কোনও একদিন

 কোনও এক ঝুমবৃষ্টির রাতে থই থই জল হবে চারিদিকে, বৃষ্টির নূপুর ফোঁটায় ফোঁটায় পাতাদের শরীর ভিজিয়ে দেবে ক্রমশ, অথচ সে রাতে আমি থাকব না!
  
 একদিন মধুপূর্ণিমার সন্ধ্যায় আকাশের শরীর ফুঁড়ে জোছনার ঢল নামবে, জানালার গ্রিল ভেঙে চুইয়ে পড়া আলোর ঝরনা হুড়মুড় করে ঢুকে পড়বে সারা-বারান্দায়, অথচ সে সন্ধ্যায় আমি থাকব না!
  
 এক ভাতফোটা ভোরে পুবের আকাশের সূর্যটা মুখ বাঁকিয়ে হেসে উঠবে, সেই ঝলমলে হাসিতে পৃথিবীর সমস্ত বলিরেখায় রেখায় জেগে উঠবে ব্যস্ততার আলো, অথচ সে ভোরে আমি কিছুতেই জাগব না!
  
 পাখিরা ঘরে ফিরবে, সূর্য ডুবে যাবে, চাঁদ উঁকি দেবে।
 ঘাসের ডগায় ডগায় জলতরঙ্গে প্রেম জাগবে প্রেয়সীর বুকে,
 অমন আশ্চর্য সুন্দর মুহূর্তটিও সেদিন আমি দেখব না!
  
 দেখব না আর তোমার ওই ফিক করে হেসে ওঠা, ঠোঁট উলটে কেঁদে ফেলা। তোমার ধবল কপালের কোমল জমিনে একটি টিপের দখল আমার আর দেখা হবে না।
  
 সূর্যমুখীর লজ্জাবনত মুখ, তোমার রাঙা চিবুক, পানের রঙে রঞ্জিত মায়ের ঠোঁট, খুশিতে আপ্লুত বাবার দুটি চোখ…এসবের কিছুই আর দেখা হবে না।
  
 এই পৃথিবীর খোলা রাস্তায় হাঁটবে সবাই,
 আলো-হাওয়ায় দুলবে সুখী-অসুখী মানুষের মন,
 মানুষের প্রতি কিছু বিশ্বাস সেদিনও টিকে থাকবে,
 এইসব অপূর্ব সত্য প্রত্যক্ষ করতে সেদিন আমি আর থাকব না!
  
 আজও বেঁচে আছি, জীবনের কিছু রং দেখার অপূর্ণ ইচ্ছে পুষে মরব বলে! 
Content Protection by DMCA.com