অনন্তকালের ঘরে মৃত্যু আসে সদাসর্বক্ষণে,
শান্তির আমেজ নামে ব্যথাহত দীর্ণ গৃহকোণে;
মৃত্যু অতি স্বাভাবিক। তবুও তো ভয় করে জানি,
মৃত্যুর বীভৎস রূপ কবে এসে যায় দিঠি হানি,
কেঁদে কেঁদে দু-কূল ভাসায়।
সুস্নিগ্ধ ছায়ায়
কোন যেন বেদনার রসে
ভরে ওঠে প্রাণ-মন জীবনের তৃষ্ণার আশ্বাসে।
ভরে ওঠে দেশ-জাতি বেদনার মৃত্যু সাহারায়,
সম্মুখে উদার প্রাণ—মুক্তকণ্ঠ তখন দাঁড়ায়!
মৃত প্রাণ জেগে ওঠে। রুদ্ধশ্বাস অন্ধকারময়—
গৃহে গৃহে জ্বলে আলো; ভেঙে যায় যত মৃত্যুভয়।
কালের বক্ষ চিরে একমুঠো স্নিগ্ধ আশীর্বাদ,
বলে যায় মুখে মুখে বসন্তের শুভ সুসংবাদ;
প্রত্যয়ের রোদ মেখে হৈমন্তিক ফসলের গান
পাওয়া যায় দিকে দিকে প্রাচুর্যের অপূর্ব সন্ধান।
জাতির মৃত্যুর ক্ষণে অনাবিল খুশির আরশ,
এসেছিল এইখানে জনমধ্যে বিপ্লব পরশ…
আজ তার পুণ্যতিথি, জেগে ওঠে নতুন স্পন্দন,
জন্ম-মৃত্যু ভুলে যাই, উন্মোচিত পুলকিত মন।
নতুন আলোর বানে ঝিকিমিকি আকাশের তারা,
নবসৃষ্টির উল্লাসে সবে আজ হলো আত্মহারা।
সৌন্দর্যপিয়াসী মন পেল যেন পথের নির্দেশ,
দুর্যোগের ঘনঘটা সব যেন হয়ে গেল শেষ।
মূক প্রাণ ভাষা পেল, গ্রামে গ্রামে নবজাগরণ,
সংগ্রামে মুখর মন, শুরু হলো নতুন জীবন!
সাহিত্য, সংস্কৃতি, শিল্পে—আর নয় কল্পনাবিলাস
সমাজ, সভ্যতা, কৃষ্টি
নবতর—
রচে ইতিহাস…
কেটে গেছে দুরারোগ্য জরাগ্রস্ত কুয়াশার জাল—
মৃত্যু আজ হেরে গেছে; সে খবর এনেছে সকাল!