লোকের নিন্দে করার চাইতে ঈশ্বরের নাম নেয়া ভাল। আমার নিজেরই তো কতো দোষ। আড়ালে কারও নিন্দে করলে আমার দোষগুলো তো কমে যাচ্ছে না। ও হয়তো শুনছে না, কিন্তু এতে নিজের দোষগুলোকে নিজের অজান্তেই ক্ষমা করে দেয়া হয়। আর ও যদি কোনওভাবে শুনে, তবে কতোটা কষ্ট পাবে ভেবে দেখেছিস? মানুষের আশীর্বাদ নিবি সবসময়। ওটা হয়তো সবসময় কাজে লাগে না, কিন্তু আমি দেখেছি, অভিশাপ প্রায়ই কাজ করে। ওটা যে লোকে কষ্ট থেকে দেয়! এর চাইতে ঈশ্বরের নাম করিস। নিজের ভাল হবে, সবার ভাল হবে।
বাবা, কারও উপর রাগ হলে সাথেসাথে গালমন্দ শুরু করে দিস না। সময় নে। ক্রোধ থেকে মানুষ এমন অনেক ভুল করে বসে, যা পরে আর শোধরানো যায় না। যার সাথে রেগে যাচ্ছিস, এমনও তো হতে পারে, তোর এমন কিছু আছে যা ওর ভাল লাগছে না। এ জগতে কে নিজের পিঠ দেখতে পায়? সারদা দেবীর একটা কথা মাথায় রাখিস—সহ্য করো, তোমারও এমন অনেক কিছু আছে যা অন্যদের সহ্য করতে হয়। এরপরেও জেদ চেপে বসলে, কোনও কিছুতেই কোনও কাজ না হলে কাউকেই কিছু বলিস না, তোর সমস্ত রাগ আমার উপর ঝাড়িস। রাগ ঝাড়লেই তো জ্বালা মিটে যাবে, তাই না? মুখে যা আসে, তা-ই আমাকে বলিস। আমি নিতে পারব। আমার কোনও অসুবিধেই হবে না। এ নিতে পারাটা অনেক বড় আর্ট। সবাই নিতে পারে না। এটা ধৈর্য ধরে শিখতে হয়। যে যত ক্রোধ সহ্য করতে পারে, সে তত শান্তিতে থাকতে পারে।
কাউকে কখনো হিংসে করিস না। কাউকে হিংসা করার অর্থ হল, ঈশ্বর তোকে যা দিয়েছেন, সেটার প্রতি তুই অসন্তুষ্ট। এতে ঈশ্বর ভাবেন, তোকে না দিয়ে বরং যে তোর চাইতেও আরও কষ্টে আছে, তাকে দিলে তার আরও উপকার হতো। কৃতজ্ঞতার শক্তি আছে। তুই যে অবস্থাতেই থাকিস না কেন, সবসময়ই এটা মাথায় রাখবি, তুই নিশ্চয়ই ঈশ্বরের বড় কোনও মাস্টারপ্ল্যানের অংশমাত্র। যাকে হিংসা করছিস, তুই তার কষ্টগুলো নিয়ে কতোটুকুই বা জানিস? ওকে হিংসা না করে ওর মতন হওয়ার জন্য কিছু কাজ কর। যদি মনে হয়, ও তোর চাইতে ভাল আছে, ওর জন্যে প্রার্থনা কর, যাতে ও আরও ভাল থাকে। ঈশ্বর যাকে ভাল রাখেন, তার ভাল থাকাটা চায় না, এরকম কাউকে উনি পছন্দ করেন না। তুই যদি ওর ভালর জন্য প্রার্থনা করিস, তোর নিজেরও ভাল হবে। জীবন আমাকে এটাই শিখিয়েছে।