আমি কোনও বিলাসী মানুষ নই,
তেমন কোনও জীবন আমার লাগবে না।
আমার কেবল একটা হাত লাগবে, যে হাতটি
শক্ত করে ধরে আমি বাঁচতে পারব।
আমি কখনও অঢেল কিছু চাইনি।
আমি কেবলই একটুকরো আকাশ চেয়েছি,
নিজের মনের মতো একফালি চাঁদ চেয়েছি,
এমন একটা মানুষ চেয়েছি, যাকে বন্ধু ভাবা যায়,
নিজের সবটা কথা বলে ফেলে হালকা হওয়া যায়।
খেতে বসে আমার কখনও বাহানা ছিল না।
এটা খাই না, সেটা খাই না…এমন হয়নি কখনও।
আমার তেমন কোনও চাহিদাও নেই। আমি শুধু
আমার মানুষটাকে নিয়ে আমার ব্যক্তিগত আকাশে একটু উড়তে চেয়েছিলাম।
আমি নিজেকে একটা দেয়ালের মধ্যে আটকে রেখেছি।
এটা আমার নিজস্ব স্বাধীনতার দেয়াল।
আমি একা নই, আমার সাথে আমি আছি।
নিজেকে নিয়ে আমি ভালোই আছি।
আমার কোনও চাওয়া নেই, তাই
আমাকে দেবার মতো কিছুই নেই।
আমি কেবলই একজন সতীর্থ চেয়েছি,
যে আমায়, আর কিছু নয়, একটু স্বস্তি দেবে।
আমি যাদের ঘর বেঁধেছি, আজ
তারাই আমার ঘর কেড়েছে, আমায় আহত করেছে।
আমাকে ক্ষতবিক্ষত করে রক্তাক্ত করে ছেড়েছে।
যে আমাকে পায়নি কখনও নিজের মতো,
সে-ই চেয়েছে এই গায়ে লেপটে দিতে কালিমার দাগ,
আমার পিছু ছুটেছে আমায় আরও কিছু আঘাত দিতে।
তোমরা নিজেদের কেমন করে মানুষ বল?
এমনি করে আঘাত করে আর কতদিন গা বাঁচাবে?
সাধুর বেশে আর কতকাল মারবে ছুরি পেছন থেকে?
তোমরা কেমন যোদ্ধা, বলো? এমন লুকিয়ে মর!
তোমাদের নোংরা যে মন, তা-ই তোমাদের মুখে আঁকা!
বোঝ না কি তা-ও, আছ কতটা ঘনআঁধারে?
তোমাদের হৃদয়ের পচা গন্ধে ছেয়েছে শহর!
তোমাদের মগজ আজও প্রলাপ বকে,
সেই প্রলাপের কতটুকই-বা তোমাদের চোয়াল ঢাকে?
আমার একচিলতে ছোট্ট আকাশ!
সেখানে কখনও রৌদ্র খেলে,
কখনওবা বাদল ঝরে।
আমার ছাদের তলায়, চেয়ে দেখো,
কোনও মাটি নেই, শুধু আছে জল।
তোমরা চাইছ যে কী, সে আমি সবই জানি।
যে আকাশ তোমরা কখনও পারোনি ছুঁতে,
চাইছ, সে আকাশই যেন লুটায় এসে পায়ের কাছে!
এ কেমন মূঢ়তা, বলো…না কি আস্পর্ধা!
তোমরা যে আকাশের নিচে দাঁড়িয়ে
একফোঁটা বৃষ্টি মাগো, তার মেঘকে ডেকে
করছ শাসন! বলো, মেঘের দায়টা কীসের?
আমারও এমন একটা জীবন ছিল,
যে জীবনটা করেছি যাপন সহ্য করে!
দুঃসময়ে হাত বাড়িয়ে পাইনি কিছুই!
কেবল আমিই জানি, কী করে যে
সকালগুলি কেঁদেছে দেখে বিদঘুটে রাত!
তোমরা এসেছ যতবারই আমার দ্বারে,
নিয়েছ বুঝে হকের দাবি প্রতিটি বারে,
একূলে ওকূলে যত ঠিক ভুল, তার সবটুকু যে আমারই, একার!
তবে যে এসে হাতটা পাতো, হকটা বলো, কোথা থাকে আর?
আমায় যে এমন আহত কর প্রবল ঘায়ে,
হলে প্রয়োজন, সেই তুমিই এসে পা-ও ধর,
এমন কেন? যদি পারো তো গড়ো নিজেকে,
হাঁটো নিজেরই পায়ে, আমিও দেখি, কেমন পার!