এক।
মৃতদের কোনো ঈশ্বর থাকেন না, অতএব ওরা সহজেই ক্ষমা পেয়ে যায়।
জীবিতদের অন্তত একজন ঈশ্বর থাকেন, অতএব ওরা সহজে ক্ষমা পায় না।
দুই।
সধবাদের অগ্রাধিকার,
বিধবাদের নেই অধিকার।……এরও নাম নাকি সমাজ!
তিন।
আমি তোমার, কেবলই তোমার!
পাত্রের মদ রেখে আমায় পান করো।
চার।
দোহন করার সময় মারলে,
কোনো গরুই দুধ দেয় না।
পাঁচ।
আমিও তোমার, সেও তোমার!
এখন দেখা যাক, রান্নাটা কে করে!
ছয়।
দেখতে ভাল, আদতে কালো।
দেখতে কালো, আদতে ভাল।
সাত।
যে মুরগি রোস্ট হবার জন্যই জন্মায়,
তার ঈশ্বর বধির কিংবা মৃত।
আট।
প্রার্থনায় দিলে ফাঁকি,
সৌভাগ্য থাকে বাকি।
নয়।
দিনের শেষেও যা বিক্রি হয় না, সেটি হয় দামি কিংবা বাজে।
দশ।
সকালে ঠাকুরঘরে,
সন্ধে হতেই মদ-আসরে।
এগারো।
শান্ত হয়ে বসো,
ঈশ্বর বিশ্রামে আছেন।
বারো।
সে জড়িয়ে ধরে,
এরপর পিঠে ছুরি বসিয়ে দেয়।
তেরো।
বড়োলোকের জিভের রেশনের চিনি,
গরীবের ঠোঁটের মধুর চেয়েও মিষ্টি।
চৌদ্দ।
আসো, অংকটা মেলানোর জন্য ধরে নিই,
ঈশ্বর এর বিচার করবেন।
পনেরো।
এক দেশ ছিল, সে দেশে খোঁড়া লোকেরা দুইপায়ে হাঁটত।
ষোলো।
সে মেনে নিতে পারছে, তাই করছে।
এতে তোমার আমার আপত্তি কীসের? সে কীভাবে বেঁচে আছে, সে খোঁজ আমরা কবে নিয়েছি?
সতেরো।
কাঠের বেড়াল নিয়ে বসে থাকলে ইঁদুরের ভয় তো করবেই!
আঠারো।
নিজেকে বদলে ফেললে পুরনো কষ্ট এবং নতুন কষ্ট, দুইই সহজে গ্রহণ করতে হয়।
উনিশ।
আমি সেই স্কুলজীবনটা ফেরত চাই, যখন পড়াশোনায় ফাঁকি দিলে মনে হতো, আমি না পড়লে তো বাবা-মায়ের লস!
বিশ।
নতুন অফিসে যাওয়ার আগে দাড়িটা অন্তত কামিয়ে যেয়ো,
নতুন ঘরে ঢোকার আগে মুখটা অন্তত ধুয়ে ঢুকো।
একুশ।
অসুস্থ সিংহকে আঘাত করার সময় শেয়ালদের ভ্রাতৃত্ববোধ একেবারে উপচে পড়ে! (কাদায় আটকেপড়া হাতিকে লাথিমারার সময় মশাদের ঐক্য দেখার মতো!)
বাইশ।
যে ঘরে রুটি বানানোর ময়দাটুকুও নেই, জীবন বুঝতে হলে সে ঘর থেকে একবার ঘুরে এসো।
তেইশ।
শয়তানের মনেও কষ্ট দিয়ো না, বিপদে পড়লে শয়তানের বুদ্ধিতেও কাজ হতে পারে। প্রায়ই, শয়তানকে ঘায়েল করতে শয়তানের বুদ্ধিই লাগে।
চব্বিশ।
ঈশ্বর মহান, তবে তাঁর মহত্ত্ব কিছু ব্যাকরণ মেনে চলে। ব্যাকরণ না মানলে তাঁর দয়া আশা করবেন না।
পঁচিশ।
ঘুমিয়েথাকা মানুষ সবসময়ই ভাল মানুষ।
ছাব্বিশ।
দাওয়াত দিলে, খেতে এসো।
তাড়া করলে, পালিয়ে যেয়ো।
আজকে যে দাওয়াত দিচ্ছে, কালকেই সে তাড়া করবে। কষ্ট না পেতে চাইলে এটা মেনে নাও।
সাতাশ।
সেই লোকটি থেকে সাবধান, যার মগজ টাকায়, মাথায় নয়।
আটাশ।
একেবারেই দুর্বল ক্লান্ত হাতটাও প্রয়োজনে চুরি করতে জানে।
উনত্রিশ।
বেঁচে থাকাটা আনন্দের, যখন ঘুমিয়ে থাকি।
ত্রিশ।
যখন তোমার ঘরে খাবার ছিল না, তখন তুমি কেমন ছিলে এবং তোমার বন্ধু কেমন ছিল, এই দুই চেহারা কখনো ভুলে যেয়ো না।
একত্রিশ।
সস্তা দামের টুথপিক কিনলে বেঁচেযাওয়া পয়সা ডেন্টিস্টের পকেটে ঢুকে।
বত্রিশ।
মানবিক হও, দুর্বল ঘোড়াটিকে ঘোড়দৌড়ে নামিয়ে দিয়ো না। জীবন সবকিছু সুদেআসলে ফেরত দেয়।
তেত্রিশ।
ব্রাশটা আগে ভিজিয়ে নিয়ো, দাঁতে ব্যথা কম পাবে।
চৌত্রিশ।
চোরের টাকায় খেয়েপরে বড়ো হবার পর চোরের নীতিবান ছেলেটি চুরির দায়ে বাবাকে ফাঁসিতে ঝোলানোর প্রস্তাব রাখল।
পঁয়ত্রিশ।
ভরসা করা যায়, এমন মানুষ সবসময়ই অন্যঘরে থাকে।
ছত্রিশ।
মাননীয় কর্তৃপক্ষ, আপনি কর্তৃপক্ষ হবার আগে কী ছিলেন, সে ইতিহাসটা আমি জানি।
সাইত্রিশ।
‘পৃথিবীর মঙ্গলের জন্য’ কিছু ইতর, কপট, হুজুগে মানুষ মিলে আমার মেরুদণ্ডটি ভেঙে দিলো।
আটত্রিশ।
অতীত কখনো ফিরে আসে না, অতীত বর্তমানকে কেবলই গ্রাস করে।
উনচল্লিশ।
নির্বোধের প্রশংসা যারা করে, তাদের সবাই কিন্তু নির্বোধ নয়।
চল্লিশ।
বিবেক বিক্রি করতে না জানলে ধনী হওয়া যায় না।
একচল্লিশ।
মেয়েরা নিজেদের ভাবে দেবী দুর্গার মতো, যাঁর সৃষ্টি ও শক্তি, দুইই হয়েছে পুরুষের কল্যাণে!
বিয়াল্লিশ।
পৃথিবীতে যৌনতার প্রয়োজন না থাকলে খুব কম মেয়েই ছেলেদের মুখ থেকে ওরকম অকুণ্ঠ প্রশংসা শুনত, এমন-কী বেশিরভাগ ছেলে তখন মেয়েদের আদৌ সময় দিত কি না, সন্দেহ আছে।
তেতাল্লিশ।
দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত মনিবরা ভৃত্যদের ভৃত্যের চোখেই দেখে। ভৃত্যের সাথে একসাথে বসে ডায়নিং-টেবিলে খাওয়ার সময়ও কিন্তু মনিবের মনে থাকে, আমি আমার ভৃত্যের সাথে বসে খাচ্ছি (বন্ধুস্থানীয় কারো সাথে নয়)। এখানে কোনো মহানুভবতা নেই, এটা তার কাছে এক ধরনের আত্মতৃপ্তি।
চুয়াল্লিশ।
বখেযাওয়া ছেলেটিই মাকে ভয় দেখায়, অমুক জিনিসটা না দিলে আমি কিন্তু বখে যাবো!
পঁয়তাল্লিশ।
কাঁদতেকাঁদতে চোখের জল শুকিয়ে গেলে কাঁদার সুবিধার্থে লোকে নদীর জলে ঝাঁপ দেয়।
ছেচল্লিশ।
দরিদ্রদের ঈশ্বর এবং ধনীদের ঈশ্বর ভিন্ন দুই ঈশ্বর। এমন-কী প্রার্থনার কায়দাকানুনও ভিন্ন।
সাতচল্লিশ।
ঈশ্বরের ইচ্ছায় আমরা ভাল আছি, ঈশ্বরের ইচ্ছায় ওরা ভাল নেই।
আটচল্লিশ।
ছোট কলিজার মানুষ সবসময়ই মুখে বড়োবড়ো কথা বলে।
উনপঞ্চাশ।
যে তার জীবনে জলের স্বাদ পায়নি, সে কখনো তৃষ্ণার্ত হয় না।
পঞ্চাশ।
বেঁচেই আছো যেহেতু, অপরাধের ভাগ কিংবা দায় তো কিছুটা নিতেই হবে! তুমি অপরাধ করোনি? বুঝলাম, কিন্তু সেটা তোমার সমস্যা, পৃথিবীর নয়।
একান্ন।
বাহুতে যার জোর কম, মাথায় তার চাপ বেশি। মাথায় যার জোর কম, বাহুতে তার চাপ বেশি।
বায়ান্ন।
মদ খেতে হলে তো আর বার লাগে না, অতএব, বারে যাওয়ার সময় সাথে কাউকে নিয়ে যেয়ো। সুপথে একা হেঁটো, কুপথে সঙ্গী রেখো।
তেপান্ন।
ধর্ষিতা হওয়াটা যার গরজ হয়ে দাঁড়ায়, তার চাইতে অসহায় আর কেউ নেই।
চুয়ান্ন।
শয়তান যখন বোকার মতন কোনো একটা ভুল করে বসে, তখন সে ভুল নিয়ে বাকিরা দ্বিধায় পড়ে যায়।
পঞ্চান্ন।
পরের স্ত্রীর কথা ভেবে দুঃখ বাড়িয়ে কী লাভ?
নিজের স্ত্রীর কথা না ভেবে সুখ বাড়িয়ে কী লাভ?
ছাপান্ন।
দাদীমা এ বয়সেও সুঁইয়ের ছিদ্র খুঁজে পান, কিন্তু চশমাটা খুঁজে পান না।
সাতান্ন।
ওদের একজন আমার মাথায় রিভলভার ঠেকিয়ে গুলি করে আমাকে মেরে ফেলার পর বাকিরা এসে লাশের শরীরে অনেকগুলি লাথি মেরে ‘আমার মৃত্যুটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব’ পালন করল।
আটান্ন।
আমার তৃষ্ণার সময় যে বন্ধুটি জলের খোঁজও দেয়, সে কেবলই বন্ধু নয়, সে আমার ভাই;
আমার তৃষ্ণার সময় যে ভাই জল দেয় না, সে তো বন্ধুই নয়, ভাই হওয়া তো অনেক পরের কথা!
উনষাট।
যারা দিনে সাধু, রাতে চোর, তাদের চাইতে যারা দিনে চোর, রাতে সাধু, তারা বেশি ভয়ংকর।
ষাট।
যার কলম চলে, তাকে হাত চালিয়ে বাঁচতে হয় না।
যার হাত চলে, সে চাইলেও কলম চালিয়ে বাঁচতে পারে না।
একষট্টি।
আইন বানানোর চাইতে আইনের প্রয়োগ করা বেশি জরুরি,
তার চাইতে বেশি জরুরি, প্রয়োগটা যেন প্রয়োগকারীর উপরেও সমানভাবে হয়।
বাষট্টি।
যতদিন পর্যন্ত তোমার মাথাভর্তি চুল আছে,
ততদিন পর্যন্ত টাকের চিকিৎসার উচ্চমূল্য নিয়ে হৈচৈ কোরো না।
তেষট্টি।
সামনে এলে……ভাল তো, দাদা?
পেছনে গেলে……শালা, গাধার গাধা!
চৌষট্টি।
ভাল থাকতে চাইলে নিজে দুধ খেতে শিখো, অন্যকে মদ খেতে শেখাও।
পঁয়ষট্টি।
তোমরা চোখের জলে দুঃখ মাপো, তাই যাদের দুঃখ বেশি, তাদের দুঃখের খোঁজ কখনো পাও না।
ছেষট্টি।
গ্রাজুয়েট হবার পর থেকে সময়ের প্রয়োজনে সে নির্বোধ হতে শুরু করলো।
সাতষট্টি।
যার জীবনের সেতুটি ভেঙে গেছে, তার কাছ থেকে সেতু টেকানোর বুদ্ধি চেয়ো না।
আটষট্টি।
হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে আমরা উপার্জন ও সঞ্চয় করি এমন কিছু মানুষের জন্য, যারা ধরেই নিয়েছে এটা ওদের প্রাপ্য ও আমাদের দায়িত্ব, অতএব, এটার জন্য কৃতজ্ঞ হওয়ার কিছু নেই।
উনসত্তর।
কখনোকখনো মাথাব্যথা দূর করতে মাথা কেটে ফেলতেই হয়, যখন মাথাকে বাদ দিলেই বরং শরীর ভাল থাকে।
সত্তর।
ঈশ্বরের কৃপায় সে নির্লজ্জতা ও অর্থসম্পদ, দুইই পেয়েছে, এবং একটি সুখী জীবন কাটিয়ে দিচ্ছে।
একাত্তর।
একজন অধার্মিক খুনিরও শেষ অজুহাত: ঈশ্বরই আমাকে দিয়ে ওটা করিয়েছেন।
বাহাত্তর।
স্বর্ণ দামি বলেই তোমাকে স্বর্ণের গয়না বানিয়ে দিয়েছি, তুমি রূপার গয়না পরতে চেয়েছিলে, এটা আমার মাথায় ছিল না।
তিয়াত্তর।
অন্ধদের দেশে দেখতে চাওয়াই সবচাইতে বড়ো পাপ।
চুয়াত্তর।
দেখো, তাড়াহুড়োয় সন্তান হয়ে গেছে, কিছু মনে কোরো না, চলো, এইবার আমরা ভালোবেসে বিয়ে করি!
পঁচাত্তর।
কাক কিন্তু স্বর্গে গেলেও হাগে, এটা মাথায় রেখে কাককে ফ্রেন্ডলিস্টে রেখো।
ছিয়াত্তর।
এখানে মানুষের সুস্বাদু মাংস পাওয়া যায়: আসুন, খান, তৈরি থাকুন।
সাতাত্তর।
ভারি করতে হয় তো পকেট ভারি করে নাও, কবর তো আর ভারি করা যাবে না!
আটাত্তর।
সঙ্গী হিসেবে মানুষের চাইতে কুকুর উত্তম, তবু আমাদের মানুষের সাথেই চলতে হয় কিছু মানুষকে ‘কুকুর’ বলে গালি দেয়ার জন্য।
উনআশি।
কিছু অপরাধের শাস্তি হওয়া উচিত মৃত্যুদণ্ড, তা না হলে অপরাধী আগেরবারের মতো ঈশ্বরের ক্ষমাশীলতার উপর অগাধ বিশ্বাস রেখে অপরাধটি করে ফেলে।
আশি।
দুই বন্ধু মেয়েটির জন্য নিজেদের মধ্যে তুমুল লড়াই করলো, অতঃপর মেয়েটিকে অন্য একজনের হাত ধরে চলে যেতে দেখল।
একাশি।
কেউ সাফল্যের দাম দেয়, কেউ সাফল্যের কৃতিত্ব নেয়।
বিরাশি।
যাদের জন্য জীবন দিয়ে দিলে, তারাই তোমার শ্রাদ্ধের নিমন্ত্রণ খেয়ে যাওয়ার সময় বলে গেছে, খাসির মাংসে লবণ কম হয়েছে।
তিরাশি।
তোমার জন্য চশমা কিনতে গিয়ে সে নিজের দুই চোখই খুইয়ে এসেছে। চশমাটার সাইজ ঠিক আছে কি না, দেখে নাও।
চুরাশি।
তোমরা শান্ত হয়ে বসো, এখানে শান্তি আসুক; তবে আমাকে শান্ত হতে বোলো না।
পঁচাশি।
পড়ার চাপে চুল পেকে গেল, তবু কিছুই শেখা হল না।
ছিয়াশি।
ঘুমিয়ে থাকলে সৌভাগ্য আকাশ থেকে নেমে আসে না।
সাতাশি।
জন্মের পর থেকে দেখে আসছি, এই পেয়ারা গাছে আম ধরে, দয়া করে এখন আর এই গাছের নাম ‘কাঁঠাল’ রাখবেন না।
আটাশি।
তোমাদের গ্রামে থেকে আমাদের গ্রামে কী আছে, কী নেই, তা নিয়ে কথা বোলো না; এখানে এসো, সব বুঝে যাবে।
উননব্বই।
আসুন তবে, করার মতো অন্য কিছু না থাকলে বরং যুদ্ধই করি।
নব্বই।
তুমি যার কোম্পানিতে চাকরি করছ, তার মা একসময় তোমাদের বাড়িতে কাজ করতেন, এটা ভেবে তোমার এতো আনন্দ হচ্ছে কেন?
একানব্বই।
ভেতরে কিছু না থাকলেই বরং লাফাও বেশি, তোমার লাফালাফিকে মূল্যায়ন করার অনেক মানুষ পেয়ে যাবে, ওরাও তোমারই দলের কিনা!
বিরানব্বই।
ঈশ্বরের ইচ্ছায় শয়তান আমার পাশে আছে, আমার আর ভয় কীসের?
তিরানব্বই।
দুই পয়সার কর্মীর বেতন দুই পয়সাই হয়।
চুরানব্বই।
অনেক চেষ্টার পরও অক্ষরজ্ঞান হল না বলে রাগে ও দুঃখে সে অনেক কবিতা লিখে ফেলল।
পঁচানব্বই।
যার টাকাপয়সা কম, তার ঘরে লক্ষ্মীদেবীর আসাযাওয়াও কম। লক্ষ্মীর কৃপায় লোকের ধনলাভ হয় না, বরং ধনলাভ হলে লোকে বেশিবেশি লক্ষ্মীর কৃপা চায়।
ছিয়ানব্বই।
সংক্ষেপে বলতে গেলে, এইটুকুই বলবো, ভাল থাকতে চাইলে চুপ করে থাকো। ধরে নাও, তোমার খুব বাথরুমে যাওয়া দরকার, কিন্তু আশেপাশে কোথাও কোনো টয়লেট নেই। চেপে রাখো, তোমার আগেও অনেকে চেপে রেখেছে, ভবিষ্যতেও রাখবে। চাপো আর বাঁচো!
সাতানব্বই।
ডেস্টিনি কোম্পানির পতনের পরও, মুখেমুখে বড়লোক হয়ে যেতে আমি অনেক নির্লজ্জকেই দেখেছি।
আটানব্বই।
আমার কাছে পাঁচটা আপেল ছিল, তার কাছে সাতটা আপেল ছিল; তার সাথে বন্ধুত্ব করে আমি ছয়টা আপেলের মালিক হয়ে গেলাম।
নিরানব্বই।
আসুন, আমরা পরস্পরের দিকে না তাকিয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে এগিয়ে যাই। এইটুকু স্বার্থপর হতে না পারলে বরং আশ্রমে চলে যাওয়া ভাল।
একশো।
সে ডিনারের নিমন্ত্রণ করে আমাকে তার বাসায় নিয়ে কম খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে বোঝাতে শুরু করলো।
একশো এক।
তুমি চাইছ, আমার চোখের নিচে কালি না পড়ুক, আবার সে তুমিই আবার আমাকে বিশ্রাম নিতে দিচ্ছ না।
একশো দুই।
কেউ চুরি করে ধরা পড়ে, কেউ চুরি করে না বলে ধরা পড়ে। চুরি করার চাইতে ধরা পড়া বড়ো অপরাধ।
একশো তিন।
ভুল করে ক্ষমা চাইলে কখনোকখনো ক্ষমা পাওয়া যায়, কিন্তু ভুল না করেও চাপে পড়ে ক্ষমা চাইলে বাড়তি নির্যাতন ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায় না।
একশো চার।
আপনার চাইতে বড়ো কাউকে আপনার সামনে মাথানিচু করতে বাধ্য করলে আপনার অবস্থান প্রকৃতপক্ষে আরো নিচে নেমে যায়।
একশো পাঁচ।
অভাবী মানুষের কাছে একটাকার দামও একশো পয়সা!
একশো ছয়।
বুলেট ক্ষমতাধরদের গায়েও চুমু খেয়ে বিদ্ধ হয় না।
একশো সাত।
তোমার কিছু একনিষ্ঠ শ্রোতা দরকার, কিছু মানুষের টাকা দরকার, যা তোমার আছে; অতএব, তুমি একজন ভাল বক্তা। পদ, ক্ষমতা ও অর্থের জোরে অনেক অথর্বকে সুবক্তা হতে দেখেছি।
একশো আট।
যারা তোমাকে ঘৃণা করে, তারা তোমার নাম দিনে যতবার উচ্চারণ করে, ততবার ঈশ্বরকে ডাকলে তাদের ঈশ্বরদর্শন সে কবেই হয়ে যেত!
একশো নয়।
ভাই, এক মিনিট! গরু কিন্তু পরিবেশের উপকার করার জন্য মলত্যাগ করে না।
একশো দশ।
গরীবরা সবাই বড়লোক হয়ে গেলেও দেশের অবস্থা বদলাবে না। মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গি, এই দুইয়ের মধ্যে পরিবর্তন না আনলে হয়তো আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়ে যাবে, অবকাঠামোগত উন্নয়ন হবে, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা-ক্ষেত্রে আমরা এগিয়ে যাবো, কিন্তু এরকম ইতর, কপট ও হুজুগেই থেকে যাবো।
একশো এগারো।
যে অন্যদের চাইতে এগিয়ে গেছে, জনগণের সুষম উন্নয়নের স্বার্থে, তাকে হত্যা করা হোক! গাধাদের রাজ্যে স্বাভাবিকভাবেই সিংহ টিকতে পারে না।
একশো বারো।
বর্তমানকে সহ্য করো, অতীতকে তো সহ্য করেই তো বর্তমানে পৌঁছেছ!
একশো তেরো।
ভূত নিজেই বোঝে না যে তাকে কেউ সম্মান করে না, জাস্ট ভয় পায়।
একশো চৌদ্দ।
ভুল রাস্তাটাও চিনে রাখো যাতে ওটা এড়িয়ে চলতে পারো কিংবা দায়ে পড়ে ব্যবহার করতে পারো।
একশো পনেরো।
অসহায়দের জন্য ঈশ্বর আছেন, অন্তত অসহায়রা এটা বিশ্বাস করে বেঁচে থাকে।
একশো ষোলো।
দুই দিন লাফায়, দুই শতক ঘুমায়।
একশো সতেরো।
বিশ্বাস করুন আর না-ই করুন, ক্লাসের ফার্স্টবয়ের বইয়ের উপর সূর্যের বাড়তি কোনো আলো পড়ে না।
একশো আঠারো।
নরখাদকের কাছে নিজের শরীরের তারিফ কোরো না।
একশো উনিশ।
আমার স্ত্রী চিকেনটা ভাল রাঁধতে জানে, কেননা আমার মা ডালটা ভাল রাঁধতে জানতেন।
একশো বিশ।
বাঘ মানুষের মাংস খেয়ে কারো কাছে গল্প করে না, মানুষ বাঘের মাংস খেতে পারলে নির্ঘাত পুরো পৃথিবীকে জানিয়ে দিত।
একশো একুশ।
দিয়াশলাই তো কেবল একটা চুমুই খায়, বেচারা কাঠিই বোঝে পুড়তে কেমন লাগে!
একশো বাইশ।
চিন্তাভাবনা না করেই যে প্রতিশোধ নিয়ে ফেলে, তাকে এর পরিণতি ভোগ করতে হয়।
একশো তেইশ।
গরীবরা মোমবাতিতে ডিনার করে, বড়লোকরা মোমবাতিতে ক্যান্ডেললাইট ডিনার করে।
একশো চব্বিশ।
যার ঘরে খাবার নষ্ট হচ্ছে, সেও লাইনে দাঁড়িয়ে মহাপ্রসাদ নেয়। এর নাম খিদে নয়, বিশ্বাস।
একশো পঁচিশ।
মানুষ মূলত নির্দয়। উপযুক্ত পরিবেশে দলবদ্ধভাবে মানুষের আসল চেহারা বেরিয়ে আসে।
একশো ছাব্বিশ।
অন্ধকারে একটা মেয়ের গায়ে হাত দিতে পুরুষ হতে হয় না, কাপুরুষ হলেই চলে।
একশো সাতাশ।
কখনোকখনো পরিবারের বিরুদ্ধে গিয়েও দাঁড়াতে হয়, নইলে সারাজীবনই আফসোসে কাঁদতে হয়। পরিবারের কিছু সিদ্ধান্ত থাকে, যেগুলি নেয়া হয় সময়ের দাবিতে, আপনার মনের দাবিতে নয়। চুপচাপ মেনে নিলে সারাজীবনই আফসোসে কাটাতে হবে—শুধুই আপনাকে, আর কাউকে নয়।
একশো আটাশ।
ফেসবুকে মোটামুটি সবারই মূল কথা একটিই: দেখুন, আমি আপনার চেয়ে এবং আপনার আমার পরিচিত সকলের চেয়ে ভাল ও সুন্দর। অতএব, আমার ভালত্ব ও সৌন্দর্য আপনি বিনাশর্তে মেনে নিন।
একশো উনত্রিশ।
আমরা সে অপরাধের বিচার চাই, যে অপরাধটা আমার পছন্দের কেউ করেনি।
একশো ত্রিশ।
সবাইই যে নিজের যোগ্যতায় স্বাচ্ছন্দ্যে থাকে, তা নয়, অনেকেই সৌভাগ্যের জোরেও স্বাচ্ছন্দ্যে থাকে।
একশো একত্রিশ।
বিচারহীনতার সংস্কৃতির প্রথম কথাটিই হচ্ছে: ঈশ্বর এর বিচার করবেন।