: আজকের পর থেকে আমাদের আর কখনও কথা হবে না।
: ভালো থাকবে বলেই কি এই দূরত্ব?
: আমি ভালো নেই, নীড়।
: কারণ জিজ্ঞেস করব না... তুমি যতটা স্পর্শকাতরতায় আমার বুকে পাগলের মতো ঠাঁই খুঁজেছিলে, সেই গোধূলি-লগ্ন কি ফুরিয়ে গেছে, তিথি?
: হয়তো... কাছে গিয়েছিলাম বলেই দূরে থাকা আজ বাধ্যতামূলক।
: আমি তোমাকে অগোচরে গভীর দীর্ঘশ্বাসের ভিড়ে নিজেকে শেষ করতে দেখেছি; শীতল, ভেজা চোখে, অগোছালো অভিমানে ভেঙেচুরে যেতে দেখেছি।
: এর কোনো কিছুই মিথ্যে ছিল না... শুধু সময়টা মিথ্যে ছিল।
: কেন সব কিছুকে মিথ্যে করে দিতে চাইছ, তিথি?
: আমি যেমনই ছিলাম, তা সামান্য... তোমার জন্য তা তুচ্ছ আবর্জনার স্তূপ ছাড়া আর কিছুই নয়।
: এত হিসেব তো আমি করিনি... তুমি আমার কাছে কতটা মূল্যবান, তা জেনেছে শুধুই আত্মার ভেতরটা। এভাবে রক্তাক্ত কোরো না।
: তোমার যে-কোনো প্রাপ্তিযোগে অক্ষমতার আঁধারে নিমজ্জিত আমি।
: আমার বুকের গভীরে আরও কিছুক্ষণ তোমার নিঃশ্বাস ধরে রাখো, তিথি।
: এর পরেও বলবে থেকে যেতে? 'বলা যায় না বোধ হয়...' কিছু বোলো না... আমি নিজে আমার অপারগতার দায় নিয়ে চলে যেতে চাই।
: তোমার প্রত্যাখ্যান সয়ে যাবার মতো মানসিক শক্তি আমি হারিয়েছি।
: তুমি-ই একদিন বলেছিলে, কেবল 'থেকে যাবার মানুষটি' হয়েই আগলে রবে আমার শরীরে।
: তুমি কি আমাকে কখনো ভালোবেসেছ, নীড়? উত্তর দাও।
: সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজো না।
: তোমাকে আমার সবটা দিয়েও আমি আগলে রাখতে পারব না... আমি খুব ভঙ্গুর। তোমার দেওয়া অল্প আঘাতেই বেপরোয়া হয়ে ছুটে চলেছি।
: নিজেকে বড্ড বেমানান লাগে তোমার সামনে।
: আমার বুকে শুধুই তোমার নিঃস্ব হয়ে-যাওয়া দীর্ঘশ্বাসের রেশ রেখে যেয়ো না, তিথি।
: আমি এর বেশি কিছুই দিতে পারবো না তোমাকে... কেন বার বার আমার অক্ষমতা মনে করিয়ে দিতে চাইছ?
: কেনই-বা বার বার আমার শরীরজুড়ে তোমার নিঃশ্বাস ছোঁয়াও?
: আমাকে এভাবে বাঁচিয়ে রেখে কী পাও তুমি?
: তোমাকে বাঁচতে হবে, তিথি। আমি তোমায় বাঁচিয়ে রাখব।
: আমার চোখে দেখো— কী বিষণ্ণ মেঘ সরাতে তুমি ব্যস্ত!
: তুমি ছাড়া এই ভার আমি অন্য কাউকে দিতে পারব না।
: মৃত্যুকে এভাবে আলিঙ্গন কোরো না, তিথি।
: আমি তোমার, একমাত্র তোমার... রোজ আগলে রেখেছি তোমায় বুকের গভীরে।
: নীড়...
: কেঁদো না, তিথি।
: তোমার প্রণয়ের তীব্র আকুলতা বাঁচিয়ে রেখো অধরে।
: আমি আর পারছি না... আমায় যেতে দাও।