বৃষ্টি নামার দিনে

এমন একটা বৃষ্টিস্নাত যৌবনভরা দুপুরে তোমাকে নিয়ে কিছু না লিখলে আমার ভারি অন্যায় হবে।
ভালো আছ তো? তোমার ওখানেও এমন ডালপালা, জবা, নয়নতারার গা চুয়ে চুয়ে দারুণ বৃষ্টি পড়ছে তো?




প্রকৃতির প্রাকৃতিক ঋতুস্রাব না হলে সেটা কিন্তু তার পেটে সন্তান না আসার কারণ হতে পারে, কখনও ভেবেছ কি এটা নিয়ে?
না কি খুব মনোযোগ দিয়ে আজকেও অফিস করছ?




তুমি আর কত চাকরি করবে, বলো তো? এবার একটু প্রেম করতে শেখো। আমার সাথে না-ই করলে, বৃষ্টির সাথে করো। তোমার বান্ধবী বৃষ্টির কথা বলিনি কিন্তু, হুহ্!
খালাকে বলো আজকে খিচুড়ি করতে। আর তুমি মল্লিকা সেনগুপ্তের একটা কবিতার বই নিয়ে বসে যাও। এমন দিনে সব কাজে ফাঁকি দিয়ে নিজেকে সময় দিতে হয়, বোকা! কিছু কিছু দিন আসেই নতুন করে বেঁচে থাকার উপকরণ নিয়ে। আবার গিয়ে এসি ছেড়ে ঘুম দিয়ো না কিন্তু। কতদিন পরে এমন ভাসিয়ে-নিয়ে-যাওয়া বৃষ্টি এসেছে, বলো তো?




এমন মেঘলা দিনে কবিতা পড়তে বেশ লাগে, তাই না? মনে হয়, বৃষ্টিতে ভিজতে গিয়ে কোন বনে যেন হারিয়ে গেছি, কেউ খুঁজে পাচ্ছে না, আমিই পেতে দিচ্ছি না! ইচ্ছে করেই হারিয়ে আছি, প্রকৃতির রূপ ধরার চেষ্টা করছি, গাছপালার স্নান সারার দৃশ্য দেখছি। আমার মনে হচ্ছে, হারিয়ে যেতে বাধ্য করবে এই অবাধ্য বৃষ্টি আজকে।
না, এবেলা আমি বাড়ি ফিরছি না; রোজ তো ফিরিই, ফিরতেই হয়! আজকে অবাধ্য হব, আজকে কবিতা হব। কবির সাথে মিতালির সুযোগ পেতে আরেকটা দারুণ বৃষ্টির অপেক্ষা আমি করতে পারব না, আর ততদিন বাঁচার সময়ই-বা আছে কার হাতে? এর চেয়ে সহজ, এই অরণ্যে ভেজা-শাড়িতে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করা। আমি ভেজা-শাড়িতেই দাঁড়িয়ে আছি হিজলগাছের তলে।




কবি, আর অপেক্ষায় রেখো না, সর্দি বাঁধিয়ে ফেলার আগেই এখানে চলে এসো।
Content Protection by DMCA.com