ফিরে এসো আমের মুকুলের শরীরে বসন্তের প্রথম শিশির হয়ে, মদিরতায় বেসামাল ভ্রমর-পুরুষের যুগলবন্দি হয়ে ফিরে এসো!
জলাঙ্গীর তীর ঘেঁষে ফেনিল তরঙ্গের শেষ ছোঁয়া হয়ে ফিরে এসো, মধুময় মেরুন আলোয় দুটি রজনীগন্ধা-কলি; শেষরাতে নিদ্রাচ্ছন্ন কেতকীর স্বপ্নাতুর কৈশোরে বেহালার সুর ধরে, তুমি ফিরে এসো।
ফিরে এসো সজনে ফুলের গায়ে সুজন হাওয়ায় পাতা তোমার-আমার এই অবিচ্ছিন্ন সংসারে, চাঁদের রঙে রাঙিয়ে দেবার সময় হলো যে... জোনাক দেখো লাল হয়েছে, শিউলি-শিশিরে ফিরে আসার ঘণ্টাধ্বনি, হৃদয়মন্দিরে তুমি ফিরে এসো আমার হয়ে, অন্য জনমে।
যদি যাও সাঁঝের বাড়ি, এক পেয়ালা চুমু হাতে পথ ভুলে ভোরের গাড়ি নামিয়ে দেয় কুসুমকলি, তবুও জেনো, আমি আছি কৃষ্ণচূড়ার শরীর-ছোঁয়া তোমার হয়ে।
ফিরে এসো, এক-আধটা দিন, সবুজ স্বপ্নে ধোঁয়াটে বিকেল হয়ে সারসডানায় ছোট্ট একটা গল্প লেখা হবে, সেখানে একটা তুমি, দুইটা তুমি, কতশত তুমি, আমার কলমের প্রথম প্রেম... সে তুমিই!
অথচ কতদিন হয় লিখি না, জানো! কতকাল হলো শহরতলিতে বর্ষা আসেনি; মেঘের শরীরে নাকি সুখের অসুখ! হাবুডুবু কদম-খাওয়া পাখির দল ঘর বাঁধেনি, বৃক্ষহৃদয়ে শ্যাওলা জমে এখন রাতের ছায়ায়, স্বপ্নকাঁধে রানার ছোটে না পথে, কয়েকটা চিঠি ভুল বানানেই পড়ে থাকে, আমিও দাঁড়িয়ে আছি, সেই কোন সকালে একমুঠো তোমায় চোখের মায়ায় বুকপকেটে রাখব বলে; তবুও বেলা গড়ায় না, ঝুলে থাকে আকাশজুড়ে!
তুমি এসো ফিরে একবার বৃক্ষছাতায়, রাতের পাড়ায়, ধুনুচি-ধোঁয়ায়, কলমে- কাগজে, গল্পে-চায়ে, অক্ষরনিবাসে, কাঁথায়-সুতোয় ভালোবাসায়।