করতে না পেরে তোমার সকল কিছু থেকে নিজেকে সরিয়ে নিই, তখনও যদি জানতে চাও তোমায় ভালোবাসি কি না, তখনও আমি বলব, তোমার সঙ্গে আজকাল যোগাযোগ হয় না ঠিকই, কিন্তু আমি আজও তোমায় ভালোবাসি।

যদি তুমি চলে যাও এই শহর থেকে, তখনও যদি জানতে চাও তোমায় ভালোবাসি কি না, আমার উত্তর হবে, তোমার থাকা না থাকার উপর ভিত্তি করে আমার ভালোবাসা শুরু হয়নি। তোমায় আজও ভীষণ ভালোবাসি।

যদি কখনও দূরত্ব এসে যায় দু-জনের মধ্যে, সেদিনও জেনে রেখো, তোমায় আমি ভীষণ ভালোবাসি।

যদি কখনও জীবনে কেউ এসে যায় তবে...সেদিন জানবে, ফ্যামিলির জন্য‌ই আমার এমন ডিসিশন নিতে হয়েছে, কিন্তু ভালোবাসা বলতে আমি শুধু তোমাকেই বুঝি।
যে শব্দের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকো তুমি, সেই শব্দ...ভালোবাসা...তুমি ছাড়া বেমানান...!

নিজেকে ভীষণভাবে হারিয়ে ফেলেছি তোমার মাঝে; যখন‌ই নিজেকে খুঁজতে যাই, তখন তোমার কাছেই ফিরে আসতে হয়...

দুই। আমরা কখনও বন্ধু হতে পারিনি। যে-কোন‌ও সম্পর্কে বন্ধুত্বটাই সবার আগে লাগে। সত্যি বলতে কী, আমরা তেমন কিছুই হতে পারিনি। তবুও আমি আমার সমস্ত কিছু তোমার কাছে জমা রেখেছি। জানি, সেগুলোর প্রয়োজন তোমার নেই।

কী আর করা যাবে বলো! বেশি ভালোবাসাটাই সবকিছুর কারণ। আগামীকাল মনে হয় ফ্রেন্ডশিপ ডে। জানি, আমি তোমার কেউ ন‌ই, কিন্তু তুমি তো একটাসময় আমার সবকিছু ছিলে। বন্ধু দিবসের অগ্রিম শুভেচ্ছা।

আমি বিশ্বাস করি এমন কাউকে, যে আমায় ভুলেও বিশ্বাস করে না। আমি ভালোবাসতাম এমন কাউকে, যে আমায় দু-চোখে দেখতেই পারে না।

বাসলাম ভালো,
আর তুমি কিনা বললে,
আমার মনটাই কালো!
আর কবে বিশ্বাস করবে,
তোমায় যে ভালোবাসতাম,
সেটা নিঃস্বার্থই ছিল!

জানো,
আকাশটা হচ্ছে বিছানার মতন,
আর মেঘগুলো যেন বালিশের তুলোর মতন!
তেমনি তোমার দেওয়া আঘাত সয়েও 
আমার মনটা আজও তোমার প্রতি অমন‌ই নরম!

মানলাম, তোমার জীবনে 
ভুলেও আমাকে দরকার নাই!
আমি কি বলেছি কখনও...
আমার জীবনে শুধু তোমাকেই চাই!

তুমি দু-চোখে লেগে-থাকা 
কোনও মোহ তো নও,
তুমি আমার হৃদয়ের
গভীরে থেকে-যাওয়া...
ভালোবাসা হও।

তোমাকে ভালোবাসতাম বলেই আর ফিরে আসব না। কখনোই জানতেও চাইব‌ না, কেমন আছ। আমার জানা হয়ে গেছে, আমি ছাড়া তুমি ভীষণ ভালো থাকবে। তাই তো তোমায় আর পত্র লিখি না!

তিন। আপনার সঙ্গে আর দেখা হলো না। এটা নিয়ে আর খারাপ লাগে না। এরকমই হয়তো হবার কথা ছিল।

না না, এমনটা ভুল করেও ভাববেন না যে আমি জ্বালাতন করতে মেসেজ দিয়েছি। 'এই যে আবার শুরু করে দিল!' টাইপের কিছু না। এমনিই বললাম।

এখন অত খারাপ লাগেও না; অবশ্য মাঝে মাঝে লাগে অনেক, বলি তো না! আমিও আপনার সাথে সাথে বদলানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমি পারব। কিন্তু কখনও সত্যিই বদলে গেলে, যদি চিনতে না পারেন, তবে যেন কষ্ট পাবেন না; বলবেন না যেন, 'কেন বদলে গেলি?' আপনি বলবেন না, জানি। তবুও বলে রাখলাম।

আমরা মানুষ তো, সবসময় অনুভূতি লুকোনো যায় না। অনুভূতি লুকোতে লুকোতে আর চিৎকার করতে করতে আমার গলা বসে গেছে। এখন আর মনের জোরও নেই, শক্তিও নেই এসব করার। আমি কিন্তু হারিনি, আমি জিতে গেছি।

কোনও কিছুতেই আমার অসুবিধে হয় না এখন আর।‌আমার ব্যক্তিগত বলতেও তো আপনার সাথে খুব একটা কিছু বাকি নেই। আমিও সব ফেরত দিতে পারলেই বাঁচি। স্মৃতির ভার বইতে আর পারি না।

এসব আমি এমনিই বলি। আর কিছু চাই না। যেসব কথা শোনান, যেসব যুক্তি দেন, তার পরে কিছু বলারও আর রুচি হয় না। নিজের উপর ঘেন্না হয়, আপনাকে এসব বলার জন্য। থুতুও আসে না আমার নিজের জন্য, স্রেফ বমি আসে।

জীবনে কখনও ব্যাখ্যা দেন না, নিজের নিয়মে সব চালান, স্বার্থপরতা করেন। কখনও অবিশ্বাস করার মতন কিছু ঘটলেও আমাকে ঠিক কারণটা বলেন না। ভুল বোঝাবুঝি হলে ঠিক করেন না। এসবের কারণ? হয়তো আপনার ইগো কিংবা হয়তো আমাকে আপনার ভালো লাগে না। হিসেব সহজ!

হতে পারে ওরকম‌ই কিছু-একটা, তবে সেটা কোন‌ও সমস্যা না। স্পেসিফিক কারণটাও আপনি কখনও বলেন না। থাকতেও বলেন না, চলে যেতেও বলেন না।

সব নিয়ম আপনি নিজের খুশিমতো বানান, আর আমাকেই কিনা তার সব‌ই অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলতে হয়!

চার। একটা সময় পর, জীবন মানুষকে বোঝায়, প্রতিদিনই তাকে একটা ভুল-ঘরে ফিরতে হচ্ছে। তখন খুব করে চাইলেও সে আর কিছুতেই ঠিক-ঘরে ফিরতে পারে না।

কেউ কেউ পারে হয়তো। ওরা হয় খুব সাহসী, নয় খুব স্বার্থপর।

পাঁচ। যখন আমি প্রার্থনা করি, প্রার্থনা করি।
যখন আমি প্রার্থনা করি না, প্রার্থনা নিয়ে ভাবি।

আমার নিজের প্রার্থনা আমাকে সারাক্ষণই এতটাই ব্যস্ত করে রাখে যে, অন্যের প্রার্থনা নিয়ে বিচার করার সময়ই আমি পাই না। আমার প্রার্থনা আমাকে বেকার থাকতে দেয় না। বেকার থাকতে দিত যদি, তবে অন্যের কাছে গিয়ে তাকে আমার প্রার্থনার পথে আসতে বলে বলে বিরক্ত করার অফুরন্ত সময় আমিও পেতাম। স্বর্গে যাবার পথ বরাবরই নির্জন; এ পথ বিবাহের পথ নয় যে ঢাকঢোল পিটিয়ে অতিক্রম করতে হবে। অন্যকে ভালো করার আগে নিজেকে ভালো হ‌তে হয়। নিজে ভালো হলে অন্যরা এমনিতেই আপনাকে অনুসরণ করবে, এর জন্য কাউকে গায়ে পড়ে বিরক্ত করার দরকার নেই।

আমার কাজ‌ই আমার প্রার্থনা---এর বাইরে আর কিছুই নয়। আমার জীবনটাই এমন। এই জীবন ভুল হলে সেই ভুলের মাশুল আমিই দেবো, আপনাকে দিতে হবে না। আমাকে নিয়ে উদ‌্‌বিগ্ন হ‌ওয়া বন্ধ করে প্রমাণ করে দিন, আপনি বেকার নন। একেকটা মানুষ, একেক রকমের প্রার্থনা। এটা বুঝতে সামান্য কমনসেন্সই যথেষ্ট। ধার্মিকতার চাইতে আক্কেল জরুরি।


ভাবনা: নয়শো এক
………………………………………………………

এক। আপনি যদি লোকের ক্ষতি করেন, তবে হয়তোবা শাস্তি পাবেন।
আপনি যদি লোকের উপকার করেন, তবে অবশ্যই শাস্তি পাবেন।
আপনি যদি লোকের ক্ষতি কিংবা উপকার কোনোটাই না করেন, তবে আপনি অনেকটাই নিরাপদ।

দুই। সংগীতের ঈশ্বর চলে গেলেন। এই জীবনটা সবসময়ই যাঁদের পায়ের কাছে রাখি, তাঁদের একজন বিদায় নিলেন। সরস্বতী পুজোর ঠিক পরদিন এ পৃথিবীর বড়ো আদরের সরস্বতীটি স্বর্গের পথে হাঁটলেন। আমার প্রাক্‌শৈশবের, শৈশবের, কৈশোরের, তারুণ্যের, যৌবনের নায়ক জীবনমরণের সীমানা ছাড়িয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে র‌ইলেন সারাজীবনের জন্য।

খুব কষ্ট হচ্ছে!

ওপারে ভালো থাকবেন, প্রিয় লতা মঙ্গেশকর!

তিন। অমানুষ হবার চাইতে বোকা ও ব্যর্থ মানুষ হ‌ওয়াও অনেক ভালো।

চার। এ পৃথিবীতে সবচাইতে দুঃখের অনুভূতিটি হচ্ছে, সারাক্ষণই এমন কারও কথা ভেবে ভেবে সুখ খুঁজে চলা, যাকে আমরা কখনোই পাবো না।

পাঁচ। সে ভালো, এই অজুহাতে ভালো মানুষের খারাপ দিকগুলো গ্রহণ করার চাইতে বরং সে খারাপ, এই অজুহাতে খারাপ মানুষের ভালো দিকগুলো বর্জন না করাই বুদ্ধিমানের কাজ। তবে হ্যাঁ, এই সহজ সত্যটা মেনে নিতে একটু সময় লাগে।

ছয়। যে কখনোই কার‌ও বিন্দুমাত্রও ক্ষতি করেনি, সে তাদের দ্বারাই ক্ষতিগ্রস্ত ও অপমানিত হয়, যারা তার কাছ থেকে উপকার পেয়েছে।

সাত। মানুষকে চট করে সৎ ভেবে বোসো না। তার আগে ভালো করে খুঁজে দেখো, অসৎ হবার কোনও সুযোগ সে কখনও আদৌ পেয়েছে কি না।

আট। এদেশে ভালো কাজ করা খুব কঠিন। কেননা এদেশের বেশিরভাগ মানুষই মনে করে, কেবল তার‌ই ভালো কাজ করা অধিকার আছে, যে লোকটা তার বিচারে ভালো। খেয়াল করলে দেখবেন, ওরকম কোনও ভালো কাজ করার ইচ্ছে এবং সামর্থ্য তার নিজের নেই, কিন্তু তার একমাত্র কাজ হচ্ছে, যারা ভালো কাজ করে, তাদের পেছনে লেগে থাকা। যাকে আমরা পছন্দ করি না, আমরা তাকে জাজ করি; আর যাকে আমরা পছন্দ করি, আমরা তার কাজকে জাজ করি।

ভালো কাজ, খারাপ লোক করলেও ভালো, ভালো লোক করলেও ভালো। আপনি ভালো লোক, আপনি ভালো কাজ করেন না, যারা ভালো কাজ করে, তারা নিজেরা ভালো কি খারাপ, গায়ে পড়ে পড়ে সেই সার্টিফিকেট বিতরণ করাই আপনার কাজ, তার মানে হলো, আপনি একজন ভালো অথর্ব লোক।

এ জগতে ভালো লোকের কোনও অভাব নাই, ভালো কাজ করার লোকের‌ই বড়ো অভাব। একজন মানুষ নিজে ভালো কি খারাপ, তা দেখার চাইতে জরুরি হচ্ছে, তার কাজগুলো ভালো কি খারাপ, তা দেখা।

নয়। আসো, লাগাই...

গাছ।

দশ। এক জীবনে আমরা অনেক পৃথিবীতে বাঁচি। এই পৃথিবীগুলির প্রতিটিই পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কিত। আপনি এই মুহূর্তে যে পৃথিবীতে বেঁচে আছেন, তার আগে আপনি ছিলেন অন্য কোথাও। নির্দিষ্ট কিছু পথ ধরে চলতে আপনি এখানে এসে পৌঁছেছেন।

সহজ থেকে জটিল, স্থূল থেকে সূক্ষ্ম, চিন্তা থেকে কর্ম। এরকম নানান বিন্যাসে মানুষ অবশেষে মানুষ হয়ে ওঠে, যেগুলি নিয়ে সে নিজেই তেমন একটা ধারণা রাখে না।

কঠিন সময়ে মানুষকে যখন একাকী হাঁটতে হয় এমনসব পথ ধরে, যে পথগুলি অন্ধকার ও অনিশ্চিত, তখন তাকে দেখে সবাই ভাবে, 'তার জীবনটাই বোধ হয় বৃথা গেল!' অথচ কে কীভাবে আছে, তা নিয়ে কথা বলারই কারও অধিকার নেই, কেননা সে তো আর ওদের কারুর মুখাপেক্ষী হয়ে বাঁচছে না।

যার জন্য প্রার্থনা করতে পারছ না কিংবা পারলেও করছ না, তাকে নিয়ে মন্তব্য করার আদৌ কি কিছু আছে! রাতের অন্ধকার না দেখেই দিনের আলো দেখতে পেরেছে কে কবে! ভাগ্যের প্রতারণার শিকার না হয়ে সৌভাগ্য এসেছে কার অদৃষ্টে?

যে এখনও গন্তব্যে পৌঁছেনি, সে বোকা নয়, সে একজন পথিক মাত্র! এ পৃথিবীতে আলো এনে দেয় যে, তার চেহারা ঝলমলে না-ও হতে পারে, তার যাত্রাপথ খুব আকর্ষণীয় কিছু না-ও হতে পারে। শেষটা দেখার আগে শেষটা বলার নাম বিচক্ষণতা নয়।

কারও সামর্থ্যে অবিশ্বাস করার দরকার নেই। যে তোমার বিশ্বাসের পরোয়া করে না, গায়ে পড়ে তাকে জোর করে অবিশ্বাস করার চাইতে নিজের কাজে মনে দেওয়া ভালো।

এগারো। যার সঙ্গে দেখা হবার পর আপনার সঙ্গে ভালো কিছুই ঘটে, আপনার মন ভালো থাকে, শুধু তার সঙ্গেই দেখা করুন। এর উলটোটা ঘটে যার ক্ষেত্রে, তার সঙ্গে অবশ্যই অবশ্যই দ্বিতীয় বার আর দেখা করবেন না। তাকে এড়িয়ে চলতে নিতান্তই অপারগ হলে, তার কোন‌ও কিছুকেই গায়ে মাখাবেন না। তার প্রশংসা ও নিন্দা, দুই-ই আপনার জন্য ক্ষতিকর। People who spread good vibes, are priceless.


বারো। ভালো থাকা ও ভালো রাখার দুইটি সহজ পথ:

যে তোমাকে বিশ্বাস করে, তাকে কখনও ঠকিয়ো না।
যে তোমাকে ঠকায়, তাকে কখনও বিশ্বাস কোরো না।


ভাবনা: নয়শো দুই
………………………………………………………

এক। When most of the people around you have an opinion about you, be it positive or negative, you're in trouble. Safest is the person about whom most of the people around them have no opinion.

দুই। তোমার সঙ্গে আমার মূল তফাতটা কোথায়, জানো?
তুমি আমাকে মাত্র টু পার্সেন্ট বুঝেই নাইনটি-এইট পার্সেন্ট প্রকাশ করো। আর আমি তোমাকে নাইনটি-এইট পার্সেন্ট বুঝেও টু পার্সেন্টও প্রকাশ করি না।
আমায় তুমি ভালোবাসো না বলেই অমন জাজ করো, আর আমি তোমায় ভালোবাসি বলেই কখনও জাজ করি না।

তিন। You must pay the price for the happiness you want to get. That's all.

চার। এ জীবনে কেউ কেউ পাশে আসে আবেগে। আবেগ ফুরোলেই ওরা কেটে পড়ে। কখনও কখনও ওরা আমাদের চরম ক্ষতিও করে।
আবার কেউ কেউ পাশে আসে ভালোবেসে। আমরা ওদের পাশে রাখি না রাখি, ওরা কখনোই কেটে পড়ে না, সারাজীবনই থেকে যায়।
অথচ প্রথম ধরনের মানুষকে আমরা যা আদরযত্ন করি, দ্বিতীয় ধরনের মানুষ তার সিকিভাগও পায় না। দ্বিতীয় ধরনের মানুষের প্রতি যে অন্যায়টা আমরা করি, তার শাস্তি আমরা পেয়ে যাই প্রথম ধরনের মানুষের কাছ থেকে। এ এক অদ্ভুত চক্র!

পাঁচ। প্রায় মেয়েরই কাছে, ভালোবাসার মানুষটার, এমনকী বেঁচে থাকার চাইতেও পাশে থাকাটা অধিক জরুরি। ভালোবাসার মানুষটা অসুস্থ হোক, দরকার হলে মরে যাক, তবু তাকে অ্যাটেনশন দিক, সময় দিক---এটাই বেশিরভাগ মেয়ের চাওয়া। টাইম অ্যান্ড অ্যাটেনশন, মেয়েদের কাছে এই দুইয়ের নামই ভালোবাসা; কেউ যদি এই দুইটি জিনিস ভালো না বেসেও দেয়, তাতেও ওদের কোনও আপত্তি থাকে না। তাই সাধারণত, মেয়েরা অনেক বেশি ভালোবাসতে জানলেও ভালো রাখতে জানে না। আর যারা ভালো রাখতেও জানে, সেইসব দেবীর সঙ্গে প্রায় ক্ষেত্রেই এমন ছেলের দেখা হয়, যারা ভালোবাসতেই জানে না!

মেয়েদের এই অদ্ভুত বৈশিষ্ট্যের কারণে ওরা ভালোবাসে একজনকে, জীবন কাটায় আরেকজনের সঙ্গে।

ছয়। যত কষ্টই হোক, দ্বিতীয় বার না ভেবেই ছোট্ট দুটো কাজ করলে আপনার মানসিক যন্ত্রণা এবং অহেতুক সময়ক্ষেপণ অনেকটাই কমে যেতে পারে:

যে চ্যাট-হিস্ট্রি আপনাকে কষ্ট দেয়, তার পুরোটাই এই মুহূর্তেই ডিলিট করে দিন।
সব জায়গা থেকে ওই আইডি'টা ব্লক করে দিন। (ভুল করেও আনব্লক করবেন না আর।)

দুঃখ সুন্দর, যদি তা সৃষ্টি করে।

সাত। আমি খুব সম্ভবত কোনও এক মধ্যরাতে একটি মাত্র বার পিয়ানোয় সুর তুলে গান ধরবার জন্য বেঁচে আছি।

নতুবা সন্ধ্যেয় একটা ঝিঁঝিঁ পোকার উড়ে যাওয়া দেখতে কিংবা ব্যালকনিতে আধকাপ রঙে বিষণ্ণতা ডুবিয়ে মৃত্যু গিলে খাব বলে বেঁচে আছি।

আমি বোধ হয় কোনও এক বৃষ্টিভেজা বিকেলে একটি চাতকপাখির মৃদুল শব্দচারণে দুঃখ লুকোবো বলে বেঁচে আছি।

খুব সম্ভবত আমি এক বসন্তের বিষাদী দুপুরে একপশলা অশ্রু উৎসর্গ দিয়ে কোনও এক বৃহস্পতিবার ভোরে সূর্য ওঠার আগেই ডুবে যাব। সেদিন বোধ করি হবে হয় বাইশে শ্রাবণ, নতুবা তেরোই ফাল্গুন।

আচ্ছা, একুশ কিংবা তেরো যে সংখ্যাতেই মরণ হোক, তাতে মৃত্যুর কিছু এসে যায়? যায় না তো!

এবং সেদিন, আমার মৃত্যুর সঠিক কোনও কারণ থাকবে না। একদমই না।


আট। তোমার কাছে ব্যাপারটা শুধুই ক্ষণিকের সুখ ছিল। আমার কাছে তা ছিল কারও স্নেহ, আদর আর সান্নিধ্য পাবার আকুলতা। এই সময়টাতে কেউ মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়াটাও বিশাল কিছু! একদম শূন্য অবস্থায় কেউ বাঁচতে পারে না।

আমি পরিবার-পরিজন সবার কাছ থেকে দূরে-থাকা একজন মানুষ। একাকিত্ব আমাকে ব্ল্যাকহোলের মতো গিলে ফেলেছিল। এই মুমূর্ষু সময়টাতে যারা থাকে, তাদের একটু কথা, একটু নির্ভরতা, একটু আশ্বাস, একটু ভরসা দাউ দাউ করে জ্বলা আগুনে একবালতি পানির মতন। এই সময়টা বড়ো কঠিন সময়, তুমি নিজেও পার করেছ এমন সময়। তবু তুমি আমার বেলায় সব ভুলে গেছ।

কঠিন অবস্থায় থাকা মানুষদের কঠিন কথা বলতে নেই, ওরা খুব ভঙ্গুর হয়।

আমি শুধু ওইটুকু ক্ষণিকের সুখের জন্য তোমার কাছে যেতাম না। পৃথিবীতে তুমিই একমাত্র মানুষ ছিলে, যার কাছে আমি স্নেহ পেতাম। তুমি আছ জানলেই একাকিত্ব দৌড়ে পালিয়ে যেত।

কিন্তু ধীরে ধীরে অনেককিছুই বদলেছে।

তোমাকে আমি বিরক্ত করি; তুমি বিরক্ত হও, বুঝি।

সময় হয়তো বদলাবে।

তোমায় একটু ছুঁয়ে দেখা, তোমার বুকে একটু মাথা রাখা, তোমার একটু স্নেহ পেতে কুকুরের মতো গদগদ করা...এসব তোমার কাছে আমার জন্য বিলাসিতা। কেন এমন করি, জানো? করি আর নিজের মনকে বলি, শোন, তুই একা নোস, তুই নিঃসঙ্গ নোস।

এতটুকুই...মাত্র এতটুকু চাওয়াও কি বিলাসিতা তবে?

বিষণ্ণতা, কান্না এসব আমার রক্তে মিশে-যাওয়া জিনিস। এসব থেকে আমি কখনও বেরোতে পারিনি, পারবও না।
তোমার কাছে যা বিলাসিতা, তা আমার কাছে বিলাসিতা নয়, অনুষঙ্গ।

সময় ঠিক‌ই কেটে যাবে। বাঁচতে কষ্ট হবে, কিন্তু মরে তো যাব না! আর মরে গেলেও তোমার দরজায় হাত পাতব না, নিশ্চিত থেকো।

খুব টায়ার্ড লাগছে। নিজেকে ভালো রেখো। রিপ্লাই করার দরকার নেই।

নয়। যা বহুকাল আগে, কেউ, নিজেই ফেলে দিয়ে এসেছে, তা দিয়ে তাকেই যে আবার লোভ দেখানো যায় না, এটা অনেকেই বুঝতে পারে না...

কার‌ও স্বেচ্ছায় ফেলে-দেওয়া, পায়ে পিষে-যাওয়া রসগোল্লা কুড়িয়ে তুলে নিয়ে, তাকেই কিনা আবার কাবাডি কাবাডি করে...লোভ দেখায়!

দশ। আমার সঙ্গে যার দেখা করার নেই একটুও চেষ্টা,
তাকে ভালোবাসার আর না বাড়ুক আমার তেষ্টা!

তোমার ভীষণ তাড়াহুড়ো! কেন? আমার কাছ‌ থেকে পালাবার জন্য?

কিন্তু আমি তো তোমাকে আটকে রাখিনি! তবে?

তোমার ছিল ভীষণ তাড়া,
আর আমার হৃদয় ছিল তোমাতেই ভরা!

তোমার ছিল বাহানা ভরপুর,
আমার চোখে জল যেন কর্পূর!

প্রিয়, আমি আবেগি কি না, তা সত্যিই জানি না। আর যদি হইও, তবুও তো তোমার তা বলা উচিত হবে না। বাকিরা বলুক যা খুশি। অন্তত তুমি বোলো না।

তুমিও বাকিদের খাতায় তোমার নামটা তুলো না।

আমি জানি, আমি ভালোবাসি। এটাকে আবেগের সাথে তুলনা করে অন্তত আমার ভালোবাসাকে ছোটো কোরো না। ভালোবাসতে হবে না, তবুও আমার ভালোবাসাকে আবেগ নাম দিয়ে ছোট করে ফেলো না। 

৩১ বছরের মানুষটা যখন বলে, তোমাকে ভালোবাসি, তখন তার মানে সে সত্যিই তোমাকে ভালোবাসে।

তুমি কি বুঝতে পারছ, আমি কী বলছি?


ভাবনা: নয়শো তিন
………………………………………………………

এক। এই, তুমি তবুও চুপ করেই থাকবে? চুপ থেকে শাস্তিটা দীর্ঘায়িত না করে বকা বা গালি দিয়ে শাস্তি দাও, সেটাও মাথা পেতে নেব।

ভালোবাসা দিবসে যে আমাকে সময় দাওনি, সেজন্য কি আমি শাস্তি দিয়েছি তোমায়? দিইনি তো!

আরেকটা কথা। তোমার কাছে এসে থেমে যেতে বলো কেন! তোমার কাছে এসে থেমে যেতে হয় না, শুধু ভালোবেসে যেতে হয়।

নীরবতার ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছ? হায়, যদি জানতে, ভালোবাসা কখনোই ব্যারিকেড মানে না!

আমার ভীষণ ভীষণ অস্থির লাগছে। কেমন যে লাগছে, তোমাকে বলে বোঝানো যাবে না। খুব ইচ্ছে করছে, বলি তোমাকে, একটু সামনে এসে বসবে? কিচ্ছু বলতে হবে না, চুপ করেই নাহয় থেকো!

জানি, আমার জন্য‌ই সব 'না' তুমি তুলে রেখেছ!

আমি এক তুমি বাদে আর কাউকেই সময় দিই না। ও হ্যাঁ, পরিবার তো আছে! অবশ্য পরিবারের সাথে সবার তুলনা হয় না।

নিজেকে নিয়ে থাকতে আমার ভালো লাগে। আমাকে কেউ পছন্দ করলেও আমার যায় আসে না, আবার অপছন্দ করলেও যায় আসে না। আমার মনে হয়, এটা আমার পজিটিভ দিক।

আসলে কী জানো, যাকে ভালোই বাসি না বা যাকে প্রিয়ই ভাবি না, তার কথায় বা মন্তব্যে কী যায় আসে?! হ্যাঁ, তুমি কিছু বললে আমার যায় আসে। আর বাকি ছেলেরা কিছু যদি বলেও, তবে মনে মনে বলি...মাই ফুট!

দুনিয়ার সকল পুরুষমানুষ কি আমার আপন নাকি! তাদের কিছু বলা না বলাতে কী যায় আসে আমার!
এই যে আমার ভীষণ মন খারাপ, আজ এই কথাটাও তুমি ছাড়া আর কাউকেই বলিনি। অবশ্য তোমার তো সময়ই নেই আমার জন্য।

জানো, আমার সময় ছিল শুধু তোমার জন্য, আর তোমার কাছে সময় ছিল না শুধু আমার জন্য।

তোমার সঙ্গে যোগাযোগ যদি চিরতরে বন্ধ হয় আমার!

ওরকম কিছু হলে, জেনে রেখো, দোষটা কেবল তোমারই।

চেয়েছিলাম একটুখানি সময়,
তা আমায় না দিয়ে...
আমার ভাগটাও দিয়ে দিলে যেন অন্যত্র!

আমি চেয়েছিলাম সময়, চাইনি তো তোমার ভালোবাসা!
তুমি বোঝালে, আমি না রাখি যেন কোনও মিছে আশা! 

এবার তবে আসছি, প্রিয়!
আমাদের যোগাযোগ ব্যস্ এতটুকুই, জেনে নিয়ো!

তুমি আমার সঙ্গে দেখা না করে থাকতে পারলে আমাদের যোগাযোগ এখানেই শেষ, প্রিয়! চিঠি, তোমার ব্যবহার-করা জিনিস, সময় কিছুই আর চাইব না আমি কখনও। তুমি জেনে রেখো, তুমি দেখা না দিলে, ভালো না বেসে আমিও থাকতে পারব।

(আমি যখন উপরের এই চিঠিটা তোমায় লিখছি, তখন কতটা কষ্ট আর চোখে জল নিয়ে লিখছিলাম, তুমি দেখলে হয়তো আমাকে এমন তাচ্ছিল্য করা কিছুদিন বন্ধই করে দিতে।

আমার ভালোবাসা তোমার কাছে কোনও দাবি রাখেনি, এমনকী তার বিনিময়ে ভালোবাসাও নয়! ব্যক্তি আমি তোমার কাছে কিছু আবদার করেছি। এটাকে ভালোবাসার সাথে মিলিয়ে ফেলো না, প্লিজ?
আমি কতটা অসহায় হলে সেদিন তোমার জন্য এতগুলো কঠিন শব্দ নির্বাচন করে লিখতে বসতাম বা আমার লেখায় এতটা অভিযোগ বের হয়ে আসত, সেটা আমি নিজেও জানি না। হ্যাঁ, তুমিই আমায় বাধ্য করেছিলে লিখতে! 

যদি আঘাত আর অবহেলা দিয়ে এত কঠিন শব্দ আমার মধ্য থেকে বের করিয়ে নাও, তবে এটাও জেনে রেখো, তোমায় ভালোবাসতে আমার কখনোই তোমার ভালোবাসা পাবার প্রয়োজন পড়েনি। তোমার ভালোবাসা না পেয়েও তো খুব সুন্দর করে এতটা বছর ধরে ভালোবেসে যেতে পেরেছি আমি! তবু একটুখানি যদি বুঝতে, তবে অনেককিছু হতো! আই অ্যাম অ্যা ওয়ান্ডার-বক্স অনলি হোয়েন ইউ ক্যান ডিসকভার ইট!

যদি কিছুটা হলেও বুঝতে আমায়, আমি থেকে যেতাম তোমার অনেকটা জুড়ে।
তুমি হয়তো বলবে, জীবনে চলতে গেলে এত মানুষ লাগে না। হ্যাঁ, ঠিক‌ই লাগে না। তবে বোঝার মতো অন্তত কিছু মানুষ লাগেই লাগে!

তোমাকে আমি বুঝি কি না, সেটা এখন বুঝতে পারবে না। সময় যাক, তখন বুঝবে। শুধু এইটুকুই বলি, না বুঝলে এতকাল কেউ পাশে থেকে যায় না!

তুমি আমার থাকার জায়গা দেখেছ, বসার জায়গাও দেখেছ। কীভাবে কেমন করে থাকি, একটু হলেও বুঝতে পেরেছ। যদি সত্যিই বুঝতে পারো, তবে একদিন আমার লেখাগুলোও তোমার কাছে বোধগম্য হবে।

আমি চেয়েছিলাম, তুমি আমায় বোঝো, কিন্তু তা আর হলো কই! আমাদের মাঝখানে এখন ভুল বোঝাবুঝির বিশাল এক দেয়াল!

এই দেয়ালের ভিত্তিপ্রস্তর কে স্থাপন করেছে? তুমি, না আমি? না কি দু-জনের অনিচ্ছাতেই গড়ে উঠেছে এই দেয়াল? প্রশ্ন রেখে গেলাম তোমার কাছে।

আমি হাত ধরতে চাইনি। তোমার আঙুল ছুঁয়ে সেই স্পর্শের পবিত্রতার রেশ নিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিতে চেয়েছিলাম সুন্দর করে। অথচ তুমি হাত গুটিয়ে নিলে!

আমার জীবন তো চলেই যাবে কোনও রকমে, কিন্তু আমরা দু-জন একসঙ্গে অনেকদূর পারি দিতে পারতাম নিজেদের মতো করে, তুমি সেটাও হতে দিলে না!
তোমার কাছে আমার শব্দগুলো শুধু শব্দই মনে হয়, কিন্তু আমার কাছে এটা আমার জীবনের বাস্তব ঘটনা। আমার জীবন, আমার ভালোবাসা, আমার তুমি...সব জড়িয়েই আমি বেঁচে আছি।

তুমি বড্ড বেশিই কঠোর এই এক আমার বেলাতেই! এইসব বলতে এবং মেনে নিতে আমার খুব কষ্ট হয়।)

দুই। হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেছে! আমার মতো সিঙ্গেল মানুষদের জন্য রাত সোয়া দুইটা অনেক রাত। ঘুম ভাঙতেই তোমার কথা মনে পড়ল। তুমি ঠিক আছ তো!

আমি কাউকে যত্নে রাখতে পারি না; তোমাকেও না, নিজেকেও না। কেমন একটা অগোছালো মানুষ আমি! কিন্তু তুমি যদি কখনও অসুস্থ হও, ঠিকই তোমাকে সেবাযত্ন করে সুস্থ করে তুলতে পারব, আমার অভ্যাস আছে এটা করার। কিন্তু তোমার তো আবার কার‌ও সেবাযত্ন লাগে না!

আচ্ছা, তোমার কী কী লাগবে, সেটা বোলো আমায়, আমি সামর্থ্যের মধ্যে যথাযথ চেষ্টা করে যাব। তোমার জন্য আমার সামর্থ্য কখনোই অল্প নয়।

এই যে তুমি নীরব আছ, কিছুই বলছ না, এতে করে আমার নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে!! শেষ কী বিষয় নিয়ে ঝগড়া করেছিলাম, সেটাও ভুলে গেছি।

আমি তোমার কাছেই অভিযোগ করে শান্ত হয়ে যাই।তোমার কাছে নির্ভয়ে নিশ্চিন্তে বিশ্বস্ততার সাথে সবকিছুই রেখে যাই। জানি, তুমিই তো পুরোনো মানুষটা। আমার আর কে আছে এক তুমি ছাড়া! তোমার কাছে আমার সবকিছু জমা থাকে।

মাঝরাতে কীসব আবোলতাবোল বলছি নিজেও জানি না। ঘুম ভেঙে গেছে, আবার কখন ঘুম ধরে, সেই অপেক্ষায় আছি। আমার সমস্ত অপেক্ষায় তুমি এসে যাও।

নিজের যত্ন নিয়ো। যদি কিছু লাগে, আমাকে নিজের মানুষ মনে করে বলে ফেলবে, প্লিজ। অতটা খারাপ কিন্তু আমি ন‌ই, তুমি যতটা ভাবো!

তিন। আমরা বেশিরভাগ সময়‌ই এমন মানুষকে ভালোবাসি, যার হয়তো আমাদের ভালোবাসার কোনও প্রয়োজনই নেই। আবার এমন মানুষের জন্য সময় তুলে রাখি, যে হয়তো সেই সময়টা চায়‌ই না।

আমরা এমন মানুষকে পৃথিবী বানিয়ে বসে থাকি, যে হয়তো আমাদের একটা শহরও ভাবে না। এমন মানুষকে দেখতে চাই, যার হয়তো আমাদের উপস্থিতিই ভালো লাগে না। এমন মানুষকে হৃদয়ে রেখে দিই, যে হয়তো অন্য কাউকে হৃদয়ে রাখতে পছন্দ করে। 

এমন কাউকে মন খারাপের কথা বলি, আমি মরে গেলেও যার মনে বিন্দুমাত্রও প্রভাব পড়বে না। হ্যাঁ, আমরা আবেগি মানুষগুলো মানুষ চিনতে বড্ড বেশি ভুল করি।

চার। না দিলে দেখা,
আমিও ভালোবাসতে ভুলে
থাকব একা একা!

উপেক্ষা, অপেক্ষা, ধৈর্য, কখনোবা শান্তি-অশান্তি এই সমস্ত কিছুই ভালোবাসা বিষয়টার সাথে জড়িয়ে থাকে, জানি।

তবে এতটা উপেক্ষাতে রেখো না আমায় যে ভালোবাসা থেকে আমার পালিয়ে বেড়াতে হয়! অপেক্ষা করতে জানি। করেছিও, তুমি জানো।

শান্তিপূর্ণ ভালোবাসা হয় না জানি, কিছুটা হলেও অশান্তি থাকে ভালোবাসায়। সবকিছুই মেনে নিয়ে, মানিয়ে নিয়ে যে ভালোবাসার পথে হাঁটে, তাকে কেন রাস্তা চেনাও?
ফুল না পেয়েও তোমার কাছ থেকে কাঁটার আঘাত নিয়ে যে তোমার সাথে চলতে শিখে যায়, তাকে কেন "কষ্ট" যে কী, তা-ও শেখাও?

অপেক্ষারা সুন্দর, যখন সেই অপেক্ষা আমি তোমার জন্য করি। ভালোবাসাই সত্য, যখন সেই ভালোবাসায় তুমি থাকো।

আর উপেক্ষা...সে তো তোমার দেওয়া দামি উপহার আমার জন্য!

তোমার আর আমার মধ্যে একটা সম্পর্ক আছে, জানো সেটা? সেই সম্পর্কের নাম জানো? সম্পর্কের বয়স?

আমাদের যে সম্পর্ক, সেটা হচ্ছে নিঃস্বার্থ ভালোবাসার সম্পর্ক। হ্যাঁ, আমিই তোমায় ভালোবাসি নিঃস্বার্থভাবে। তবে এখনও ততটা নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসতে শিখিনি বলেই হয়তো বলে বসি...দেখা করো! দেখা করো!

আমি এটা বলেই যাব। এরপর দেখা না দিলে সত্যি সত্যিই তোমায় ভুলে যাব। সত্যিই কিন্তু! তুমি জানোই না, আমি ভীষণ জেদি!
কখনও কখনও ভালোবাসার আগে জেদকে রেখে দিই। আমি এমনই। খারাপ মানুষ। জীবনে তো অনেক ভালো মানুষের দেখা পেয়েছ, আমার মতো খারাপ মানুষের সঙ্গে পরিচয়টাও নিশ্চয়ই তোমার অনেক দিন মনে থাকবে।

কিছু বিষয় নিয়ে আমি কেন অস্থির হই জানি না। কিংবা অস্থির হওয়াই উচিত; অন্তত ভালোবাসার মানুষটার কাছে এমন হতেই পারে!

আমি যখন দেখি, তুমি এক আমি বাদে সবাইকেই সময় দাও, তখন আমি চুপ হয়ে যাই। আমি যখন দেখি, বিশেষ কোনও দিনেও তোমার কাছে আমার জন্য দেবার মতো বিন্দুমাত্রও সময় নেই, সেটা পাঁচমিনিটের জন্য হলেও...আমার সমস্ত ভালোবাসা তখন আমায় বার বার বলে, অনেক হয়েছে, এইবার থাম!

সত্যিই যদি থেমে যাই, তবে জেনে রেখো, আমরা মেয়েরা আমাদের ভালোবাসার মানুষটার কাছে শুধু সময়ই চাই, অন্য কিছু নয়।

আমি কবে ভুলে যেতে পারব তোমায় একদম পুরোপুরি?

মিথ্যা ভালোবাসায় অভিযোগ নেই, মনরক্ষার কৌশল আছে!

সত্যিকারের ভালোবাসায় ছেড়ে যাবার বাহানা নেই,
থেকে গিয়ে অপেক্ষা এবং উপেক্ষা সহ্য করার মতো ধৈর্যশক্তি আছে।