গন্তব্যহীনতার ভাবনা

একদিন আমাদের আর দেখা হবে না, কথা হবে না। তুমি ভুলে যাবে সময়ের স্রোতে, ভুলে যাব অনেকটা আমিও। বয়সের সাথে মস্তিষ্কের তীক্ষ্ণতা কমতে থাকবে, ক্ষয় হতে থাকবে স্মৃতি। আরও কত মানুষ আসবে জীবনে, আবার হারিয়েও যাবে। সংসার, বাচ্চা, সঙ্গী, কাজ সব মিলে তোমাকে ভাবার সময় পাবো না অতটা এখনের মতো। মনে হবে, তোমায় ভুলে গেছি।

তারপর হঠাৎ একদিন ছাদ থেকে কাপড় আনতে গিয়ে যখন দেখব, আকাশে পূর্ণিমার চাঁদটা জ্বলজ্বল করছে, বুকের ভেতর তখন কেমন করবে…
মনে হবে, তুমি কোথায়! কত দূরে!
আনমনে তোমার কথা ভাবতে থাকব। মনে হবে, আমি তখনও পঁচিশ বছরের কেউ একজন। 

আরও পরে, যখন আমি বুড়ো হয়ে যাব, তখনও কি তোমাকে মনে পড়বে!
মনে করো, তখন তুমি পৃথিবীতেই নেই, তবু আমি আছি; জীবন নির্দয়ভাবে আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছে।
তখন যদি হঠাৎ তোমায় দেখতে ইচ্ছে করে ভীষণ, কোথায় পাবো?
এ কারণেই বুঝি মানুষের সন্তান হয়। প্রিয় মানুষটার অংশ হয়ে রয়ে যায় সন্তান। তার মাঝে বেঁচে থাকে।

হয়তো আমার কখনও সংসার না-ও হতে পারে। আমার এ সন্ন্যাসী মন কিছুতেই বাঁধা পড়ে না যে! বিশ্বাস করি, কেউ কারও নয়। জানি, প্রতিদিনই দিন ফুরোয়। প্রতিদিনই একটু একটু করে বয়স্ক হই আমরা, মৃত্যুর দিকে এগোই।
তোমাকে ছাড়া আর কাউকেই ভালোবাসতে আমি কখনোই পারব না—এই পরম সত্যকে জেনে কীভাবে আমি সংসার করব, কেন মিথ্যে মায়ায় জড়াব!

আমি জানি না, কোথায় আমার গন্তব্য, কেন এ জীবন! জীবন কি শুধু যাপনের জন্য? কী উদ্দেশ্য এ জন্মের? জীবন কি মৃত্যুর জন্যই শুধু?