এমন হোক


এমন হোক, যেদিন আমি জীবনের শেষপ্রান্তে পৌঁছে যাব, সেদিন যেন পেছন ফিরে বলতে পারি, সত্যিই চমৎকার ছিল সব কিছু!


এমন হোক, যখন সময় ক্রমেই ফুরিয়ে আসবে, আমার হৃদয়টা পরিপূর্ণ হয়ে থাকবে এবং আমার আর কোনও অনুশোচনা হবে না।


আমার চলে যাবার পথের চিহ্ন দেখে সবাই যেন বুঝতে পারে, আমি বাঁচার মতোই বেঁচেছি!


এ সত্য হোক, ব্যর্থ হবার পরও, আমি শিখে গেছি এবং হাসিমুখে সেখান থেকে বেরিয়ে যাবার চেষ্টা করেছি।


এ জীবনের প্রথম সূর্যোদয় ও শেষ সূর্যাস্তের মাঝে যত রংধনু এসেছে, তার সবকটা না হলেও, বেশিরভাগই আমি উপভোগ করেছি---আমার শেষসময়ে এটাই সবাই জানুক।


আমার মৃত্যুর পর সবাই যেন জানে, যখন আমি বেঁচে ছিলাম, তখন আমি শূন্যতায় ডুবতে ডুবতেও স্বপ্ন দেখে গেছি; নদী যেখানে সমুদ্রে গিয়ে মেশে, অমন দুর্জ্ঞেয়তম স্থানে গিয়েও আমি আমার স্বপ্ন ছড়িয়ে ছিটিয়ে দিয়ে এসেছি, এই আশায় যে, কেউ-না-কেউ সেখান থেকে বাঁচার স্বপ্ন খুঁজে নেবে।


এমন হোক, যত বারই নাচতে গিয়ে ভয়ে বিহ্বল হয়ে গেছি, তত বারই শিখেছি, পুরো পৃথিবীও যদি আমার দিকে তাকিয়ে হাসতে থাকে, তবুও, না নেচেই দুঃখ নিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিলে তাতে কারও কিছুই এসে যায় না।


সবাই জানুক, আমি যখন এখানে ছিলাম, আমি শত শত বার আহত হয়ে নিচে পড়ে গেছি যখনই উড়তে চেয়েছি, অথচ দেখো, সেই আমিই আজ সারাআকাশ হয়ে ছড়িয়ে গেছি!


এমন হোক! সবাই এমনই জানুক!


যখন বেঁচে ছিলাম, তখন নানান সময়ে আমি পুরো হৃদয় দিয়ে আমার গল্পটা লিখেছি। সেই গল্প কে পড়ল বা পড়ল না, তার তোয়াক্কা না করেই আমি গল্পটা লিখে গেছি বহু বহু দিন। আমার নিজের কাছে আমার গল্পটাই ছিল সবচাইতে সুন্দর, সবচাইতে পরিপূর্ণ।


সবাই জেনে নিক, যখন আমি এখানে ছিলাম, তোমাদের সবার সঙ্গে মিশতে পেরেছি বলেই আমি ধন্য হয়েছি, এবং এমনই হোক, যখন আমি আর থাকব না, তখন যেন তোমাদের কিছু অংশ আমার সঙ্গে মিশে থাকে।