আহার মায়ের গল্প

প্রিয় অরণ্য,

এ জীবনে সবচাইতে ভাল যে উপহারগুলি আমি এ পর্যন্ত পেয়েছি, সেগুলির মধ্যে সেরা হল তোমার ভালোবাসা। ভেবো না, কথাটি আমি শুধু তোমাকেই বলছি। কথাটি আমি পুরো পৃথিবীকেই বলি। আমার পৃথিবীটা ছোট তো! ছোট পৃথিবী থাকার সুবিধে হল, নিজের কাছেও অচেনা হয়ে থাকতে হয় না। আমি এটা বুঝি, তুমিও আমাকে ভালোবাস। ভাবছ, কীভাবে বুঝি? সহজ তো! আমার ভালোবাসাকে প্রশ্রয় তো দাও! এটাকে ভালোবাসা বলে তো, না?

আচ্ছা, তুমি কি আমাকে বিয়ে করবে? এমন সরাসরি প্রশ্ন কেন করছি, সেটাতে একটু পরে আসি। আমার ধারণা হয়েছে, অরণ্যের যে বিশালতা কল্পনায় তোমাকে ‘অরণ্য’ বলে ডাকি, ওর এক কোণায় আমার ঠাঁই হয়েই যাবে! ‘ঠাঁই’ শব্দটা তোমাকে রাগিয়ে দিল না তো আবার? প্লিজ, আমাকে ভুল বুঝো না! অনেক আত্মগ্লানি আর সংকোচ থেকে তোমাকে এভাবে করে লিখছি। মনে হচ্ছে, ভেতরে-ভেতরে একেবারে কুঁকড়ে যাচ্ছি। যে ভাবনাটি সারাজীবন লুকিয়ে রেখে বেঁচেছি, সেটি যখন সামনে বের হয়ে আসতে চায়, তখন কেমন অসহায় লাগে, ভাবতে পার? গোপনটি বের হয়ে এলে নিজের বলতে আর কী-ই বা থাকে? একেকবার ভাবছি, কী হবে, যদি সবার মতো লুকিয়েই রাখি? কিন্তু তা পারছি আর কই! জানো অরণ্য, আমি আমাদের মেয়ের নামও ঠিক করে রেখেছি: আহা। তোমার-আমার ভালোবাসার যে পবিত্র ধন, সেটা কেন একটা মিথ্যে লুকোচুরিতে গড়ব, বল! না, এ আমি কিছুতেই পারব না। আমি বলবই! সত্যটাকে বাইরে টেনে আনবই! আমার জন্য না হোক, আহার জন্য হলেও আমি তা করবই!

যে কথাটি কখনওই কাউকেই বলিনি, সে কথাটি বলব বলে ভাবতেও সাহস লাগে। জানো, আমি কীভাবে যেন বিশ্রী রকমের দুঃসাহসী হয়ে উঠেছি হঠাৎ করেই! এরকম কখনও হয়নি। আয়নার সামনে নগ্ন দাঁড়িয়ে থাকাটা যে কী কষ্টের! শরীরের যে কুৎসিত দাগ আর ভাঁজগুলি খুব যত্নে কত কায়দায় আড়াল করে রাখি, সেগুলিও চোখের সামনে দগদগ করে ওঠে! যা নিজে সহ্য করতে পারি না, তা অন্যকে সহ্য করাবো, এটা তো আমার মতন নির্বোধেরও কল্পনাতেও আসে না। প্লিজ, সবকিছু শুনে আমাকে বলে দিয়ো আমি কী করব। আচ্ছা, আমি কি আবোলতাবোল বকছি, মানে, পাগল হয়ে যাচ্ছি? হয়তো বা! কিন্তু এ যে অভিনব নয়! ওরকমটা হয়েই আছি এই ১৮টি বছর ধরে! যে পাগলামিটা কাউকে দেখানো যায় না, সে পাগলামিতে পাগল হয়ে থাকা বড় যন্ত্রণার, অরণ্য! আমি আর পারছি না! বিশ্বাস কর, বুকের ভেতরে অনেক কষ্ট হচ্ছে, অনেক!!

আমি লিখতে পারি না। লিখতে বসি আর মনে হয়, আমার হাতে শব্দরা কেন জানি খেলতে চায় না! আমি বুঝেই উঠতে পারি না, ওদের সাথে আমার কী এমন অবন্ধুত্ব! ওটা বুঝে ওঠার আগেই আমার ভাবনাগুলি হারিয়ে যায়, উড়ে যায় নরোম নির্ভার তুলোর মতো। শুধু এই একটা ভাবনা ভারী পাথরের মতো আমার হৃদয়ের মধ্যে আটকেই আছে আটকেই আছে। খুব করে ইচ্ছে করছে, আজকে সেটা আর চাপা না থাক! তোমাকে আমি, তৃতীয় আর বিধাতা চাইলে, শেষ ব্যক্তি হিসেবে এই পৃথিবীতে ভাবতে চাই, যে এই পুরনো কষ্টের গাথা জানবে।

একটা গল্প শুনবে? উফফ্….!! শোনাতে শুরু করার আগেই অনুমতি চাইতে হচ্ছে কেন? আমি কি তাহলে তোমাকেও অন্য ১০টা অপরিচিত পুরুষমানুষের মতোই ধরে নিচ্ছি? (জানো অরণ্য, ‘পুরুষমানুষ’ কথাটি লেখার সময় খুব ঘেন্না ধরে যাচ্ছিল! হাতের আঙুলগুলি পর্যন্ত ঘেন্নায় কাঁপছিল!) গল্পটার শুরু যদি এভাবে করি, তবে কেমন হয়? এই ধর, একটা মেয়ে ছিল। ফুলের মতো শুভ্র। বয়স মাত্র ৬। আচ্ছা, ‘মাত্র’ বলছি কেন? সমাজের চোখে, মানে পুরুষমানুষদের চোখে যে মেয়েদের কোন বয়সই ‘মাত্র’ নয়! ছোট্ট পুতুলটার মা-বাবা দুজনেই চাকরি করে। ও কাজের মেয়ের কাছে বড় হয়। বাসায় ছোটভাই, বয়স ২। আর দুঃসহ ১৮ বছরের প্রকাণ্ড একটা অমানুষ। অমানুষটা মেয়েটার আপন খালাত ভাই। ওদের বাসায় থেকে কলেজে পড়ে। প্রতিদিন সকালে বাবা-মা বেরিয়ে যায়, বাসায় ৪টি প্রাণী : মেয়েটা, ওর ছোটভাই, কাজের মেয়ে আর সেই জানোয়ারটা। মেয়েটি যখন প্রথমবার রেপ্‌ড হয়, তখন তার বয়স সাড়ে ৬। তার সাথে সেদিন দুপুরে যে কী হয়, তা সে কিছুই বুঝে উঠতে পারে না। ভয়ে সে কাউকে কিছুই বলতে পারেনি। এরপর থেকে মেয়েটিকে প্রতিদিনই ওই পশুটার খেলার পুতুল হতে হত। প্রতিদিনকার এই রুটিনের কিছুই কেউ জানে না। শুধু ছুটির দিনগুলিতে, যে সময়টাতে ওর বাবা-মা বাসায় থাকত, সে দিনগুলি বাদে প্রায় প্রতিদিনই বর্বরটি ওর পাশবিক কামনা চরিতার্থ করত। একবার মেয়েটি ব্যথায় কাঁদতে-কাঁদতে দুহাতে ওর পা জড়িয়ে ধরে বলেছিল, “ভাইয়া, আজকে না।” উত্তর জুটেছিল চড় থাপ্পড় লাথি। আরেকদিন “আমি আম্মুকে সব বলে দিব” বলায় ডাইনিং টেবিলের উপর রাখা ফল কাটার ছুরিটি মেয়েটির গলায় চেপে ধরে বলেছিল, “চুপ! খুন করে ফেলব একদম!” ভয়ে ও আর কাউকেই কিছু বলেনি। ৮ বছর বয়স পর্যন্ত মেয়েটার সারাদিন কাটত ওর বাবা-মা’র কিনেদেয়া শখের পুতুলগুলি নিয়ে খেলার বদলে নোংরা শরীরটাকে পরিষ্কার করার কাজে। এভাবেই ওর প্রতিদিনকার বিষাদমাখা সন্ধ্যা নামত; তার নিজের বাসাতেই! পৃথিবীর সবচাইতে নিরাপদ আশ্রয়টিতে ওর অসহায় দিনগুলি কাটত। দেড় বছর পর সে অমানুষটি একদিন খালার বাসা ছেড়ে মেসে উঠে যায়।

সেই বীভৎস দিনগুলিতে মেয়েটার সাথে কী হয়েছে, তা সে বুঝতে পারে তার ১১/১২ বছর বয়সে। ওই বয়সের মেয়েদের শরীরে নতুন-নতুন রহস্যের আসাযাওয়া চলতে থাকে। ওরা শরীরের সবকিছু বুঝতে, শিখতে শুরু করে; মেয়েটিও। সেদিন থেকে শুরু করে আজও, একদিনের জন্যও মেয়েটি ভুলতে পারেনি তার ছোটবেলার ভয়াবহ মুহূর্তগুলির কথা। এখন সে গ্রাজুয়েট, মাস্টার্স করছে; বয়স প্রায় ২৫। এই দীর্ঘসময় ধরে সে যে কী অসহ্য যন্ত্রণার মধ্য দিয়ে পার হয়েছে, তা শুধু সে-ই জানে। তার যন্ত্রণার কথা সে কোনোদিনও কাউকে বলেনি। আজও সে চোখের পানি লুকিয়ে-লুকিয়ে বেড়ায়। প্রচণ্ড কাঁদতে ইচ্ছে করছে, কিন্তু সে কান্না অসীম কষ্ট দিয়ে জোর করে চেপে রাখতে হচ্ছে, এ অনুভূতির চাইতে মৃত্যুও ভাল। ও দিনের পর দিন এর মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সবাই ভাবে, “মেয়েটি তো কখনওই কাঁদে না! অদ্ভুত তো!” ভাববেই তো! কেন কাঁদে না, তা যে কেউ জানে না! যে হাসিতে এত ব্যথা লুকানো, সে হাসির মূল্য দেবে এ দায়ই বা কার!

মেয়েটি কিন্তু তার বাবা-মা’কে ঘৃণা করে না। তবুও তাঁদের প্রতি ওর ভীষণ রাগ ক্ষোভ অভিমান। কেন বাবা-মা ওইটুকুন বাচ্চা মেয়েকে নিরাপত্তা দিতে পারবে না? কেন আর ১০টা মেয়ের মতো ওর কোনও সুন্দর শৈশব ছিল না? কী অপরাধ করেছিল সে? যে সন্তানের নিরাপত্তার দায়িত্ব বাবা-মা নিতে পারে না, সে সন্তানকে পৃথিবীতে নিয়ে আসাটা ক্ষণিকের জৈবিক সুখনিবৃত্তি ছাড়া আর কী? এর সাথে ওই নিষিদ্ধ পল্লীর লাল-নীল পরীদের রাজ্যে দায়িত্বহীন সুখসঙ্গমের পার্থক্য কতটুকু? অরণ্য, জানো, মেয়েটার নিরাপত্তা নিয়ে এখন বাসায় চিন্তা করে। অমুক জায়গায় চাকরি করা যাবে না, তমুক জায়গায় যাওয়া যাবে না, সন্ধ্যার আগেই বাসায় ফিরতে হবে, কোনও ছেলের সাথে মেশা যাবে না, পর্দা ছাড়া কারও সামনে যাওয়া নিষেধ, আরও কত কী! মেয়েটার চিৎকার করে বলতে খুউব ইচ্ছে করে, “এখন কেন এত কেয়ার কর?? যা ক্ষতি হওয়ার তা তো হয়েই গেছে। আমি মরে যাওয়ার সময়ে তোমরা কোথায় ছিলে? আমাকে বাঁচাওনি কেন?” ইশশ! ও যদি ওরকম করে বলে দিতে পারত! যদি পারত! কত-কত কথা বুকে জমতে-জমতে আবার বুকেই মরে যায়!

জানো, সে এখন কাউকে ভালোবাসতেও ভয় পায়। ও যে কিছুই লুকিয়ে রাখতে পারবে না! চোখ বন্ধ করলেই যে পৃথিবীটা হুট করে বদলে যায় না, সত্যিটা পৃথিবীর সেরা জাদুকরেরও এক তুড়িতে মিথ্যে হয়ে যায় না। নিজের কাছ থেকেই যে পালিয়ে বেড়াতে পারছে না, সে অন্যের কাছে ধরা না দিয়ে থাকে কীভাবে? তার বয়সি সবাই যখন ভালোবাসার মানুষের সাথে ভবিষ্যতের স্বপ্নে বুঁদ হয়ে রঙিন জাল বোনে, তখন সে কষ্ট বেচে বাঁচে। এর বেশি আর কিছুই যে সে ভাবতেও পারে না। সে ভাবতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে, কারও জীবনে জড়ানোর মানেই হল, সেই মানুষটাকে ঠকানো। ঠকানো কী, এটা বোঝার আগেই জীবন যাকে ঠকায়, সে ঠকানোটাকে অপাপবিদ্ধ বলেই ধরে নেয়। সে আস্তে-আস্তে আর ১০টা নিষ্পাপ কাজের মোহে ঠকানোর যে সুখ, সেটাকে ভুলে থেকে আরও বড় সুখের মোহে তার ভাবনাবলয়ের আবর্তন করায়।

মৃত্যুও যদি বিকল্প রাস্তা হয়, তবুও সে তো তার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা কাউকেই বলতে পারবে না। কিছু কষ্ট থাক না চাপা। এ পৃথিবীতে কষ্টরাই সবচাইতে দামি। সবাই ছেড়ে যায়, কষ্ট দেয়। ওরাই তো শুধু পরম বন্ধুর মতো থেকে যায়। শুধু কষ্টরাই কখনও কষ্ট দেয় না। সে ভাবে আর ভাবে, কেন সে আরেকজনকে ঠকাবে? ওর কী দোষ? কাকেই বা সে জড়াবে এই অভিশপ্ত জীবনে? যদি তার জীবনে কেউ আসেও, সে কি বুঝবে ওকে? কেনই বা বুঝবে? ছোট্ট একটা জীবনে কীসের অতো দায় আছে মানুষের? এসব ভাবতে-ভাবতে ওর চোখজোড়া ঝাপসা হয়ে আসে, কয়েক ফোঁটা নোনতা উষ্ণ জলে ওষ্ঠযুগল বারবার ভিজে ওঠে।

তবুও, এতকিছুর পরেও, কথা থেকে যায়। আইরনিক্যালি, অন্য ১০টা মেয়ের মতই, সে মেয়েটাও একটা মানুষ! সেও হুটহাট করেই স্বপ্ন দেখে ফেলে। কখনও-কখনও অপার বিস্ময়ে সেও নিজের ভেতরটাকে চিৎকার করে বলতে শোনে, “কেউ অন্তত আমাকে ভালোবাসুক। হোক যে কেউই! তবুও!” ভুলেভালে আনমনেই কাউকে ভালোবাসার সাহস করে ফেলে। বড় বিশ্বাস করে ভাবতে চায়, কেউ না কেউ তো বুঝবে তার না-বলা কষ্টটা! মেয়েটার যখন ছোটবেলার কথা মনে হয়, তখন তার বুকের বাম দিকটায় প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয়। সে ব্যথা আস্তে-আস্তে সম্পূর্ণ বাম বাহুতে ছড়িয়ে পড়ে। হাতের শিরাগুলিতে রক্ত জমাট বেঁধে আসে। বাম হাতের তালুটা কুঁচকে আসে, আঙুলগুলি মড়মড় শব্দে ভাঙতে থাকে। সে সেই ছোটবেলাতেই চুপচাপ হয়ে থাকার অভ্যস্ততায় Amélie মুভির মেয়েটির মতো কাউকেই কিছু না বলে অনেক কথাবলা আশেপাশের অদ্ভুত পৃথিবীটাকে একটু-একটু করে চিনতে শিখে নিয়েছে। মেয়েটা ভাবে, কোনও একদিন কেউ তার পাশে থাকবে। সেদিন The Great Dictator মুভির হান্নাহ্‌র মতো করে কেউ বিধ্বস্ত তার পাশে বসে পরম নির্ভরতার আশ্রয় ছড়িয়ে দিয়ে বলবে, Never mind. We can start again. তাকে সে মানুষটি সত্যি-সত্যিই এতটাই ভালোবাসবে যে, সে তার ভয়ংকর দিনগুলোর কথা আর কোনদিনও মনেই করতে পারবে না। তবুও যদি কখনও পুরনো ফিকে কষ্টে বাম হাতের তালুটা অবচেতনেই কুঁচকে আসে, ভালোবাসার সেই মানুষটা অসীম মমত্বে হাতটি ধরে বলবে, “এই বোকা মেয়ে! এত কষ্ট কীসের? আমি তো আছিই!” অরণ্য, এটা কি খুব বেশি চাওয়া? বল, তুমি বল! এইটুকুও চাইতে না পারলে একটা মানুষ বাঁচেই বা কীভাবে?

তোমার মনে পড়ে, সেদিন সন্ধ্যায় পদ্মাপাড় ধরে হাঁটতে-হাঁটতে তুমি আমার কাঁধে ঝাঁকুনি দিয়ে জিজ্ঞেস করেছিলে, “এই পচা মেয়ে! বুয়েটে করেছটা কী, হুঁ? আর কোথাও অ্যাপ্লাইট্যাপ্লাই কোরো না, ফরমের টাকা দিয়ে আমরা দুজন মিলে ফুচকা খাব, কেমন?” মাথায় টোকা মেরে বলেছিলে, “ম্যাডামের এখানটা একদম ফাঁকা। কিস্‌সু নেই! হাহাহা……” আমি অন্যদিকে তাকিয়ে হেসেছিলাম শুধু। তুমি ভেবেছিলে, তোমার কথা কানেই নিচ্ছি না। আমি তো জানি, মুহূর্তেই চোখের ভাষা আড়াল করার জন্য ওর চাইতে ভাল কোন বুদ্ধিই আমার মাথায় তখন আসেনি। তুমি প্রায়ই বল না, “জানি তো, ইচ্ছে করেই চাকরি পাচ্ছ না। আচ্ছা, যদি গৃহিণীই হবে, তবে এত পড়াশোনা করেছিলে কেন?” কোনদিনও এর উত্তর দিইনি। আজকে দিচ্ছি। “পড়াশোনা করলে চাকরি করতেই হবে কেন? আমি যত কোয়ালিফাইড হব, আমার বরও তো ততই কোয়ালিফাইড হবে। ভাল তো! আমার আহার বাবা বড় হলে আমার আহাও তো বড় হবে। আমার আহা ওর বাবাকে দেখে শিখবে। আমার আহাকে আমি শক্ত করে বুকের মধ্যে রেখে চোখে-চোখে বড় করব।”

সবই তো তোমাকে বলে দিলাম। নিজেকে বড় হাল্কা লাগছে আজ। মনে হচ্ছে, পাখির পালকের মতোই ভেসে বেড়াচ্ছি আর তোমার হাসিমুখটি দেখতে-দেখতে আমার আহাকে মানুষ করছি। অরণ্য, আমায় গ্রহণ করবে না? আজ আমি যে সবচাইতে যত্নে লুকিয়েরাখা পরম সত্যের মুখোমুখি হয়ে নিজেকে রিক্ত করে তোমার কাছে সমর্পণ করেছি! আমায় গ্রহণ করো, ঋদ্ধ করো! আজকে যদি আমাকে ফিরে যেতে বল, তবে যে বিশ্বাসের পুনর্মৃত্যু হবে! বিশ্বাস মেরে ফেলা যে বড় পাপ হে! একই পাপ এত বছর পরে এসে কীভাবে করি, বল? হৃদয়ের সকল রুদ্ধ বাণীকে মুক্ত করে নিজেকে তোমার চরণে হারিয়ে দিয়ে নিজেকে জয়ী দেখতে বড় ইচ্ছে করে! এই অরণ্য! এই!! শুনছ…………??? অরণ্য! অরণ্য ………….!!!

তোমার রাত্রি