অপেক্ষায় থাকি তোমার ফোনকলের… আমার এই বোবা ফোন একলা পড়ে রয়, দিন যায়, রাত যায়, কোনো কল তবু আসে না— এমনকি…না কোনো বন্ধুর, না কোনো বান্ধবীর। আমাকে বোধ হয় কারুরই কোনো প্রয়োজন নেই!
তবু অপেক্ষায় থাকি একটা ফোনকলের। যদি ভুল করেও তোমার ফোন আসে! যদি কখনো জানতে চাও, কেমন আছি!
কত দিন যায়, কল আসে না, কল আসে না! বুকের ভেতর ব্যথা হয়, আবার সেরেও যায়, মাথার ভেতর কিলবিল করে তোমার স্মৃতির পোকা, বুকের ভেতরে সুখ জাগে, কখনো ব্যথা।
এই শহর জানে, তোমায় ছাড়া কেমন থাকি... ইডেনের দু-নম্বর গেইট হাহাকার করে, চেয়ে রয় তোমার অপেক্ষায়, কত প্রেমিক এসে দাঁড়িয়ে থাকে, শুধু তুমি আসো না।
মনে হয়, এই বুঝি কল দিয়ে বলবে, আজ সিনেপ্লেক্সে সিনেমা দেখতে যাব, বিকেলে রেডি হয়ে থেকো, তুমি কিন্তু অত সেজো না!
তারপরও আমি সাজব… চোখে কাজল, ঠোঁটে খয়েরি লিপস্টিক, কানে ছোটো দুল। তুমি গেইটে এসে ফোন দেবে, তারপর রিকশায় তুমি-আমি।
তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে! আমার দিকে তাকাও না কেন? তাকাও না একটু!
এমনি করে কত কথা বলবে তুমি! আমার পিঠে হাত রাখবে, আমি শিহরিত হব। তারপর সদরঘাট, ওখান থেকে বরিশালের লঞ্চে... স্পেশাল কেবিনরুম। তুমি আর আমি।
রুমে ঢুকেই তুমি আমায় জড়িয়ে ধরবে, গলায়, বুকের কাছে চুমু খাবে, গালে, কপালে চুমু খাবে।
আমি তোমার চুল শক্ত করে টেনে ধরব। আরামে আমার চোখ বন্ধ হয়ে আসবে।
পরক্ষণেই আমায় আস্তে আস্তে ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে যাবে কিছু কেনাকাটার জন্য। আমি অপেক্ষায় থাকব, কখন ফিরবে তুমি, কখন লঞ্চ ছাড়বে, কখন আমরা এক হব। রাতদুপুরে আমরা মেঘনা নদী দেখব, সে-নদী উত্তাল…ঠিক আমার মতো।
তারপর… তারপর কেবিনে তুমি আর আমি, আমি আর তুমি।
সমস্ত পৃথিবী নিশ্চুপ। আমার ভেতরে, বাইরে সবটা জুড়ে তুমি, বাইরে উত্তাল মেঘনা, ভেতরে আমার মাতাল নদীতে তোমার অবগাহন।
এভাবে একটা স্বর্গের রচনা হবে। কিন্তু কই, তুমি কল দাও না! মেঘনায় চর পড়ে, তুমি আসো না!