আমি তিতলি।
আমি অশ্রুর বন্যা বইয়ে চলেছি, ছুটে যাচ্ছি কোনও এক অচেনা পথে। কেন যাচ্ছি?
আরে, আমরা সবাই-ই তো এমনি করেই অচেনা কোথাও ছুটছি! অন্যেরা যেসব সত্যি বলার সাহস করতে করতেই জীবন পার করে দেয়, আমি তিতলি সেসব সত্যি একসেকেন্ডেই বলে দিতে পারি! আমি অত সমাজ, বিচার-আচার, বিদ্যে-বুদ্ধির ধার ধারি না, ধারবও না কোনোদিনই!
আমার নামের মতনই আকাশে ওড়ার স্বভাব নিয়ে আমি জন্মেছি। আমি শুধুই স্বাধীনভাবে বাঁচতে জানি। নিজে পরাধীন নই বলে আমি পরাধীনতাকে প্রশ্রয়ও দিই না।
তোমরা তো আবার আমার মতন নও। তোমরা স্বার্থপর। তোমরা নিজেরা হও স্বাধীন কিংবা হও পরাধীন, অন্য কাউকে স্বাধীনভাবে মুক্ত বাতাসে দম নিতে দেখলে তোমাদের গা-পিত্তি সব জ্বলে যায়! কেন গো? ভুলভাবে বাঁচতে বাঁচতে ঠিকভাবে বাঁচার রাস্তাগুলোও সব ভুলে গেছ তোমরা!
অবশ্য তোমরা ভুলে গেছ, এ কথাটা সত্য নয় মোটেও, তোমরা তো আসলে ভুলে থাকো! তাই না, বলো? তোমরা সত্যিটা স্বীকার করার সাহস করতে পেরেছিলেই আর কবে?
তা, বেশ করো সত্যিটা ভুলে থাকো! আমার হয়েছে যত জ্বালা! সত্যিটা ভুলতেও জানি না, মিথ্যেতে রং মাখাতেও জানি না। স্বচ্ছভাবে বেঁচে থাকা তো ভীষণ কঠিন, জানো তো? এবং, একইসঙ্গে ভীষণ শান্তিরও। ভাত-কাপড়ের পরে একজন মানুষের নিজের সঙ্গে এই স্বচ্ছতাটুকুই শুধু লাগে। আর কিচ্ছু লাগে না।
তো যা বলছিলাম! আমি আকাশে ওড়ার সময় খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে মানুষের সমস্ত আবেগ, অনুভূতি খেয়াল করি। কী ভীষণ সুন্দর একটা পৃথিবী! পবিত্রতম সব চোখের জলবিন্দুর ঝলকানি আজকাল আর সহ্য করতে পারি না।
আচ্ছা, আমি পাখি হয়ে কোনও ভুল করে ফেলিনি তো?