যাপনের প্রবীণত্ব

আপনার একটা বয়সে মনে হবে, আপনি যাকে ভালোবাসেন, সেই মানুষটাই দামি ও জরুরি সবচাইতে বেশি, বাকিসব কিছুই না।

মানুষটার চোখ আপনাকে দিশেহারা করে দেবে, তার হাসি আপনার ঘুম উধাও করে দেবে। তার কণ্ঠ আপনার কণ্ঠস্বর রুদ্ধ করে দেবে। এতটাই ভালোবাসা জন্মাবে, এতটাই গভীর লাগবে তাকে।

তারপর দিন গড়াবে, বছর ফুরোবে, পুরোনো বটগাছের মতন বয়স বাড়বে। ধীরে ধীরে আপনি বুঝতে পারবেন, দুনিয়ায় আপনি যাকে ভালোবাসেন, আদতে তার চেয়ে বেশি দামি আর গুরুত্বপূর্ণ মানুষ হলো সেই জন, যে নিঃস্বার্থভাবে আপনাকে ভালোবাসে।

তার একটুখানি হাতের ছোঁয়া আপনার চোখে ঘুম এনে দেবে, তার কণ্ঠ আপনার কণ্ঠে সুর এনে দেবে। তার চোখের দিকে তাকিয়ে আপনি গোটা সমুদ্রের তল খুঁজে পাবেন। তার একটা-দুইটা শব্দ‌ও আপনার স্বস্তি ফিরিয়ে দেবে। তার সব কিছুতেই আপনি প্রভাবিত হবেন।

ঠিক শতবছরের পুরোনো বটগাছটির মতন, যে-গাছের গোড়ায় কেউ পানি ঢেলে দিলে, যেমন করে সেখান থেকে ডালপালা নতুন করে গজিয়ে প্রসারিত হতে থাকে, ঠিক তেমনি।

ভালোবাসা এমনই। একসময় আপনি যার জন্য জান দিতে প্রস্তুত থাকতেন, ম্যাচিউরিটি গাঢ় হবার সাথে সাথে দেখবেন, আপনি মূলত আপনাকে যে ভালোবাসে, তার জন্যই জান দিচ্ছেন। এমনটাই হয়; বয়স বাড়ুক, অভিজ্ঞতার ঝুলি ভারী হোক, ঠিক মিলিয়ে নেবেন, ঠিক খুঁজে নেবেন।

দেখবেন, ভালোবাসা সবসময় এক থাকে না। ভালোবাসাও জীবনের স্তরে স্তরে এসে রংবেরঙের হয়ে যায়—কখনো নীল, কখনো সাদা, কখনো লাল, আবার কখনোবা কুচকুচে কালো-ধূসর রঙের কোনো দুঃখের মতন।