ফিরে আসব

একবার মরে গেলে মানুষ কি আর সত্যিই ফেরে না কখনও?
কেন মেঘের পালক যায় না হয়ে...যারা মৃত হয়ে যায়?
একঝাঁক গাংচিল কিংবা প্রজাপতি...কেন হয় না মৃতরা?


দেখিস, আমি মরে গেলে মুক্তোফোটানো ঝিনুক হব।
না না না! তোর গালের টোল,...নয়তো চিবুকের কালো তিলটাই হব।
কখনও গাংচিল, কখনও শিশিরফোঁটা, কখনওবা তোর চোখের পাপড়ি হব।


আচ্ছা, মরে যেতে কেমন লাগে রে?
খুউব কষ্ট বুঝি?
যম এসে যখন দমটা ধরে এক হ্যাঁচকা টানে কলজেটাকে ছিঁড়েই ফেলবে,
প্রাণটা তখন বুঝি বেরিয়েই যাবে সত্যি সত্যি?
আমি নেই হয়ে গেলে আমায় তোরা সবাই বুঝি ভুলেই যাবি?
আমার নাম, আমার পরিচয়, আমার সৃষ্টি যত...সব...ভুলে যাবি?


মৃত্যুভাবনা মাথায় এলে এত ভয় কেন পাই?
অথচ দ্যাখ, যখন মৃত্যু দেখি, তখন দেখি, আহা, সেখানে কত সুখের বসত!
যেদিন মরে যাব, সেদিন থেকেই আমার নামটাকে শিকেয় তুলে
তোরা বুঝি সবাই মিলে আমায় লাশ ডাকবি?
যে কখনও আমার নামটা পারেইনি জানতে,
বুঝি সেও আমায় মৃত নামেই ডেকে উঠবে?
এ নিয়ম কেমন নিয়ম রে?


মৃত্যুর পরেও আমি ঠিকই ফিরে আসব, বলে রাখছি।
আমার যত অসমাপ্ত স্বপ্ন, অপূর্ণ ইচ্ছে, অফুরন্ত কথার মালা, কিংবা গানের স্বরলিপি---
দেখিস, ওরা সবাই মিলে গান গাইবে আমার নামে।


অসম্ভবের পিঠ চাপড়ে, সময়ের দড়িটা বেয়ে
আমি আবার ফিরে আসব তোদের এই নগরীতে।
কখনও ঘাসফুল, কখনও স্বর্ণলতা, কখনওবা রাতজাগা কোনও ডাহুক হয়ে
আমায় ফিরতেই হবে।
মেঘের পায়ের নূপুর হয়ে, রৌদ্রদিনের শিখা হয়ে
ফিরে আসব তোদের এই শহরে।


কখনও রোদ, কখনও সন্ধ্যাপ্রদীপ,
কখনওবা তোর একেকটি নির্ঘুম রাত হয়ে হয়ে,
রংধনু কিংবা গোধূলি হয়ে, তোর দুচোখের বৃষ্টি হয়ে,
কথা দিচ্ছি তোকে, ফের আমি ফিরে আসব।