অনিরুদ্ধ, শোনো; কথাটা অহেতুক, তা-ও বলি। কখনো খুব খারাপ লাগলে, কথা বলার কাউকে পাওয়া না গেলে আমাকে নক দিয়ো। আমি তোমাকে সমাধান না দিতে পারলেও তোমার কথা শুনব অন্তত। আমি তোমার চুপচাপ কথা শোনার মানুষ হতে চাই। যে ক-দিন তোমার কাছাকাছি ছিলাম, আমি দেখেছি তোমার একাকিত্ব। ভেতরে ভেতরে তুমিও কত একা, আমি দেখেছি। কাউকে কিছুই বলো না, বুঝতে দাও না, সব চেপে রাখো। কিন্তু আমার চোখকে তুমি ফাঁকি দিতে পারোনি। আমি দেখেছি আরও অনেক কিছুই, যা আসলে দেখা যায় না, খুব খেয়াল না করলে চোখে পড়ে না। এত একলা কীভাবে থাকো? যা হোক, এত কিছু বলার, প্রশ্ন করার অধিকার আমার নেই, জানি। আমি কোনো দাবি কিংবা অধিকার নিয়ে আর আসব না কখনও। তুমি যে কতটা কঠিন হতে পারো, আমিই কেবল জানি! আমি তো তোমার কাছে যখন-তখন আর ছুটে আসি না আজকাল। ছুটে যেতে খুব মন চায়, আমি যাই না। এই যে যাই না, নিজের গলা চেপে নিজেকে থামিয়ে রাখি, তার পেছনেও তো কারণ আছে। তুমি আমার একটা কথা শোনো। তোমার খুব মন খারাপ হলে আমাকে নক দিয়ো, দু-জন একসাথে কাঁদব। আমি আর কোনো কিছু নিয়ে কোনোদিনই অভিযোগ করব না। তোমারও একদম নিজের বলতে কেউ নেই হয়তো, আর আমারও নেই। আমি মন খারাপ হলে এলোমেলো অনেক কিছুই করি, কিন্তু মন সারাতে তোমার কাছে যাই না। আমি এত বুড়ি হয়ে শিখেছি যে, নিজের মন নিজেই সারাতে জানতে হয়। অন্য কাউকে দিলে সে সারাই তো করেই না, উলটো আরও কষ্ট মাখিয়ে দেয়। বেঁচে থাকলে একদিন আমিও তোমার মতো ভালোবাসাকে তুচ্ছ করা শিখে যাব। সময় লাগবে আমার, কিন্তু শিখব। শিখে যাব, কী করে ভালোবাসার বুকে ছুরি চালানো যায়, পায়ের নিচে পিষে ফেলা যায়। আমি পারবই। তুমি দেখে নিয়ো।