না, সে ব্যস্ত নয়। না, তার ফোনটা বন্ধ হয়ে যায়নি। না, সে তোমার টেক্সটের রিপ্লাই দিতে ভুলে যায়নি। না, এমনও নয় যে, সে ফোনের কাছে ছিল না। না, এ-ও নয়, তার ফোনে নেটওয়ার্ক নেই। তুমি তবুও তার কাছ থেকে কোনও রিপ্লাই পাচ্ছ না। নো ফোনকল, নো মেসেজ। কেন পাচ্ছ না? কারণ তার তোমাকে বলার কিছু নেই। কারণ সে তোমাকে নিয়ে আর ভাবে না। কারণ সে তোমাকে আর মিস করে না। না না, তাকে ভুল বুঝো না! এমন কিন্তু নয় যে, টেক্সট পাঠাতে তার ভালো লাগে না! তোমাকে না পাঠালেও, সে পাঠায় তো কাউকে কাউকে! ভালো লাগে না, কী করে ভাবছ? ওই যে তোমাকে বলেছিল, দাঁড়াও, আমি পাঁচ মিনিটের মধ্যে ফোন করছি!...এরপর আর ফোন করেনি। তাকে ভুল বুঝো না। সে তোমাকে ফোন করতে সত্যিই ভুলে যায়নি। ফোন তো সে করেছে কাউকে কাউকে! ভুলে গেছে, কী করে ভাবছ? এত কনফিউজড হচ্ছ কেন? এতে এত কনফিউজড হবার কী আছে? সে টেক্সটের রিপ্লাই দেয় না, ফোন করে না, এসবের কারণটা বুঝতে তো আর রকেট সায়েন্টিস্ট হতে হয় না, তাই না? সে ইচ্ছে করেই রিপ্লাই দেয় না, ফোন করে না। তার ওসব করতে আর ইচ্ছে করে না। তোমার বেলায় তার ওসব ইচ্ছে মরে গেছে। ইচ্ছে তো মরে যেতেই পারে, তাই না? ইচ্ছেকে কি চিরজীবী হতেই হয়? সবার বেলায় কি আর ইচ্ছেরা অমরত্ব পায়? তাহলে সে যে মুখে বলে...টেক্সট পায়নি? ও আচ্ছা, তা-ই, না? তোমার মোবাইলে 'ডেলিভারড' কথাটা কি তবে এমনি এমনি দেখাল? তুমি কি কিছুই বোঝো না? না কি বুঝেও এমন অবুঝ হয়ে থাকছ? বুঝেও তাকে ওসব জিজ্ঞেস করে যাচ্ছ কেন? কেন গায়ে পড়ে মিথ্যে কথা শুনতে চাইছ? সহজ সত্যটা মেনে নাও। সে তোমাকে ইগনোর করছে, সে তোমাকে পাত্তা দিচ্ছে না, সে তোমার বেলায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। হ্যাঁ, সে একদম ইচ্ছে করেই তোমার মেসেজগুলি সিন করে ফেলে রাখে। তার জীবন, তার ইচ্ছে! তুমি কেন এখনও তাকে বিরক্ত করে যাচ্ছ এসব দেখেও? সত্যিই কি তোমার সমস্ত বোধবুদ্ধি, লজ্জাশরম লোপ পেয়েছে? সে মেসেঞ্জারে অ্যাকটিভ, হোয়াটসঅ্যাপে অ্যাকটিভ। তাতে কী হয়েছে? সে তোমার জন্য তো আর অ্যাকটিভ নয়, তাই না? অ্যাকটিভ হলে তো তোমার সঙ্গে কথা বলত। কেউ অ্যাকটিভ মানেই কিন্তু তোমার জন্য অ্যাভেইলেবল না-ও হতে পারে! সে অ্যাভেইলেবল, তবে তোমার জন্য আনঅ্যাভেইলেবল। হিসেবটা সহজ তো! বোঝো না? যে তোমাকে এমন পাত্তাই দিচ্ছে না, তাকেই কিনা তুমি তোমার সব কিছু বানিয়ে বসে আছ! আই মিন...সিরিয়াসলি? সো কিউট! সো সুইট!...রাবিশ! সে একদিন তার ভুলে বুঝতে পেরে আমার কাছেই ফিরে আসবে; ফিরে যে তাকে আসতেই হবে! সে নিশ্চয়ই তার হাতের কাজগুলি সেরে আমাকে রিপ্লাই করবে। আমি জানি, সে খুব ঝামেলার মধ্যে আছে, তাই সে আমার সঙ্গে কথা বলতে পারছে না। অপেক্ষা করে দেখি, তার সময়মতো সে আমাকে ফোন করবেই করবে! ...আর কিছু? প্লিজ, বলো বলো, আরও বলো, লাগছে মন্দ নয়... এমন পাগলামি-ছাগলামি-গাধামি-ফাজলামি আর কত করবে? এবার থামো! এত আজাইরা ধৈর্য আসে কোত্থেকে তোমার? পরীক্ষায় রেজাল্ট খারাপ করো কেন তাহলে? ভালো কোথাও চান্স পেলে না কেন এত ধৈর্য নিয়েও? টেবিলে পড়তে বসলে এসব ধৈর্য কোথায় পালায়? থামো, অনেক হয়েছে! তোমার কি সত্যিই তোমার নিজেকে দেখে হাসি পায় না? অন্য কিছু বাদ দিলাম! যদি সে সামান্য 'শুভ সকাল', 'শুভ রাত্রি', 'কেমন আছ?', 'কী করছ?', 'খেয়েছ?', 'সুস্থ আছ তো?' এইসবও লিখে পাঠানোর সময়টুকু না পায়, কিংবা পাঠাতে তার মনেই না থাকে, কিংবা ইচ্ছে করেই মনে না রাখে, তোমার খোঁজখবর না নেয়, নিজের খোঁজখবরও না জানায় কিংবা জানতে না দেয়, তোমাকে দিনের পর দিন এমন গুরুত্বহীন করে ফেলে রাখে, তবুও কি তুমি বলেই যাবে...আরও একটু দেখি...আরও একটু অপেক্ষা করি...দেখিই না কী হয়! কী আর হবে!...কাঁদবে...মরবে!...আর কী হবে! কেউই ব্যস্ত নয়; তবে সবাই-ই, কারও কারও জন্য, কিছু কিছু কাজের জন্য...ব্যস্ত। সত্যি বলতে কী, এ পৃথিবীর কেউই তোমার দামটা কমাতে পারে না, যদি না তুমি নিজেই নিজের দামটা কমাও!