সুখের ছায়ায় শূন্যতা



কী নেই ছেলেটার!
বাবা-মা, ভাই-বোন, একটা পরিপূর্ণ পরিবার,
একটা শুদ্ধ চাকরি, অর্থ-কড়ি—সবই তো আছে!
যাকে জীবনের সব রং আপন করে নিয়েছে,
কোনো-না-কোনো রূপে সে মূলত সুখী।
তবুও—কী যেন একটা নেই ছেলেটার!

থাকার তুলনায় না-থাকাটা বোধ হয় একটু কমই হবে,
তবুও—
মণ্ডলবাড়ির গাবগাছের ডগায় শাদা বকের গা বেয়ে
যেমন রোদ ছলকে নেমে আসে মাটিতে,
ঠিক তেমনি করে ছেলেটার থাকাগুলো নয়, বরং
না-থাকাগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে দুয়ারে, উঠোনে, প্রাঙ্গণে।

সব থেকেও কিছু-একটা না থাকা—মৃত্যু বুঝি!?
তবে, আর দশজনের মতো ঠোঁটে-চোখে মৃত্যুকে বসতে দেয়নি ছেলেটা,
বরং প্রিয়তমার আঁচলের মতোই পরম যত্নে
মরে-যাওয়া চামড়া খুলে নেয় পাটে পাটে!
হ্যাঁ, এভাবেই ছেলেটা মৃত্যুকে মেরে, শেষতক জীবনের কাছে যেতে চায়।

তাই,
দিনের আলোয় রাত্রির শবদেহ পুড়িয়ে
ছেলেটা আঙুল বাড়িয়ে দেয় ঝলমলে আকাশে,
যেখানে মেঘেরা দূরে দূরে ছুটে যায়—
ধরতে পারে না—ছেলেটা বুঝে যায়,
সবাই তো মেঘ ছুঁতে চায়, তাই মেঘেদের এত তাড়া…!

কোনো এক ঘোরলাগা সন্ধেয়,
যখন মন কেমন করে,
কিন্তু চোখের পাতা বিশ্বস্ত কুকুরের মতো পোষ মেনে নেয়,
তখন—হয়তো তখন মেঘেরা বৃষ্টি হয়ে নেমে শান্ত করবে হৃদয়—
সেই আশায় ছেলেটা আবার জীবনে ফেরে।
প্লেট-বাটি নিয়ে বসে—
...আমায় অন্তত ভাত দাও, নরম শান্তি-মাখানো একগ্রাস ভাত!

ছেলেটা কি তবে শান্তি খুঁজছিল?
ছেলেটার কি তবে শান্তির অভাব?
Content Protection by DMCA.com