ভাবনা: এক হাজার নয়
………………………………………………………………
এক। আজ সকালে সিরাজগঞ্জে ইসকন মন্দিরে কৃষ্ণপ্রসাদ পেলাম। এত চমৎকার আয়োজনের জন্য প্রভুদের ধন্যবাদ। কৃষ্ণপ্রসাদ সবসময়ই অমৃতসম।
(গতকাল বলেছিলাম, ২০১৬ খ্রিস্টাব্দে কার্যক্রম-শুরু-হওয়া বর্তমান ইসকন মন্দিরটি একসময় ছিল হনুমানজির মন্দির, যেটির পরিচালনায় ছিলেন মারোয়াড়ি সম্প্রদায়ের ভক্তগণ। ছবিতে হনুমানজির প্রতিকৃতিটি দেখতে পারেন।)
(এক বন্ধুর কমেন্ট থেকে পাওয়া:) এই মন্দিরটির আদি নাম পঞ্চাতি ঠাকুর বাড়ি। এখানে শুধু হনুমানজি নয়, মহাবীর, রাম-সীতা, শ্রীকৃষ্ণের পুজো হতো। ১৯৬৫ সালের যুদ্ধের পর মারোয়াড়ি সম্প্রদায়ের প্রায় সবাই ভারত চলে যায়। সাথিয়া কাকার (সত্যনারায়ণ সারদা) বাবা মানিকচাঁদ সারদা এই মন্দিরের সেবায়েত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মন্দিরের পাশেই যে পুরাতন বাড়িটি রয়েছে, যার নাম সারদা ভবন, ওখানে ওঁরা আজও আছেন। মন্দিরটি ১৯৭১ সালে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মন্দিরের বিগ্রহগুলো লুটপাট হয়। কালের বিবর্তনে পুরাতন মন্দিরের ছাদ ধ্বসে পরে; মন্দিরের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৬ সাল থেকে মন্দির সংস্কারের কাজ শুরু প্রফেসর নিতাই লাল সাহার উদ্যোগে। ওই সময় সাথিয়া কাকারা মন্দিরের সেবাপুজোর দায়িত্ব ইসকনকে অর্পণ করেন। মন্দিরের সংস্কার কার্যক্রম শেষ হলে ২০১৭ সালে মন্দিরের উদ্বোধন হয়।
দুই। বড়ো সৌভাগ্য, সিরাজগঞ্জ ইসকন মন্দিরে এসে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের প্রসাদ পেলাম। এ ছাড়াও ওঁদের এডুকেশনাল উইং 'ভয়েস' (ভেদিক ওয়েসিস ফর ইন্সপায়ারেশন, কালচার অ্যান্ড এডুকেশন) থেকে সম্প্রতি প্রকাশিত দুইটি বই প্রভুরা উপহার হিসেবে দিলেন। ('ভয়েস' থেকে বের-হওয়া কিছু বই বেশ ভালো।) আরও বই উপহার দিতে চেয়েছিলেন, কিন্তু সেগুলি আমার কাছে থাকায় অন্য কাউকে দিতে অনুরোধ করলাম। প্রভুরা আগামীকাল সকালে কৃষ্ণপ্রসাদ পাবার জন্য নিমন্ত্রণ করলেন। ইসকনের প্রভুদের বিনয়পূর্ণ আতিথেয়তা আপনাকে মুগ্ধ করবেই।
একটা তথ্য দিই। এই মন্দিরটি অনেক প্রাচীন। একসময় এখানে হনুমানজি পূজিত হতেন। মারোয়াড়ি সম্প্রদায়ের ভক্তগণ মন্দিরের কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। পরবর্তীতে ইসকন কৃষ্ণসেবা ও কৃষ্ণনাম-প্রচারের জন্য মন্দিরের সমস্ত দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
তিন। সবসময় খেয়াল রেখো, তোমার আগেই যেন তোমার আত্মসম্মানবোধ কবরে শুয়ে না পড়ে।
চার। যদি দেখো, কারও সাথে অ্যাডজাস্ট করে ফেলতে পারছ, তাহলে খুব সমস্যা না হলে জীবনে তাকে রেখে দাও বা তার সাথে থেকে যাও। নিশ্চিত থাকতে পারো, তোমার মন ওরকম কাউকেই চাইছিল, বাঁচার জন্য তোমার ওরকম কাউকেই দরকার ছিল, নইলে তোমার কাছে তাকে ফরেইন বডি বা উটকো কিছু মনে হতো। মনের এই ভাইবটা বোঝা খুব জরুরি। What you feel is more important than what others tell.
পাঁচ। এখানে, এই বৈঠকে, নেশায় বুঁদ হতেই . . .
থেকে থেকে ফিরে আসেন গালিব-রুমি;
ভাবেন, প্রিয়ার অশ্রুর খোঁজ শরাবে উদ্বেলিত পেয়ালাই তো জানে—
ও-চোখ যে সুখকেও অশ্রুতে ঢালতে জানে!
হায়! সময়ের পালাবদলে জীবন কেমন আছড়ে পড়ে মুখ থুবড়ে!
সন্ধে-নামা পৃথিবীর নেশায় চুর হয়ে
ভারসাম্যহীন পায়ে আবার উঠে দাঁড়াই
আমি কিংবা আমরা।
ছয়। আপনার আয়, সবার ব্যয়,
আপনার কষ্ট, কারও নয়।
সাত। In a faraway land, there was a boy who couldn't speak but had a special music box filled with every song imaginable.
One day, he met a girl who had never heard music before. Intrigued, he played his favorite song for her. She was captivated by the melody, feeling emotions she had never experienced.
Every day, he shared more songs with her, using music as his only way to communicate. She grew to love the sad songs the most, finding comfort in their melodies.
However, as time went on, the boy noticed the girl becoming increasingly unhappy. When he asked why, she thanked him for introducing her to music but explained that she needed to find her own path to happiness.
আট। While I was asleep,
I missed the chance to fully embrace your presence,
diving deeper into the depths of your emotions than
you may have anticipated.
There was a time when
I considered you
to be someone worth cherishing, and now,
I lament not being able to keep you close.
নয়। ভাই, আমি একটা বিনে পয়সার ডিপার্টমেন্ট স্টোর। আমার এখানে তুমি মদও পাবে, আবার দুধও পাবে। আমি সব রাখি। জায়গা অনেক, তাই সবই ধরে। যার যা লাগে নিয়ে যাও। না লাগলে ঘুরে হলেও যাও, কিছু পেয়ে যেতেও তো পারো! অনর্থক হইচই করে কী লাভ? ভালো লাগছে না তো অন্য দোকানে যাও। দোকানের অভাব আছে? স্টোরে ঢোকার পর, তোমার যা লাগে না, তার সামনে দাঁড়িয়ে থেকে এক সময়নষ্ট বাদে আর কী হয়? খুঁজতে শেখো। খোঁজার প্র্যাকটিস করো। খুঁজতে জানলে সব পাওয়া যায়; আর না জানলে চোখের সামনে থেকেও সব হারিয়ে যায়। পছন্দ হলে, মন চাইলে এই স্টোরে আবার এসো; পছন্দ না হলে, মন চাইলেও এই স্টোরে আর কখনও এসো না—অন্য কোথাও যাও, ওতেই বরং লাভ হবে। মনকে অত পাত্তা দিয়ো না। মন কিন্তু ভালোই ফাজিল আছে! সময়ের দাম তো অনেক! দেখবে, একদিন তুমি সবই পাবে, শুধু সময় পাবে না।
ভাবনা: এক হাজার দশ
………………………………………………………………
এক। মানুষটা যখন এক-পা এক-পা করে হৃদয়ে প্রবেশ করছে, বুঝে কিংবা না বুঝেই প্রার্থনা করতাম, সে কোনোভাবেই যেন জীবনে জড়িয়ে না যায়!
একদিন লক্ষ করলাম, যেমনি করে সময়কে ভেংচি কেটে অবলীলায় বয়স বেড়ে ওঠে, তেমনি করে, মানুষটাও একদিন আমার সকল বাধাকে উপেক্ষা করে হৃদয়ে একটু একটু করে বেড়ে উঠছে।
আমি যতই তাকে শাড়ির আঁচলের মতো আলগোছে যত্নে রাখি, সে ততই আটপৌরে শাড়ির জমিনের মতো জীবনে জড়িয়ে যাচ্ছে।
বুঝলাম, আদতে বিনিসুতোয় বাঁধা এক সম্পর্কে বুনে যাচ্ছি আমি কিংবা আমরা। তারপর একদিন দূর থেকে দেখলাম, এতকাল যে কেবলই প্রার্থনায় ছিল, আজ কীভাবে যেন সে-ই প্রার্থনা হলো।
দুই। Attempting
Or evading
Thoughts of you, somewhat connected—
Binding,
Then striving to unbind,
A tangled knot.
তিন। Sitting alone in this dusty room, memories flood my mind. The window chair, once shared with you, now holds only me.
I'm surrounded by the remnants of our past, lost in thoughts of our love. I wonder if you ever think of me amidst the chaos of life.
It's a simple moment, yet it speaks volumes of longing and uncertainty.
চার। If I wrote it down, could I put it on a shelf?
If I talked about what you took, would that make it better?
If I do it,
Can I forget how I felt?
পাঁচ। I'm unable to reverse
the things I've done;
I can't take back
a song once sung.
And what weighs the heaviest in my regret—
I can't forgive myself,
As you can't forget my mistakes.
ছয়। Have you ever lost something, like your favorite shirt or keys, and while searching, found something else you forgot about? Then you stopped looking, maybe because you found a replacement. It's like that thing never existed until you rediscovered it. Everyone has lost things they hope to find again, for their past significance.
I feel like I belong to your collection of lost things, like a forgotten note or an old photo tucked away. I hope you'll find me someday and remember what I once meant to you.
সাত। Have you ever found yourself lying in bed, unable to sleep, as thoughts of past mistakes swirl relentlessly in your mind? Each night, these haunting thoughts visit, reminding you of the mistakes you've made. And as you lay there, you can't help but hope that sleep will somehow provide solace, knowing that if you were to never wake again, those mistakes would remain buried in the darkness of night.
আট। আপনার দৃষ্টিতে, শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার কোন কোন শ্লোক সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ? (গীতার সব শ্লোকই সন্দেহাতীতভাবে গুরুত্বপূর্ণ, তবে আমি এখানে 'গুরুত্বপূর্ণ' কথাটি 'প্রিয়' বা 'পছন্দের' অর্থে ব্যবহার করেছি।)
শাঙ্করভাষ্যের আলোকে গীতার কিছু শ্লোক নিয়ে লেখার ইচ্ছে জেগেছে, তাই আপনাদের কাছে জানতে চাওয়া।
নয়। আমি যা মেনে নিতে পারি না, তা মেনে নেওয়াতে চায় যে, নেহায়েত বাধ্য না হলে তাকেও মেনে নিতে পারি না। ফ্রেন্ডস অ্যান্ড ফ্যামিলিকেই ঠিকভাবে সময় দিতে পারি না যেখানে, সেখানে উটকো কাউকে দ্বিতীয় বার আমার সময় বাজে কাজে খরচ করানোর সুযোগ দেবার তো প্রশ্নই ওঠে না! জীবন সময়ের চেয়ে বেশি মূল্যবান, তাই জীবন সাজাতে চাইলে সময় নষ্টকারী সব কিছুকেই যে-কোনো মূল্যে চোখের সামনে থেকে দূরে রাখতেই হবে।
জীবনে মানুষ বাড়ালে অমানুষ বাড়বে, আর মানুষ কমালে মানুষ বাড়বে। বাকিটা আপনার ব্যাপার।
দশ। যে-সেবা তার পাবার কথা নয়, বিনা অর্থে তা পেয়ে গেলে, বেশিরভাগ মানুষই সেটিকে অর্থহীন সেবা ভাবে।
এগারো। যন্ত্রণা হচ্ছে প্রেমের কাফফারা।
বারো। তোমরা মিয়া আমারে অ্যাতো অ্যাতো জ্ঞান দাও ক্যান?
আমার বিকাশ নাম্বার নাই তোমাগো কাছে?
তেরো। যখন মানুষের আপনাকে কিছু বলার থাকে না, তখন সে বলে, তুমি বিয়ে করছ কবে? কিংবা তুমি বিয়ে করছ না কেন? কিংবা অমুক-তমুক বিয়ে করে ফেলল, তোমারটার দাওয়াত কবে খাচ্ছি? ইত্যাদি ইত্যাদি। ব্যাপারটা খেয়াল করেছেন? তাই এখন থেকে এসব কথাবার্তা কেউ বললে, আপনি চট করে বলে বসবেন, বিয়ে তো করতেই চাই, কিন্তু টাকার অভাবে করতে পারছি না। লাখ দেড়েক টাকা ধার দেবেন? কথা দিচ্ছি, আমার একাদশ সন্তান ল্যান্ড করার আগেই ফেরত দিয়ে দেবো।
চৌদ্দ। জৈন তীর্থঙ্করদের পদভ্রমণ সুদূর দক্ষিণ ও উত্তর-পূর্ব এশিয়া পর্যন্ত হয়েছিল। বর্তমান ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তাই সময়ে সময়ে এখনও অনেক জৈন-মূর্তি পাওয়া যায়। কিছুদিন আগেও পুকুর খননের সময় বাংলাদেশের ঢাকা ও গোপালগঞ্জে এরকম ৫১টি দিগম্বর খড়গাসন (কায়োৎসর্গ) মুদ্রায় নির্মিত জৈন তীর্থঙ্কর মূর্তি পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশে আজও কি মারোয়াড়ি জৈনরা আছেন? থাকলে কোথায়? আপনাদের কারও জানা আছে? রংপুরের গাইবান্ধাতে প্রায় সাড়ে বারো-শো বছর আগে প্রতিষ্ঠিত একটি জৈন মন্দিরের ছবি পেলাম। কেউ কি জানেন এই মন্দির সম্পর্কে? জানলে অনুগ্রহ করে আমার সাথে হোয়াটসঅ্যাপে (01976-086921) আলাপ করবেন এটা নিয়ে?
পনেরো। মানুষ কী অদ্ভুত, ঘা শুকোতে না শুকোতেই প্রেম জেগে ওঠে…
ষোলো। রামকৃষ্ণ বাচস্পতি শ্রীহট্টের একজন প্রসিদ্ধ অধ্যাপক ছিলেন। রঘুনাথ শিরোমণি নবদ্বীপে টোল খুললে বয়োবৃদ্ধ বাচস্পতি মহাশয় নিজের টোল উঠিয়ে দিলেন এবং ছাত্রদেরকে বললেন, “তোমরা অন্য গুরু খুঁজে নাও। আমি নিজের গুরুর সন্ধান পেয়েছি।” এটা বলে তিনি ওই বয়সে নবদ্বীপে একজন তরুণ ছাত্রের মতোই পড়তে গেলেন।
আহা, এমন একজন মানুষ ভগবানের কৃপা পাবেন না তো আর কে পাবেন! মানুষের জীবনে সবচাইতে বড়ো সৌভাগ্য হলো: গুরুর সন্ধান পাওয়া। তবে এমন সৌভাগ্য অর্জনের পূর্বশর্ত হচ্ছে: যথার্থ শিষ্য হওয়া। গুরু হওয়া কঠিন, শিষ্য হওয়া কঠিনতর এবং এমন যথার্থ গুরুর ও যথার্থ শিষ্যের মধ্যে যোগাযোগ হওয়াটাই কঠিনতম!
ভাবনা: এক হাজার এগারো
………………………………………………………………
এক। আমি তোমাকে ভালোবাসি, তাই আমি স্বর্গে যেতে চাই না এই ভয়ে যে, যদি তুমি আমাকে দেখে রাগ করে সেখান থেকে বেরিয়ে যাও! আমি দূরে আছি, সবসময় দূরেই থাকব—আমাকে তোমার সহ্য করতে হবে না; তুমি তবু প্লিজ ভালো থেকো।
দুই। এক সাধু নদীতে স্নান করার সময় হঠাৎ দেখলেন, একটা কাঁকড়াবিছা জলে ভেসে যাচ্ছে। সদ্গুরুর কাছ থেকে সাধু শিখেছেন, জীবে সেবা করাই ধর্ম। তাই তিনি বিছাটিকে জল থেকে তুলে ডাঙায় ফেলে দিলেন। হাতে নেওয়ামাত্রই বিছা সাধুর হাতে হুল ফুটিয়ে দিয়েছিল। পরক্ষণেই বিছা আবার জলে এসে পড়লে সাধু আবারও তাকে ডাঙায় তুলে দিলেন; এবারেও বিছা যথারীতি হুল ফোটাল।
তৃতীয় বার বিছাটি আবার জলে পড়লে সাধুর মনে এল…এমন অকৃতজ্ঞ জীবকে রক্ষা করা কিছুতেই সংগত নয়। কিন্তু ঠিক তখনই আবার তাঁর মনে এল…বিছা তার স্বভাবের অনুরূপ কাজই করছে—বিছার ধর্মই তো হুল ফোটানো! আমার হাতে হুল ফুটিয়ে সে তো কোনো অধর্মের কাজ করছে না। এখন যদি আমি চোখের সামনে তার প্রাণ বিপন্ন হতে দেখেও ঔদাসীন্য দেখাই, তাহলে যে ধর্মচ্যুত হবার দায়ে অধর্মটা বরং আমারই হয়!
সাধু তখন বিছাটির হুলের যন্ত্রণা সহ্য করেও তাকে আবার প্রাণে বাঁচালেন। এবং, তৎক্ষণাৎ সেখান থেকে অন্য জায়গায় চলে গেলেন।
বাজে লোক প্রকৃতপক্ষে বাজে কাজ করে না—তার কাজের ধরনই ওরকম, অর্থাৎ ওরকম করাই তার ধর্ম বা বৈশিষ্ট্য, এর বাইরে আর কিছু করার বুদ্ধিই তার শিক্ষায় বা বোধে নেই। তাই বাজে লোকের সাহচর্য উপেক্ষা করার জন্য নিজেকেই বাজে লোকের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিতে হবে কিংবা আপনার কাছে ঘেঁষার তার সব রাস্তাই কৌশলে বন্ধ করে দিতে হবে।
তিন। মহান ভক্তসাধক রামপ্রসাদ সেন হালিশহর থেকে বারাণসী-ধামে যাচ্ছেন তীর্থ করতে। যাত্রাপথে ত্রিবেণীতে স্বপ্নে দৈববাণী শুনলেন—তাঁর আর তীর্থে যাবার দরকার নেই, মা অন্নপূর্ণা সবসময়ই তাঁর হৃদয়ে অবস্থান করছেন। তখন তিনি ঘরে ফিরে গাইলেন:
আর কাজ কী আমার কাশী।
মায়ের পদতলে পড়ে আছে গয়া-গঙ্গা-বারাণসী।।
হৃদ্কমলে ধ্যানকালে, আনন্দসাগরে ভাসি।
কালীর পদ কোকনদ তীর্থ রাশি রাশি।।
কালী নামে পাপ কোথা, মাথা নাই মাথাব্যথা,
অনলে দাহন যথা, হয় রে তুলারাশি।।
কাশীতে ম’লেই মুক্তি, এ বটে শিবের উক্তি,
সকলের মূল ভক্তি, মুক্তি তার দাসী।।
নির্বাণে কী আছে ফল, জলেতে মিশায় জল,
চিনি হওয়া ভালো নয়, চিনি খেতে ভালোবাসি।।
কৌতুকে প্রসাদ বলে, করুণানিধির বলে,
চতুর্বর্গ করতলে, ভাবিলে রে এলোকেশী।।
একজন রামপ্রসাদ কিংবা একজন রামকৃষ্ণকে ভগবানলাভের জন্য কখনও তীর্থে যেতে হয় না। তাঁরা যে বৈদিক ঋষিদের মতো করে একান্ত শুদ্ধ-অনুভবে জেনেছিলেন, হৃদয়ের চেয়ে বড়ো তীর্থ আর নেই! যে নিজের আত্মার ঘরেই ঢুকল না, সমস্ত তীর্থ ঘুরেও তার কীই-বা ফল হবে!
চার। অতশত তো আর বুঝি না, ভায়া; তবে এটা সুনিশ্চিতভাবে জানি যে, ঈশ্বর কখনোই কিচেন বা ডাইনিং-টেবিল বিচার করে মানুষকে কৃপাধীন বা কৃপাবঞ্চিত করেন না। ঈশ্বর অত বোকা হলে তো মানুষের হৃদয়ে না থেকে ধর্মালয়ে থাকতেন!
পাঁচ। ঠিকভাবে ধর্মপালন করার পূর্বশর্ত হচ্ছে ভদ্র ও কাণ্ডজ্ঞানসম্পন্ন হওয়া। অভদ্র ও বেআক্কেল লোকের পক্ষে ধার্মিক হওয়া অসম্ভব। ভালো জাতের কুকুর অন্য জাতের কুকুর দেখলেই ঘেউ ঘেউ করে না। ভালো সম্প্রদায়ের মানুষ অন্য সম্প্রদায়ের মানুষ দেখলেই তেড়ে আসে না। মানুষের আচরণই তার জাত চেনায়। তাই আপনার সম্প্রদায় সম্পর্কে কারও মধ্যে বিরূপ ধারণা তৈরি হলে তার দায় অনেকটাই আপনার উপর বর্তায়। বলতে পারেন, ভালো সম্প্রদায়ে খারাপ মানুষ থাকতে পারে না? অবশ্যই পারে, কিন্তু সম্প্রদায়ের সদস্যকে দেখে সম্প্রদায় সম্পর্কে শুরুতেই বিতৃষ্ণা জন্মালে সম্প্রদায়টি ভালো কি খারাপ, তা খোঁজার পেছনে সময় নষ্ট করবে কে?
ছয়। অফুরন্ত সময় যার,
অফুরন্ত দুঃখ তার।
Keeping yourself busy means keeping yourself safe.
সাত। Time kills him who kills time.
আট। ফরাসি বিপ্লবের পর কোনো এক ফরাসি সেনাপতি একদল সৈন্য নিয়ে সুইজারল্যান্ডের পার্বত্য প্রদেশে যাচ্ছিলেন। একজন সাধারণ সৈনিক তার পাশের জনকে বলছিল, “সেনাপতি হবার অনেক মজা—আমরা হেঁটে যাচ্ছি, আর উনি ঘোড়ার চড়ে যাচ্ছেন। দেশের জন্য ওঁকে কোনো কষ্টই করতে হয় না!”
এটা শুনে সেনাপতি তখনই ঘোড়া থেকে নামলেন এবং সৈনিককে বললেন, “ভাই! তোমার শরীরটা বোধ হয় খারাপ কিংবা হাঁটতে হাঁটতে তোমার খুব ক্লান্ত লাগছে, তাই তুমি এমন কথা বলছ। সেনাপতির হওয়াও সহজ নয়, অনেক অসুবিধে সামলাতে হয়। সে যা-ই হোক, তুমি এখন এই ঘোড়ায় চড়ো, আমি দলের মধ্যে তোমার জায়গাতেই তোমার বন্দুক ঘাড়ে নিয়ে হাঁটব। দেশের কাজে আবার কীসের মান-অভিমান, ভাই? যুদ্ধের সময় ঠিকই তোমাদের সবার আগে, সবার চেয়ে বেশি, গুলির আঘাত পাবার আশংকার জায়গায়, ঘোড়ার পিঠে উঁচু হয়েই থাকব।”
সৈনিক একটু লজ্জা পেয়ে প্রথমে ওই ঘোড়ায় চড়তে চাইল না, পরে অন্যান্য সৈনিকের দিকে চেয়ে একটু বাহাদুরির হাসি হেসে ঘোড়ায় চড়ল। আধঘণ্টা যেতে না যেতেই পাহাড়ের গায়ের ঝোপ থেকে শত্রুপক্ষের গুলি এসে ঘোড়ার পিঠে উঁচুতে-থাকা ওই সৈনিককে আহত করে মাটিতে ফেলে দিল।
সৈনিক সেনাপতির মুকুটেই মৃত্যুবরণ করল।
নয়। এক পরাক্রমশালী রাজা বনে শিকার করতে গিয়ে কোনো এক সন্ন্যাসীর দেখা পেলেন। তাঁর সাথে কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলে রাজার খুব ভালো লাগল এবং তাঁকে কিছু-একটা নেবার জন্য রাজা অনুরোধ করলেন।
সাধু বললেন, “এইসব গাছ আমাকে ফল দেয়, এই নদী আমাকে জল দেয়, শোবার জন্য গুহা আছে—তোমার উপহারে আমার কী কাজ?” রাজা তবুও সন্ন্যাসীকে তাঁর রাজধানীতে এক বার পদধূলি দেবার জন্য অনুরোধ করলেন।
অগত্যা, সাধু রাজার সাথে তাঁর প্রাসাদে গেলেন। সেখানে চারিদিকে বিত্তের চিহ্ন স্পষ্ট। রাজা সাধুকে বললেন, “আপনি কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন, আমি উপাসনাটা সেরে নিই।”
এরপর তিনি ওই ঘরেরই এককোণে গিয়ে প্রতিদিনের মতো প্রার্থনা করতে লাগলেন, “হে প্রভু! আমাকে আরও ঐশ্বর্য, সন্তানসন্ততি ও সুস্বাস্থ্য দিন। আমি যেন আরও ধনী হতে পারি।”
সাধু তখনই সেখান থেকে চলে যাবার জন্য হাঁটা শুরু করলেন। রাজা পেছন পেছন গিয়ে বললেন, “মহাশয়! আপনি আমার উপহার গ্রহণ না করেই চলে যাচ্ছেন যে?” সাধু তাঁর দিকে ফিরে বললেন, “আমি ভিক্ষুকের কাছ থেকে ভিক্ষা নিই না।”
ভাবনা: এক হাজার বারো
………………………………………………………………
এক। আমি একসময় ভাবতাম, এ পৃথিবীতে আমি একাই খারাপ।
তারপর একদিন আমি ফেইসবুকে অ্যাকাউন্ট খুলি। সবাই আমাকে অভ্যর্থনা জানাল...নও তুমি একা নও, আমি আছি সাথে...
এখন আমি ভাবি, ভালোর যেমন কোনো শেষ নেই, তেমনি খারাপেরও কোনো শেষ নেই। আমি তো এখনও বাচ্চা!
দুই। বউয়ের চেয়ে ভূত অনেক ভালো; মুখ ফুটে বলা অন্তত যায়: আমি ভূতে বিশ্বাস করি না।
সাহস থাকলে এমন বাক্স্বাধীনতা বউয়ের বেলায় খাটান দেখি!
তিন। Marriage is the best horror movie. So, if you love watching horror movies, get married.
চার। Never explain.
Never complain.
Never condemn.
Just block.
Only peace is real. Get it, give it.
পাঁচ। জুতো পরে হাঁটার সময় আমরা যেন কখনোই ভুলে না যাই যে, জুতোর মাপ পা-ভেদে বিভিন্ন রকমের হয়। পৃথিবীতে আপনার পা-ই একমাত্র পা নয়। আমার পায়ে যে-জুতো ঠিকভাবে আটকায়, তার মাপ আপনি হয় জানেন, নয় জানেন না। এখানে অনুমান করার কোনো সুযোগ নেই; অনুমান করলে সেই জুতো আমার পায়ে নয়, আপনার গলায় বেশি মানাবে।
ছয়। আমাদের সময়ে দুই ধরনের স্টুডেন্ট পপি গাইড পড়ত:
১. যারা পাশ করতে চায়
২. যারা ফেইল ঠেকাতে চায়
পপি গাইড ওদেরকে কখনোই নিরাশ করেনি, তাই পপি গাইড ছিল বিক্রি ও জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। আমাদের বোকামি দেখে ওদের মাথায়ই আসত না যে, পপি গাইড না পড়লে পরীক্ষা দিয়ে কী লাভ?
আপনাদের মনে আছে কিংবদন্তিতুল্য পপি গাইডের কথা?
(এই অংশটি আপনাদের কমেন্ট পড়ে যোগ করেছি:
আপনাদের কমেন্ট পড়ে খুবই আনন্দ পেলাম। ধন্যবাদ সবাইকে। যদিও না দিলেও চলে, তবুও দুটি ডিসক্লেইমার দিই:
১. আমি পোস্টটা দিয়েছি অবশ্যই কোনো একটা ডবলমিনিং থেকে। অর্থাৎ, এখানে পপি গাইড মানে পপি গাইড নয়। ধরতে না পারার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
২. পপি গাইডের মালিক বা লেখক কে, আমি জানতাম না। আপনাদের কমেন্ট পড়ে জানলাম, এই গাইডের শ্রদ্ধেয় স্বত্বাধিকারী কুমিল্লার মাননীয় এমপি মহোদয়। তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি এ কারণে যে, তাঁর এই সন্তান (গাইড) অনেক শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকের উপকার করেছে। নিশ্চয়ই তিনি তাঁদের সবার দোয়া বা আশীর্বাদ পেয়েছেন। তাঁর মঙ্গল হোক। এই গাইড আমার পড়া বা দেখা হয়নি, কেননা তখন যাদেরকে এটা পড়তে দেখেছি, ওদের প্রায় সবাই-ই ছিল ব্যাকবেঞ্চার। ছোটোবেলায় আমি সত্যিই ওদের দলে ছিলাম না, তাই পপি গাইড কেনার বিষয়ে কখনোই অনুপ্রাণিত হইনি। বিনয়ের সাথে বলছি, আমি ছিলাম সেই ছাত্র, যার খাটা কাটার সময় স্যারকে ডিকশনারি ও গ্রামার বই সঙ্গে নিয়ে বসতে হতো। সবিনয়ে আত্মবিশ্বাস নিয়ে বলছি, গ্রামারের তেমন কোনো রুল ছিল না, যা আমি সেসময় জানতাম না। ক্লাস নাইনে ওঠার আগেই বাবার কাছে জেসি নেসফিল্ড, থমসন অ্যান্ড মার্টিনেট, ডব্লিউ স্ট্যান্ডার্ড অ্যালেন, মাইকেল সোয়ান, এএস হর্নবি, রেমন্ড মারফি, জন ইস্টউড, মাইকেল হিউয়িংস, পিকেডি সরকার, রেন অ্যান্ড মার্টিন, বেশ কঠিন এক্সারসাইজ সমৃদ্ধ কিছু ভারতীয় গ্রামার বই ইত্যাদি শেষ করে ফেলেছিলাম। (বাংলার বেলাতেও আমার বেইসিক যথেষ্ট উঁচু লেভেলের ছিল।) স্বাভাবিকভাবেই, পপি গাইড আমাকে আকর্ষণ করেনি। (এটা অহংকার নয়, শতভাগ সত্যকথন।)
ভালো থাকবেন সবসময়ই।)
সাত। গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিষ্কাম কর্মের আদর্শ অনুসরণের বিষয়ে বার বার জোর দিয়েছেন। একইসাথে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এ-ও বলছেন, (তত্ত্ব)-জ্ঞানী ভক্ত তাঁর কাছে সবচাইতে প্রিয়—এতটাই প্রিয় যে, জ্ঞানী ভক্ত তাঁর আত্মাস্বরূপ (শ্লোক নং ৭/১৭, ৭/১৮)।
আমরা যাঁরা তাৎপর্য ঠিকভাবে না বুঝে (তত্ত্বজ্ঞান অর্জন না করে) কেবলই পুণ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে (সকাম আদর্শে) গীতাপাঠ করছি, তাঁরা কি ভগবানের অবাধ্য সন্তান নই? আপনার কী মনে হয়?
(বেদ-বেদান্ত ও উপনিষদের আলোকে) ভালোভাবে বুঝে গীতা অধ্যয়ন করলে সুন্দরভাবে জীবনযাপনের জন্য আর কিছু না পড়লেও চলে। অথচ আমরা পড়ে আছি কেবলই শুদ্ধ উচ্চারণ আর মুখস্থ করা নিয়ে! এ নিয়ে আপনার মতামত শেয়ার করুন অনুগ্রহ করে।
আট। আমাদের ভেতরে যে বিবেক আছে, যা আমাদের ভাল কাজের অনুপ্রেরণা যোগায়, খারাপ কাজ করলে অনুশোচনা জাগায়, তা-ই আমাদের ঈশ্বর। আমাদের প্রকৃত সুপথে জাগিয়ে তুলতে বিবেক কাজ করে যায় প্রতিনিয়তই। বিবেকের রায় মেনে চলে যারা, তাদেরকে পৃথিবীর কোনো কিছুই ততটা পথভ্রষ্ট করতে পারে না। অনেক সময় নিয়ে কোনো কিছু নিয়ে খুব করে ভাবতে থাকুন। এরপর দেখবেন, সেই জিনিসটাই বা ভাবনাটাই কেমন করে জানি আপনার স্বপ্নে ফিরে এসেছে! বিবেক যা করতে বলে, তা যদি গ্রহণ করেন আর সেটা মাথায় রেখে সময় কাটান, তবে দেখবেন, আপনার পক্ষে আপনার নিজের বা অন্যের জন্য ক্ষতিকর কোনো কিছু করা অনেক কঠিন হয়ে যাবে।
নয়। কাউকে কাউকে চাইলেও 'দাদা' ডাকা যায় না, মুখে 'স্যার'-ই চলে আসে; যেমন শাহরুখ খান।
কাউকে কাউকে চাইলেও 'স্যার' ডাকা যায় না, মুখে 'দাদা'-ই চলে আসে; যেমন সৌরভ গাঙ্গুলী।
কাউকে কাউকে চাইলেও 'দাদা' কিংবা 'স্যার' ডাকা যায় না, মুখে 'গুরু'-ই চলে আসে; যেমন জেমস।
কাউকে কাউকে চাইলেও 'দাদা', 'স্যার' কিংবা 'গুরু' ডাকা যায় না, মুখে তাঁর নামটাই চলে আসে; যেমন হুমায়ূন আহমেদ।
'দাদা', 'স্যার', 'ভাই', 'ভাইয়া', 'গুরু' কিংবা সরাসরি নামটাই ইত্যাদি সম্বোধন কখনও কাউকে ডিফাইন করতে পারে না। মানুষ নিজেই নিজেকে ডিফাইন করে। লোকে যা অনুভব করে কিংবা ডাকতে বাধ্য হয়, তা-ই ডাকে। তবে, দিনশেষে, অনুভবটাই সব কিছু।
(আরেক জন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তির নাম বার বার মাথায় আসছে: আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, যাঁকে 'স্যার' ছাড়া আর কিছুই ডাকা যায় না।)
দশ। খেয়াল করেছেন, আমার থার্ডক্লাস টাইপের সস্তা পোস্টে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রতিবাদ করতে আপনার খুব মন চায়; অথচ ফার্স্টক্লাস টাইপের ভারী পোস্টে সেই আপনাকেই আর খুঁজে পাওয়া যায় না। আপনার দৌড় কতটা ফুটফুটে সুন্দর, দেখলেন তো? Your movement defines your class.
ভাবনা: এক হাজার তেরো
………………………………………………………………
এক। কর্তার ইচ্ছায় কর্ম। কর্তার ইচ্ছাই কর্ম।
দুই। আহা, কত ধরনের দিবস আছে! গতকাল নাকি ছিল রুমমেট দিবস! জানতাম না; কখনও মাথায়ই তো আসেনি যে, এমন আজব দিবসও থাকতে পারে! যা-ই হোক, জানলাম যখন, রুমমেটকে নিয়ে এক লাইন বলেই যাই...
প্রিয় রুমমেট, তুমি ছেলে না হলেও পারতে!
তিন। কেবল সেই সুখটাকেই ফেইসবুকে শেয়ার করুন, যা ধ্বংস হয়ে গেলেও আপনার খারাপ লাগবে না। লোকে ছোটোবেলায় খেলনা ভাঙে, আর বড়োবেলায় অন্যের সুখ ভাঙে। তাই যা হারাতে চান না, তা অবশ্যই লুকিয়ে রাখুন।
চার। সত্যকে আবিষ্কার করতে হয়, সত্য কখনোই সৃষ্টি করা যায় না।
মিথ্যাকে সৃষ্টি করতে হয়, মিথ্যা কখনোই আবিষ্কার করা যায় না।
এ কারণেই, যা সত্য, তার ঘনঘন বিজ্ঞাপন মিথ্যার মতো শোনায়; কেননা বিজ্ঞাপন আবিষ্কার করার জিনিস নয়, নিজের মনমতো সৃষ্টি করার জিনিস।
পাঁচ। লোকের নিন্দা করার পেছনে যে-সময়টা নষ্ট হয়, তা বাঁচিয়ে যদি সেই সময়ে নিজের ভাষাদক্ষতা বৃদ্ধি করতে, তাহলে কারও নিন্দামন্দ করার সময় বানানে ও প্রয়োগে এত ভুল করতে না। ভেবে দেখো, এতে লাভ কিন্তু তোমারই। সবাই বুঝবে, তুমি মানুষটা ফালতু হলেও মূর্খ নও। শুদ্ধ ভাষায় নিন্দা করতে শিখলে একজন পেশাদার শিক্ষিত নিন্দুক হিসেবে তুমি সব মহলেই প্রশংসিত হবে। জীয়ো, পাগলা!
গালাগালি করার সময় মনে করে অভিধান উলটে নিয়ো। ভুল বানানে গালাগালি খেতে বিরক্ত লাগে। মূর্খের গালির চেয়ে শিক্ষিত লোকের গালি খেতে অধিক আরাম। শিক্ষিত হবার চেষ্টা করো, একজন শিক্ষিত লোকের গালি খাওয়ার অধিকার আমারও আছে।
ছয়। আমি কাউকে খারাপ ভাবি না। যাকে খারাপ ভাবতে ইচ্ছে করে, তাকে নিয়ে ভাবার সময়ই আমি মনকে কখনও দিই না। করার মতো কাজ তো অনেক, অনেক এবং অনেক! মূলত সময়ের অভাবেই আমি কাউকে খারাপ ভাবতে পারি না বা চাই না। মনকে প্রয়োজনীয় কাজের দিকে সরিয়ে নিতে না জানলে প্রয়োজনীয় কাজগুলো শেষ করার জন্য যথেষ্ট সময় পাওয়া যায় না। সমালোচনা, অভিযোগ এবং দোষারোপ, এই তিনটি কাজ করে লুজাররা; উইনারদের করার মতো কাজ প্রচুর। আমার ধারণা, এক আমি বাদে বাকি সবাই-ই ভালো। এমন ধারণা কেন? . . . আরেক জনকে নিয়ে ভেবে এবং চর্চা করে আমার নিজের কী লাভ হবে? করার মতো কাজ কি তবে আমার সত্যিই নেই? . . . এসব ভাবনা থেকেই অন্য কারও পেছনে মূল্যবান সময় না দিয়ে বরং নিজেকে আরও উন্নত করার পেছনে সেই সময়টা দিই। লাভ এতেই বেশি।
সাত। বড়ো হলে মানুষকে একা একাই লড়তে হয়, একা একাই নীরবে কাঁদতে হয়। কাউকে কিছু বলা যায় না। মনে হয়, যদি একটা মাত্র বন্ধু থাকত, যাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদা যেত! কিন্তু আমার যে এমন কোনো বন্ধুই নেই!
আমি পাঁচ বছর বাবাকে ফোন দিয়ে কাঁদি না। বাবার কাছে না কেঁদে বেঁচে থাকা কী যে কষ্টের! আমি অপেক্ষায় আছি, কবে বাবাকে এক বার ফোন দিয়ে কাঁদব!
কবে, জানি না!
আট। : তোমায় আমি দুঃখ বলে ডাকি, এতে একটু ভালো থাকি।
: তবে তোমায় যে আমি সুখ বলে ভাবি, তার বেলা?
নয়। কোনো কিছু পাবার আশায় তোমাকে ভালোবাসিনি। তোমাকে ভালোবেসেছি, কেননা তুমি ভালোবাসার মতোই একজন মানুষ।
দশ। ধর্মগ্রন্থ শুদ্ধ উচ্চারণে পড়ার প্রতি যতটা জোর দেওয়া হয়, তার অর্ধেকও যদি ঠিকভাবে বুঝে পড়ার উপর দেওয়া হতো, তাহলে মানুষের দ্বিগুণ কল্যাণ হতো।
এগারো। তুমি তো তুমি ছিলে না,
তুমি ছিলে আমার প্রিয় অভ্যেস।
তোমাকে ছাড়তে পারলেও
অভ্যেসটা তো কিছুতেই ছাড়তে পারছি না!
বারো। ঝগড়া নয়, উপেক্ষা। বিবাদ নয়, ব্যস্ততা।
তেরো। যে কখনও কারও ক্ষতি করে না, তাকে সৃষ্টিকর্তাই দেখে রাখে।
যে সবসময়ই মানুষের উপকার করে, তাকে মানুষই দেখে নেয়।
চৌদ্দ। আপনার আশেপাশের বেশিরভাগ মানুষই ভালো; বাকিরা আপনাকে পছন্দ করেন না কিংবা আপনি তাঁদেরকে পছন্দ করেন না।
পনেরো। মিলিয়ে নিন।
আপনি যখন আমাকে চিনতে পেরে কুশল বিনিময় করার জন্য আমার মনোযোগ প্রার্থনা করেছেন, তখন আমি কোনো একটা বইয়ে মুখ গুঁজে ছিলাম। আলাপ না করে কিংবা খুব অল্প আলাপ করেই সরে পড়ার বদলে...আপনি আমাকে খুব পছন্দ করেন, তা বোঝানোর চেষ্টা করেছেন কিংবা আপনার কোনো সমস্যা নিয়ে গল্প জুড়ে দিয়েছেন কিংবা আপনি যে অমুকের তমুক বা তমুকের অমুক, তা নিয়ে বিরক্তিকর চাপাবাজির ঝড় তুলেছেন কিংবা সেলফি-জাতীয় জটিলতার মধ্য দিয়ে আমাকে নিয়ে গেছেন।
এমনটা না করলে হয় না?
আপনার পরিচিত কারও হাতে বই (যেটি উনি ওই মুহূর্তে পড়ছেন) বা সাথে বিপরীত লিঙ্গের মানুষ থাকলে তাকে না চেনার ভান করে এড়িয়ে যান। এর নাম ভাব দেখানো নয়, পরিপক্বতা দেখানো। বিরক্ত করার চেয়ে এড়িয়ে যাওয়া অনেক অনেক অনেক ভালো।
ষোলো। মানুষ সাধারণত তার শখের মানুষটাকে পায় না; তার বদলে এমন কাউকে পায়, যার মাধ্যমে সে তার শখগুলো পূরণ করতে পারে ঠিকই, কিন্তু যে কখনও তার শখের মানুষ হয়ে ওঠে না।
সতেরো। জীবন ছোটো এবং অনিশ্চিত। কারও কোনো ক্ষতি না করে যা যা আনন্দ করতে মন চায় করে নিন। এক্ষেত্রে আপনার নিজের সিদ্ধান্তই হোক চূড়ান্ত। সমাজ জিনিসটা যতটা ভালো, ততোধিক খারাপ। মনের মধ্যে আফসোস পুষে রেখে আপনি পৃথিবী থেকে চলে গেলে কারও কিছুই এসে যাবে না। এ পৃথিবীতে কে কার! মানুষ মানুষকে মনে রাখে দু-দিন মাত্র। আপনার সময়গুলোকে মুহূর্ত বানানোর চেষ্টা করুন, দেরি হয়ে যাবার আগেই।
ভাবনা: এক হাজার চৌদ্দ
………………………………………………………………
এক। Indeed, the human being is a miracle in itself. Never underestimate your capabilities. Even when you feel overwhelmed by pain, remember that you have the strength to endure much more. The possibilities are limitless, and the world is full of opportunities waiting for you to explore. Embrace the journey, let go of your fears, and trust in a higher power. Just like a free fall, hold onto faith, and you will find your feet firmly on the ground. Children often perceive the beauty of the world more clearly because of their innocence. It's unfortunate that some adults lose sight of this beauty as they grow older. Despite feeling small, love can reside within us. Look at your eyes—they may be small, but they have the capacity to see tremendous things.
দুই। In the abstract world where perception meets essence, things like size and visibility don't matter much. Take our eyes, small yet mighty enough to see the vast universe. And then there's our heart, invisible but deeply in tune with our feelings and experiences.
In this mysterious world, value goes beyond what we can measure. Think of God, unseen but everywhere, showing us how vast things can be. Some people's hearts embrace everything, while others struggle with limitations.
Being a "big-hearted" person means going beyond ourselves to understand joy and pain. Challenges, like going to the gym, help us grow spiritually. Through tough times, we connect with something bigger, like the universe or God.
In this dance of life, our heart becomes a window to understanding the Creator. Amidst all the chaos, love holds everything together. As we see beauty with our eyes, our heart feels love in abundance.
In quiet moments, these ideas can comfort and inspire us, reminding us of the deeper meaning behind life's ups and downs.
তিন। In contemplating the smallness of hearts and eyes, we often overlook their immense capacity for compassion, connection, and understanding. Despite their physical size, these organs serve as conduits for profound emotions and experiences. When we engage in debates over trivial matters, we risk missing out on the deeper truths that surround us.
Instead of fixating on semantics, let us embrace a broader perspective—one that allows us to see beyond mere words and appreciate the beauty of existence itself. Through our own perceptions and interpretations, we can uncover the hidden depths within ourselves and others. This process requires us to acknowledge the inherent wisdom and insight that resides within each individual, regardless of outward appearances.
Love emerges as the guiding principle that transcends barriers of language, culture, and time. It is through acts of love and compassion that we forge meaningful connections with one another, enriching our collective human experience. However, our reluctance to fully embrace love often hinders our ability to realize its full potential.
If we could only set aside our reservations and fears, we would discover a world brimming with boundless love and abundance. It is through the lens of love that we truly perceive the interconnectedness of all things, allowing the heart to forge profound connections with the world around us.
চার। কারও বিশ্বাস ভেঙে জেতার চাইতে কাউকে বিশ্বাস করে ঠকাও ভালো। তার চেয়ে ভালো, কাউকে ততটা বিশ্বাসই না করা, যতটা করলে ঠকতে হয়।
পাঁচ। যে তোমাকে চায় না, তার সাথে ঝামেলা করে কী লাভ? সময়টা নষ্ট না করে বরং পড়তে বসো, নিজেকে তৈরি করো। একদিন সে ঠিকই আফসোস করবে, তখন তোমার হাতে সময়ই থাকবে না তার অনুভূতি নিয়ে ভাবার। জীবন এরকমই। কেউ সব পেয়েও হারায়, কেউবা হারিয়েই সব পায়।
ভাবনা: এক হাজার পনেরো
………………………………………………………………
এক। Upon opening my eyes to the world outside, I feel insignificant, akin to a minuscule droplet adrift in the vast ocean. However, as I close my eyes and turn my focus inward, a profound revelation unfolds. Within the depths of my being, I witness the universe unfurling like a delicate bubble ascending within the ocean of my heart. It's a moment of profound introspection, where the external realm fades away, unveiling the internal cosmos in all its magnificence.
The tears that occasionally cloud my vision aren't merely saline droplets; they pierce through the fabric of my wounded heart like arrows. Each tear bears the weight of emotions—pain, sorrow, longing, also resilience and hope. They serve as a testament to the depth of human emotion, reminding me of the intricate web of feelings that intertwine within the fabric of existence.
The origin of a child hold little significance in the grand scheme of things. What truly matters is the message reverberating through the annals of time—an urging to transcend the biases that afflict our world. It's an invitation to perceive beyond the veils of prejudice and embrace the inherent beauty that permeates every corner of our planet. Only by piercing the balloon of bias can we dissipate the stifling air of anger and division, paving the way for a new era of understanding and unity.
Despite their diminutive size, our eyes act as portals to the external world, offering us glimpses of the boundless expanse of the sky. Similarly, our hearts, though physically compact, harbor the greatest mysteries of the universe. They possess the ability to love unconditionally, to feel deeply, and to commune with the divine essence that courses through all of creation. It's within the sanctum of our hearts that the purest form of energy resides, guiding the path of our souls with its luminous radiance.
Amidst the tumultuous currents of life, those who surrender to the divine essence find themselves ensconced in a tranquil haven of peace. Even as the world outside churns with tempestuous storms of uncertainty and chaos, they remain steadfast, anchored by the unwavering faith that all is as it should be. It's a testament to the indomitable resilience of the human spirit, transcending earthly tribulations to find solace in the eternal embrace of the divine.
To the visionary whose insight transcends worldly limitations, and whose heart embodies boundless compassion, gratitude is owed. Their words serve as a poignant reminder of the innate goodness inherent within each of us, urging us to embrace love and empathy in all our interactions. And to every individual who shares their thoughts and emotions, thank you. Your words are not mere comments but heartfelt expressions of love, enriching our collective consciousness with their depth and sincerity.
দুই। In the boundless expanse of existential inquiry, our reflections serve as luminous threads weaving through the network of human consciousness. Through the alchemy of contemplation, we traverse the ethereal realms of faith and perception, transcending the confines of conventional thought to explore the ineffable mysteries that lie beyond. Each nuanced observation resonates as a symphony of thought, orchestrating a harmonious convergence of the divine and the mundane.
Within the kaleidoscope of metaphysical exploration, our musings unfurl as ethereal whispers echoing across the cosmic ether, beckoning the seeker inside to delve deeper into the enigmatic depths of existence. Through the interplay of light and shadow, we illuminate the hidden contours of the human psyche, casting new light on age-old questions that reverberate through the corridors of time.
Amidst the ephemeral flux of temporal reality, our insights emerge as celestial beacons guiding the wayward traveler through the labyrinth of life's uncertainties. In the quietude of introspection, we navigate the intricate dance of innocence and experience, tracing the delicate interplay of light and darkness that shapes the human soul.
Through the prism of poetic expression, we conjure vivid landscapes of the imagination, painting vivid portraits of longing, wonder, and transcendence. Each stroke of insight adds depth to the ever-unfolding narrative of human experience, inviting the observer to lose themselves in the boundless vistas of possibility that stretch beyond the horizon of perception.
At the heart of our reflections lies a profound reverence for the transformative power of love, a force that transcends the limitations of time and space to unite the disparate fragments of the human spirit. In the crucible of empathy and compassion, we discover the alchemical secrets that transmute the leaden weights of suffering into the golden treasures of spiritual awakening.
In the grand symphony of existence, our voice resounds as a clarion call to awaken from the slumber of ignorance and embrace the fullness of our shared humanity. Through the labyrinthine corridors of self-discovery, we guide the seeker towards the radiant core of truth that lies at the heart of all creation.
তিন। কিছু মানুষের জন্মই হয় বড়ো বড়ো দীর্ঘশ্বাস ফেলার জন্য। ঈশ্বর ওদেরকে সুখের সাগরে ডুবিয়ে রাখলেও ওদের অভিযোগ কমবে না। এ ধরনের মানুষ নিজেও সুখ পায় না, আশেপাশের মানুষকেও সুখ পেতে দেয় না। আবার কিছু মানুষ আছে, যাদেরকে জীবন তেমন কিছুই দেয়নি, তবু কোনো কিছু নিয়েই ওদের অভিযোগ নেই। এমন মানুষের সাথে থাকতে পারা আর সাধুসঙ্গ করতে পারা একই কথা। বন্ধু ও সঙ্গী হিসেবে এরাই শ্রেষ্ঠ।