জন্মধ্বনি—কেয়ার ঘ্রাণে

 আমি চেয়েছি কেবলই ছুঁতে তোমায়, আর কিছু নয়।
একান্তমনে চাইলে কিছু বহুগুণে আসে তা, জেনেছি আবারও।
এই যে দেখো বাঁচতে পারি তোমার নরম আঙুল ছুঁয়ে,
তোমায় বাঁধি আমার প্রেমে, এ অস্তিত্বে তোমারই আবাস,
বলো, এও কম বা কীসে?
যখনই আমি যাই ঘুমুতে, নিঃশ্বাস তোমার আমায় টানে নিবিড়ভাবে,
সে নিঃশ্বাসের ঘ্রাণ আসে না আমার কাছে, তাই বুঝি হায় ঘুম আসে না,
নিশাচর আমি অসহায় হয়ে জাগি সারারাত, ঘুমের নেশায় ঘুরতে থাকি।
 
এ জীবনে বুঝলে কেবলই, বদলে হৃদয় হয় কত সুদ,
জানলে না প্রিয়, তোমার প্রেমে হয়েছি তো বুঁদ!
কিছু ব্যাপার যে কেন ঘটে যায়, বলতে পারি না......
মনে পড়ে, আমায় তুমি ফোন করবে তাই আমায় ছুঁলে,
দেখলে, অমনিই আমার ফোনটা এলো কেমন করে!
এমন কি আর হয় না, বলো?
অনুভবটা তীব্র হলেই এমন হয়গো, জানি,
হয়তো আমায় বাসো না ভালো তেমন অত,
তবু যেটুক বাসো, সেটুক দারুণ তীব্র, মানি।
 
চারপাশের এই দেয়াল ভেঙে আমায় নিয়ে পালিয়ে যেতে---ইচ্ছে করে?
আমার ভীষণ ইচ্ছে করে, সারাদিনই মাতি খুনসুটিতে,
মারামারি আর হাসিঠাট্টায় বাঁধি প্রেমে, চারপাশটা হেঁটে দেখি তোমায় ঘিরে!
এ জীবনে তুমি জোছনাছায়া, তোমাতে ভিজেই হই তৃপ্ত,
অথচ তোমায় পাই না ছুঁতে! ছোঁয়া লাগলেই ঘনিয়ে ঘন আঁধার নামে!
বাড়িতে আমার আমিই মেয়ে একমাত্র, আমার সাতটি ভাইয়ের বোন একটিই,
বিয়ে হবে, ধুম নামবে, কত বাজনা বেজে সাজবে বাড়ি,
স্বপ্নে আমার নানান রঙের আসত গাড়ি!
এখন আমি স্বপ্নঘোরে আর বাঁচি না,
বিয়ের কথা উঠলে বাসায় ভয়ে কাঁপি,
বিয়ে তো আমার হয়েই গেছে তোমার সাথে, তাই যে মানি!
হৃদয়মন্ত্রে পেয়েছি যখন, তখন বলো, কীসের দ্বিধা?
 
তোমার চোখে, তোমার ঠোঁটে, তোমার গালে, তোমার বুকে,
যত মমতায় খেয়েছি চুমু, তত মায়া কি আসবে বলো,
যদি হাতটা ধরিও অন্য কারও?
ভালোবাসা তো এমন জানি, দিলে একবার ফেরত তো আর যায় না নেয়া!
এক হাতকে ফিরিয়ে দিয়ে অন্য হাতে যা চলে যায়,
ভালোবাসা যে বলে না তাকে!
যা দিয়ে দিই, দান হয়ে যায়,
নিয়ে নিলে তা, ম্লান হয়ে যায়---
ভালোবাসা তো এমনই জানি!
 
প্রথম যেদিন তোমার চোখে ভালোবাসার ছায়া দেখি,
সেদিন কোথায় হারিয়ে গেছি, কোন জগতে, জানি না আজও।
দূর থেকে আমি ডুবেছি যেন তোমারই চোখের ওই নদীতে,
বিশ্বাস করো, খুব স্বচ্ছভাবেই সেদিন তোমার দেখেছি হৃদয়,
সে স্পন্দন, সে চাহনি কতটা মায়ায়, কতটা প্রেমে টেনেছে আমায়, বলতে পারি না!
সে কম্পন কানে আসে আজও, বিচলিত হই কী হয়েছে সেদিন, ভেবে,
সেই থেকে আজও বন্দিনী আমি তোমারই চোখে!
প্রার্থনা করি, সারাটি জীবন এমনিই কাটুক,
এ মধুর শেকল ভাঙার শক্তি না হোক আমার কোনওদিনই!
 
কেন সেদিন বলেছিলে, তোমায় ভালোবাসলে পরে,
এ চোখে যদি জল না বেরোয়, রক্ত ঝরে!
কেন বলেছিলে হায় অমন করে, প্রিয়?
সেদিনের সেই শাওনরাতে কত দ্বিধা আর ভালোবাসাতে ডুব মেরেছি,
শুধু মনে পড়ে.........মনে পড়ে যায়!
মনের সাথে যুদ্ধে মেতে গেল সারাদিন সংশয়ে কেটে,
নতুন রাস্তায় পথ চলেছি হাতটি রেখে নতুন হাতে,
ভাললাগায় বুঁদ হয়েছি তখন যত, ব্যথার স্মৃতি জেগেছে তত,
তবু পরোয়া করিনি, গিয়েছি ছুটে.........প্রিয়, তুমি তো জানো!
 
সুখের ভিড়ে দুঃখের উঁকি,
কিংবা দুঃখের মাঝে সুখের ঝুঁকি---
কী লুকোচুরি ঘিরল আমায়!
উঠল গড়ে হঠাৎ করেই
ভালোবাসা আর ব্যথার প্রাসাদ!
কল্পনা হতে ফিরি বাস্তবে,
প্রেমের কাঁটা বিঁধিয়ে বুকে,
হৃদয়ের সদ্যোজাত মানুষটিকে আগলে রেখেছি
পরম আদরে, নির্ভরতার কোমল চাদরে,
ভালোবাসা তার আর অনুভব রেখেছি বুকে যত্ন করে।
 
কিছু চাওয়া কেন তীব্র এত, বুঝতে পারি না!
তোমায় খানিক দেখবো বলে, একটু ছোঁয়ায় মাতব বলে,
শিহরণটুকু নেবো বলে গিয়েছি ছুটে কত শত দূর,
ভালোবাসা ছিল, দূরত্ব তাই ছিল না কিছুই!
শুধু এ ভাবনাই ঘুরত মাথায়---দেখবো তোমায়!
তুমি চাইলে হাজারটা মাইল দিতাম পাড়ি এক তুড়িতেই!
কেউ যদি বুকে অস্ত্র ঠেকিয়ে ছুঁড়ত গুলি,
হয়তো তবুও সব অনুভব পালিয়ে যেত, তুমিই কেবল থাকতে চোখে মরার আগে!
 
কত মিথ্যে, শত অপরাধ, হাজার ফাঁকি---এক ভালোবাসাতেই মুখটা লুকায়!
তোমার প্রেমে বোকা হয়ে যাই, সব ছেড়ে দিই তোমার মোহে,
যত উদ্বেগ, শান্তি তত---তোমারই নেশায়!
তৃষ্ণা আমার মিটেছে যত তোমার ছোঁয়ায়,
সিকিভাগও এর মেটেনি কখনও কোনও ছুতোতেই!
তোমার সবকিছুতেই কেমন তাড়া!
কেন বলোতো?
এত আগেই কেন......এ দুনিয়ায়?
বিয়ে কেন অতো করলে আগে?
কেন এলে তুমি ভুল ঘরেতে?
কেন আমি হব অন্য কারও?
কেন আমার কষ্ট বুঝেও থাক চুপটি?
কেন চেঁচিয়ে কাঁদতে বারণ শত ব্যথাতেও?
নেই উত্তর, তবু প্রশ্ন কত! জীবন বলো, এমন কেন?
 
ওগো প্রিয়, আমি অভাগী বড়, একটুকু ভালোবাসো!
আমার কষ্ট যত, ছাপিয়ে যাবে ওইটুকুতেই,
বুড়ো আঙুলে একাকী সময় জানাব বিদায় তোমায় পেলে!
যখনই দেখি, আনমনা তুমি, কী যে ভীষণ কষ্ট লাগে, বুঝতে যদি!
যদিও আমার আমি’টুকু পরগাছা এক আষ্টেপৃষ্ঠে জড়ানো তোমায়.........
সবই জানি! তবু মায়ায় আমার পড়েছ, জেনো।
নাহয় আমায় রাখো তোমার মনে মায়ারই টানে,
কী করবো, বলো, আমি যে তোমায় আঁকড়ে বাঁচি!
 
কখনও মনে নিয়ো না ব্যথা কোনও কিছুতেই,
প্রিয় মানুষ কাঁদলে বলো, কীকরে বাঁচি?
কষ্ট যখন দম আটকায়, ঘুম ভাঙিয়ে আমায় ডেকো,
আমার হাসি তোমায় দেবো, আমারই রঙে তোমায় ধোবো,
হয়তো আমি ঠুনকো ভারি, এই প্রেমটা তবু তীব্র, জেনো!
সেদিন বুঝি কাঁদলে ভীষণ? অ্যালকোহলে মেতেছ কেন অমন করে?
পুরনো গানে অভিমানে নেচেছ নাকি মাতাল হয়ে?
আহা, তুমি এমন কেন?
তোমার যত কষ্ট আছে, তার কিছু ভাগ আমায় দিয়ো,
কষ্ট এসে করলে শাসন, আমায় ডেকো,
নাহয় দুজন মাতাল হবো, পোড়াব ব্যথা চিতার কাঠে---একইসাথে!
 
থেকো আরও দারুণ ব্যস্ত হয়ে, ব্যথা ভুলতে ব্যস্ত হয়ো,
আমিও যদি বিস্মৃতি হই তোমার কাছে,
আমি না থাকলে কষ্ট যদি পালায় দূরে,
আমায় প্রিয় রেখো না মনে, শুধু ব্যস্ত থেকো সুখের কাজে।
যেদিন তোমার হবে অবসর আমায় ভাবার,
সেদিনই আমায় পাবে কাছে---ডেকেই দেখো!
নতুন এক নামতা শিখি, হাসি রেখে মুখে ধৈর্য ধরি,
সেই মুহূর্তের প্রহর আসার ক্ষণ গুনে পার করবো জীবন!
 
তোমায় ভীষণ ভালোবাসি, তোমায় আমি দেখি না যখন, কষ্টে হাসি,
কেউ না বুঝুক, কেউ না জানুক, তবু এ হৃদয় আমি তো বুঝি!
আমি হারাব জানি, তোমার মাঝে, বসব ঘেঁষে তোমার কাছে,
তোমার চোখের ওই খুশিটুক নেবো চোখে, ওতেই আমার মিটবে তৃষা!
প্রিয়, মিলনে কেন এত বাধা? আমার সুখেই সবাই পোড়ে, কেন, বলো?
তোমার তুমি নও যে আমার, বুঝি সবই, তবু ভালোবাসি তাই কাছে যেতে চাই,
আঙুল ছুঁয়ে শুনব তোমায়, এটুক আশা।
বাহুতে তোমার নইকো আমি, সেখানে বসত অন্য কারও, সেও জানি,
দূর থেকে শুধু দেখবো তোমায় একটি পলক, বলবো হেসে, ভাল থেকো!
যে নিজেই পোড়ে, তাকেও কেন পোড়াতে হবে, বলতে পারো?
যে ক্ষয়েই বাঁচে, তাকেও কেন মারতে হবে?
 
কোন ডাক্তার করেছে বারণ দেখতে আমায়?
খেপল নাকি? ওই ডাক্তারের খোঁজটা দেবে?
ব্যাটা তোমার মাথা খেয়েছে, আমি খাবো ব্যাটার চোখের মাথা!
আমারই বর আমার দিকে তাকাবে নাতো তাকাবে কোথায়?
আমার ছবি যায়নি তো আবার ব্যাটার কাছে?
আচ্ছা প্রিয়, বাসায় গেলে.........আমার কথা ভাবো?
আমি যখন বাসায় ফিরি, বিশ্বাস করো, সবসময়ই তোমায় ঘিরি!
বাসায় তো আর যায় না বলা, আমার একটা ঘর হয়েছে,
বড় প্রিয় সে ঘর---সবুজ রঙের বেডরুমটা ভীষণ টানে,
কিচেনটা খয়েরি রঙের, সেখানে আমি থাকতে পারি ইচ্ছেমতন,
বারান্দাটাও মনের মত, হাঁটতে গেলেই চড়ুই লাফায়, কোকিল ডাকে ওই দূরেতে!
সে ঘর আমার আমায় বাঁধে বড্ড বেশি আপন করে,
সে ঘর আমায় ভালোবাসে, আমিও বাসি!
 
যখন আমি আসি তোমার বাসায়, রুমটা তোমার ঘর হয়ে যায় আমার ছোঁয়ায়, তোমার ছোঁয়ায়।
জানো প্রিয়, আমি ফাঁকি মেরেই জীবন চালাই---
পড়ায় ফাঁকি, রাঁধতে ফাঁকি, সাজতে ফাঁকি, সাজাতেও ফাঁকি---এটাই আমি।
আমার এক ভাবি আছে, লুবনা ভাবি,
ভর্তা বানান, দারুণ খেতে!
অথচ দেখো, ঈদের ফাঁকে বাড়িতে এলে রান্না উনার রোচে না মুখে!
নিজ বাড়িতে দারুণ রাঁধেন, শ্বশুরবাড়িতে কেবল চুলটা বাঁধেন।
কেন, জানো? নিজের ঘরে যতটা মায়ায় রান্না করেন,
মায়া ততটা থাকে না কখনও শ্বশুরবাড়ি থাকেন যখন।
আমার বেলায়ও ঠিক তা-ই হয়। তোমার ঘরে দারুণ রাঁধি,
আর বাড়িতে গেলে চুলই বাঁধি ভাবির মতন!
এই বাড়িতে পারি না কিছুই, ওই ঘরেতে সবই করি!
পাক্কা রাঁধুনি যে আমায় বলো, সেই আমি যে অলস কত, জানতে যদি!
এমনটা হয় কেন, জানো? আর কিছু নয়, ভালোবাসি তাই!
 
আমার যে এক প্রেমিক আছে, ওকে চিনি এগারো বছর!
অথচ দেখো, ওর বার্থডে এসে চলে যায় প্রতি বছরই নীরবে যেন,
তেমন করে ছোঁয় না আমায়।
সেই আমিই কেমন অধীর আছি সতেরো জুনের, তোমার দিনের!
আমায় তুমি যত্নে রেখো সারাটি জীবন! রাখবে, বলো?
প্রিয়াকে তোমার তত ভালোবাসি, যতটা ভালো তোমায় বাসি,
আমি কেমন বোকা, তাই না, বলো?
যতটা তোমায় আপন ভাবি, ততটা ভাবি তোমার ঘরের সবাইকেও।
তোমার মাকে দেখি, বাবাকে ভাবি, মাথাটি আমার নত হয়ে যায় আপনা থেকেই।
ছোট্ট বোনকে ভীষণ করে আদর দিয়ো, বলো ওকে, ভালোবাসি তো!
তোমার বাসার বইয়ের তাকে কত মায়া ছড়ানো আর ভালোবাসা!
ওই বইগুলি কত দামি শোপিস---আমার চোখে---নীরব সাথী!
আচ্ছা, আমায় রাখো না প্রিয়, শোপিস করে, যে শোপিস কথা বলে যায় অবিরত!
ডোরবেলের আওয়াজ দেখি মানুষ কেমন ঠিকই সয়ে নেয়,
আমি কি এতই বাজে বলো, সওয়া যায় না?
 
পাত্তাই দাও না, হুমম্‌ বুঝি তো সবই!
দেখবে যেদিন অন্য ঘরের শোপিস হয়ে চলে গেছি,
ভুল করলে বকবে আমায়, পরক্ষণেই আদর করে টানবে কাছে---অন্য মানুষ,
বুঝবে সেদিন!
অন্য ঘরে বিয়ে হলে একেবারেই চুপসে যাবো, ঠিক করেছি।
মনে যা আসে, সবাইকে কি যায় বলা?
এই শোনো না, তোমার বাসায় তোমার বোনের বোন হয়েও তো থাকতে পারি!
আমি নাহয় তোমার মায়ের আরেক মেয়েই! কত গল্প হত মায়ের সাথে......
আমি তো ভালই বকতে পারি, জানো না বুঝি? তোমার বউয়ের সঙ্গী হতাম,
বাবার কত যত্ন নিতাম, বোনের যত আবদার, আমি মিটিয়ে দিতাম!
এমন কিছু তো হতেই পারে! পারে না, বলো?
কেন আমি তোমার বাসার কেউ না? ভেবে পাই না.........
 
বোনটাও দেখি তোমারই মতন, শুধোলে কিছু হুম্‌ বলে শুধু!
তুমি তো ভারি পচা ছেলে! একটু বকলে কী হয় এমন, আমার সাথে?
ছোটোবোনকে বলে দিয়ো তো আমার সাথে আড্ডা দিতে!
ভালো নাহয় না-ই বা বাসুক, বউদি আমায় না-ই সে ডাকুক,
একটু শুধু গল্প করুক! ব্যস্‌, এইতো!
এই যে তোমায় ভালোবাসি এমন বেশি,
কখনও কিছু চেয়েছি, বলো?
বলেছি ভুলেও, ভালোবাসতেই হবে?
একাই ভালোবেসে যাবো, একাএকাই বকে যাবো,
আমায় যত খুশি বাচাল বলো, শুনব না, হুম্‌!
পর্দা কানের ফাটিয়ে দেবো এমনিই বকে!
 
অ্যাই শোনো না, ভাল আছ তো?
জানি, দিব্যি আছ! ফোনটা ধরেই বুঝেছি কেমন দারুণ আছ!
তুমি ভাল থাকলেই ভাল থাকি, তোমার খুশিই আমার খুশি!
আচ্ছা, তোমার জন্মদিনে চলে আসি তোমার কাছে?
কত কী যে প্লান করেছি.........এটা করবো, সেটা করবো!
একটা কিছুও হবে না ভেবে কেঁদেও ফেলেছি কতকত বার!
জানি তো পড়ে বলছ হেসে, আমার দুষ্টু বোকা বাবুই পাখি.........অবুঝ কেমন, কিচ্ছু বোঝে না!
ভেবে রেখেছি, কালোপেড়ে শাড়ি পরে কালোটিপে আসব কাছে।
কালো টিপে আমায় কেমন মানায়, জানো?
আমি নাহয় একটু কালো, সাজলে কিন্তু দেখায় ভাল---সত্যি বলছি!
কত যত্নে পায়েস রেঁধে খাইয়ে দিতাম জন্মদিনে!
গান শোনাতাম, দুজন মিলে নেচে বেড়াতাম!
দুচ্ছাই, জানি, হবে না কিছুই! তোমার কিছুই নয় যে আমার!
ভালোবাসা আছে, অধিকার নেই---শাস্তি এমন আর কোনটা, জানো?
 
বলতে পারো, সুখটা কীসে?
তোমায় কেবল ছুঁতে চেয়েছি,
প্রেম পেয়েছি এর বদলে, আর ভালোবাসা,
সুখের মানেটা এ-ই তো, নাকি?
এই যে তোমায় প্রায়ই দেখি, তোমার শ্বাসের শব্দ শুনি,
তোমার লেখায় ডুব মেরে রই, খুব লুকিয়ে তোমায় খুঁজি,
সুখের যে মানে, এ-ই তো, নাকি?
মনে পড়ে, প্রথম যেদিন তোমায় পড়ি,
সেদিনই তোমার প্রেমে পড়ে যাই! অমন করে কেউ লিখতে পারে!
বলতে পারো, ভালোবাসে যে, সে কি স্বার্থে বাঁচে? নাকি, স্বার্থ ভোলে?
এই যে তোমায় এত করে চাই নিজের মতন,
সে কামনায় বাঁধা পড়ি না স্বার্থে কোনও! এমন কেন? এ উত্তর পাই না কখনও!
 
কোন মেয়েটা কেমন টানে, তাও কেমন সহজে বল......
বিশ্বাস করো, সব শুনেও ঈর্ষা হয় না একটুকুও! অদ্ভুতই তো, তাই না, বলো?
আমি কি তবে ভালোবাসায় হয়েছি নিথর?
ভালোবাসা ঈর্ষা জাগায়, এ-ই তো জানি!
তবে এ প্রেম আমার অনসূয়া কেন?
মা তো আমায় প্রায়ই বলে, পাগলি, বুঝি তোর পিত্তই নেই, তাইতো সকল
রাগ, অভিমান, ক্ষোভ, হিংসে পালিয়ে গেছে কোথায় যেন!
আমি তো ভাবি, এতদিন ধরে গিলে অভিমান ভুলেছি ব্যথা!
 
আচ্ছা, আমি যদি উল্টো হতাম, তবে কী হত?
তোমায় তখন ছিনিয়ে নিতাম সবার থেকে?
ভালোবাসা কি কেড়ে নেয়া যায়?
যাকে তুমি ভালোবাসো, তাকে আমিও ভালোবাসি---
এর তুমি কী দেবে নাম?
তোমায় আমি ভালোবাসি নিঃশর্তে, নিঃস্বার্থে, সন্তর্পণে, সঙ্গোপনে,
হৃদয়ের গহিন হতে, সত্য পথে, প্রার্থনাতে!
 
ভাল নেই যে, খুঁজে দেখো, তার চাহিদা অসীম।
তাইতো আমি ভালই আছি, চাহিদা নেই, নেই পাওয়ার আশা,
যা পেয়েছি, পাইনিও যা, সেটুকুতেও দারুণ আছি!
যখনই তুমি আমায় দেখো, আমার মাঝে কাউকে খোঁজ,
পাও না যখন, বেশ খারাপ থাক। তাই না, বলো?
তাইতো তোমার কষ্ট এত!
তুমি ভাল নেই বলে আমি ভাল নেই, বোঝো নাকি তা?
যদি দিক একটাই মাথায় রেখে সুখকে খোঁজ,
দুঃখ তোমার কেড়ে নেবে---সাধ্যটা কার?
কত ভাল আছ কত দিক থেকে, একটু ভাবো!
দেখবে, কেমন দারুণ আছ!
তোমায় প্রিয় রাখতে ভাল, সবটুকু দিই।
একটু ভাবো, এর মাঝে সুখ নেই কি কিছুই?
 
নিজের ঘরের কথাই বলি, শোনো।
আমার মায়ের মেয়ে ছিল নাকো, ছেলে ছিল সাত।
ঘর আলো করে কন্যা আসুক---সবাই কেবল চাইত এটুক!
এলাম আমি। আদরে সবার বেড়ে উঠলাম সুস্থ দেহে।
পরের গল্প? শোনাই, শোনো। বলল সবাই,
দুনিয়াতে যখন চলেই এলে,
হও ভর্তি বুয়েটে কিংবা মেডিকেলে!
লে হালুয়া! এক্সপেক্টেশনের ঠ্যালা সামলা!
 
যতদিন ধরে আমায় চেনো, ভেবে বলোতো, কখনও আমার রাগ দেখেছ?
কিংবা খুব অভিমানে নীরব হতে? পেয়েছ প্রতিবাদ কোনও কথার?
যা পেয়েছ, কান্না কেবলই---তাও কোনও আবদারে নয়, অনুযোগেও নয়।
কী করবো বলো, তোমার উপর রাগ আসে না, দাবি আসে না.......হায়, অধিকারও নেই!
অভিমান কেউ ভাঙায় না যার, সেতো কেবল কাঁদতেই জানে, তাই না, বলো?
আজকের এই বিশেষ দিনে ওসব নিয়ে আর না ভাবি,
তুমি তো আমার ভীষণ প্রিয়, এমনিই প্রিয় কে হয়, বলো!
অস্তিত্ব যার হৃদয়ে গাঁথা সারাজীবনই, সেই তো প্রিয়!
 
এত ভালোবাসি তুমি’কে তোমার, তোমার তোমা’তে এতটা বাঁচি,
অথচ দেখো, তবুও তোমায় চাইতে গেলেই কত নিয়ম আর কানুন এসে আমায় বাঁধে!
আমার সবচে প্রিয় তুমি, তবু কেন এমন দিনে আমি পাশে নেই?
ছোট্ট একটা টেক্সট দিয়েছি---হ্যাপি বার্থডে! আর কিছু নয়, অন্য সবাই দিয়েছে যেমন! আমি কি প্রিয়, সবার মতন?
এমন দিনে তোমার হৃদয় রাঙিয়ে দেবো, তেমন কোনও সুযোগই নেই!
প্রিয়জনকে ছুঁতে গেলেও সমাজ কেন জবাব খোঁজে?
একটু পেতেও কত বাধা! আধটু চাওয়াও শেকলে বাঁধা!
 
প্রিয়তম হে, একটু হাসো! তোমার ঠোঁটের, তোমার চোখের একটু হাসি হৃদয় আমার শান্ত করে,
রাগ অভিমান পালায় সবই!
যেভাবে আছ, থেকো সেভাবেই সারাটি জীবন!
নাহয় রেগেই উঠো, ঠিক পরক্ষণেই তোমার ঠোঁটে একটু হাসি লেপটে দিয়ো,
ভালোবাসাটা দাও বা না দাও, কখনও আমায় যেয়ো না ভুলে---ওতেই হবে!
তোমার যত স্বপ্ন আছে, ইচ্ছে আছে, সবগুলিই বাঁচুক হেসে,
ওদের সাথে তুমিও বেঁচো, কাজ করে যেয়ো ওদের পেতে,
আমার জন্য তোমার মায়া একটু বাড়ুক,
ভালোবাসাও যায় ফেরানো.........আর মায়া? সে তো কেবল বেড়েই চলে!
 
এইতো আর ঘণ্টা তিনেক!
ইচ্ছে ছিল, উইশ হবে আজ চুম্বনে আর আলিঙ্গনে!
এর কমে মন ভরাই কীসে?
ভাবছি একি! কোথায় তুমি, আর কোথায় আমি!
কী আর করা! অল্পেই হাসি!
শব্দ যখন জমায় পাড়ি অচিনপুরে,
তখন ভাষায় বলা দারুণ কঠিন!
তবু কাছে পাওয়ার উপায় যে নেই,
তাইতো শুধুই পুরনো কথায় খুঁজি আশ্রয়---ভালোবাসি!
খুব ইচ্ছে, ফোনটা করি, পারি না তাও,
স্বস্তি পালায়, দ্বিধায় দুলি---কোথায় আছ, কেমন আছ.........
এখন আমি প্রমিথিউস বাউন্ড-এর সেই প্রিন্সেস, যে কিনা পালিয়ে বেড়ায় জীবন থেকেই!
দেখো, একটাসময় থেমেই যাবো চিরতরে, হেসে তবু শেষ কথাটি বলবো শুধু---খুব ভালোবাসি!
 
পূর্ণ অনুভবে রেখেছ যাদের, হৃদয়ে তোমার জাগে ভালোবাসা যাদের জন্য,
প্রার্থনায় তাদের উঠুক ভরে স্বপ্নসুখে সারাদিনই, সারাটি জীবন।
আমার সকালসাঁঝের বাবুই পাখি, হৃদয়ে আমার কিচিরমিচির করেই থেকো,
এমনি মুখে হাসিমেখে, খুশিমনে, প্রাণের স্রোতে দারুণ বেঁচো!
জন্মদিনে এটাই চাওয়া!