স্টেশনের চত্বরে যদি সন্ধের গুঁড়ো গুঁড়ো হাওয়ার টানে উলটো দিক থেকে ছুটে-আসা ভালোবাসা আলিঙ্গন করে, যদি আকাশপথে ফিরতি দলে বাদলের গান শুনে উদাসী বাউল সোনামাখা রৌদ্রের বাড়িতে নকশিপিঠা বানিয়ে নিমন্ত্রণ পাঠায়, যদি শেষট্রেনে বাড়ি না-ফিরে ধুলোর অভিমানে যোগসূত্র গেঁথে অভিযোগ করেই বসে এক পথহারানো পথিক, যদি ভাঙামনের ভাঙাভেলায় কষ্ট ভাসিয়ে দিয়ে ঘরের কন্যাটি বলেই ফেলে,...শেষরাতে সে আর ঘরে ফিরবে না, যদি সব সংকোচ ভেঙে দিয়ে কোনও গোলাপি মনের পায়রাদূত এসে মুখ ফুটে বলে যে তার সত্যিই কেউ নেই, যদি একবার কোনও মনময়ূরী-মেঘের পালক এসে তরুণ প্রেমিককে বলতে শেখায়,---ভালোবাসি, যদি কোনও একভাবে চাঁদপনা মুখে প্রিয়তমা এসে জানান দেয়,---প্রেমে পড়েছি, তবে কি পারবে না…তোমার ওই কঠোর মনের রুদ্ধ দুয়ার ভেঙে--- স্টেশনের চত্বরে উলটো দিক থেকে আসা ভালোবাসার গতিকে স্থবির করে দিয়ে সেই ভালোবাসাকেই আলিঙ্গন করে নিতে? পারবে কি না উদাসী বাউলের নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে রৌদ্রের বাড়ির দিকে রওনা করতে? পারবে কি না শেষট্রেনে বাড়ি ফিরতে বলে বাতাসের অভিমানকে ভেঙে দিয়ে পথিকের হারানো পথ খুঁজে দিতে? পারবে কি না ভাঙামনের ভাঙাভেলা খুঁজে সুখগুলোকে আবার ঘাটে নোঙর করে ঘরের কন্যাকে শেষরাতে ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে তার ভাঙামনটাকে জোড়া দিতে? পারবে কি না কোনও সংকোচভাঙা গোলাপি মনের পায়রাদূতের সেই কেউ একজন হয়ে উঠতে? পারবে কি না তরুণ প্রেমিকের সেই ‘ভালোবাসি’ কথাটির প্রতিউত্তর হয়ে যেতে? পারবে কি না প্রিয়তমার সেই ‘প্রেমে পড়েছি’ উপন্যাসের প্রথম পরিচ্ছেদেই প্রেমিকপুরুষটি হতে? পারবে কি না…সত্যিই? পারবে নিশ্চয়ই! পারতে যে তোমাকে হবেই! আজ--- পথ চেয়ে আছে মহাকাল। গতি রোধ করেছে সংশয়। শূন্যে ভাসছে পৃথিবী। অবাক চোখে তাকিয়ে আছে মাতাধরিত্রী। তোমারই অপেক্ষায় থেমে আছে সবকটা প্রেমময় বসন্ত। তোমার পারদর্শিতায় গর্বিত হবে বলেই তো থমকে আছে পুরো মর্ত্যলোক। তোমাকে যে পারতেই হবে! পারবে তুমি নিশ্চয়ই!