আদল ভাঙতে অবয়ব লাগে

 
সতেরো বছর ধরে আমি তোমায় লুকিয়ে দেখেছি।
আমার ভীষণ ভালো লেগেছে…তোমায় না পেয়েও
আড়ালে, লুকিয়ে অনেকখানি পেয়ে ফেলতে!


আমি তোমাকে মাটির দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখেছি,
আকাশের দিকে তাকিয়ে হাঁটতে তখনও তুমি শেখোনি।
আমি তোমাকে ঘাড় বাঁকিয়ে খুব লাজুক চাহনিতে
এদিক ওদিক তাকাতে দেখেছি, দ্বিধায় কিংবা কুণ্ঠায়
নিজেকে গুটিয়ে রেখে কথা বলতে দেখেছি।


তোমার কিশোরসুলভ চেহারার দীপ্তি দেখেছি,
তারুণ্য পেরিয়ে একটু একটু করে যুবক হতে দেখেছি,
যৌবনের আভায় তোমার মধ্যে পরিপূর্ণতার আভাস অনুভব করেছি…
বিশ্বাস করো, প্রত্যেকটি ধাপেই তুমি আরও সুন্দর হয়েছ, পূর্ণ হয়েছ!


আমায় বলে দাও না, চিতার দহনে আর কতটা শুদ্ধ হলে
তোমাকে পাবার যোগ্য হব?
তুমি কি এমন সর্বনাশা কেবল আমারই বেলায়?
আমার চোখেই ছুড়ে দিচ্ছ গোটা একজীবনের যত উল্টোদাবি?


আমি মরে যাবার আগে,
আমার আরাধ্যকে অনুনয় করে বলে যাব,
তিনি যেন তোমায় আমার হৃদয়ের আর্তিটুকু দেখান!
আমি মৃত্যুর পরেও তোমার অনুশোচনা দেখার প্রতীক্ষায় থাকব…


অমন মায়াহীন চোখে একটাজীবন কাটিয়েই দিলে!
তোমায় দেখে বুঝেছি প্রিয়,
যারা ভালোবাসা পায়, ওরা ভালোবাসা দিতে জানে না।


আমার মৃত্যুর পর হলেও,
কখনও অনুভব করে একবার বোলো--ভালোবাসি!
বলবে তো…মনে করে?


আমায় শেষ করে দেবে…
কোনও ঘাতক মারণাস্ত্র নয়,
কোনও অবধ্য ব্যাধি নয়,
…কেবলই তোমার শূন্যতা!


তোমায় কখনও পাব না জেনেও
তোমার প্রতীক্ষায় বেঁচে থাকবার
কষ্টটা বয়ে বেড়াচ্ছি! এ খুব সহজ নয়, প্রিয়!


তুমি আমায় বুঝবে, এতটা দুরাশা আমি করিনি।
আমি তোমায় বুঝব, এতটা সুখ তোমার ভাগ্যে নেই।
এই চক্র থেকে এই জন্মে বেরোনো যায় না, বলো?


তোমায় ভুলে কেমন করে বাঁচতে হয়, তা নিয়ে
আমি অনেক পড়েছি, শুনেছি, ভেবেছি।
এর পর যা হলো, আমি বুঝলাম,
তোমাকে ভুলে থাকতে আমার কেবল তোমাকেই লাগবে!