আউলাকথন

এক। যেইদিন থেইকা জীবনটারে সিরিয়াসলি নেওয়া ছাইড়া দিসি, সেইদিন থেইকা আমার সুখ ফিইরা আসছে।

যেইদিন থেইকা ভাবতে শুরু করসি, দুনিয়ার কেউই আমার কিছুই হয় না, সেইদিন থেইকা আমার রাতে ভালো ঘুম হয়।

যেইদিন থেইকা ক্যারিয়ার নিয়া ভাবাভাবি বাদ দিসি, সেইদিন থেইকা আমার নিজেরে পাখির মতন হালকা লাগা শুরু হইসে।

এখন ভাবি, হায়রে! দম বন্ধ ক‌ইরা দম-বন্ধ-করা স্টাইলে দৌড়াইয়া কী এমন ঘোড়ার ডিমের লাভ হ‌ইসে আমার?

এখন আমি কারও কেউ হই না, দুনিয়ার কেউও আমার কেউ হয় না। যার যেমনে খুশি মরুক গা!

দিনকাল দেখি ভালোই কাটতেসে।

ম্যালা দিন বাঁচব ব‌ইলা দেখা সুখের স্বপন একদিন ফুরাইয়া আসে। সেইদিন‌ই কেবল সত্যি সত্যি বাঁচা যায়।

দুই। ক্যান, ক্যান মাইনষের মাত্র ষাইট-সত্তর বৎসর আয়ু থাকব? টানা এক-শো বছর লাগব খালি সবুজ ঘাসে হাত-পা ছড়াইয়া দিয়া শুইয়া হাঁ কইরা আকাশ দেখতেই!

আম্মার কোলের উপর মাথা রাইখা চুপ কইরা শুইয়া থাকতেও তো মানুষের চার-শো ষাইট বৎসরও কম হইয়া যায়!

ক্যান, মানুষের এত কম আয়ু থাকব ক্যান?

পছন্দের মানুষটা হাসলে কেমন লাগে, তা দেখনের লাইগা একটানা তাকায়া থাকার জ‌ইন্যেও তো মানুষের কমসে-কম নব্বই বছর লাগেই!

মাঝরাইতে চান্দের আলোয় ভিইজা তিন হাজার বৎসরের পুরানা জীবনের কাহিনি মনে করতেও তো মানুষের আটাইশ কোটি বৎসর লাগে!

ক্যান খোদা, মাইনষেরে ক্যান এত কম আয়ু দিয়া দুনিয়ায় পাঠাইলা? আইজ জন্মাইলেই তো দেখি, কাইল দরজায় মৃত্যু আইসা হাত ধইরা টাইনা নিয়া কয়, "অনেক বাঁচছস, এবার ল চল, তোর ট্রেন চইলা আইছে।"

আইজ হঠাৎ ক‌ইরা আমার হাজার কোটি বৎসর বাঁচতে মন চাইতেসে ক্যান, খোদা? মানুষ তো শুনসি চ‌ইলা যাবার আগে এমন ক‌ইরা থাকতে চায়। আমিও কি তাইলে...