ভাবনাদেয়ালের পলেস্তারা: ১২৬



ভাবনা: আটশো ছিয়াত্তর
………………………………………………………
এক। যাকে দুইচোখে দেখতেই পারি না, তাকে চোখের সামনে না দেখলে খুঁজতে থাকা...এরই নাম বুঝি দাম্পত্যজীবন?!
দুই। 
চারপাশে
আকাশে বাতাসে
অসংখ্য অজস্র কষ্ট ছড়িয়ে।
ন্যায় কষ্ট, অন্যায় কষ্ট...
কারণ কষ্ট, অকারণ কষ্ট...
জীবন থেকে জীবনে
রং-বেরঙের কষ্ট...
তাই কাউকে একবিন্দু কষ্ট দিতেও
বারংবার ভাবা উচিত!

অপরদিকে, প্রতিটি প্রাণের উচিত
অন্যায়ভাবে কাউকে কষ্ট না দেওয়া
কিংবা কেউ কষ্ট দিতে বাধ্য হবে,
এমন কোনও কিছু না করা...
কাউকে কষ্ট দেওয়া বা কার‌ও কাছ থেকে কষ্ট পাওয়া,
কোনোটাই সুখকর কিছু নয়...

কেউ কারও...অশান্তির কারণ না হোক!
মানুষের জীবন
ভালোবাসাপূর্ণ হোক না হোক,
শান্তিপূর্ণ হোক...

তিন। কিছু মানুষ এতটাই বিরক্তিকর যে ওদের সঙ্গে দেখা হলেই ক্রমাগত বলতে থাকে আর বলতেই থাকে, ওরা এ জীবনে কী কী হাতি-ঘোড়া মারল, এবং আপনাকে কথা বলতে না দিয়ে কিংবা আপনার কথাগুলো শুনতে না চেয়ে এসব কথা এমনভাবে বলবে যেন আপনি এ জীবনে শুধু ঘাস কাটা বাদে আর কিছুই করতে পারেননি, যা ছেঁড়ার, তা এক ওরাই ছিঁড়েছে। ওদের মাথায় এটা কখনোই থাকে না, আদৌ আপনি ওদের এইসব ফালতু কাহিনি শুনতে চাইছেন কি চাইছেন না। থাক, বলুক বেচারারা! খোঁড়া একটুআধটু হাঁটতে পারাকেই ভাবে ওড়া! যে কাজে আপনার ব্যর্থ হবার‌ও সময় নেই, সে কাজে কার‌ও সফল হবার ফিরিস্তি একটানা শুনতে আপনার ভালো লাগবে, বলুন?!

চার। God has His own way to make you feel disgusted.
পাঁচ। As I couldn't be a bird, I chose to be a sky!
ছয়। তোমাকে তো ভালো ভাবতাম!
তোমার তো এমন কাজ করার কথা না।
তুমি তো এরকম হবার কথা, ওরকম হবার কথা!
তুমি তো এটা করার কথা, করলে না কেন?
তোমাকে তো কখনও এমন ভাবিনি!
তুমিও ড্রিংক করো! তুমিও স্মোক করো!
তোমার তো এভাবে কথা বলার কথা নয়!
তোমার কাছ থেকে তো এটা আশা করিনি!
তুমি সত্যিই অমুক তো?! অমুক তো এমন হবার কথা নয়!

ইত্যাদি ইত্যাদি...!!

এই জাতীয় কথাবার্তা বলে যারা, তাদের কাছ থেকে সবসময়ই এক-শো হাত দূরে থাকবেন। ওরা মানুষ নয়, ওরা ফালতু লোক।

আরে ভাই, তুমি আমাকে চিনো না, জানো না, তবু তুমি আমার সম্পর্কে এত কিছু ভেবে নিয়েছ কোন যুক্তিতে?! তোমার সমস্ত অনুমান তোমার পকেটে ঢুকিয়ে রাখো। তুমি যেরকম করে আমাকে ভাবো, সেরকম আমি তো না-ও হতে পারি, তাই না? আমাকে না চিনেই আমার সম্পর্কে অত কিছু ধরে নিয়েছ কোন আক্কেলে? আমাকে দূর থেকে দেখে অত জাজমেন্ট তোমার মাথায় এল কীভাবে? ছাগল কোথাকার!!

কাউকে চেনার সবচাইতে সহজ রাস্তা হলো, এটা মাথায় রেখে তার সঙ্গে মেশা: আমি তাকে চিনি না।

আমরা সত্যিই কাউকে চিনি না। এটা মেনে নিন। প্রত্যেকেই তার নিজের মতন, কেউই আমাদের অনুমানের মতন নয়।

সত্যটা হচ্ছে, আমরা আসলে কার‌ও সম্পর্কেই জানি না। কেউই আমাদের ভাবনার মতো নয়। যে যার মতো। আমরা কেবল অনুমান করতে পারি। কাউকে নিয়ে আমরা কী অনুমান করি, তার সম্পূর্ণ দায় আমাদের, তার নয় কোনোভাবেই। জাজমেন্টাল অ্যাটিটিউডের ফাজিল লোকজনকে দেখলেই তাই সঙ্গে সঙ্গে নিরাপদ দূরত্বে পালানো উচিত। অনুমানের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয় যারা, তাদের সঙ্গে না মিশলেই শান্তিতে থাকা যায়। এর জন্য যদি একা থাকতে হয়, সেটাও অনেক ভালো।

আপনি যার কাছে অপরিচিত, তার সঙ্গে মিশতে চাইলে তার মনের মতো করে মিশতে হবে। তার মনটা কখনোই আপনার ভাবনার মতন নয়। এমন‌ও হতে পারে, বিশ্ববিদ্যালয়ে সবচাইতে চমৎকারভাবে ফিজিক্স পড়ায় যে লোকটি, আড্ডা দেবার বেলায় তার সবচাইতে অপছন্দের বিষয়টিই... ফিজিক্স!

সাত। পাহাড়ের গা ঘেঁষে ঘেঁষে একটু একটু করে রাতের স্বেদ ঝরছে। সেই আঁধারে খয়েরি রঙের ইজিচেয়ারে গা এলিয়ে আমি। ঠিক পাশেই আগুনের ফুলকি উড়ে যাচ্ছে...বনফায়ার। ইন্সট্রুমেন্টালের মৃদু রেশ যেন অবিরত কুয়াশা তাড়ায়। বারবিকিউ হচ্ছে, পোড়া মাংসের গন্ধে সুরায় ও সুরে চারিদিকে একধরনের বুনো মাদকতা... কখনও কখনও বাঁশির সুর ভেসে আসছে একটু দূর থেকে... বন্ধুর হাত ধরে নেচে উঠছি হঠাৎ হঠাৎ... সমস্ত পরিচয়ের দুঃসহ ভার ঝেড়ে ফেলে। কয়েকটা পৃথিবীর তাবৎ সুখ-দুঃখের আদিম সঙ্গম চলছে আমাদের পাহাড়ি আড্ডায়। এই রাত, এই আগুন, এই উত্তাপ, এই হিম, এই পোড়ামাংস, এই হাওয়া, এই অরণ্য, এই উচ্ছ্বাস, এই ভালোবাসা, এই আকাশ, এই আবহ...এই সবকিছু ক্রমশ মিলিয়ে যাচ্ছিল ব্লু-লেভেলের হাত ধরে গতরাতের তারাভরা আকাশে... কালকের রাতটি ছিল দুঃখ তাড়ানোর রাত, ক্লান্তি ভোলার অব্যর্থ উপলক্ষ্য।

আজ আবার হবে...!

আট। No love, only peace.
নয়। Stop overthinking. Stop taking this much pain. Inner peace is more important than even all the love in the world. Not love, peace is the last word for life. What is the use of floating in the ocean of love if it destroys your inner peace?
দশ। অন্যের অর্জনকে সম্মান করার মধ্যেই নিজের ভবিষ্যৎ অর্জনের সমস্ত সম্ভাবনা নিহিত।
এগারো। তোমার হেটারদের গায়ে জ্বালা ধরাতে হলেও হাসো!
বারো। জীবনটা জীবনের মতোই একক ও স্বয়ংসম্পূর্ণ, এখানে কাউকে কারও হাত ধরে চলতেই হবে, এমন কোনও চিরন্তন কিছু নেই।

চিরন্তন নিজেই একক। আমরা প্রত্যেকেই একক। এখানে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, আমি আমার চলার পথে অন্য কাউকে আঁকড়ে ধরে রাখব, না কি নিজেকে অন্য সকলের সাথে যোগ করব। কেননা প্রায়‌ই দেখা যায়, ধরে-রাখা হাত ছুটবেই ছুটবে, হোক তা প্রিয়জন কিংবা প্রয়োজন। শেষে এসে শেষ মুহূর্তে কে থেকে যাবে, সেটা এক একক প্রকৃতি ছাড়া আর কেউই আমরা জানি না। তাই কাউকে নিয়েই অত উদ্‌বিগ্ন হবার কিছু নেই। আমরা শুধু নিজেকে ছাড়িয়ে যেতে পারি, আমাদের প্রকৃত শক্তির থেকেও ঊর্ধ্বে।

তেরো। তোমাকে আমি আমার শহরে আসার কথা বার বার জিজ্ঞেস করি কেন জানো? যখন তুমি আমার শহরে থাকো, তখন তোমার সাথে দেখা না হলেও মনে হয়, তুমি আমার খুব কাছেই আছ। আমি যখন রাস্তা দিয়ে হাঁটি, কোনও কাজে শহরে বের হই, সারাক্ষণই তোমার অস্তিত্ব অনুভব করি। মনে হয়, এই বুঝি তোমার সাথে দেখা হয়ে গেল! আমি যখন তোমার সম্ভাব্য অবস্থানের জায়গাগুলোর সামনে দিয়ে যাই, তখন হার্টবিটটা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়, শরীর হিম হয়ে যাবার একধরনের অনুভূতি হয়। অনুভব করি, তুমি আছ, আমার এই শহরেই তুমি আছ।

শুধু তোমার এই অবস্থানের কারণেই মনে হয়, আমার এই শহরটা পৃথিবীর সবচাইতে সুন্দর শহর। কিন্তু তুমি যখন আমার শহর ছেড়ে অনেক দূরে কোথাও যাও কিংবা এই শহরের বাইরে থাকো, তখন পৃথিবীর সবচাইতে সুন্দর শহরটাই কেমন যেন নিষ্প্রাণ হয়ে যায়...! সব কিছুই কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা লাগে। মনে হয়, হাজার হাজার মানুষের মাঝেও আমি একদম একা। তখন কেন জানি হার্টবিটটা হঠাৎ করে বেড়ে আর যায় না, খুব স্বাভাবিকভাবেই চলে। কীভাবে বোঝাই বলো তো...ওই অস্বাভাবিক হার্টবিটটাই আমার সকল সুখের কারণ!

ভাবনা: আটশো সাতাত্তর
………………………………………………………
এক। The more you hate, the more I glow.
দুই। জীবনের সমস্ত সুখ আর স্বস্তি নষ্ট করে দেবার জন্য এই তিনটি R-ই যথেষ্ট:

Reputation
Recognition
Restriction
পুরুষমানুষ তার জীবনের প্রথম অর্ধেক খরচ করে এই তিনটি R অর্জন করার পেছনে, আর বাকি অর্ধেক খরচ করে তার এই অর্জনের কারণে পস্তানোর পেছনে।

আমার এই তিনটিই আছে; আছে বলেই আমার জীবনটা সহজ নয়। আপনি মানুষ খুন করে ফেললেও কোনও সমস্যা নেই, অথচ আমি কাউকে একটা টোকা মারার কথা মাথায় আনলেও আমার নিশ্চিতভাবে ফাঁসি হয়ে যাবে!

আমাকে দেখে আপনার ঈর্ষা হয়, নিজেকে দেখে আমার করুণা হয়। কেউই চেনে না যাকে, তার মতন সুখী আর কে আছে!

তিন। এ জীবনে যারা আমাকে অপ্রত্যাশিতভাবে অপমান করেছে, তাদের বেশিরভাগই আমার পায়ের জুতো হবার‌ও যোগ্যতা রাখে না।
এ জীবনে যারা আমাকে অপ্রত্যাশিতভাবে সম্মান করেছে, আমি তাদের বেশিরভাগেরই পায়ের জুতো হবার‌ও যোগ্যতা রাখি না।

চার। অনেকসময় চেনা-পথেও মানুষ হারিয়ে যায়। অনেকসময় দীর্ঘ ঘুম থেকে জেগে হঠাৎ মানুষ উপলব্ধি করে, বেলা পড়ে গেছে...

আমি চোখ-ঝলসানো রৌদ্রেও গাঢ় আঁধার দেখেছি। আমি তবদা-ধরা শব্দের মাঝে কুকুরের ঘেউ ঘেউ শুনেছি। আমি বড়ো বড়ো ঢেউয়ের মাঝের ফাঁকগুলো গুনেছি বহু বার।

আমি এত কিছু জেনেছি, অথচ হারানো অস্তিত্ব কোথায় গেলে খুঁজে পায় মানুষ, সেই কথা জানিনি!

আমি সূর্যের প্রখর তাপে জ্বলে পুড়েও একটুখানি আলোর খোঁজ করেছি। আমি ভরাপূর্ণিমায় গা ভিজিয়েও আকাশে চাঁদ খুঁজেছি।

আমি কতশত বার ভুল পথে হেঁটেছি, অথচ আজ চেনা-পথে হারিয়ে যাবার ভীষণ ভয় আমার!

পাঁচ। ফুল চলে যায়...
থেকে যায় শুধু কাঁটা।

ছয়। জীবনটা তো এমনিই দিব্যি কেটে যেত...!
কেন তুমি জীবনে এলে, চলেই যদি যাবে?
চলে গেছ, দুঃখ নেই...।
থেকে গেছ, কষ্ট এখানেই!

সাত। আমি খুব বিরক্তিকর এবং অন্যকে যন্ত্রণা-দেওয়া-গোছের একটা মানুষ, এটা তোমার চাইতে ভালো আর কেউ জানে না; এই পৃথিবীতে এজন্য আমার যাবতীয় সব কিছু...সব অকথ্য কথাও আমি তোমাকেই শুধু বলি। এখন পর্যন্ত, তোমার কাছে আমার একান্তই ব্যক্তিগত বলে কিছুই নেই---আমি রাখিনি। আমি যার সঙ্গেই সম্পর্ক করতে যাই না কেন, আমি কাউকে সুখী করতে পারি না, হয়তো আর কখনও পারবও না, কেননা আমি মানসিকভাবে অসুস্থ।

আমি কখনও অতিরিক্ত সন্দেহপ্রবণ, যা অন্যের চাইতে আমাকেই অধিক কষ্ট দেয় এবং আমার ক্ষতি করে। আমি চাই আমার এই অত্যন্ত ঘৃণ্য একটা অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসতে, কিন্তু অজস্র বার চেষ্টা করেও আমি এটা নিজের আয়ত্তে আনতে পারিনি, আর পারবও না আশা করি, কারণ এখন আমার মনে হয়, আসলে আমার ভেতরেই সমস্যা। খুব বেশি কেয়ারিং হয়েও, অনেক সৎ থাকার পরেও আমার কার‌ও সাথেই সম্পর্ক টেকে না; হয়তো আমি একজন মানুষের কাঁধেই পৃথিবীর যাবতীয় অপ্রাপ্তির বোঝা চাপিয়ে দিই। একজনের প্রতিই মানসিকভাবে খুব বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়ি, ফলে ধীরে ধীরে আমার ভেতরে নিজের অজান্তেই মানুষটিকে হারাবার ভয় খুব গভীরে ঢুকে যায়।

আমি রোজ‌ই প্রতি মুহূর্তে নিরাপত্তাহীনতায় অন্যের স্বাভাবিক শান্ত জীবন অতিষ্ঠ এবং যন্ত্রণাদায়ক করে ফেলি। এজন্যই কেউই আমার সঙ্গে থাকতে চায় না। সবাই আমাকে অসুস্থ ভেবে ছেড়ে চলে যায়। আমি তো অসুস্থই, এখন আমি এটা মেনে নিয়েছি। কেউ যদি আমার এই অসুস্থতাকে সহ্য করে নিজের সাথে মানিয়ে নিয়ে থাকে, তাহলে থাকবে, না হলে চলে যাবে; আমি আর কক্ষনো কার‌ও পা ধরে নিজের এই অসুস্থতাকে অস্বীকার করে কিংবা নিজে সুস্থ হবার কোনোরকম প্রতিশ্রুতি দিয়ে থেকে যেতে বলব না, এমনকী বিন্দুমাত্র চেষ্টাও করব না।

আমি একা, আমার একার জীবন; একাই এই যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে, আমি এটি মেনে নিয়েছি, তাই কারও চলে যাওয়া আমাকে আর আঘাত করবে না।

তীব্র ভালোবাসা কিংবা মায়া কখনও সময়ের সাথে শেষ হয়ে যায় না, অথবা তাতে বিন্দুমাত্রও ভাটা পড়ে না, বরং সময়ের সাথে সাথে তার প্রতি মায়া আরও বাড়ে, ভালোবাসা বাড়ে। সময়ের সাথে যেটা হয়, সেটা হচ্ছে, আমরা মানিয়ে নিতে চেষ্টা করি, ক্লান্ত হয়ে যা অবধারিত সেটাকে অনিচ্ছাতেও গ্রহণ করি...করতে বাধ্য হই। আমাদের বাঁচতে হয়, এজন্যই আমরা সময়ের চাপে দক্ষ অভিনেতা হয়ে উঠি, প্রমাণ করতে চাই, মানুষকে দেখাতে চাই, ওসব ভালোবাসা বলে কিছু নেই, ওসব ফালতু...ওসব কিচ্ছু না; তখন‌ আসলে যা নয়, সেটাই প্রমাণ করার প্রয়োজন পড়ে।

মিথ্যের মধ্যেই চাকচিক্যের দরকার হয়; সত্য স্নিগ্ধ, এজন্য দেখলেই বোঝা যায়। যদি সময়ের সাথে ভালোবাসা ফিকে হয়েই যায়, তাহলে অবশ্যই সেখানে কখনও ভালোবাসা বলে কিছুই ছিল না। ভালোবাসার যে কোনও পাস্ট-টেন্স হয় না!

আট। শুভ ওয়ানগালা!

(গারো আদিবাসী সম্প্রদায়ের নবান্ন উৎসবের নাম "ওয়ানগালা"। এই অনুষ্ঠান মূলত শস্যদেবতাকে কৃতজ্ঞতা জানানোর একটি সর্বজনীন উপলক্ষ্য।)

নয়। মাৎগ্রিকের সঙ্গে...

গারো আদিবাসী সম্প্রদায়ের নবান্ন উৎসব ওয়ানগালার প্রাক্‌প্রস্তুতি চলছে। ফাদার লরেন্স এবং ফাদার আশিস‌ও ছবিতে আছেন। খুব চমৎকার মানুষ এঁরা। গল্প করে মনে হয়েছে, বড়ো ভালো দু-জন মানুষের সঙ্গে পরিচয় হলো আজ। এঁদের নিয়ে সময় করে লেখার ইচ্ছে রইল।

উল্লেখ্য, "মাৎগ্রিক" অর্থ "বীর যোদ্ধা"।

দশ। তোমাকে ছেড়ে থাকা যায়, কিন্তু ভালো না বেসে কিছুতেই থাকা যায় না।

এগারো। পাশে সে যদি থাকত,
শীত কি আর লাগত!

বারো। বাবা-মা, ভাই-বোন চেইঞ্জ করা যায় না বলেই হয়তো তাদের অনেক অন্যায় আচরণও আমরা বছরের পর বছর সহ্য করে যাই। তারা খারাপ আচরণ যতই করুক, কখনও তাদের ছেড়ে যাবার কিংবা ছেড়ে দেবার রাস্তা দেখিয়ে দিই না। মুখের উপর যখন-তখন তাদের অন্য কোথাও চলে যেতেও বলি না; অথচ ভালোবাসার মানুষ নিজের ইচ্ছে-খুশিমতো আচরণ না করলেই, নিজের পছন্দের সাথে একটু এদিক-সেদিক হলেই সোজা রাস্তা মাপতে বলি, কারণ সেখানে সহ্য করার জন্য কোনও নাড়ির টান নেই! খুব সহজেই এজন্য ভালোবাসার মানুষকে বদলে ফেলা যায়, রিপ্লেস করা যায়।

যা যা রিপ্লেস করা যায় না, সেগুলো ছাড়া বাকি সব কিছু যেভাবে-সেভাবে পরিচালনা করলেই যেন চলে! কিছু অযাচিত অশোভন কথা বললেই যদি ভালোবাসা কমে যাবার ভয় করতে হয়, তাহলে এটাকে ভালোবাসা না বলে বিনিময়ের সম্পর্ক বলাই ভালো। যা দেবো, তা-ই পাবো! সলিড কথা! না পেলেও চুপচাপ সহ্য করে থাকতে পারলে থাকব, না পারলে নাই! রাস্তা খোলা, নো টেনশন!

সে আমার মনের মতো করে চলে বলেই আমি তাকে ভালোবাসি...এর নাম ভালোবাসা নয়; এখানে হিসেব থাকে।
বরং, আমি তাকে ভালোবাসি বলেই তার চলাটা আমার মনের মতো...এর নাম‌ই ভালোবাসা; এখানে কোনও হিসেব থাকে না।

যে যা পাবার কথা, তা কোনো না কোনোভাবে পেয়ে যায়‌ই!
যে যা পাবার কথা নয়, তা কোনো না কোনোভাবে হারিয়ে ফেলেই!
আপনি যা পাবার কথা, তা ঠিক সময়েই পেয়ে যাবেন।
আপনি যা পাবার কথা নয়, তা পেলেও হারিয়ে ফেলবেন।
প্রকৃতি ভুল বিচার করে না।

ভাবনা: আটশো আটাত্তর
………………………………………………………
এক। এই দেশের বেশিরভাগ মানুষেরই নিজের কোনও পরিচয় নেই। প্রায় সবাই-ই 'আমি অমুকের তমুক।' জাতীয় কথাবার্তা বলে নিজের পরিচয় দেন।

গনি মিয়া একজন গরিব কৃষক। তাঁর নিজের কোনও জমি নেই...

দুই। কষ্টরা বরফ হয়ে জমাট বাঁধে...
সুখেরা বাষ্প হয়ে অদৃশ্যে হারায়...
জীবন জলে ভাসে...

তিন। তবুও, কখনও হঠাৎ ঘন আঁধার নেমে এলে...কুয়াশাদের ভিড় ঠেলে পাড় ভাঙে কোনও এক প্রাচীন অস্তিত্বের;
পুরনো ঢেউয়ের কর্কশ শব্দ জানান দেয়... এখনও কোথাও মুঠোভর্তি স্মৃতিদের কোনও এককোণে খুব সন্তর্পণে...
ভীষণভাবে 'তুমি' রয়ে গেছ আজ‌ও।

চার। যেখানে কথা বলার ছিল, বন্ধু, তুমি চুপ করেই রইলে;
যেখানে চুপ থাকার ছিল, সেখানেই কিনা নাম ধরে ধরে চিৎকার করে ডাকলে!

পাঁচ। দেখা না হলেই বরং ভালো।

দেখা হলে মায়া বাড়ে। মায়া বাড়লে কেবলই কষ্ট বাড়ে। 

...এরপর স্মৃতির ভারী ডায়েরিতে জমা হয় আরেকটা স্মৃতি। এইসব স্মৃতি অবিরাম ডাকে, পেছন থেকে টেনে ধরে রাখে। বোকারা তবু স্মৃতি জমায়।

না দেখেও, না ছুঁয়েও ভালোবাসা যায়, কিন্তু দেখা হবার পর মনে হয়, দেখাটা না হলেই তো ভালো ছিল। দেখে ফেললেই কষ্ট! চোখ বড়ো মধুর প্রতারক।

খুব করে চেয়েও যাকে ধরে রাখা যায় না, তার সঙ্গে কখনও দেখা করতে নেই।

ছয়। মানুষের আসল রূপ দেখার আগ পর্যন্ত‌ই বিশ্বাস ও ভালোবাসা টিকে থাকে। একবার দেখে ফেললে ভয় ও বিবমিষা তৈরি হয়, যা খুব চেষ্টা করেও সহজে যায় না। আসল চেহারায় খুব অল্প সংখ্যক মানুষ সত্যিকারের ভদ্রলোক। দুঃখের বিষয়, অমানুষের রাজ্যে সেই ভদ্রলোকেরা বড়ো অসহায় ও নির্যাতিত।

সাত। সংসারে থাকতে থাকতে আমরা একসময় নিঃসঙ্গ অনুভব করি। অথচ এমন নয়, আশেপাশে কেউ নেই। সবাই আছে, তবে মনের মতো কেউ কোথাও নেই। এই অনুভূতিটা খুব কষ্টের। মানুষ মানুষের অভাবে নিঃসঙ্গ হয় না, মনের মতো মানুষের অভাবেই মানুষ নিঃসঙ্গ হয়। বাঁচতে তখন খুব কষ্ট হয়, দীর্ঘশ্বাসের ভারটা ক্রমেই বাড়ে। এই নিঃসঙ্গতাযাপন সহজ নয়।

কিছু মানুষ শুরু থেকেই এমন নিঃসঙ্গ হয়ে বাঁচেন। এই যাপন চলতে থাকে জীবনের শেষদিন অবধি। এই যাপন একধরনের স্বেচ্ছানির্বাসন যদিও, তবু দিনের পর দিন এরকম একাকী জীবন কাটিয়ে দেওয়া সত্যিই কঠিন। আমার জন্য অপেক্ষা করে আছে, এমন একটিও মানুষ কোথাও নেই, এটা মেনে নিয়ে বেঁচে থাকা...এ বড়ো ক্লান্তিকর যাত্রা। সাধুসন্তদের এই নিভৃতচারণ আমার কাছে বরাবরই রহস্যে ঘেরা।

খ্রিস্টান রোমান ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের ফাদারগণের বিয়ে করার অনুমতি নেই। ফাদার হবার পর থেকে শুরু করে দীর্ঘ যাজকজীবন কাটাতে হয় নিঃসঙ্গতাকে সঙ্গী করে। ঈশ্বরের নির্দেশে মানুষের সেবায় এমন একটি জীবনকে নিজের ইচ্ছেয় বরণ করে নেওয়া এবং সেই একাকী পথে অবিচল চিত্তে হেঁটে যাওয়া দীর্ঘসময় ধরে, দুই-ই ভীষণ শক্ত কাজ।

আজ ফাদার রেভারেন্ড নিকোলাস চিসিমের যাজকজীবনের ২৫ বছরপূর্তি উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বারোমারি খ্রিস্টান মিশনে অতিথি হয়ে গিয়েছিলাম। খুব আনন্দ পেয়েছি, সম্মানিতবোধ করেছি। একটি বারের জন্যও মনে হয়নি, আমি দূরের মানুষ। ওঁদের সঙ্গে মিশে আসছি গত এক মাস ধরে। সবসময়ই অনুভব করেছি, ওঁদের সঙ্গে আমার আত্মার সম্পর্ক। উষ্ণতার এই চিরন্তন খোঁজটি আদিবাসীদের কাছে আজ অবধি সবসময়ই পেয়েছি।

আদিবাসীদের রক্তে সুর মিশে আছে। ওঁদের কথাবার্তা, আচার‌আচরণ, চলাফেরা, আদর‌আপ্যায়ন, জীবনপ্রবাহ সব কিছুই সুরে প্রোথিত যেন! ওঁদের যে দুটো দিক আমাকে সবচাইতে বেশি মুগ্ধ করেছে, তা হচ্ছে সারল্য ও কৃতজ্ঞতাবোধ।

অভিজ্ঞতায় দেখেছি, ওঁদের ধন্যবাদজ্ঞাপনের উৎস নিছকই ঠোঁট নয়, বরং হৃদয়। জীবনের উদ্‌যাপনের আন্তরিক প্রেষণা ওঁদের বিশ্বাসে ও যাপনে। এখানে কোনও স্বার্থ নেই, কোনও হিসেব নেই। প্রাণের এমন উন্মেষ দেখতে বড়ো ভালো লাগে।

সকল মানুষের শান্তিকামনায় ওঁদের প্রার্থনা দেখেছি আজ‌ও। এই আকুতি বড়ো আন্তরিক, বড়ো জীবনঘনিষ্ঠ। গারো আদিবাসী সম্প্রদায়ের জয় হোক!

আট। মানুষ বদলাতে সময় নেয় না, কিন্তু পরিস্থিতি বদলাতে সময় নেয়। তাই নিজেকে সামলে নিতে খুব কষ্ট হয়।

নয়। আপনার আর আমার পার্থক্য এতটুকুই...
যখন আপনি রাগ করেন, তখন আমি রাগসহ‌ই আপনাকে আপন করে নিই।
আর যখন আমি রাগ করি, তখন আমাকে এবং আমার রাগকে আপনি পাত্তাই দেন না।

দশ। যদি কখনও আমাকে বদলে যেতে দেখো, তখন আমার নাম দিয়ো...সময়।

যদি কখনও আমাকে অনুভব করতে পারো, তখন আমার নাম দিয়ো...ভালোবাসা।

এগারো। যার চোখে তুমি খারাপ, তার চোখে ভালো হবার চেষ্টা করার চাইতে অধিক জরুরি, যার চোখে তুমি ভালো, তার চোখে ভালো থেকে যাবার চেষ্টা করা। ততোধিক জরুরি, এত কিছুর তোয়াক্কা না করে তুমি যেমন, নিজেকে ঠিক তেমনই রেখে দেওয়া, যদি এতে কার‌ও কোনও ক্ষতি না হয়।

বারো। একেকটি প্রত্যাশা একেকটি মৃত্যুর জন্ম দেয়।

তেরো। অল্প বয়সে খুব ঝগড়া করতাম, নিজের অবস্থানটাকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করতাম।
আর এখন...কিছু না বলে চুপচাপ সরে আসি।

যে যার মতো করে জিতে যাক। আমি কেবল শান্তি পেলেই খুশি।

চৌদ্দ। আমার দিকে নয়, যীশুর দিকে তাকান।
কালোর দিকে নয়, আলোর দিকে তাকান।

আমাদের কাছ থেকে নয়, ঈশ্বরের পুত্রের কাছ থেকে শিখুন।

পনেরো। ঘুরে এলাম অপূর্ব দুর্গাপুর...

জানি, আরও কিছু ছবি দিলে দুর্গাপুরের সৌন্দর্য আপনারা আরও ভালোভাবে উপভোগ করতে পারতেন। কিন্তু বেশি ছবি দেওয়া আসলে ঠিক নয়। আনস্মার্ট, খ্যাত্‌মার্কা ও ফালতু লোকজন‌ই বেশি ছবি দেয়। কেউ বেশি ছবি আপলোড করলে মেজাজ খুব খারাপ হয়। এত যে গালাগালি করতে ইচ্ছে করে, কী আর বলব! মনে হয়, হারামজাদাকে গালাগালি করতে করতে নিজেকে একদম জাতে উঠিয়ে ফেলি! আমি এইসব বুঝি। তাই যদিও আমি দেখতে আগুনজ্বলা সুদর্শন, তবুও অল্প কয়েকটা ছবিই দিলাম। আমার এই বিচক্ষণ অপারগতার জন্য আপনারা রাগ করবেন না, কেমন?

ষোলো। জ্বলে উঠুন আপন ঈর্ষাতে!


ভাবনা: আটশো উনআশি
………………………………………………………
এক। বৃষ্টির মতো শান্তি ঝরুক...

দুই। যে সম্পর্ক থেকে এক কষ্ট বাদে আর কোনও কিছুই পাবার নেই, সেখান থেকে বেরিয়ে আসার প্রাথমিক ধাপটি হলো:

আমি তার ভালো চাই, কিন্তু আমি তাকে চাই না।

...নিজেকে এটা বার বার বলা ও বিশ্বাস করানো। জোর করে হলেও তার সঙ্গে সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া, একদম পুরোপুরিই।

তিন। গতকাল রাতে ময়মনসিংহ রামকৃষ্ণ মিশনে গিয়েছিলাম।

আমি কোথাও গেছি, কিন্তু সেখানকার রামকৃষ্ণ মিশন না দেখেই ফিরে এসেছি, এমনটা বোধ হয় কখনও হয়নি। এর মূল কারণ, বেদান্ত ও বেদান্তচর্চার প্রতি আমার টান, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা।

আমার দেখামতে, এই বাংলায়, ধর্মের বাহ্যিকতাকে দর্শন ও আধ্যাত্মিকতার বেদিতে রামকৃষ্ণ মিশনের মতো করে রাখতে পেরেছেন আর মাত্র একটি আশ্রম: পন্ডিচেরির শ্রী অরবিন্দ আশ্রম।

এই দুইটি আশ্রম তাঁদের কাজের মধ্য দিয়ে আমাদের দর্শন ও আধ্যাত্মিকতার তৃষ্ণাকে মিটিয়ে চলেছেন বহু যুগ ধরে। যে-কোনও ধর্মের জ্ঞানপিপাসু মানুষই এঁদের বইপত্র, ভিডিয়ো এবং অন্যান্য কাজের মধ্য থেকে এবং মধ্যে থেকে দর্শন ও আধ্যাত্মিকতার সমুদ্রে ভাসতে পারেন পরম-আনন্দে।

রামকৃষ্ণ মিশনের স্বামীজিদের বেশিরভাগই যেমনি নিরলসভাবে জ্ঞান ও মানবিকতার সাধনা করে যাচ্ছেন, তা দেখে মুগ্ধ ও বিস্মিত হতে হয়। তার সঙ্গে মানবসেবা তো রয়েছেই। এই সেবা সকলের জন্যই অবারিত, কেবলই কোনও বিশেষ ধর্মের মানুষের জন্য নয়। আমি আজ অবধি সংকীর্ণতার লেশমাত্রও ওঁদের কথাবার্তা, আচরণ কিংবা কাজকর্মে পাইনি। আমাকে কেউ নির্দিষ্ট কোথাও বেঁধে ফেলার চেষ্টা করলেই আমি সেখান থেকে চটজলদি পালিয়ে আসি। উদারতাই শান্তির!

ওঁরা কখনওই গায়ে পড়ে জ্ঞান জাহির করেন না, রামকৃষ্ণ কিংবা ওঁদের কর্মকাণ্ড নিয়ে বিজ্ঞাপন করতেও ওঁদের কখনও দেখিনি। নিজের ব্যক্তিসত্তাকে আড়ালে রেখেই ওঁরা ওঁদের কাজ করে যান। খুব চেষ্টা করলেই কেবল ওঁদের জানাশোনার গভীরতা নিয়ে অনুমান করা যায়।

স্বামী বিবেকানন্দের রচনা নিশ্চয়ই অনেকেই পড়েছেন। যাঁদের এখনও পড়া হয়নি, তাঁদের বলি, এই ছোট্ট একটা জীবন বিবেকানন্দের রচনা না পড়ে কাটিয়ে দিয়ে কী লাভ?! আর কিছু হোক না হোক, তাঁর চিঠিগুলি পড়েই দেখুন না, অনেক আনন্দ পাবেন! এর পাশাপাশি অন্যান্য স্বামীজির বইগুলিও পড়ুন। ইউটিউব থেকে সর্বপ্রিয়ানন্দসহ অন্যান্য স্বামীজির লেকচারগুলি শুনুন। অনেক জানতে পারবেন, নিজের আত্মার সঙ্গে সময় কাটাতে পারবেন, শান্তি অনুভব করতে পারবেন।

নির্দিষ্ট একটি ধর্মের ছায়াতে থেকেও সকল ধর্মমত ও ধর্মপথের প্রতি সমান শ্রদ্ধা রেখে উদার দর্শন ও আধ্যাত্মিকতার এমন অপূর্ব সমন্বয় খুব অল্প জায়গাতেই পাবেন। আমি মনে করি, প্রতিটি ধর্মই সঠিক। যা মানুষকে বাঁচিয়ে রাখে, তা কখনোই ভুল হতে পারে না।

তো যা দিয়ে শুরু করেছিলাম। গতরাতে মিশনে গিয়ে মহারাজদের (স্বামীজিদের) এবং ওঁদের ছাত্রদের সঙ্গে জীবনদর্শন নিয়ে অনেক গল্প করেছি। খুবই আনন্দ পেয়েছি, স্বস্তি পেয়েছি। মিশনের মহারাজেরা আমার মতন নগণ্য একজন মানুষকে খুব ভালোবাসেন, স্নেহ করেন, সময় ও প্রশ্রয় দেন। এর কারণ আমার জানা নেই।

চার। আজ, এতগুলি বছর পর,
তোমাকে এমন কাঁদতে দেখে বার বার মনে হচ্ছে,
আহা, যদি সেসময় এক বার...শুধু এক বার বলতে, তুমি আমাকে ভালোবাসো!

শুধু এটুক শুনলেও, পৃথিবীর সব ছেড়েছুড়ে আমি তোমার কাছে চলে আসতাম।

তুমি কি জানো, 'ভালোবাসি!' বলতে না পারার অনুশোচনার চাইতে 'ভালোবাসি!' শুনতে না পারার কষ্ট যে কত বেশি?!

বলতে পারো, কেন এইসব বলছি! আমি তো ভালোই আছি!

শোনো, আমি ভালো ছিলাম, কেননা আমি সবসময়ই জেনেছি, আমাকে ছাড়া তুমি ভালো আছ।
কিন্তু আজ, এতগুলি বছর পর, তোমার চোখে জল দেখে আমার আর বাঁচতেই ইচ্ছে করছে না! শুধুই মনে হচ্ছে, যদি সব কিছুর বিনিময়ে হলেও তোমার হাসিটা ফিরিয়ে আনতে পারতাম!

আমার কাছে ভালোথাকার একটাই মানে: তোমার হাসি।

পাঁচ। ...যদিও হেটাররা বলবে, ব্যাটা হনুমান, তোর চাইতে তো তোর পেছনের জিরাফটাই বেশি স্মার্ট, অথচ আমি বসে আছি হরিণের সামনে!! হিংসা একটু বেশিই হয়, ঠিক আছে; কিন্তু তাই বলে কি এত পরিচিত একটা প্রাণীর নামটাও ভুল বলবেন!!
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
.
বান্দরকে বলেন কিনা হনুমান! আপনারা আসলেই আজব...অতিআজব!!

ছয়। Sometimes, in your life, some unexpected or bad things happen that you do not deserve but you do need.

সাত। মাঝে মাঝে, পায়ের জুতাও নিজেকে মাথার টুপি ভেবে মনে মনে অনেক খুশি হয়। এটাও খারাপ না; যে যেভাবে জেতে আর কি! কেউ হয়ে জেতে, কেউবা ভেবে জেতে!

আট। তোমায় রাখি না,
তবু তুমি থেকে যাও...

নয়। যা-ই হোক, ফেইসবুক বন্ধ হবার পর, জুকারবার্গের সঙ্গে কালকে রাতে মেসেঞ্জারে ভিডিয়োকলে যে দীর্ঘ মিটিংটা করলাম, অবশেষে তা সার্থক হলো। নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে আপনাদের বাঁচাতে পেরে খুব ভালো লাগছে। আমার এই মানবজন্ম সত্যিই সার্থক!

Apnadar dokko daka asala ame sajjae kurta parselam na,cocke gol asa gasa,tae ame gokarbargka konvens kara apnadar moka hase potata apnadar gonna abar pasbok neya asase.sobae ageban amar pasay takban.ame gane,anakae akan bolban,ame pazlame kurse,kanuna amar srumar kunu molllo apnadar kasa nae.tobo ame apnadar balubase, apnadar balu sae,tae apnadar gunno bar bar gapea purbu abun pasbok ar huatsaf perea anbo.apnara mun karaf kurbanna, apnadar kusta dakla amar cockpete kanna asa,boker mudda gala kara.

দশ। ফেইসবুক কর্তৃপক্ষকে অনেক অনেক ধন্যবাদ, অন্তত একটি রাত হলেও, আমাদের সঠিকভাবে ঘুমানোর সুযোগ করে দেবার জন্য। আমরা ধরেই নিয়েছিলাম, এ পৃথিবীতে বেঁচে থেকে আর কোনও লাভ নেই। কিন্তু না, এখন ফেইসবুক ফিরে এসেছে। বেঁচে থাকলে এখন প্রচুর লাইক পাওয়া যাবে।



যদি বড়ো হতে চান, তবে হাতটা বড়োমানুষের কাঁধে কিংবা ঘাড়ে নয়, পায়ের ধুলোর কাছে রাখুন। (সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত মতামত। আপনাদের ভিন্ন কোনও দর্শন থাকলে শেয়ার করুন অনুগ্রহ করে।)

ভাবনা: আটশো আশি
………………………………………………………
এক। ছোটোলোক বড়ো হয় ছোটো করে।
বড়োলোক বড়ো হয় বড়ো হয়ে।

দুই। ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে,
প্রতিদিন, বসের দিকে
প্রেমময় চোখে তাকাই।

অথচ একবুক নিখাদ প্রেম নিয়েও,
তাকানোর জন্য তোমাকে পাই না।

চাই না যাকে,
চোখের সামনে লটকে থাকে।
চাই যাকে,
ছবির ভেতরে লেপটে থাকে।

তিন। আকাশজুড়ে যখন বৃষ্টি উঠিয়েছিলাম লন্ঠনে লন্ঠনে...

আজ রাতে আবারও ওঠাব...ফানুসবৃষ্টি!!

চার। এ পৃথিবীর সকল সম্প্রদায়ের মানুষের শান্তিকামনা করি।

পাঁচ। ১. দাদা, আপনার মনেও কি আমার মতন হতাশা?  
২. বাইয়া, এমনবাবে বলপেন না।‌  
৩. আমরা আগের সুশান্ত দাদাকে ফেরত চাই।  
৪. একজন সরকারি কর্মকর্তার এমন আচরণ সত্যিই শোভনীয় নয়, আপনার ক্ষমা চাওয়া উচিত!  
৫. এ সমাজে একজন নারী হয়ে জন্মালেই বুঝতেন, দাদা!  
৬. আপনার ব‌উ আপনাকে কিছু বলে না?  
৭. ভুলে যাবেন না, অহংকার পতনের মূল।  
৮. আপনি বিবাহিত হয়েও প্রাক্তনের কথা লিখেন কেন?  
৯. আপনাকে বান্দরবানে ট্রান্সফার কেন করা হয়েছিল, তা কি আমরা জানি না ভেবেছেন?  
১০. (এটা আপনার জন্য...আমার বিভিন্ন পোস্টের কমেন্টথ্রেড থেকে বিনোদনমূলক একটা বাক্য লিখুন।)
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, কমেন্ট পড়লে মন ভালো থাকে।             

ছয়। কুত্তা মাঝেমধ্যে রাস্তায় গাড়ি দেখলে হঠাৎ পেছন পেছন দৌড়াতে থাকে...হুদাই, কোনও কারণ ছাড়াই! তবে ওই দৌড়ানো পর্যন্তই! অবশ্য কখনও কখনও দৌড়াতে গিয়ে চাপাও পড়ে!

গাড়িতে থাকা লোকটা কুত্তার দিকে চুপচাপ তাকায়, মজা পায়।

ব্যাপারটা খেয়াল করেছেন না?

সাত। ভাই রে, কুত্তা পালা লাগে না; কিছু কিছু লোক কুত্তার চাইতেও বেশি সার্ভিস দেয়---না পাললেও সারাক্ষণই পিছে পিছে ঘোরে। কুত্তাকে তা-ও মাঝে মাঝে খাবার দেওয়া লাগে, অথচ ওদের কিছুই দেওয়া লাগে না। এমনিই ঘোরে, আর ফুটা খোঁজে!

পার্থক্যটা হলো: কুত্তার সার্ভিসটা বিশ্বস্ততার, আর ওদের সার্ভিসটা বিরক্তির।

আট। প্রতারিত হলেই বরং ভালো! তখন আর কোনও বাধা, সংস্কার কিংবা পিছুটান থাকে না। কখনও কখনও এই প্রতারিত হবার নামই মুক্তি। এ মুক্তি মনের সমস্ত অদৃশ্য শৃঙ্খল থেকে মুক্তি। নিজেকে বেঁধে রাখতে হয় না যাকে, তার চাইতে সুখী আর কে আছে?!

নয়। I'm that sky you wanna touch!

দশ। Not always you need to get prepared!

এগারো। তিনটি কাজের যে-কোনোটি আমরা করতে পারি:

আমাদের কাছের যারা মারা গেছেন, তাদের কার‌ও স্মরণে ছোটোখাটো একটা কল্যাণ-ট্রাস্ট গঠন করে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি।

হাতে সময় অল্প থাকলে নিজে সংগঠন তৈরি না করেও কোনও সংগঠনের পাশে আর্থিক সহায়তা দিয়ে দাঁড়াতে পারি।

মানবকল্যাণমূলক এ ধরনের কোন‌ও সংগঠনের পাশে আমাদের মূল্যবান সময় খরচ করেও দাঁড়াতে পারি।
অর্থ, সময়, পরামর্শ ইত্যাদি সহায়তা দিয়ে এলাকায় এলাকায় এমন ট্রাস্ট আরও বেশি বেশি গড়ে উঠলে অনেক প্রান্তিক মানুষের কাজে আসবে। অভিজ্ঞতা বলে, এতে প্রয়াত মানুষটির শুভাকাঙ্ক্ষীরাও তার কথা মনে করে অনেক আনন্দ পান। সবার মধ্যে একধরনের ভালো অনুভূতির জন্ম হয়।

ঈশ্বর সবাইকে দেন না। যাদের দেন, তাদের দায়িত্ব জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে হতদরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানো। জগতের এই মহান আনন্দযজ্ঞে হোক সবাই নিমন্ত্রিত। আসুন, হাত ধরতে হাত বাড়াই।

আমার ছোটো বোন লিপার হাজব্যান্ড আমার বন্ধু মিন্টু দাদার প্রয়াত পিতা মাস্টার এপ্রিল বনোয়ারির স্মরণসভায় গরিবদের মাঝে কিছু কম্বল ও শীতবস্ত্র বিতরণের কাজে অংশ নিতে পেরে বড়ো স্বস্তি পেলাম। এবারের শুরুটা হলো নেত্রকোণায়, চেংগ্নী গ্রাম থেকে...

বারো। চেংগ্নী গ্রামে,
কুহেলি খামে...
রাতের পাহাড়ে,
বারবিকিউ আহারে!

তেরো। ব্রিজ থেকে দেখা গোধূলিশেষের অপূর্ব সোমেশ্বরী!

...না, দূরের ওই আলোর সজ্জা সন্ধে-নদীর বুকে জেগে-ওঠা নৌকোর শাশ্বত বিন্যাস নয়। আলোগুলি ক্ষুধার্ত ট্রাকের অস্তিত্বের সাক্ষ্য দিচ্ছে। ওরা নদীর অস্থি-মাংস খুঁড়ে বালি সংগ্রহ করতে এসেছে।

এই বালির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, আকৃতিতে দানাদার ও পুরু। বালির গায়ে রৌদ্র নেমে এলে ভীষণ চিকচিক করে। যতদূর মনে পড়ে, এমন অনন্য গুণের বালি আর দেখেছিলাম জাদুকাটা নদীর তীরে। আহা, সে এক বড়ো মায়াবী নদী!

বালি-উত্তোলন চলছেই...দিন-রাত, রাত-দিন।

চৌদ্দ। Peace is much more important than love. Love is nothing, peace is everything.

পনেরো। বেআক্কেল লোকের কাছ থেকে ভালোবাসা পাবার মতন বিড়ম্বনা আর হয় না! বেআক্কেল লোকের ভালোবাসার চাইতে কাণ্ডজ্ঞানসম্পন্ন লোকের ঘৃণাও অধিক স্বস্তিদায়ক।


ভাবনা: আটশো একাশি
………………………………………………………

এক। তুমি আমার সঙ্গে ভালোবাসার বাজি খেলেছিলে। যদি জিতে যেতে, তবে আমি তোমার হতাম। হেরে গিয়েছিলে বলেই সারাজীবনের জন্য তুমি আমার হয়ে গেছ। প্রিয়তমা, হেরে যাবার এত যে সুখ, তা আমি আগে বুঝলাম না কেন?! কেন সেদিন জিতে গিয়ে সারাজীবনের জন্য এমন বাজেভাবে হেরে বসলাম!?

দুই। ভালোবাসা...?

সে তো শান্তির সেই সমুদ্র, যে সমুদ্র পার হয়ে যাবার পথ একটাই: সেই সমুদ্রে ডুবে যাওয়া। ডুবল না যে বেচারা, এক সে-ই ডুবে মরে!

শান্তি নেই যেখানে, সেখানেও ভালোবাসা সত্যি সত্যি টিকে থাকে, এমন রূপকথা আমাকে শোনাতে এসো না।

তিন। ব্যস্ততার সোদনে...এই বেশ ভালো আছি!

চার। নিজেকে ও অন্যকে ভালো রাখতে নতুন বছরে দুটো ছোট্ট টেকনিক মাথায় রাখতে পারেন:

টেকনিক ১। কারও সম্পর্কে ভালো কিছু বলার না থাকলে মুখটা বন্ধ রাখুন; খারাপ কিছু বলবেন না। আপনার নেগেটিভ সার্টিফিকেট ধুয়ে জল খাবার জন্য কেউ তার বছরটি শুরু করেনি। গায়ে পড়ে অবৈতনিক মাস্টারি করা বন্ধ করুন; মনে রাখবেন, আপনি যে পর্যায়েরই মানুষ হন না কেন, আপনারও কিছু আত্মসম্মানবোধ আছে। লজ্জা মানুষের ভূষণ; বাঁচতে গেলে কিছুটা হলেও লজ্জা লাগেই, তাই লজ্জা না থাকলে লজ্জা তৈরি করার চেষ্টা করুন!

টেকনিক ২। আপনি যতই নিখুঁত হন না কেন কিংবা আপনি নিজেকে যতই নিখুঁত ভাবুন না কেন, কাউকেই কোনও ব্যাপারে জাজ করবেন না। যার যে পথে ইচ্ছে, সে পথে চলুক। যে লোকটা আপনাকে আপনার পথ নিয়ে বিরক্ত করে না, তাকে তার পথ নিয়ে বিরক্ত করাটা বেআক্কেলের পরিচায়ক। কেউ ভুল পথে চলেও যদি, তাতে আপনার কী, ভাই?! কোন পথ সঠিক আর কোন পথ ভুল, গায়ে পড়ে সেটা ঠিক করে দেবার আপনি কে? কাউকে ভালো মানুষ করার চাইতে নিজে ভালো মানুষ হ‌ওয়াটা অধিক জরুরি। এটা বুঝতে তো আর রকেট সায়েন্টিস্ট হতে হয় না!

নতুন বছর ভালো কাটুক।

পাঁচ। মানুষ তাকেই কিনা সব কিছু দিয়ে বসে থাকে, যার কাছ থেকে তার কিছুই পাবার নেই; অথচ সেই এক‌ই মানুষ তাকে কিছুই দিতে চায় না, যার কাছ থেকে সে অনেক কিছু পেতে চায়! এতে যা হয়, মানুষ কেবলই ভুল মানুষের পেছনে সময় নষ্ট করে, আর সঠিক মানুষ হাতের কাছে পেয়েও হারিয়ে ফেলে।

ছয়। When you want something from someone who doesn't know you and they refuse to give it to you, it's your fault. You can't expect anything from anyone who doesn't feel your necessity in your own way. First create that feeling, the rest will follow. This world is not a restaurant, people here are not the waiters. Seek not, suffer not.

সাত। সমস্যা হচ্ছে, কেউ যদি এখন আমার হৃদয়ে এই পৃথিবীর সব কষ্টও দিয়ে যায়, তবুও সেই অনুভূতি আমার মধ্যে খুব বেশিক্ষণ কাজ করে না। হ্যাঁ, আমার ব্যথার অনুভূতিগুলো এতটাই ভোঁতা হয়ে গেছে। আমি খুব করে চাই, কেউ আমাকে এমন কোনও কষ্ট দিক, যে কষ্টটা আমি আজ পর্যন্ত কোনোদিনই পাইনি এবং সেই কষ্টটা আমার ভেতরে তীব্র একটা স্পার্ক তৈরি করুক! খুব করে এটা আমি চাই, কিন্তু তবুও কিছুতেই কিচ্ছু হয় না!

আমাকে এই মুহূর্তে রাস্তায় গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দিলেও আমি দিব্যি সেখানেও শান্তির ঘুম দিয়ে উঠব। আমার কিচ্ছু নেই, অথচ আমার তাতে কিছুই এসে যায় না---এমন একটা ভয়ানক অবস্থানে পৌঁছে গেছি আমি! আমার এই কষ্টের অনুভূতিগুলো দরকার, কারণ অনুভূতিশূন্য একজন মানুষ কিছুই করতে পারে না! তার কাছে আসলে শান্তিরও কোনও অনুভূতি নেই!


আট। আপনি যদি এক জনের সঙ্গে অসৎ থেকে পৃথিবীসুদ্ধ মানুষের কাছেও সৎ থাকেন, তাহলেও যত বারই আপনি ওই একজনের কাছে যাবেন, তত বারই সে আপনাকে অসৎ হিসেবেই জানবে, ওটা মাথায় রেখেই কথা বলবে।

আপনি যতই চেষ্টা করুন না কেন, তার প্রতি আপনার আচরণ কিংবা কর্মকাণ্ড পরিবর্তন না করে তার দৃষ্টিতে সৎ আপনি হতে পারবেন না। আপনি আজীবনই তার দৃষ্টিতে একজন ভণ্ড হিসেবে পরিচিত হয়ে থাকবেন। মানুষ যদি অ্যাকশন না নেয়, তাহলে তার মুখের কথায় কোনও কিছুরই পরিবর্তন হয় না।

এক‌ই মানুষ সময় এবং পরিস্থিতিভেদে একেক জনের দৃষ্টিতে একেক রকম হয়।

আসল কথা হচ্ছে, আপনি কার দৃষ্টিতে কেমন থাকতে চান কিংবা ব্যক্তি হিসেবে কাকে কতটা মূল্যায়ন করেন, তা দিয়েই আপনার ভাবনা ও আচরণ নির্ধারিত হয়। আপনি যাকে মূল্যায়ন করবেন না, তার দৃষ্টিতে আপনি অসৎ, ভণ্ড হলেও আপনার কিছুই এসে যায় না। তার কাছ থেকে এ সমস্ত ট্যাগ নিয়েও আপনি দিব্যি বেঁচে থাকতে পারবেন।

আপনার কথার কানাকড়িও দাম যার কাছে নেই, তার পেছনে পেছনে ঘুরঘুর করে জাজমেন্টাল বাণী ছোড়াছুড়ি বন্ধ করুন!


ভাবনা: আটশো বিরাশি
………………………………………………………

এক। আমাকে যারা ফলো করে, তাদের বেশিরভাগই সাহিত্য, ঘোরাঘুরি, ফান, মিউজিক, মুভি, ফিলোসফি, সাইকোলজি, প্রেম-ভালোবাসা ইত্যাদি নিয়ে পোস্ট দেখতে চায় না। তারা কী চায়? মোটিভেশন, মোটিভেশন আর শুধুই মোটিভেশন! আমি হ‌ইলাম আস্ত এক্‌খান মোটিভেশনের ডিব্বা! এত বেশি বেশি করে চায় যে, মোটিভেশনাল পোস্টগুলি তাদের ব্যস্ত নজর‌ই এড়িয়ে যায়! ব্যস্ততা তাদের দেয় না অবসর! বেকার মানুষ, বিজি বেশি... তারা তখন আবার মনের দুঃখে ব্যথায় ক্ষোভে আমার ওয়ালে পঙ্গপালের মতো দলে দলে ঝাঁপিয়ে পড়ে মাস্টারি করার জন্য! শিখতে যখন পারলাম‌ই না কিছু, তখন আজ শিখিয়েই ছাড়ব! এটা হলো জ্ঞানের ঠ্যালায় গর্ভ স্ফীত হয়ে যাবার সাইড-ইফেক্ট! আমার কাছে মোটিভেশন চাইবার আগেও তারা বেকার থাকে, আমার কাছে মোটিভেশন পাবার পরেও তারা বেকার থাকে। হায় হায়! এইসব আসলে কীসের আলামত? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না!

আম্মু আম্মু...দ্যাখো না দ্যাখো না... ভাইয়া ইদানীং কী পরিমাণ পচা হয়ে গেছে, ইক্টুও মুটিবিশন দ্যায় না! ভ্যাঅ্যাঅ্যাঅ্যা...

বাই দ্য ওয়ে, এই পোস্টের কমেন্টে আমার বেশ কয়েকটি মোটিভেশনাল পোস্টের লিংক দিয়ে দিচ্ছি আপনাদের সুবিধার্থে। আপনার ফুললি-চার্জড ব্যাটারিটি দিয়ে শুরু হোক আরেকটি বছর!!

দুই। জাজমেন্টাল অ্যাটিটিউডের মানুষ নিপাত যাক, সুস্থ মানসিকতার মানুষ মুক্তি পাক!

শুভ ২০২২!

তিন। The most powerful sentence that can save your life is: LEAVE AND MOVE ON!

চার। ইদানীং পরীক্ষার আগে পাবলিক আমারে নক দেয় দোয়া নেবার জন্য। নিজেকে পুরাই ফকির বাবা ফকির বাবা লাগে!  এ জীবনে কখনও কাউরে নক দিলাম না দোয়া নেবার জন্য, তাই তো অনার্সে ধুমায়ে ফেইল করসি!