ভাবনাদেয়ালের পলেস্তারা: ১৪৯

ভাবনা: এক হাজার একত্রিশ
......................................
জানিস, আমি কারও এত কাছাকাছি থাকতে চাই-ইনি কখনও, তোর সাথে সব কিছুই যেন কেমন অন্যরকম। অথচ, আমাদের পরিচয়টাই একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনামাত্র। 
এইটুকু তো বুঝিস, আমি কখনও তোর থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারি না। তোর ওপর মাঝেমধ্যে কিছুটা অধিকার দেখিয়ে ফেলেছি... এর জন্য আমি ক্ষমা চাইছি। ভালোবাসার মানুষটাকে সবসময় মুক্ত রাখতে হয়—আমি জানি রে!
তুই যেখানেই থাকিস... ভালো থাকিস। তুই-ই সবসময় আমার সবটা জুড়ে থাকবি...আর কেউ নয়।





মনটা আসলে কেমন? মন অনেকটা কম্পিউটারের মতো। অভিজ্ঞতাকে মন প্রথমে বোঝে— অতীতের সঞ্চিত তথ্য, অতীতের গতি, স্মৃতি, ভ্রম, সময়, আত্ম-সম্মোহন, বিভিন্ন অভ্যাস, নানান আসক্তি, বিচিত্র সব শর্তারোপ …এসবের ভিত্তিতে। তারপর উপলব্ধি করে—সচেতনতার অদ্বৈত স্বভাবকে—যেখানে অভিজ্ঞতা আর অভিজ্ঞতার অধিকারী আলাদা নয়। অভিজ্ঞতাই অভিজ্ঞতার অধিকারী। এই উপলব্ধিই মনকে স্থাপন করে এক অদ্বৈত অবস্থায়—যেখানে থাকে পর্যবেক্ষণ, কিন্তু কোনো পর্যবেক্ষক থাকে না। এখান থেকেই উন্মোচিত হয় সচেতনতা—প্রাথমিক প্রত্যক্ষ অনুভূতি হিসেবে, যেখানে সর্বজনীন চেতনা প্রকাশিত হয় বাস্তবতার মূলভূমি রূপে।
হঠাৎ করেই, মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গেল! খুব গভীরভাবে স্পর্শ করলাম—আমার গালবেয়ে গড়ানো অশ্রুর এক ফোঁটা! নিজের ওপর বড্ড করুণা হলো! 
তোকে জড়িয়ে ধরার ব্যাকুলতায় বুকের ভেতর অধীরে কাঁপন ধরল! মনে হলো, গায়ে প্রচণ্ড জ্বর এসেছে...
তোকে এতটা নিবিড়ভাবে জড়িয়ে ধরতে চাওয়ার তীব্র ইচ্ছে—আগে কক্ষনো হয়নি। কত রাত এভাবে অপেক্ষায় থেকেছি... সবই কি আমার কল্পনা?


আমি তোমার নীরবতায় ভেঙে গিয়েছিলাম,
ভয়ানক একাকিত্ব ঘিরে ধরেছিল আমায়।
অদ্ভুত ব্যাপার, আজ তুমি আমার চোখে এক বারও...তাকিয়ে দেখলে না!

অথচ, তোমার চোখে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম...
জীবন এবং মৃত্যুর মাঝামাঝি এই মুহূর্তটা কতখানি পীড়নের।





: তোমার আমাকে ছেড়ে যাবার...এত তাড়া কেন?
: আমি ভীষণ ক্লান্ত।
: তুমি আমায় কতটা ভালোবাসো?
: সময় যতটা দীর্ঘ।
: কখনও ফিরবে না?
: অতীত ফেরে না।
: ভালো থেকো—কথাটি আর বলতে হবে না।
: এটাই আমার শেষইচ্ছা।





সব কিছু বদলে যায়।
সব কিছু জন্ম নেয়।
সব কিছু মরে যায়।

প্রশ্ন হলো—আসলে কী জন্মায়?
আর কীই-বা মরে যায়?

সমুদ্র থেকে যে-তরঙ্গ উঠতে দেখো…
কিছুক্ষণ নেচে চলে,
তারপর আবার সমুদ্রে মিশে যায়।

তেমনই তুমি।
তেমনই আমি।
তেমনই প্রতিটি ফুল, প্রতিটি পাখি, প্রতিটি মানুষ।

রূপ জন্ম নেয় যাপনের ভেতর থেকে,
একমুহূর্ত খেলায় মাতে,
তারপর আবার জীবনের ভেতরেই বিলীন হয়ে যায়।





কিছুই হারিয়ে যায় না।
কিছুই অদৃশ্য হয় না।
তরঙ্গ সবসময়ই সমুদ্র।
মানুষ, প্রাণী, উদ্ভিদ—
সবসময়ই জীবন।

আর এ সব কিছুর অন্তরালে—
সর্বব্যাপী চেতনা।

















আমি আবেগ নিয়ন্ত্রণ করি—
যখন দেখি, আশেপাশের মানুষগুলোর অনুভূতি আমার পক্ষে নেই।

আমি আত্মনিয়ন্ত্রণে মনোযোগী হই—
যখন দেখি, আমার নসিবে আর বেশি সময় নেই।

আমি অভিশাপ এড়িয়ে চলি—
জানি, আমি কারও একান্ত মানুষটা নই।






: তোমাকে আজ এত বিষণ্ণ লাগছে কেন? তোমার মুখটা এমন মলিন কেন?
: সত্য আর কল্পনার মাঝে যে বিস্তর ফারাক, তা কি তুমি জানতে না?






আমি তোমায় কখনও দামি ফুল দিই না। জানো, কেন? ওরা তো ফোটেই তোমার জন্য। ঘাস-লতা'র আড়ালে লুকিয়ে থাকে যে নরম কুঁড়ির দল, ওরাও চায় তোমায় ছোঁয়া, তোমার গন্ধ!

তুমি তো জানোই না অলক্ষে ফুটে-থাকা হাজারো ফুলের গল্প!




তুই আমার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলেও, তুই নিজের সাথে বোঝাপড়াটা ঠিক রাখিস।

তোর সাথে পরিচয় হবার পর থেকে, আমি এখন অবধি যা করছি, তোকে ভেবেই; যা লিখছি, তোর সাথে যোগাযোগটুকু টিকিয়ে রাখতেই। তুই কি জানিস, আমি নিজের জন্য কখনো লিখি না, আমি তো লেখালেখিটাই পারি না! শুধু, তোর সাথে একবার কথা বলার জন্য লিখতাম।

এখন তোর এতটা কাছে থেকেও, আমার এত অধিকার নেই—তোর সব কিছু জানার। তাই বলছি, তুই নিজেকে ভালো রাখিস।

কোনো এক বিশেষ কারণে, আমাদের আত্মা আবার একসাথে হবে, আমি অপেক্ষা করি সেই ক্ষণের জন্য।








দেখলাম, একটা বড়ো অ্যাওয়ার্ড-শো হচ্ছে। তুই মঞ্চে উঠেছিস, স্পিচ দিচ্ছিস। বলে যাচ্ছিস এমন কিছু কথা, যা আগে কখনও কোথাও বলিসনি। সবাই অবাক হয়ে শুনছে।

আমিও সেখানে গিয়েছিলাম। স্বাভাবিকভাবেই, এত ভিড়ের মাঝে তোর আমার দিকে তাকানোর কথা নয়। কিন্তু তুই স্পষ্ট করে তাকিয়ে আছিস আমার দিকেই।

আমি তোর স্পিচ শুনে বুঝলাম, তুই ভেতরে ভেতরে ভীষণ কষ্ট পাচ্ছিস, কিছু-একটা ঘটেছে।

স্পিচশেষে তুই ব্যাকস্টেজে চলে গেলি। আমিও ছুটে গেলাম তোর সাথে দেখা করতে। কিন্তু কোথাও তোকে খুঁজে পেলাম না।

দুই ঘণ্টা ধরে সব জায়গায় পাগলের মতো খুঁজেছি তোকে…

পরে শুনলাম, সবাই বলাবলি করছে…তুই নাকি সুইসাইড করেছিস!

শুনেই আমি হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলাম। মনকে বার বার বলছিলাম…না, তুই এমন কাজ করতে পারিস না। এটা সত্যি নয়। তোর কিছু হয়নি।

কিন্তু না… এ তো একটা দুঃস্বপ্ন! তবু, জানিস, আমি সত্যিই কেঁদেছিলাম ঘুমের মধ্যেও। ঘামতে ঘামতে ঘুম ভেঙে গিয়েছিল আমার। অসহ্য…!




একটা শ্যালক থাকলে সাতটা গাধার কাজ হয়ে যায়, কিন্তু সাত-শো শ্যালক থাকলেও একটা শ্যালিকার অভাব পূরণ করা যায় না।



যেন এক বিপন্ন বিস্ময় খেলা করে—আমাদের অন্তর্দৃষ্টির আরাধ্যে। আমাদের ক্লান্তিকে শান্ত করে...সেই বিস্ময়কর দু-চোখ!



আমি তোকে যতখানি অনুভব করি, ভালোবাসি...আমার মনে হয় না—এ অবধি কার‌ও জন্য আমার বুকের ভেতরটা এমনভাবে থমকে থেকেছে। এতটা সময় নিয়ে আর কার‌ও মধ্যে ডুবে থাকতে দেখিনি আগে নিজেকে।

তুই আমার কাছে ভীষণ আদরের; সম্ভব হলে তোকে আমার সর্বোচ্চটুকু দিয়ে যত্ন করে আগলে রাখতাম।











অনেকগুলো কথা জমে আছে...
শব্দে বাঁধতে পারছি না!
অনেকটা ব্যথা জমে আছে...

তোমার স্পর্শের ক্লান্তি ভুলে,
যেটুকু পরিচয় ছিল গ্রহণযোগ্য—
ক্ষীণ অস্থিরতায় হয়েছিল...
মিথ্যে প্রতিশ্রুতিরা আবদ্ধ।



তুমি কোথাও যেয়ো না, আমিই আসব তোমার কাছে।

নিঃসঙ্গতায়
তোমার বুকের পাঁজরে...
জমতে-থাকা রক্তবিন্দু,
এক মহাসমুদ্রে রূপ নিল!

অব্যক্ত অনুভূতির মুখোমুখি হলে—
মানুষ কতখানি অসহায় হয়ে পড়ে?




: আমাদের দূরত্বটা বোধ হয় সত্যিই বাড়ল?
: চেতনার কোনো দূরত্ব নেই, সমস্যাটা শুধুই শরীরের।
।।


ভালোবাসা দিলেই ভালোবাসা পাওয়া যায়—এই ভাবনাটা কিন্তু ভুল। এক্ষেত্রে প্রয়োজন দু-পক্ষেরই স্বতঃস্ফূর্ত ও নিঃস্বার্থ মনোভাব। কিন্তু কতটা নিঃস্বার্থ হলে পরে স্বতঃস্ফূর্ত থাকা যায়, তা নির্ধারণ করাটা জরুরি।

'নিঃস্বার্থ' বলতে এখানে 'স্বার্থশূন্য' নয়, বরং 'স্বার্থসর্বস্ব না হওয়া'-কেই বোঝানো হয়েছে; অর্থাৎ, নিজের চাওয়া-পাওয়ার চাইতে নিজের মানুষটার সুখ, প্রয়োজন ও তার দিকটাই আগে দেখার যে-ব্যাপারটা। এর কারণ, আপনি যদি নিজেকে সম্পূর্ণ গুরুত্বহীন করে তোলেন, তবে তার জীবনে আপনারও গুরুত্ব কমে যায়।

তবে এক্ষেত্রে জেনে রাখা জরুরি, আপনি ভালোবেসে যাচ্ছেন এবং সেইসাথে প্রতিকদমে তাকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন—আপনি তাকে 'নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসেন', তা আচরণে কিংবা মুখের কথায়—এই ব্যাপারটা নিছক অর্থহীন। আসুন, মনে রাখি, তাকে ভালোবাসছেন আপনার নিজের ভেতরের সুখকে উপলব্ধি করার জন্য, আপনি কাউকে দয়া করছেন না। লোকে ভালোবাসে—নিজের ভেতরের সুপ্ত সুখকে ছুঁয়ে দেখার লোভে।

যে-ভিক্ষুক বস্তুগত ভিক্ষা মাঙ্গে, সে-ও কিন্তু তুষ্টি চায়। দরজা খুলে একমুঠো চাল দিয়ে মুখের উপর দরাম্ করে দরজা লাগালে, ভিক্ষে পাবার পরও, সে তা পারলে যেন ফিরিয়ে দিয়ে বাঁচে! দেয় না শুধু অপারগতা থেকে, তবে সেইসাথে কৃতজ্ঞতাবোধটা কিন্তু তখন উবে যায়। ঠিক তেমনি, ভালোবেসে জোর করে মনে করিয়ে দিলে—এ বরং না পেলে কেমন হতো—এ ভাবনাটাই চলে আসবে, যদিও আমরা প্রতিটি প্রাণীই ভালোবাসার কাঙাল।

তাই ভালোবাসুন নিজের মানুষটাকে ভালো রাখতে, কারণ আপনার চূড়ান্ত ভালো-থাকা তো তার ভালো-থাকাতেই নিহিত।




অথচ, তোমার প্রতি আমার ভালোবাসার তীব্রতা বেড়েছে... উদ্দেশ্যহীন এক সমুদ্রযাত্রার উত্তাল ঢেউয়ের মতন—যার ক্লান্ত হবার কথাই ছিল না।


যে-মেয়েটি ভুল মানুষের প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে, তাকে ভালো পরামর্শ দিয়ে কোনো লাভ নেই; দিলে সে উলটো তোমাকেই ভুল বুঝবে। এ ধরনের মেয়েরা ধরা এবং মারা খেয়েই শেখে।




একটা পুরো রাত কেটে গেল তোমার স্পর্শে। আমি জানি, ওটা কল্পনা— মাথাভর্তি চিন্তার যানজট, এ কোলাহল যেন থামছেই না।

এক ভয়ানক অজ্ঞাত শিহরনের দোলাচলে বিদ্যুৎগতিতে শরীরটাকে স্পর্শ করলে তুমি! ক্রমশই ঠান্ডা হয়ে এল আক্ষেপে-মোড়ানো বুকের পাঁজর।

ভুলগুলো শুধরে নেবার অজুহাতে তোমার গা ঘেঁষে থাকার ইচ্ছেটা উধাও হয়নি; বরং, বেড়েছিল— তুমি জানতেও পারলে না।


তোকে ভুলে থাকতে চাই—
যেন আমার অবচেতন মন
সমস্ত অনুভবে
তোকেই পায়।

তোর সাথে দূরত্ব বাড়াই—
যেন স্মৃতিরা ছুটি নেয়।


নতুন নতুন প্রেমে পড়লে মানুষ ভাত খেয়ে প্লেটেও নামের অক্ষর লেখে।


ভাবনা: এক হাজার বত্রিশ
......................................

পুরুষেরা সাধারণত সমস্যার কথা শুনলেই তৎক্ষণাৎ সমাধান দিতে চায়, অথচ অনেকসময় নারীরা কেবল মনের ভার হালকা করতে চান। তাই যখন সঙ্গিনী অভিযোগ করছেন, তখন চুপ করে শোনা শিখতে হবে।

দৈনন্দিন জীবনে এমন মুহূর্তই প্রায়ই আসে—কর্মক্ষেত্রের অন্যায় আচরণ বা তুচ্ছ কারণে কারও মনে রাগ-ক্ষোভ ভর করে। তখন সমাধান দিতে ছুটে আসার পরিবর্তে কেবল ধৈর্য ধরে শোনা জরুরি—অভিযোগ, রাগ, ক্ষোভ সব কিছুকে—একসময় সেই আগুন ঠান্ডা হয়ে আসে। তারপর একটি আলিঙ্গন, একটু যত্ন, হয়তো একবেলার খাবার—এরপর সম্পর্কের হাওয়ায় বদল আসে।

শান্ত সময়ে ফিরে আসে নরম স্বর—“আমি ভালোবাসি আমাদের কথা বলার ব্যাপারটাকে।” সবচেয়ে বড়ো সমাধান হলো: সমাধান না দিয়ে, ধৈর্য নিয়ে কেবলই শোনা। বাঁচতে হলে মানুষের শ্রোতার প্রয়োজন।
ঠিকভাবে ঠিক মানুষটিকে ভালোবাসতে জানলে ভবিষ্যৎ সুখের সাথে রাখি বাঁধা যায়, জীবনে হাইফেন দিয়ে যুক্ত করা যায় শান্তি।





আমি এখন আর কাউকে বলব না—“তুমি আমার সঙ্গে এমন কেন করছ” কিংবা “তুমি আমাকে ঠকিয়েছ, প্রতারণা করছ।” আমি অভিযোগ করব না, বোঝানোরও চেষ্টা করব না। বরং আমি নিজেকে সরিয়ে নেব সেসব জায়গা থেকে, যেখানে আমার দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে আমাকে অপমান, অবহেলা আর ব্যবহার করা হয়েছে।

এখন আমার একটাই ইচ্ছে—শুধু নিজের জন্য বাঁচব। একেবারে পূর্ণতা নিয়ে বাঁচব। যেসব ভালোবাসা, সম্মান, প্রাপ্য আমি মনে করি আমি ডিজার্ভ করি—সবটা আমি নিজেকেই দেবো। আমার পথচলায় কে থাকল, কে থাকল না—তা নিয়ে আর কোনোদিন কষ্ট পাব না। আমি নিজেই আমার জন্য যথেষ্ট—এটুকু একদিন সবাইকে স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিতে চাই।

বিশেষ করে, সেই দরজাগুলো আমি নিজেই বাইরে থেকে বন্ধ করে আসব—যেসব দরজা আমাকে বার বার আঘাত দিয়ে ভেতরটা ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছে। যাদের আমি একসময় ভেবেছিলাম আমার পুরো পৃথিবী—তাদের কাছে আর কখনও ফিরব না।





আপনি যাকে মাসে মাসে টাকা দিয়ে সাহায্য করেন, কখনও কোনো এক মাসে টাকা দিতে না পারলে, সে আপনাকে জিজ্ঞেস করবে, এই মাসে টাকা দিলেন না যে? এমনকি, তার এই জিজ্ঞাসার মধ্যে রাগের সুরও থাকতে পারে; শুনলে আপনার মনে হবে যেন টাকাটা পাওয়া তার অধিকার! একধরনের অস্বস্তি থেকে আপনি তখন তার কাছ থেকে পালিয়ে বাঁচবেন, যেমন করে লোকে পাওনাদারের কাছ থেকে পালিয়ে বাঁচে!

খেয়াল করলে দেখবেন, সে আপনাকে জিজ্ঞেস করবে না, আপনি কেমন আছেন বা কোনো সমস্যার মধ্যে আছেন কি না। এতগুলি মাস ধরে যে তাকে সাহায্য করে এসেছেন, তার জন্য কোনো কৃতজ্ঞতাপ্রকাশ কিংবা আপনার বর্তমান সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য প্রার্থনার ছিটেফোঁটাও তার আচরণে খুঁজে পাবেন না। সাহায্য করতে পারছেন না, এই বিষয়টিই তার কাছে মুখ্য; আপনি মানুষটার কোনো দাম তার কাছে নেই।

আসুন, উলটো ছবিটাও দেখি। যারা তাকে সাহায্য করছে না, তবে করার সামর্থ্য রাখে, সে কিন্তু তাদের খোঁজখবর নেয়, তাদের দেখলে আপনার চাইতে বেশি আদরকদর করে। তার কাছে ঘেঁষতে তাদের কোনো অস্বস্তি হয় না। তার সাথে আলাপ করতে গেলে তাদের নিজেকে কেমন জানি চোর-চোর লাগে না। তাদের কাছে মেসেজ পাঠানোর সময়ে সে তাদের কুশলাদি জানতে চায়, আর এদিকে আপনার কাছে তার মেসেজ আসবে এমন: অমুক অমুক মাসের টাকাটা দিলেন না যে? দ্রুত পাঠিয়ে দিলে ভালো হয়। (আপনি কোনো অসুবিধের মধ্যে আছেন কি না, ওতে তার কিছুই এসে যায় না।)

ভাবুন তো, আপনি নিজেও একদিন তাদেরই দলে ছিলেন, যাদের খোঁজখবর সে আন্তরিকভাবে (?) নেয়। মানুষ এমনই—যে সাহায্য করে, তাকেই সবার আগে আঘাত করে। প্রত্যাশাহীনতাই শক্তি, অথচ এই প্রত্যাশার কূটফাঁদ থেকে অনেক বড়ো মানুষও বেরোতে পারেন না।






আমারে হারানোর পর তোমার একদিন খুউব আফসোস হইবো, নীলজলে সবুজ ঢলের মতন তোমার চোখেও অশ্রুর ঢল নামবো।

অদূরে দেখা-যাওয়া কাঞ্চনজঙ্ঘার মতন আমিও অধরা হইয়া যাব—দেখা যাইবো, কিন্তু ধরা যাইবো না।

আগের মতন যখন-তখন যেমন-তেমন কইরা ধরতে চাওয়ার অধিকার হারানোর পর মধ্যরাতে তোমার বুক চিরে দীর্ঘশ্বাসের ঝড় ব‌ইয়া যাইবো।

কাউরে কইতেও পারবা না, সহ্য করার জন্য আমারেও পাবা না।

একদিন, আমারে হারানোর পর তোমার অনেক দুঃখ হইবো, তোমার বুকে স্নেহে-মায়ায় আর আদরে মাথা রাখার যে-মানুষটা, তার মতন কোনো নির্ভার বুক কিংবা মাথা দুনিয়ার কোত্থাও খুঁইজা পাবা না। মানুষে-ভরা মানুষের এই দুনিয়ায় জনসংখ্যা পাবা, কিন্তু মানুষ পাবা না।

আমারে হারানোর পর তোমার একদিন সত্যই খুব কান্না পাইবো; কাঁদতে চাইবা, কিন্তু চোখের অশ্রু বাইর হইবো না। বুকের ভেতরটা সাহারা মরুভূমির মতন শুকাইয়া খাঁ খাঁ হইয়া যা‌ইবো, কিন্তু কাউরে দেখাইতে পারবা না।

আমার মতন এমন আদর করে, এমন কাউরে হয়তো পাবা; কিন্তু তোমারে ভালোবাসে, এমন কেউ আর কখনও আসবে না।

দুঃখ হইবো, আফসোস হইবো, যন্ত্রণা হইবো, তবুও আমারে আর খুঁইজা পাইবা না।

সত্যই, মিলাইয়া নিয়ো, আমারে হারাইয়া একদিন তুমি খুউব আফসোস করবা—ওই আকাশের কসম কাইটা বললাম, যে-আকাশের একই তলে আমরা দু-জন থাকি পাশাপাশি, কিন্তু কাছাকাছি আর থাকি না।
একদিন তুই আর আমি মিলে একটা কফিশপে গিয়েছিলাম কনকনে শীতের রাতে। মনে আছে তোর? আমি স্পঞ্জের রাফ স্যান্ডেল পরেই গিয়েছিলাম। তুই ছবি তুলতে তুলতে শপের সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠবার সময় আমার পায়ের দিকে তাকিয়ে কানের কাছে এসে খুব ক্ষীণস্বরে বলেছিলি, “তুই ঘরের স্যান্ডেল পরেই এসেছিস!”

তোর আমাকে এভাবে বলার যে-ব্যাপারটা…এটা একটা অনন্ত!

তুই যখন আমাকে আদর করিস, তখন তোর চোখে চোখ পড়ে যাবার যে-ব্যাপারটা! কী যে তেজ তোর চোখে! কী যে ভীষণভাবে মরে যেতে ইচ্ছে করে আমার!

তুই বুকে খুব করে জড়িয়ে ধরলে, তখন আমার নিঃশ্বাস ঠিকঠাকমতো নেওয়া না হলে, পরে তোর বুকের ঠিক এপাশ হয়ে শুয়ে থাকার যে-ব্যাপারটা…উফফ্!

মানে তুই একটা যাচ্ছেতাই!

আমি আর লিখতে পারব না এইসব নিয়ে…যাহ্!

তোকে নিয়ে ভাবতে ভাবতে চোখের অর্গাজম হয়ে পুরো বালিশ ভিজে গেছে আমার। কী লজ্জা! কী লজ্জা! ইসস্!









মিউজিকই গভীরতম প্রার্থনা।

আমাদের মাঝে এত অমিল, তা সত্ত্বেও তোমার সাথে আমার মিউজিক-টেস্ট ভীষণ মিলে যায়...ব্যাপারটা খুব অদ্ভুত!

এতে আশ্চর্য হবার কী আছে?
নিশ্চয়ই আছে, ঠিক যেভাবে সাধারণ মানুষেরা কবিদের অসুখের কারণটা ধরতে পারে না।





পুজোর ফুল কেউ পথে ছড়ায় না, দেবতার পায়েই নিবেদন করে।
পথের ধারে দেবতার ঘর; পথ মাড়িয়েই লোকে ওখানে পৌঁছয়। এতে পথের মন খারাপ করার কী আছে?











ভালো আছি আমি—
এক সহজ স্বীকারোক্তি।

প্রতিনিয়তই ভুলভাল বলে আসছি,
এ দৌড়ে যেন আমিও টিকে থাকছি;
কিন্তু আমি যে ভালো নেই—
আমার ভেতরে
তিলে তিলে গড়া
তুমি-টা আর নেই।




তোমার দুঃখ, তোমারই দুঃখ।
তোমার সুখ, সবার‌ই সুখ।




আমার না মানুষ ব্যাপারটা খুব একটা সুবিধার মনে হয় না।






আমাদের গল্প—থমকে দাঁড়ায় রোজ।

এই ভয়াবহ অগ্নিশিখায়—
হৃদয় পোড়ার শোক।

অনুশোচনায় ভারী হয়…
অশ্রুসিক্ত চোখ।

কত লাশের মিছিল শেষে…
মিলবে নতুন ভোর?




প্রতিক্ষণে, তোর অপেক্ষায়... আরও কিছু অনুভূতি অপ্রকাশ্যে রাখি।

ভালোথাকার অভিনয় টুকটাক আমিও করছি।




ভাবনা: এক হাজার তেত্রিশ
.........................................


সংসারে কিংবা প্রেমে ঘরমুখো মানুষগুলো সৃষ্টিশীল মানুষের তুলনায় বেশি সুখে থাকে। আপনি সৃষ্টিশীল কিন্তু আপনার মানুষটা তেমন নয়, কিংবা আপনার মানুষটা সৃষ্টিশীল কিন্তু আপনি ওরকম কিছু নন—তখন অদৃশ্য দেয়ালটা আপনাদের মাঝে যে-কোনো সময় মাথা চাড়া দিয়ে উঠবেই, দু-জনের কেউই টের পর্যন্ত পাবেন না।

যেদিন দমকা ঝড়ে আপনার মনের ঘর টুকরো টুকরো হয়ে যেতে থাকবে, সেদিন লক্ষ করবেন, ঘরের দেয়ালের নয় বরং আপনাদের মাঝের দেয়ালের পুরুত্ব বাড়ছিল এতদিন।
আসলে, শৈল্পিক বা সৃষ্টিশীল মানুষের সাথে থাকতে হলে অন্তত মানিয়ে নেবার শিল্পটা জানতে হয়, নিদেনপক্ষে একা থাকায় অভ্যস্ত হওয়া যেতে পারে। সৃষ্টিশীল মানুষকে তার মতো করে ছেড়ে দিতে হয়।
হ্যাঁ, কেউ কেউ তো আছেই, যারা শিল্পীর শিল্পে মানুষটাকে বেঁচে থাকতে দেখতে ভালোবাসে। ভালোবাসাও কী এক অদ্ভুত জিনিস; যে-কোনো কিছুকেই ভালোবাসিয়েই ছাড়ে!



আমার জীর্ণ হিমশীতল জীবনে তুমি যেন এক উষ্ণ অনুভব! যেন মায়ের আঁচলের ওম! যেন মেঘ ফুঁড়ে উঁকি-দেওয়া সোনা-সোনা রোদ!



অনেকক্ষণ হয়েছে, মাথায় হাত বুলিয়ে দিতেই ব্যস্ত হয়ে আছি। একটু শান্তি অনুভব করতে—এর থেকে বেশি কিছুই...নিজেকে দেবার উপায় জানা নেই আমার।
আমি প্রায়শই ধীরে ধীরে এভাবে নিজের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকি। তখন মনে হয়, আমার কেউই নেই। এই পৃথিবীতে আমার নিজের থেকে বেশি...আমার পাশে আর কাউকেই দরকার নেই। ভয়ংকর রকমের একা একজন মানুষের কি পৃথিবীতে বাঁচার অধিকার নেই?
আমার এ চোখের জলের খোঁজটাও—একান্ত এই বালিশটা ছাড়া আর কেউই তেমন জানে না, রাখে না। তুমি একবার আমার চুলগুলো আলতো করে ছুঁয়ে, মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়েছিলে—সেদিন তোমায় জড়িয়ে ধরে, আমার ভীষণ কান্না পেয়েছিল; তুমি অমন যত্ন করে আমায় আগলে রাখলে—আমার আর কোত্থাও যাবার জায়গা থাকবে না, জানতে বুঝি?—তাই এখন আর রাখো না!




খেয়াল করেছ, তুমি সেদিন অন্ধকারে ভয় পাওনি...আমাকে সারাক্ষণই তোমার বুকের মধ্যে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রেখেছিলে সারারাত। তুমি ভালো থেকো—আমি এভাবেই নিজেকে বাঁচিয়ে রাখছি।
তুমি ভুলে যেয়ো—আমি দূরে সরে থাকার অভিনয় করছি। তুমি চুল খোলা রেখে...আমার সামনে আসবে একবার?
আমার গোছানো জীবনটা এলোমেলো কোরো না...আমি মনে মনে খুব করে চাই—তুমি আবার আমায় ভেবে লিখতে শুরু করো।




রাত জাগতে জাগতে চোখে এমনিতেই কম দেখি; যারা দূরে সরে গেছে, তাদের তো এখন আর দেখিই না।


বাঁচাটা খুব বেশি জরুরি কিংবা গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয়ই নয়। গুরুত্বপূর্ণ হলো, মরার আগে মরে না যাওয়া।

অফুরন্ত সুযোগ পেয়েও যে পেল না তোমাকে, কে বলে, সে বাঁচল জীবনে? রাজ্য তার দখলে থাকলেও হারাল সে জীবনকেই!




প্রেম মানে এইটি পার্সেন্ট ভালোবাসা আর টুয়েন্টি পার্সেন্ট দায়িত্ববোধ। দায়িত্ববোধের পার্সেন্টেজ আরও কমিয়ে ধরলেও বাঁ-পাশের বাক্যটি প্রাসঙ্গিক থাকত।
বিয়ে মানে এইটি পার্সেন্ট দায়িত্ববোধ আর টুয়েন্টি পার্সেন্ট ভালোবাসা। ভালোবাসার পার্সেন্টেজ আরও কমিয়ে ধরলেও বাঁ-পাশের বাক্যটি প্রাসঙ্গিক থাকত।
যার হৃদয়ে একসমুদ্র ভালোবাসা আর একপুকুর দায়িত্ববোধ, তাকে বিয়ে করলে পস্তাবেই।



একটা সময় মনে করতাম—সুখ বুঝি শারীরিক সংস্পর্শেই নিহিত। এমনকি, এক রাতে, খুব প্রিয় এক মানুষকে বলেছিলাম—আজ চলো, আমাদের গভীরতাকে ছুঁয়ে দেখি। কিন্তু ঠিক তখনই আমি দেখলাম, সে আমার শরীরের ক্লান্তি দেখে ভয়ে সরে গেল। সারারাত সে শুধু আমার যত্নে ছিল—জ্বরাক্রান্ত শরীরে জলপট্টি দিচ্ছিল, নীরব স্নেহে আমাকে আগলে রেখেছিল।
সেই মুহূর্তে যেন ভেতর থেকে একটা উপলব্ধি হলো—সুখ আসলে যত্নেই লুকিয়ে থাকে। আর শারীরিক সম্পর্ক, যাকে এতদিন ভেবেছি সুখের চূড়ান্ত রূপ, তা তখন হঠাৎই মলিন ও অতিরঞ্জিত মনে হলো।
এখন আমার অবস্থা যেন সেই বিদ্রোহী আত্মার মতো—যে মৃত্যুক্ষণে নিজের চেনা দেহটিকে ছাড়তে চায় না। আমি নিজের ভেতরের অনুভবকে বোঝাতে চাইলেও, নিজেকেই বুঝে উঠতে পারছি না। আমি আত্মাকে শৃঙ্খলে বাঁধতে চাইছি, যুক্তির পথ দেখাচ্ছি, বার বার বুঝিয়ে বলছি—তবু সে বিদ্রোহ করে চলেছে।
সে বার বার তোমার কাছেই ফিরতে চাইছে।

তোমার হঠাৎ চলে যাওয়া... আমাকে ভীষণভাবে ব্যথিত করেছিল ঠিকই, তবে আমি এ-ও জানতাম—তুমি নিশ্চয়ই ভালো থাকবে।
চলে যাওয়াই মানুষের ধর্ম। কেউ কি চিরকাল থেকেছে?



আবেগ-অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই অযাচিত কষ্টগুলো থেকে নিজেকে মুক্ত করা যায়; তবে আমি নিজেই এর থেকে পরিত্রাণ প্রার্থনা করিনি।
যে-মানুষটা আবেগশূন্য—তার জন্য নিজের মূল্যবান অশ্রুর অপচয় রীতিমতো অপরাধ। এর পুনরাবৃত্তি ঘটলে মেনে নিতে হবে, নিজেকে ভালো রাখার যোগ্যতাটুকুও আপনার নেই।
বাস্তববাদী মানুষেরা কখনও আবেগপ্রবণ হবার চেষ্টা করে না। একটা সময় পর মানুষ কেন একাকিত্বের রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে? না কি ভান করে?




তোমাকে বাদ রেখে নিজের অনুভূতিকে—
একমুহূর্তের জন্য কল্পনা করতেই...
আমার হৃদয় মৃদুকণ্ঠে মিনতি করে বলেছিল—
প্রস্থান অসম্ভব!

আমি করুণ সম্মতিতে...
অপেক্ষায় মগ্ন হলাম।





নিজেকে ভালো রাখার অনেক চেষ্টা করেছিলাম, জানো! হয়তো সেই অর্থে, নিজের জন্য কিছুই করতে পারিনি। যে-সময়টা জুড়ে তোমায় ভালোবেসেছি—নিজের ভেতরের মানুষটাকেই খুঁজেছি...এই-বা কম কীসে!
আমি এখন নিজেকে কাঁদতে দিই, প্রয়োজন ছাড়া কান্না চেপে রাখি না। কষ্ট দিতে হবে নিজেকে—তাই তোমাকে ছেড়ে দিলাম। সবাইকে সব কিছুতে মানায় না, আমি তোমার পাশে বড্ড বেমানান।
আমার আবার খুউব বেশি ভালো থাকার অভ্যেস নেই। আর অভিনয়টা আমি করতে শিখিনি এখনও; তাই সরাসরিই বললাম—ভালো থেকো।




প্রেমে পড়ার আগের মুহূর্তটাই সবচেয়ে সুন্দর...
বাকি সবটাই টিকে থাকার জন্য অ্যাডজাস্টমেন্ট।
আর ভালোবাসা ব্যাপারটা তো একতরফা— অনেকটা একা একা রুম বন্ধ করে কাঁদার মতো। তাতে শান্তিও লাগবে, আবার কষ্টও চেপে বসবে।
আমার তো এখন এমনই মনে হয়…



ছেলেরা যতটা চায় ভালোবাসা, তার চেয়ে অনেক বেশি চায় সম্মান; অথচ বোকা মেয়েগুলো শুধুই ভালোবাসতে শিখল।
ছেলেরা যতটা চায় প্রেম, তার চেয়ে অনেক বেশি চায় শান্তি; অথচ বোকা মেয়েগুলো কেবলই প্রেমে বাঁধতে শিখল।


দেনাদারকে ফোনে পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার!



ভালোবাসা মানেই দীর্ঘতর অপেক্ষায়, নিজেই নিজের শ্বাসরোধ করে...মৃত্যুকে স্বেচ্ছায় আলিঙ্গন করা। আমি যতবার আমার ভেতরের মানুষটাকে ভালো রাখতে পারিনি...ততবার কী যে ভীষণ যন্ত্রণায় ছটফট করেছি—তার হিসেবও আজ আমার কাছে নেই৷
আমার নিজের ওপর বিশ্বাস কতবার যে উঠে গিয়েছে—তা আজ কল্পনা করার সাহসটুকুও আমার নেই। কতবার অবিশ্বস্ত বুকে জড়িয়ে রেখে, মিথ্যে গল্প শুনিয়ে থেমে যেতে হয়েছে...তার খোঁজ কেউই জানে না। ঠিক কতবার যে...সুখের প্রাচীর ভেদ করে, নতজানু হয়ে ক্ষমা চেয়েছি—শুধু একবার তোমার স্পর্শ পাবো বলে...সেই প্রার্থনার সুর তুমি শুনতে চাইলে না।
ঠিক কতবার তোমাকে হারাবার ভয়ে...ক্ষতবিক্ষত করেছি এই শরীরটাকে—তুমি তা জানোই না।



ভুল একটু থাকুক। একটুআধটু ভুল না থাকলে সৌন্দর্য নষ্ট হয়।


লোকটা করলা খেতে পছন্দ করে দেখে আপনি যে নাক সিটকান, সে কি কখনও মুখফুটে বলেছে যে, টাকার লোভে আপনি একটা কালো টাকলা হাতির বাচ্চাকে বিয়ে করেছেন?
যার জীবন, তার যাপন। নন-জাজমেন্টাল হয়ে বাঁচতে শিখুন। আপনার ওসব থার্ডক্লাস জাজমেন্ট শুনতে চাইছেটা কে?


ভাবনা: এক হাজার চৌত্রিশ
.........................................

শোন, আমার তুই ছাড়া আর কেউই নেই। আমি প্রতিবার ভেঙেচুরে যাই, তবু জানি...নিজের খেয়ালটা নিজেকেই রাখতে হয়। আমার হাতটা শক্ত করে ধরার যে কেউই নেই।
ভালোবাসার মানুষ, পরিবার, পরিচয়—নেই এসবের কোনো কিছুই। তবুও বলছি—তুই আমার একান্ত ভেতরের মানুষটা হয়েই থাকবি।
অন্য কোনো কমফোর্ট-জোন খুঁজতে যাওয়াও সম্ভব নয় আমার পক্ষে। তাই, আমি তোকে সাথে নিয়েই থাকব। তুই শুধু পারলে আমার প্লেসটা শূন্য রাখিস—এটাই আমার চাওয়া। বাকিটা তুই নিজের মতন করেই...
তোকে বাদ দিয়ে আমার অবস্থান হয়তো শূন্য নয়... তবে, তোকে ছাড়া আমার ভেতরঘরটা বড্ড ফাঁকা লাগে রে!
ভালো থাকিস। জানিস, তুই অন্যকাউকে আদর করছিস...এটা ভাবলে…আমার তার মতন হতে ইচ্ছে করে। হা হা হা...
পুরো পৃথিবীর বিরুদ্ধে গিয়ে হলেও, তুই হয়তো কোনো একজনের শুভাকাঙ্ক্ষী! ঠিক তেমনই, আমার জীবনেও তুই সেই মানুষটাই হয়ে থাকবি। বাকিটা আর তোকে বলতে হবে কি?
তোকে ভীষণ ভালোবাসি। ভালো রাখিস নিজেকে।





কোনো একজন মানুষের মনে হঠাৎ একদিন ভীষণ মায়া দেখতে পাবেন আপনার জন্য, যা উপেক্ষা করতে চাইবেন আপনি—তবে নিশ্চিত থাকুন, আপনি তাকে অচিরেই ভালোবেসে ফেলবেন। ভালোবেসে ফেলার পর, জীবনের সবচাইতে বড়ো দুঃখটা হঠাৎ একদিন আপনি তার কাছ থেকেই পাবেন।
তারপর... আপনি প্রতিশোধ নিতে চাইবেন, কিন্তু পারবেন না কিংবা পারলেও নেবেন না। আপনি তখন তাকে ভুলে যেতে চাইবেন মরিয়া হয়ে। যত চাইবেন, আপনাদের দু-জনের মায়াভরা স্মৃতি আপনাকে ততোধিক আটকে রাখবে।
মানুষকে মারতে বুলেট লাগে না, তার নিজের মন‌ই যথেষ্ট।


জীবনে কত কত যে প্রতিযোগিতায় অংশ‌ই নিইনি আমি... স্রেফ হেরে যাবার ভয়ে! হারলে কার কাছে যাই, কীভাবে যাই, সেই ভয়ে অনেক দরজা বন্ধ রেখেছি। মেন্যুর কত খাবার ট্রাই করা হয়নি, যদি সুস্বাদুর বদলে বিস্বাদ ঠেকে, এই আশঙ্কায়। কে যাবে সাথে, কী হবে, এসব ভেবেই কত জায়গায় যাওয়াই হয়নি কখনও। টাকা খরচ করলেই স্কিল শেখার সুযোগ থাকলেও, পাছে সেই স্কিল দ্বিগুণ রিটার্ন না দেয়, সেই সংশয়ে ছেড়ে দিয়েছি হাজারটা সুযোগ। কত অনুভূতির কথামালা সাজাতে গিয়ে কথা মুখে এনেও গিলে নিয়েছি, মানুষ হারানোর আশঙ্কায়; কত সম্ভাব্য সুখ আমি দু-হাতে মুছে দিয়েছি অনিশ্চয়তার কল্পনায়, তার সব হিসেব গলে যায় আঙুলের ফাঁকে।
এসব মনে করে রাখার সময়টুকও আজ নেই।
বুকের ভেতর এক জ্যান্ত কবর আছে, যা বারে বারে খুলে যেত যখন-তখন। আমি তার মাটিতে আমার সকল চঞ্চলতাকে বরাবরই মাটিচাপা দিয়ে স্থির হতে চেয়েছি, সম্পর্ক হারানোর ভয়ে। অথচ দেখো, তোমার কাছে যেন আমার কোনো তাড়া নেই, কোন হেরে-যাওয়া নেই। নেই কোনো ভুল, কোনো তিক্ততা। যেন তোমার কাছে আমি কালো স্লেটের ওপর এঁকে-চলা এক সাদা চকের আঁকিবুঁকি, রুপকথার গল্প, যেখানে রাজকুমারীর সৌন্দর্যের কোনো আলাদা মাপকাঠি নেই, যেখানে সুন্দরেরা গল্প নয়... বরং গল্পরা সুন্দর হয়!
মনে হয়, যেন তুমি এ পৃথিবীর সকল শুদ্ধতা নিয়ে তোমার দুয়ার খুলেছ। আমার যা-কিছু আছে সব শুদ্ধ হবার পালা এবার; কিংবা, আমি যেমন, শুদ্ধতাই হয়তো তেমন। এক তোমার কাছেই আমি আমার সকল ভুল নিয়ে ফিরে ফিরে আসি।



তুমি আমাকে বলেছিলে, "তোমার স্থান আমার কাছে অনেক উপরে।"
'উপর' বলে ভগবানের নিচের লেভেলে তো অনেকেই থাকে, অনির্বেদ।
স্পষ্ট করে জানতে চাওয়া অভব্যতা, বুঝি। জেনে রাখো, এখানে ভগবানই কেবল ভরসা। বাকিসব... ভালোবাসাবাসি, হৃদয়ের সখ্য, আকর্ষণ, বিবেক, যত্নের টানাপোড়ন তো স্নেহের মতোই নিম্নগামী।
আমার কাছে তুমিই ভরসা...




দেনাদারকে ফোনে পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার!

কে যে কখন কোন চিপায় পড়ে পড়াশোনার লোক হয়ে ওঠে বোঝা মুশকিল!

এই যে আমি আপনার পাশে বসি, আঙুলে ছুঁয়ে দিই আঙুল, বাতাস থেকে বুক ভরে নিই আপনারই সুবাস...এই যে আপনার চোখে দেখি নিজেরই ছায়া, আপনার কণ্ঠে বেজে ওঠে আপনার দেওয়া আমার ডাকনাম। আমার হৃদয়ের জল, যা আপনাকে ভেজায়, তা ভিজিয়ে দেয় আমাকেও।
এসব তো কেবলই সময় নয়। এ তো অদ্ভুত মুগ্ধতায় বেঁচে থাকা! এ এক মনোহর জীবন!

যে গরম পড়ছে, মানুষের সাথে হাসিমুখে কথা বলতেও স্ট্রাগল করা লাগছে!

সুখ খোঁজে যৌনতা, শরীরে তোমার স্পর্শের স্পষ্টতা; আত্মা খোঁজে ভালোবাসা, কবিতায় তোমার প্রতীক্ষার সীমারেখা; স্মৃতির ভিড়ে বাড়ে যন্ত্রণা,
তুমি এক নীরব প্রার্থনা।



তোমায় তো দেখতে পাই চোখ বন্ধ করলেই, ছুঁতে পাই প্রতিমুহূর্তে, আত্মায়। তবু তোমাকেই চাই। চাই, দগ্ধ কাঠের মতো এই পদ্মপুকুরে ডুব দাও,
সকল শূন্যতা পূর্ণ করো।

মনে কর, তুই একা পৃথিবীতে, আর কেউ নেই। তুই একা হেঁটে চলেছিস দিগন্তের পানে।
খাঁ খাঁ শূন্য এ পৃথিবীর পথে হেঁটে হেঁটে ক্লান্ত তুই। কোনো নিঝুম বৃক্ষের তলে তন্দ্রাচ্ছন্ন তোর মাথায় যদি কেউ হাত রেখে বলে, ওঠো, সন্ধ্যা পেরিয়েছে, এখনও অনেক পথ বাকি...কেমন হতো তবে?

: যাহ্... তুই একটা পাগল! এটা কি তুই জানিস? : আর আমি যে তোর জন্য পাগল, সে খবর কি তুই রাখিস?

যা-কিছু শুভ্র—তা আমারই সত্য রূপ, যা-কিছু প্রারম্ভিক—তা আমারই সত্তা, যা-কিছু অমীমাংসিত—তা আমারই উন্মত্ততা। চিরস্থায়ী অবয়বে, সাময়িকভাবে নয়— অধ্যাত্মবাদে আমার এই রূপ
বিশেষভাবে প্রশংসিত।


অসম প্রেম, অদেখা সময়, অযাচিত আবেগ—
শূন্যতাই প্রাপ্তি।


আমার বুকের ভেতরকার ক্ষত... স্পষ্টতার গভীরতম প্রজ্ঞায় আবেশিত। আত্মিক স্পর্শের তাড়নায় ছুটে এলাম;
'বন্ধু' সম্বোধনই যথেষ্ট।


একমাত্র, চোখের দিকে তাকিয়েই, ভালোবাসার ব্যাপ্তি যতটা আন্দাজ করা সম্ভব,
অন্য কোনো উপায়ে তা সম্ভব নয়।

কত চিঠি দিয়েছি তোমায়, কোনো উত্তর পাইনি। সব প্রশ্নের উত্তর হয়তো জানাতে হয় না।
কাছে থেকেও কেন এই দূরত্বের বাড়াবাড়ি?


পরিচিত কোনো ঘ্রাণ... আমাদের পুরোনো স্মৃতিকে জাগিয়ে তোলে। আমাদের মস্তিষ্কের স্মৃতিধারণ অংশের সাথে ঘ্রাণেন্দ্রিয়ের সংযোগ রয়েছে। তোমার শরীরের হালকা মিষ্টি ঘ্রাণে— আমার বুকের ভেতরের
সব দুঃখ, যন্ত্রণা, অসুখ সেরে যায়।


তুই আমাকে জড়িয়ে ধরলে— আমার কতটা শান্তি লাগে, তোকে বোঝাই কী করে!
তুই এত বেশি আমার কেন?


দীর্ঘশ্বাস ছাড়া আমার কাছে আর কিচ্ছু নেই। এই দীর্ঘশ্বাসটুকুই জানান দেয়— আমি মৃত নই। তোর জীবনে আমার অবস্থান... কতখানি সত্য? তোকে ছাড়া আমার অনুভূতি...
এতটাই শূন্য?

পুরুষমানুষের জীবন কুত্তার জীবন।


একটা সিগারেট, জ্বলন্ত আগুন, আমাকে সব যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিল। চোখজুড়ে ঘুম নেমেছে...
একটু শান্তি আমারও প্রাপ্য।

সত্যিকারের ভালোবাসা বলে কিছু হয় না। এই অনুভূতিটির স্থায়িত্ব বাড়াতেই আমার প্রার্থনায় তুমি থাকো; ক্ষতের ভিড়ে তুমিই যেন—
চিরসত্যরূপে আবির্ভূত।


যে তোমার জন্য খাটে, সে অবশ্যই তোমার ফ্যামিলি মেম্বার। যে তোমার জন্য খাটে না, সে কোনোভাবেই তোমার ফ্যামিলি মেম্বার নয়।
ভিন্ন ফ্যামিলির মানুষ‌ও প্রকৃত বিচারে ফ্যামিলি মেম্বার হতে পারে, এক‌ই ফ্যামিলির মানুষ‌ও কেবলই নামে মাত্র ফ্যামিলি মেম্বার হতে পারে।


জোরে বৃষ্টি এলে ভিজতে হয়, তুমি খুউব জোরে জড়িয়ে ধরলে... আমি কান্না চেপে রাখতে পারি না। কিছু কথা, কিছু জমানো স্মৃতি...
দূরে সরে যাচ্ছে তোমারই মতন।


বাজেট নিয়ে মেয়েদের আফসোস: সাজগোজ করা বলতে ঠোঁটে একটু লিপস্টিকই দিই, ওটারও নাকি দাম বেড়ে যাবে! বাজেট নিয়ে ছেলেদের আফসোস:
গিফট করা বলতে অল্প খরচে চকলেটেই চালিয়ে নিই, ওটারও নাকি দাম বেড়ে যাবে!


তোর সাথে আমি আমার জীবনের সেরা মুহূর্তগুলো পার করেছি। আমার হৃদয় সারবে না, এ ক্ষত কমবে না—
তাই, নির্ভুল পথ করেছি উপেক্ষা।


টাকার জন্য কত নিচে নামলে আজকের এমন দিনেও অফিস করতে হয়!


আমি কেমন আছি? জানা নেই আমার। খুউব ভালো আছি... বললে হয়তো, তুমি আর প্রশ্ন করবে না। তাই, আজকাল বলি— ভালো আছি আমি।


আপনি নিশ্চয়ই ভালো আছেন, অনেক আনন্দে আছেন; নয়তো আমার কথা মনে পড়ত আপনার, আমি জানি। আপনার মনখারাপে আপনি তো আমাকে মেসেজ পাঠাতেন। কখনো কখনো মেসেজ করেও মুছে ফেলতেন অবশ্য। এড়িয়ে যেতেন, যেতেন না? কথার কথাটুকু না বললেও অনেক কথাই বলতেন, কিন্তু তবুও ভুলে যেতেন না। আমি বুঝতাম, অনেক কিছুই বলতে চাইতেন আপনি, তবুও কিছু-একটা আপনাকে আটকে দিত। আসলে, এতেই আপনার মঙ্গল! তাই প্রার্থনা করি, আমায় ভুলে যান। আমায় কোনো মেসেজ না পাঠান। আপনার অপেক্ষায় অপেক্ষায় আমার ফোনের চার্জ ফুরিয়ে যাক, আমাকে বলার মতো কোনো শব্দ আপনার না থাকুক, আমাকে এড়িয়ে যাবার কোনো বাহানা না হোক, তবুও সত্যি সত্যি আমায় ভুলে যান...যেমন করে বৃষ্টি ঝরিয়ে মেঘেরা ভুলে যায়, ঠিক তেমনি করে আমায় ভুলে যান। পেরেছেন অবশেষে!


তুই আমাকে বকাঝকা করলে... আমার বুকের ভেতরটায়
ভীষণ শূন্যতায় হাহাকার করে।


মাঝে মাঝে তোমার উপর আমার বেশ অভিমান হয়, রাগ হয়। মনে হয়, ও আমাকে একদম সময় দেয় না। কিন্তু পরক্ষণেই মনে পড়ে, ও সারাটা দিন কতটা ব্যস্ত থাকে! আমার রাগগুলো জল হয়ে যায়। তখন মনে হয়, ও একটু রেস্ট নিক, আমার এতেই শান্তি। আমার মানুষটা ভালো থাকলে, একটু নিজের মতো করে থাকলে আমার মধ্যেও প্রশান্তি কাজ করে।


চোখ বুজি, তোমায় দেখি। শ্বাস ফুরোনোর আগমুহূর্তে— ছুঁয়ে থাকি। হারাবে জেনেও, খুঁজে ফিরি...
ভালোবাসি।


যে-কবিতায় তোমার গন্ধ নেই, সেই কবিতা শুকিয়ে-যাওয়া ফুলের মতো...ঠুনকো হাওয়ায় ঝরে পড়তে যতক্ষণ।
যে-ঈশ্বরে তোমার আদল নেই, সেই ঈশ্বর আমার কাছে গোধূলির রঙের মতো...বেলা ডোবার উপাখ্যান।


তুমি যদি জানতে... তোমাকে হারানোর ভয়ে আমি কতখানি ভীত, তবে এ পথে থেমে আমার... হাতটা ধরতে না, দূরত্ব ঘোচাতে না,
ভালোবাসতে না।


Better to serve in Heaven, than reign in Hell.


তুমি যখন আমাকে পাগলের মতন আদর করো... সেই মুহূর্তে আমার একটুকরো পৃথিবীর— সমস্ত সুখ আমাকে গ্রাস করে ফেলে। তুমি জানো, তোমার কাছাকাছি আসতেই আমার হার্টবিট অস্বাভাবিক গতিতে বেড়ে যায়! ধীরবাতাসে নিঃশ্বাসের অস্থির গতি; তোমার ছায়ার পাশাপাশি বসে—
কাঁদছি আমি।


আমার মনে হয় না... আমি তোর সাথে যতটা মিশে যাই, অন্য কারও সাথে পারব— মিউজিক-টেস্ট মিলবে না, আমার লেখা বুঝবে না। আমার শান্ত মানুষ পছন্দ, আমার নিঃশব্দে সরে যাওয়া পছন্দ, আমার তোর চোখ পছন্দ, তোর শরীরের ঘ্রাণ—ওটা যে আর কারও কাছে নেই রে! তোকে কী করে বোঝাই—আমার যে শুধু তোকেই লাগবে! তোর বুকের মধ্যে— অনেক নিশ্চিন্তে একটা জীবন পার করে ফেলা যায়,
আর খুব বেশি কিছু লাগে না বোধ হয়।
ঈশ্বরের প্রতি অগাধ বিশ্বাস, ভালোবাসা; তাই আমাদের একদিন দেখা হবেই—এ জন্মে না হোক, পরজন্মে—সেটা ঈশ্বর করবেন। যন্ত্রণা পেল না যে, ঈশ্বরের ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হলো সে। ভগবান ঈশ্বর আল্লাহ একই, কাউকে দেখিনি—আত্মায় অনুভব করে আপনাকে হৃদয়ে ধারণ করেছি। যা করলে এত কষ্ট পাই, তা-ই কেন করেন? ভগবান কি কাউকে এত কষ্ট দেন? এত কাঁদান? বলতে পারেন না…সব সব মিথ্যে!


তোর দেওয়া ঘড়ির সময়ে আজ থেকে চলতে শুরু করেছি। দেখি, তোর কাছে পৌঁছুতে আজ থেকে ঠিক কতটা সময় লাগে। যাহ্...তুই এত কাছে এলে আমি পাগল হয়ে যাই। তবে আমাকে তুই ভুলে গিয়েছিলি—আমি বুঝতে পেরেছিলাম। আমি স্বেচ্ছায় কখনোই তোর কাছে থেকে দূরে যাব না—আসলে যেতে পারব না আর কি! আমি কখনও তোর অপছন্দের মানুষ হতে চাই না। ভালোবাসা ব্যাপারটা মনে হয় বাড়তে থাকে ধীরেই, কমার কোনো সম্ভাবনা থাকে না। তুই একদম আমার মনের মতন...আমার যদি ওয়ে থাকত, আমি তোকে কক্ষনো ছাড়তাম না। তুই খুব জোরে আমাকে জড়িয়ে ধরলে…আমি পাগল হয়ে যাই—তোর নিঃশ্বাস আমার আত্মা ছুঁয়ে যায়, তোর সম্মতি আমার ব্যর্থতাকে মনে করিয়ে দেয়; তবুও তোকে আমি বার বার চেয়ে বসি! তুই আমাকে জড়িয়ে ধরলে আমার মনটা—হালকা পালকের মতন তোর বুকে স্পর্শ করে থাকে।


My Love, There’s something I’ve been meaning to say… Your presence is a sanctuary— When you hold me close, I feel a warmth that quiets every storm within. Your care shields me like no one ever has; You are my protector, my comfort, my gentle strength. When your spirit brushes against mine, And showers me with unspoken tenderness, I feel deeply honored—graced by something sacred. You are my Guru, My soulmate, My dearest companion on this wondrous path. You and I… we are not two. I am you.
You are me.

তুমি অভিমানে থেকো না, আমি ব্যস্ত আছি। তুমি ভালো থেকো, আমি তোমার স্মৃতিজুড়ে আছি। তুমি তবুও শুনলে না, আমার চোখে তাকালে না। আজ তুমি এসো না...
কষ্ট পাবে।


দুঃখ বাড়িয়ো না, আমায় নাম ধরে ডেকো না, পাশ ফিরে তাকিয়ো না— পিছুটান বেড়ে যাবে।
তুমি বরং ব্যস্তই থাকো।


কেমন যেন একটা শূন্যতা কাজ করছে... মন বলছে, কাল তোকে ছুঁয়ে থাকতে পারব, তোকে সারাক্ষণ আমার চোখের সামনে বসিয়ে রাখব, তোর আদরমাখা কণ্ঠস্বর—অনেক মন দিয়ে শুনব, তোর ঠোঁট আরও একটু বেশি ভিজে যাবে—আমার অভিমানে। কেন জানি এমন মনে হচ্ছে—
কাল তোকে বহুদিন পর দেখব।


অসুখটা আবার বেড়েছে। এর থেকে পরিত্রাণ কি সম্ভব নয়? তোমার কি অস্বস্তি লাগে... আমার নিঃশ্বাসের ভারে? জানো, আমি আর সেরে উঠব না!
তাই তোমায় মুক্তি দিলাম।


তোকে আমি খুব আলতো করে ছুঁই— তুই পরম যত্নে-রাখা একটুকরো কাচের স্মৃতি, একটু বেখেয়ালি হলেই যেন এক্ষুনি ভেঙে যাবে! তোর দিকে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকলে... আমার চোখ ছলছল করে ওঠে! তোকে স্পর্শ করতে না পারার— আক্ষেপ জেগে ওঠে। তোর শরীরের চেনা ঘ্রাণটুকু—
আমৃত্যু আমার বুকে জড়িয়ে রাখতে ইচ্ছে করে।


তোকে না দেখলে, আমার চোখের দৃষ্টি অনেকদূর অবধি যেতে পারে না। তোকে স্পর্শ না করলে... আমার সুন্দর অনুভূতি আসে না। তোকে তো আমি অনেকক্ষণ ধরে তাকিয়ে দেখি...
যখন তোর সামনে থাকার সুযোগ হয়।


তুমি আমায় আগলে রেখো না... বিরহের সংবরণ যদি বেড়ে যায়? তুমি বরং আমার স্মৃতিতে জমা থাকো। তুমি আমার অশ্রুতে আবেগ মিশিয়ো না... এ প্রণয় যদি বেড়ে যায়?
তুমি বরং আমার প্রার্থনায় থাকো।


তোমাকে ছুঁয়ে থাকব, বলছি না— তোমার আত্মার অংশ হতে চাইছি। আমার ঘুম হয় না রাতে... আমাকে এ বুকের পাঁজরে জড়িয়ে নাও,
নাহয়—আমায় মুক্তি দাও।


আবার দেখা হলে বোলো...
কেমন আছ তুমি?


যখন থাকবে না তুমি আমার পাশে, আমার যদি দেখতে ইচ্ছে হয় তোমায়, তখন? কী দেখে আমি চোখে প্রশান্তি নামাব, বলতে পারো?
যদি কেবল তোমার অভাবে, পৃথিবীর সমস্ত নির্মল বাতাস দূষিত হয়, তখন? মাঝরাতে তোমার গন্ধ কোথায় পাবো? তোমাকে ছাড়া তো আর কোনো বিশ্বস্ততা নেই, তোমার গল্প করব কার সাথে? বলতে পারো? যখন তুমি ভুলবে আমায়, তোমার নাম ধরে ডাকব কাকে? এইসব প্রার্থনা ফিরে আসবে কি? আমি জানি না। তুমি বলবে?

কত রাত নির্ঘুম কাটিয়েও— তোমায় ভেবে সুখটুকু আর ছুঁই না। তবুও, এতদিন পর... আমার স্বপ্নে তুমিই এলে! আমার অবচেতন মন কি এখনও তোমাকেই খুঁজে বেড়ায়? স্পষ্টভাবে দেখেছি তোমায় আজ, স্পর্শ করিনি তবু... তোমাকে বহুদিন পর দেখলাম!


আমার গল্পে এতটা সময় নিয়ে থাকতে তোমার ক্লান্তি আসে না? চাঁদের আলোয় তোমার মুখটা ভীষণ মায়াবী লাগছে! যেন— এই মুহূর্তে তোমার দৃষ্টিজুড়ে শুধুই আমি। তুমি নিজেই কি জানতে, এভাবেও ভালোবেসে ফেলা সম্ভব? যার চোখ এত সুন্দর— তার দৃষ্টি কি উপেক্ষা করা যায়? এই সুদীর্ঘ পথ একাকী অতিক্রম করা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না— এ কারণেই, আকস্মিক এই বিরতিতে
তোমার আগমনই ছিল অনিবার্য।


তুমি সত্যিই আমাকে বদলে দিয়েছ! No matter how many mistakes I made before, whenever someone scolded me, I never even thought of saying sorry—let alone wondering if the other person might be hurt because of me. But the last time you scolded me, it was the first time I felt you were hurt, that your heart was heavy. Not even for a moment did I feel like you were being rude or attacking me. Instead, I felt...comforted—because at least there’s someone who holds me close enough to correct me, someone who truly wants me to be better. Who else deserves my gratitude if not you?
Who gave me all the tangerines, expecting nothing in return?


: আমার যন্ত্রণাগুলো হঠাৎ ছুঁতে গেলে যে? : ভালোবেসে ফেলেছি…নিজেই জানতাম না। : আমার বিরহে কান পেতে কী শুনছ? : তোমার কাছে আসার এক দীর্ঘ আর্তনাদ। : শরীর ছুঁতে কতখানি অনুভূতির প্রয়োজন?
: শুধু তোমার নিঃশ্বাসের একটুকরো ক্ষণিক উপস্থিতি।


আমার আত্মা শান্তি অনুভব করলে... যে হালকা মিষ্টি সুঘ্রাণে ঝিম ধরে থাকে, যে-ঘ্রাণের তীব্রতায় আমি গুটিয়ে রাখি নিজেকে— সেই পরিচিত ঘ্রাণের সাদৃশ্য...
আমি কেবল তোমার শরীরেই পেয়েছি।