গোধূলি না ফুরোতেই/চার

এই, শোন না!

নাহ্‌! ডেকো না।

বৃষ্টি হচ্ছে?

চোখে, না বাইরে?

বাইরে।

নাহ্‌!

বৃষ্টিতে ভিজে গায়ে লেপ্টাবি? আমার ঠোঁট, জিভ তোর মুখে নে নারে!

আমার ভেজা শাড়ি হবা? তাহলে লেপ্টে নিবো।

তোর কালো ব্রার ফিতা হবো!

তা পারবেনে!

শাড়ির নিচে কিছুই পরবি না, প্রমিজ?

কিছুই নিবো না? ব্যস্ততার মন্ত্রজপে মিছে কথার ঘ্রাণ,/ তোমার মিছে ব্যস্ততাটা নিচ্ছে আমার প্রাণ।……….বড্ড অভিমান জমেছে গো—নিকষ কালো অভিমান!

তোর বৃন্তদুটো মুখে চেপে ধরছিস না কেন এখনো?????

ও দুটো আড়াল, তাই।

এই সোনা! অনাবৃত কর না!

চাহিবামাত্র ইহার বাহক দিতে বাধ্য থাকিবে নাহ্‌!

আমার কাছেও কেন ঢেকে রাখবি!!!! এই…………

হুঁ।

দে না!

উঁহু!

ইচ্ছে করে যে!

খুউব উল্টাপাল্টা বকছি আজ! আমি আসি এখন।

না। যাবি না। এই বাবুই! হারিয়ে গেছিস?

নাহ্‌! তলিয়ে গেছি। ডুব দিতে পারবে? তলা থেকে টেনে তুলতে পারবে? শ্বাসে কষ্ট হলে মুখে মুখ লাগিয়ে শ্বাস দিতে পারবে?

তোর জন্য সব পারবো।

বড্ড সাহস দেখাচ্ছো হে!

তুই কেন গুটিয়ে রাখিস নিজেকে?? আমি সাহসীই তো!

কেউ আস্তেআস্তে আবরণ ছাড়িয়ে টুপ করে গিলে খাবে বলেই গুটিয়ে থাকি গো!

আমি তোর কেউ হবো!

আগে আমাকে তোমার একটা তুমি ভাবো, তারপর।

তুই ভাবব না আর?

কতটুকুনই-বা ভেবেছো, বলো!

তুই বুঝিস না?

বুঝি।

আর বুঝতে গিয়ে দেখলুম……সার্বজনীন!

কী সার্বজনীন??? এই………চলে গেছিস? এই…….কোথায়????

হ্যাঁ, বলো। দুপুরে খেয়েছ? বাসায় সবাই কেমন আছেন?

চলে কেন যাস???? এই!

কী করবো? বড্ড অস্থির লাগছে, তুমিহীনতায় ভুগছি। এ হীনতা যে কত নির্মম, যদি বুঝতে!

বুকে ঢুকে যা!

ঘনবসতি তো তোমার বুকে, তাই পথ হারাচ্ছি!

কেন ভুল বুঝতে ভাল লাগছে তোর?????

ভাল লাগছে আদৌ কি? কেন জোর গলায় বলতে পারি না তুমি’টা…….আমার, আমার, শুধুই আমার? যন্ত্রণা হচ্ছে।

আমি তোর!

ধ্যত্তিরিকি!

সত্যিই তোর হয়ে গেছি! ভালোবাসি তোকে, বাবুই!

আমার কেন তবে মনে হচ্ছে না?

এই!

কেন গভীরতায় গেলে তোমায় আর খুঁজে পাই না?

কেন তোর মনে হয় না?

কেন কেন?

কেন ভালোবাসিস না???

এটা বুঝতে নিজেকে দ্যাখো! তুমি আদৌ বাসো কি!

আমি বাসি।

নাহ্‌!

তোকে না দেখলে অস্থির লাগে।

আমার জন্য গাছ হতে পারবে?

তোর কথা খুব ভাবি। পারবো।

ভাববার মতোন অবসর হয় তোমার!

কেন কেবলই বকছিস??

এ তোমার কাছে নিছক পাগলের প্রলাপ হতে পারে! হয়তো পাগলিনীই হয়ে গেছি! নাহ্‌ বড্ড অস্হির লাগছে! মনটা কেমনকেমন করছে!

আমাকে খুব খুব খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধর!!!! আমার বুকে লুকিয়ে থাক।

আমাকে ভালোবাসতে হবে না।

ভালোবাসি বলতেও হবে না।

গভীর আবেগ নিয়ে ঠোঁট দুটো ছুঁয়ে দিতেও হবে না।

সবার মতো রুটিন করে দেখা এবং কথা বলতে হবে না।

বিকেল বেলা ফুচকা খেতেও নিতে হবে না।

হবে না দিতে এ খোঁপায় একটিও গোলাপ গুঁজে।

এত অজস্র ‘না’-এর মাঝে একটা কাজই করতে হবে……..

আমি যখন প্রতিদিন একবার ‘ভালোবাসি’ বলবো,

তুমি মুচকি হেসে, একটু আদরমাখা কণ্ঠে বলবে……….পাগলি একটা!

আমায় ধরো,

শক্ত করে ধরো!

আহা, কী যে মিষ্টি আমার পাগলিটা!! ধরেছি তোকে!

সর্বনাশা এক ‘তুমি’তে আক্রান্ত হয়েছি!

আমিও হয়েছি রে, বাবুই!

তুমি যে কী এক মিষ্টি আঁচ দিচ্ছো! আমি ঠিক মোমবাতির মতো গলেগলে পড়ছি। আর যখনই গলামোমটা শক্ত হচ্ছে, তুমি শুধু সেটুকুনই দেখছো। হায় কপাল!

পুরো মনে আর দেহে তুমি মিশে যা-তা অবস্থা একেবারে!

আমি তোমার রক্তকণিকায় লেপ্টে যেতে চাই, যাতে আলাদা না করতে পারো!

বয়সের ভারে যেদিন নুয়ে পড়বে তুমি, চামড়ায় পড়বে ভাঁজ, মোটা ফ্রেমের পাওয়ারফুল চশমায় ঢেকে যাবে তোমার ধারালো চাহনি, সেদিনও প্রিয় দেখবে তুমি, আমার এই ক্লান্ত পাপড়ির আঁখি দুটি থাকবে প্রেমময়। হুম…….সেদিনও এই হাত তোমাকে নির্ভরতা দিয়ে নিয়ে যাবে জীবনের গল্পের শেষ অধ্যায় অবধি।

ভাবছো, ক্রেইজি হয়ে গেছি! যা খুশি ভাবো! আজ বড্ড চঞ্চল লাগছে মনটা! এ কি প্রেম ,নাকি অস্থিরতা? নিজেকে আজ আর লুকাতে পারছি না। হায় ঈশ্বর, কী করছি আমি!

ভাবছি না ক্রেইজি। তোকে খুব খুব ভালোবাসতে ইচ্ছে করছে, সোনা! বল, কখনোই ছেড়ে যাবি না!

যা কিছুই ঘটুক না কেন, নিজেকে তরল পদার্থ করে ফেলবো তোমার কাছে।

করিস।

যাতে তুমি তোমাতে যে পাত্রে রাখবে, সেটার আকার ধারণ করে রইতে পারি………তবুও যাতে রই!

কিন্তু চেয়ে দেখি, এ কী! তুমি তো আমার নও! সে এক বিশাল শূন্যতা, তাই তাকাতেও ভয় পাই, বহুক্ষণ হলো তাকাই নাহ্‌ আর! আমি তাকাতে শিখে গেছি, তাই না তাকিয়ে বাঁচতে কষ্ট হয়!

আমি তোকে তৃষ্ণা মিটিয়ে পান করবো………..পর ভাবতে খুব মজা পাচ্ছিস, না?

মজা পেলে মন্দ হতো নাহ্‌! গলার মধ্যে ছোট্ট মাছের কাঁটা বিঁধলে কী যন্ত্রণা অনুভূত হয়, জানো? সেরকম হচ্ছে।

আমার কেমন লাগছে, বুঝিস??

নাহ্‌!

অনুভব করিস না আমাকে??…….সোনা, কোথায় তুই? বাবু……..সোনা, বাবুই!

হুঁ।

কোথায় গিয়েছিলি?

নামাজে। আর খেলাম।

ব্যস্ত?

আমি তুমি নই, অতোশতো ব্যস্ততা আমার নেই।

আমি কখন থেকে প্রতীক্ষায় আছি!

আজ কী মনে করে?

আঘাত করে শান্তি পাচ্ছো?

নাহ্‌!

এক ফোঁটাও নাহ্‌!

তবে?

কষ্ট পাচ্ছি।

আমাকে দিচ্ছিস, তাই?

জানি না।

তুই আমার জীবন থেকে হারিয়ে যাবি?

বারবার এটা বলে তাড়িয়ে দিতে চাচ্ছো?

ভয়টা বেড়ে যাচ্ছে। অস্থির লাগছে খুব। এই বাবুটা!

আমারও! কী করবো আমি, বলো! আমার পায়ের আলতা কি কখনো লালায় গুলিয়ে দেবে কেউ!

আমি দেবো। প্রমিজ!

জানি না।

সারা শরীর লালায় ভরিয়ে দেবো। আপত্তি নেই তো?

কে করেছে বারণ……..খেলুক না সে গ্রীবাদেশে নাসিকার লুকোচুরি! হয়ে যাক মাতাল…….আবদ্ধ খোলা চুলের ঘ্রাণে! উষ্ণ নিঃশ্বাসের স্পর্শে বেড়ে যাক তার উন্মাদনা। না বলা সব কথা বলে দিক ঠোঁটেঠোঁটে। রাঙা পায়ের আলতা………মুছে দিক লালায়। কল্পনায়……..বাস্তবে তো সে স্পর্শেরও বাইরে!

তুই বড় আপন রে!

নাহ্‌! মেনে নিতে পারি না।

তবে? কেন পারিস না?

তুমি নাও না, তাই।

আমি এতটা কখনো কারো মধ্যে ডুবে যাইনি।

মানি না।

কেন?

সেটাই তো বুঝতে পারি না।

বাবুই, তুই আমার কিছুই বিশ্বাস করিস না।

আরেকটা কথা……….

বল।

তুমি যেটা আমার কাছে শেয়ার করবে, সেটা আর কাউকে শেয়ার করার মতো না হলে আমায় শেয়ার কোরো। এমনটা না হলে আমার ভাল লাগে না। শেয়ার করতেই হবে আমাকে, এমনটাও নয়। তবে ১০ জনের কাতারে বিলাবে যে ভালোবাসা, সেটা আমার চাইনে! প্রয়োজনে শূন্যতায় রইতে পারবো!

আমি তোর সাথে সব শেয়ার করতে চাই। সোনা, আর কাউকেই কিছু বিলাই না। বাবুই!

হুঁ।

ঘাড়টা দিবি একটু?

নাহ্‌। ঘাড়ে নিঃশ্বাসের বাতাস লাগলেও সুড়সুড়ি লাগে।

দিবি না?

উঁহু।

আমি নেবোই!

কই তুমি এখন?

নাটোরে।

কী কর ওখানে?

আমি এখানে থাকি তো!

মানে?

পোস্টিং এখানে?

কবে থেকে? নাটোরের কই থাকো?

এক বছর। শহরেই।

হুম।

নাটোরে আমার খালাবাড়ি। গেলে দেখা হবে তবে।

তুই আয় এখানে।

আচ্ছা।

আমার জন্য আসতে পারিস না?

হুম এখন তো গেলে তোমার জন্যই! খালাতো বোনরা পাগল হয়ে যাচ্ছে আমায় বলতেবলতে!

কবে আসবি?

ঈদে। কয়েকদিনের জন্য। তখন আমার সব মুহূর্তই তোমার!

সে তো কত্ত দেরি!

মাত্র দুই মাস।

আমার সাথেই থাক!

ইসসস্‌! রাখবে বুঝি?

হ্যাঁ, রাখবো।

আচ্ছা।

তুই একটা তুই-সোনা!

তুমি আমার চোখের চাহনি, তুমি আমার সবচে প্রিয় কবিতা, তুমি একটা আমার চুলের প্রতিটি আবদার, তুমি আমার কবিতার মূলধন।

বুকে ওঠ।

পাঁজরে?

হুঁ।

যদি কষ্ট হয় তোমার?

হবে না। আমার অনেক স্ট্যামিনা!

আমার চোখে চোখ রাখবে? চোখে চোখ রেখো না কখনো!

তোকে নিবিড়ভাবে রাখবো।

আর?

এই বাবুই সোনা!

হ্যাঁ, বলো!

শুভ গোধূলি, বাবুই পাখিটা! এত্তগুলা আদর!

হৃদয়ের প্রতিটি ঘর জেনে গেছে, তোমাকে আর এ জনমে পাওয়া হবে না আমার।

ছুঁতে পারবো না আর একবারও ওই কপাল, শোনা হবে না আর ওই উন্মাদনাভরা কণ্ঠ।

দেখার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত আমি।

এ জনম কেটে যাবে নির্ঘাত ব্যর্থতায়…….

আত্মার মৃত্যু হলো দারুণ অধৈর্যে!

তবে বলে যাচ্ছি আমি…….

পরের জনমে ঠিক আমি তোমায় ছোঁবো, কোনো অপশক্তির শত চেষ্টাও রুখতে পারবে না আমায়।

তৃপ্ত মহাসুখে কাটাবো সময়, অর্ধপাঁজরবন্দী হয়ে ঘুরবো রিকসায়।

মনের প্রাচুর্য ভেঙে বের করে দেবো সকল কথামালা, যা আগের জনমে হয়নি বলা।

তুমি শুনে বিস্মিত হবে প্রথমে,

আমার ভালোবাসা নিবেদনের প্রতিউত্তরে তুমি বলে উঠবে…….ভালোবাসি তো! ভালোবাসতাম! নিয়তির ফেরে হয়নি বলা সে জনমে।

আজ আমি বলছি তোমায়, তোমার প্রেমেও মাতাল ছিলাম, বলিনি ভয়ে!

আর আমি হেসেহেসে বাহুডোরে জড়িয়ে নেবো তোমায় ধরে, আর করবো পূরণ আগের জনমের ইচ্ছেগুলি, ঠোঁটের পরশ লাগিয়ে গালে, রাজ্য গড়বো ওই দেহমনে, মিশে যাবো প্রাণে। আমার অস্তিত্ব লীন হয়ে যাবে শুধু তোমাতে।

বড় সুন্দর লিখ তুমি, প্রিয়!

তোমার মতো করে পারি না, তবে আজ কিছু প্রশ্নের উত্তর পেয়েছি। বাদ দাও সেসব। কই তুমি? কী করছো? সারা বিকেল কী কর গো তুমি?

নাটোরেই। চা খাবো। কাজ ছিলো কিছু। শেষ করছি। তুই কী করিস, বাবুই?

আমি পড়ছিলাম। এখন নামাজের সময়। টা টা। এসে নক দিয়ো।

আমি একটু লিখবো, কেমন?

ওক্কা লিখো!

আমিও একটু পড়তে বসবো।

একটা আদর দিয়ে যাও!

চড়ুই, শুন নাহ্‌!

নাহয় আমি লিখব না।

হুহ্‌! আমার একটা কেউ হবে? শুধু শাসন করবে, ভালমন্দগুলো শেখাবে। আমার না এমন কেউ নেই যে ভাল আর মন্দের পথ দেখাবে, ঠিক যেভাবে বাবারা তাঁদের সন্তানদের শেখান।

হবো। তবে তুমি বিশ্বাসটা কম কর। এটা খারাপ লাগে।

আমাকে বকুনি দাও, মার দাও, তারপরও কখনো একা করে দিয়ো না। আমি না একাএকা হাবুডুবু খাই! দ্যাখো, আমি জন্ম থেকে অবিশ্বাস দেখেছি শুধুই! তাই হয়তো আমি বিশ্বাসে ভয় পাই। তুমি একটু মানিয়ে নিয়ো। ভুল বুঝো না যেন! লিখো। আসি।

খুব বকুনি খাবে কিন্তু!!!

দাওওওওও!

কেন অমন করে বল??

ওটাই তো আমার ভালোবাসার মূলধন!

…………………………………………….

বাবুই, তুমি ক‌ই? অনলাইনে থেকেও সিন করছ না কেন?

হুহ্‌! ওরে বাপ! নিজেই তো নাই! আমি এলাম মাত্র!

এই বাবুই, তুই কোথায়? কার সাথে ব্যস্ত?

অ্যাই শুনো! তুমি আর কুহুকুহু কর না কেন?

কী জিজ্ঞেস করলাম?

……………………………………………..

এই!! রাতের খাবার খেয়েছ? এতক্ষণ কোথায় ছিলে? আমি ফোন করেছিলাম। ইউ ডোন্ট কেয়ার!

আমি ফোনের পাশেই তো ছিলাম নাহ্‌!

কেন? কোথায় ছিলে এতক্ষণ?

মেহেদি পরাচ্ছিলাম।

কাকে? আচ্ছা। সেজন্য ছিলে না? ফোন ধরনি?

ফোনের পাশেই তো ছিলাম না গো!

আমার অস্থির লাগছিলো। সরি।

সরি আবার কেন?

তোর জন্য আমার হাহাকার লাগে! মায়া লাগে! এই!

লাগে?

হ্যাঁ।

খেয়েছ?

হ্যাঁ। তুমি?

হুঁ। কখন ঘুমাও তুমি?

ঢাকায় গেলে আমার সাথে সারাদিন সারারাত ফোনে কথা বলবি?………..ঠিক থাকে না।

বললে খুশি হবা?

তোর ইচ্ছে না থাকলে বলিস না।

আমার প্রশ্নের জবাব এটি?

আমি এক তরফা ভালোবাসায় বিশ্বাসী নই। এই! কীসে বিজি?????

বিজি নাহ্‌!

অনলাইনে থেকেও মেসেজ দেখিস না কেন?

কলিজা, শোনো! আমি ছিলাম নাগো!

ছিলি অনলাইনে। আমি দেখেছি। কার সাথে বিজি??????

হায় ঈশ্বর!

সত্যি বল! আমার রাগ হচ্ছে!

শুনো না!

বল।

মিস ইউ। রাগ কোরো না।

ভুলাস না আমায়। ঠিক করে বল।

সেটা তোমার স্বভাবে আছে, আমার নেই।

তোর পাশে এখন কে কে? বাজে বকবি না। আমার নয়।

শুধু মা। ঘুমাচ্ছে।

আমি ফোন দিই?

দাও। আমিই দিচ্ছি। কই গেলে? শুভ রাত্রি।

এই! ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।

কই গিয়েছিলে তুমি? কতবার ফোন করলাম।

যখন ঘুমিয়েছি তখনি ফোন করেছো।

আমি তোমায় কল করেছিলাম। তখন কই ছিলে তুমি?

ঘুমিয়েছিলাম, ঝাউপাতা।

কচু। মিথ্যে বোলো না। চ্যাট করার সময়ই কল করেছিলাম।

সত্যি ঘুমিয়ে পড়েছি।

সময় দ্যাখো! তুমি ওই সময়ে ঘুমাও না।

ঝগড়া করছ?

হ্যাঁ।

আমি মিথ্যে বলছি?

হুম। কল দাও তো!

আমি এখন ওয়াশরুমে।

খচ্চর একটা!

কেন??????

ওয়াশরুমেও মোবাইল নিয়ে আছো!

এই বাবুই!

হ্যাঁ, বলো।

হুঁ, নিয়ে এসেছি।

আমি মাত্র ঘুম থেকে উঠলাম। দেরি হয়ে গেছে। ক্লাস আছে ১১টায়। ফ্রেশ হবো। তাড়াতাড়ি আসো। একটু কথা বলে যাই।

তুই ঢাকায় কবে এসেছিস? আমাকে বলিসনি।

ধুউর! ভেবেছিলাম, চমকে দেবো! এরপর তো আমিই ভুলে গেলাম! কাল সকালে এসেছি।

তুই আমার কাছে অনেক কিছু লুকাস, না? আচ্ছা, ঠিক আছে।

এই যাহ্‌! লুকালাম কই? আসো না! একটু কথা বলে যাই।

তুই পচা।

হুঁ।

খেয়ে নাও। রাগ হয়েছে।

বেশ!

বেশ, না?

হুঁ।

আচ্ছা।

আচ্ছা।

আমাকে ইগ্নোর করছ।

নাহ্‌!

ইউ ডোন্ট কেয়ার! অনলাইনে থেকেও নো রিপ্লাই!

চড়ুই, আমায় একটু ভালোবাসবে? আমার খুউব মন খারাপ। দেখেছো, মন খারাপগুলোয় তুমি নেই!

ভুল বুঝো না। আমি অফিসের কাজের ফাঁকে তোমার সাথে আছি।

একটা গল্প পড়বে?

হ্যাঁ।

গোধূলি না ফুরোতেই।

ওয়ালে লিখেছ।

বাঃরে! তুমি আমার ওয়াল দেখ?

তোমাকে কতকিছু উৎসর্গ করতে মন চায় আমার ওয়ালে! ভয়ে করি না, পাছে……..

সবসময়ই দেখি।

সত্যিসত্যি ভালোবাসো আমাকে?

হ্যাঁ!

আমার না ভীষণ……..আসি এখন। খেয়ে নিও সময়মতো। মিস ইউ।

তুই কোথায়? খেয়েছিস দুপুরে? আমার একটা দাওয়াত আছে।

………………………………………………

জিতে গেছি গো! হ্যাটস অফ, টাইগার্স!

এতক্ষণ পর?

আসলামই তো কেবল!

আচ্ছা। বুঝেছি।

কী কর?

ল্যাপটপে বসলাম। ভাবছি, লিখব।

লিখো।

আচ্ছা। রাতে সারারাত কথা বলবো।

কেন?

আচ্ছা, বলবো না।

আচ্ছা, আসি।

শুভ রাত্রি!

বাহ্‌! এটা জানতে চাইছিলাম। থ্যাংকস।

আমার একদম ঝগড়া করতে ইচ্ছে করছে না।

আমি তোমাকে না হারানোর জন্য মারামারি করতেও রাজি। সেখানে ঝগড়া খুব তুচ্ছ জিনিস।

তোমার মন ভাল নেই?

মন ভাল না থাকলে কি তাতে কারোর কিছু এসে যাবে?

না গেলে জিজ্ঞেস করতাম?

এটা কেবলি জিজ্ঞেস করার জন্যই করা।

আমার সম্পর্কে আজেবাজে ভাবতে ভাল লাগে?

নাহ্‌! একদম নাহ্‌! এতে নিজের কলিজায় মোচড় লাগে।

তাহলে কেন আমার কোনো কথাই বিশ্বাস কর না? আমি তোমাকে বিশ্বাস করানোর দায়ের কারণে স্বাভাবিক কথাবার্তা বলতে পারি না।

বুঝিনি।

আমি যা-ই বলি, তুমি অবিশ্বাস কর। অস্বস্তি হয়। নিজেকে অপরাধী লাগে।

খেয়েছ? মেসেজ সিন না করলে খারাপ লাগে, এটা বুঝ?

গজল শুনছি। ইচ্ছে করে তোমার মেসেজ সিন করি না, এটা সম্ভব নয়।

খেয়েছি। তুমি খেয়েছ?

………………………………..

শুভ সকাল।

তোকে ভালোবাসি!

এই……

হুঁ।

কিছু না। খেয়েছ?

বিষ?

একটা কথা বলি?………নাহ্‌, অমৃত!

বলো।

‘তোমরা মেয়েরা’ কেন বলেছিলে কাল?

জানি না।

তুমি জানাবে এখন আমাকে। তুমি আমাকে ‘তোমরা’র মাঝে বিলীন করলে! বাহ্‌বা না দিয়ে পারছিনে!

তুমি যা করেছ, তার উত্তর দিয়েছি।

সোজা উত্তর দাও। আমি কী করেছি?

কিছু করনি। দেবো না।

দিতে বাধ্য তুমি!

কেন বাধ্য?

কারণ তুমি…….নাহ্‌ অকারণেই বাধ্য! জোর গলায় তো বলতে পারবো না তুমি আমার!

বুঝেছি। আমি তোমার জীবনে আছি কি নেই, এ নিয়ে তোমার কিছুই এসে যায় না। এটাই বুঝেছি এই কয়দিনে। নিজেকে অনেক সস্তা করে ফেলেছি তোমার কাছে।

এটা বলতে হৃৎপিণ্ড স্তব্ধ হচ্ছে না? আচ্ছা, তাহলে আর সস্তা কোরো না। অপরিচিত করে দাও একেবারে। আমিই আর নাহয় তোমাকে এতটা নিচে না নামাই। আমার জন্য তোমার গিলটি ফিল হচ্ছে। আর যাতে নাহয়, সেটাই করবো। একদিনে অনেক সস্তা ভেবেছে নিজেকে আমার জন্য। সম্ভব হলে ক্ষমা কোরো। অপরাধ নিও না। আসি। শুভ বিদায়।

বাহ্‌! ভাল। তুমি তো কখনো আসোইনি, তাই চলে যাই বলতে একটুও কষ্ট হচ্ছে না তোমার। আগেই ভেবেছিলাম এটা, আজ বিশ্বাস করলাম।

এই! শুনো!

হয় কাছে নাও, নয়তো তাড়িয়ে দাও। ভিতর বাহির সইতে পারি না।

কাছে নেবো। সারাজীবনের জন্য, যদি রাজি থাকিস।

বরং বলতে তুই না রাজি থাকলেও জোর করে নেবো। তাহলে এই খুশিতে আমৃত্যু কেটে যেতো যদিও নাও নিতে!

জোর করার অধিকার তুই আমাকে দিসনি।

অধিকার আদায় করে নিতে হয়, ওটা দেয়ার জিনিস নয়।

চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি।

চেষ্টায় কমতি ছিলো তবে।

হয়তো।

জ্বি আজ্ঞে।

……………………………………

খুব মিষ্টি গলা, বাবুই। কখন গেয়েছিস গানটা?

থ্যাংকস।

ভালোবাসি।

আর?

তুই বাসিস?

আর?

উত্তর দে।

দিবো না।

আচ্ছা। দিবি না?

কী?

উত্তর।

বাসায় সবাই কেমন আছন?

ভাল।

শুনো না………

তোর বাসায় সবাই ভাল?………হ্যাঁ, বল।

চুল কার্লি করে ফেলি?

না। আমি আগে এই চুলে আদর করব। এরপর জানাবো।

আইচ্ছা।

তাহলে চুলগুলো লম্বা করবো। যাতে লম্বা বরাবার আদর কর।

আমার চুল নিয়ে খেলতে খুব বেশি ভাল লাগে।

কাশশশশ্‌ আমার চুলে……….

দেখা হোক, এরপর।

সিঁদুর কেন দিলি?

ভাল লাগে, তাই।

আমি পরিয়ে দেবো।

খেলার ছলে!

খেলার ছলে নয়, ভালোবাসার দাবিতে। আমার এখানে আসার দিন ব্যাগে নিয়ে আসবি, প্লিজ?

সেটা তুমি আনবে।

আচ্ছা। শাঁখা?

পারবে?

পরাবো।

বেশ হবে!

আচ্ছা।

কেমন শাড়ি পছন্দ?

কালো।

আমি কালো শাড়ি পরে আসবো তবে।

আমি কেমন শাড়ি কিনবো?

তুমি শাঁখাসিঁদুর আনলেই হবে। আর সাথে বেলিফুল।

একটা শাড়ি দেবো। বিয়েতে বৌকে শাড়ি দিতে হয়।

আমি তো বরকে জড়িয়ে নিজেকে আড়াল করবো, সেখানে এটা নিষ্প্রয়োজন। তবু যদি নিয়ম হয়, তবে তোমার মনের মতো করে এনো।

সেটাতে তবে দুজনে মোড়াবো, জড়াবো। আমি শাড়ি পরাবো খুব যত্ন করে, এরপর খুলব খুব ধীরে। এটা আমার স্বপ্ন।

চিমটি! এটা আমার পূর্ণতা। আর বাসরে থাকবে খোঁপায় জড়ানো বেলি ফুলের ঘ্রাণ। আর মনে হবে, সেই ঘ্রাণে যেন এক সাপ আমাকে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মোচড় দিয়ে নেবে।

তোর সারা শরীরের প্রতি ইঞ্চিতে চুমু খাবো নিবিড় প্রেমে।

তোমার একটা লোমও বাদ পরতে দিবো না!

আমি এটা ভালোবাসি।

তবে তাই হবে!

সঙ্গমের চাইতে আদর অনেক বড়ো।

আমি তোমার সে আদরটাই পেতে চাই।

পুরোপুরি জেগে ওঠার পর তুই আমাকে গ্রহণ করলেই নিজেকে গৃহীত হতে দেবো।

তোমার সর্বাঙ্গে আমার নিজেকে একাকার করে দিতে চাই, যেন আমি পাশে না রইলে আরো বেশি করে কাছে থাকাটা অনুভব করতে পারো!

আমার অনেক ফ্যান্টাসি! সেইসবের কাছে নীলছবি শিশুতোষ।

তা বৈকি!

তোর নেই?

আছে বৈকি!

বল।

তবে যে অধৈর্য হয়ে পড়বো!

তবু বল!

উঁহু, আজ তোমারটা শুনবো। বলো।

তুই বল।

বলো না, জানপাখি!

ওয়াইল্ড? নাকি মাইল্ড?

আমি কড়াই খাই—কি কফি, কি চা!

এই গল্প আগে পড়েছিস?

দেখি, দাঁড়াও।

আচ্ছা। এই……!

বলো।

ভালোবাসি!

বাসো!

ভীষণ প্রিয় এটা! কী কণ্ঠ! শুন!

আমারও!

রোজ শুনি বলা যায়। এটা কয়েকবার শুনে তোকে ভেবেছি। আবৃত্তিকারের প্রেমে পড়ে গেছি। পুরনো দিনের মতো করে আবৃত্তি করার ইচ্ছে জেগেছে।

হয়ে যাক তবে!!

আমি একসময় গাইতাম, মঞ্চে আবৃত্তি করতাম। যেদিন আসবি, সেদিন হবে। কফির ধোঁয়ায়।

অপেক্ষায় রইলুম…….

কবে আসবি?

খুববব্‌ দ্রুত!

আনুমানিক?

আমার মাঝেমাঝে কী মনে হয়, জানো?

কী?

তোমার মধ্যে লুকিয়ে রইতে।

রোস!

আবার খুউব করে ছুটে তোমার কাছে যেতে ইচ্ছেও করে যে!

আমি বারণ করিনি।

হুঁ।

করেছি বারণ?

নাহ্‌! আমিই তো তোমার কথা শুনি না! আমি লক্ষ্মীছাড়া একটা!

লক্ষ্মীসোনা হয়ে যা।

এটা তো তুমি করে নেবে!

আসছিস কবে?

ঈদে।

তখন তো মাসির বাসায় বলে আসবি।

সেটা তোমার কাছাকাছিই! তুমি রইবে বলেই যাবো।

কিন্তু তখন আমার বাসায় কী করে থাকবি?

উমমমম্‌ তোমায় তো রোজ কাছ থেকে দেখতে পাবো! এতেই হবে আমার।

বাসায় আসবি না?

সে তো বলতে পারছিনে!

তাহলে দেখা হবে কী করে?

সেখান থেকে তোমার কাছে আসতে ২০ মিনিট বা ৪৫ মিনিট লাগবে।

আমি তাহলে সামনের ঈদে অফিসে থেকে যাই?

বাসায় না গেলে সমস্যা হবে নাহ্‌?

ম্যানেজ করবো।

নাহ্‌! যেও।

কেন?