তোমার বুকের সুধা দিয়ে মেটাও আমার তৃষা, তোমার আলোর প্লাবনে ভাসাও আমার অন্ধনিশা। যা-কিছু মিথ্যা-অলীক আমার, যা-কিছু ভ্রান্তি-কুহেলি আঁধার, তা হতে আমায় মুক্ত করো মা দেখিয়ে জ্যোতির দিশা। তোমার পায়ে রাখো এ চিত্ত, সত্যের পথে টেনে ধনবিত্ত। সর্বজয়ী হে প্রেমশক্তি! এই বিশ্বের অপ্রতিম অধীশ্বর তুমি, তুমিই তার স্রষ্টা, তুমিই তার ত্রাতা, তোমারি কল্যানে আদি-অন্ধকার গর্ভ থেকে সে উঠে এসেছে; আর এখন তুমি তাকে নিয়ে চলেছ তার সনাতন লক্ষ্যের দিকে। তুচ্ছাতিতুচ্ছ এমন কোনো বস্তু নেই, যার মধ্যে আমি দেখি না...তুমি জ্বলছ, তোমার ইচ্ছের শত্রু এমন নেই—আপাতদৃষ্টিতে যতই বিরোধী হোক—যার মধ্যে আমি অনুভব করি না, তুমিই সজীব, প্রজ্বলন্ত, সক্রিয়। হে আমার মধুময় অধিরাজ! প্রেমের সার তুমি, আর আমি তোমার মর্ম---তোমার প্রেমের খরস্রোত এই আধারের প্রতি অঙ্গের ভেতর দিয়ে বয়ে যায়। তোমার প্রেমকে প্রত্যেক জিনিসের মধ্যে জাগিয়ে তুলতে—না, বরং প্রত্যেক জিনিসকেই জাগিয়ে তুলতে, যাতে তোমার প্রেমে তারা সচেতন হয়ে ওঠে—এটাই আমাদের কাজ, কেননা তোমার প্রেমই তো তাদের সকলের প্রাণ। যারা তোমাকে ভুল জানে, যারা তোমাকে জানে না, যারাই চায় তোমার দিব্যমধুর বিধান থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে, তাদের সকলকে আমি আমার ভালোবাসায় ঘিরে রাখি, আমার বুকের মধ্যে তুলে নিই, তাদের উৎসর্গ করে দিই তোমার সমিদ্ধ চেতনার কাছে, যাতে তোমার জাদুকরি তপ্ত তেজে পরিপূর্ণ হয়ে যায় তারা, তোমার পরানন্দের মধ্যে তাদের স্বধর্মে প্রত্যাবর্তন ঘটে। হে প্রেমরাজ! হে জ্যোতির্ময়! সকলের মধ্যে তুমি প্রবেশ করো, সকলকে দিব্যরূপ দাও।