ছোটো ছোটো সুখ— ওসব আমি কিনব না আর ভুলেও। গ্রাম থেকে আসে বেড়াতে শহরে, কিছু মেয়ে; এসে কেনে কাচের চুড়ি, রাঙা আলতা আর কাঁচপোকা-টিপ। শহরে আসতে না আসতেই ওরা নিয়ে নেয় সব— গছায় যা-কিছু দালাল-মহাজন।
সুখ—হ্যাঁ, তাল-তাল সুখ কিনতেই আমার আসা শহরেতে। সিঁদুরের রঙে রাঙা পুব আকাশের মতো, অথবা গোলাপের ম-ম ঘ্রাণে-ভরা, সমস্ত শরীর-মন, প্রতি লোমকূপ… সেই সুখে ফুলে যাবে, ফেটে যাবে; তা-দেওয়া ডিম ফুটে বেরোবে যেন মুরগির ছানা, অথবা রৌদ্রের তাপে ফেটে-যাওয়া অতসীফুলের দানা… আহা, এইসব সুখ—দু-দিনেই রংছুট!
মিয়োনো মুড়ির মতো প্রাণ হয়ে পড়ে ক্লান্ত-অবসন্ন; এবার বাজারে যাব, সব গলি পার হয়ে, অনেক দুঃখের দাম দিয়ে কিনে নেব সবচেয়ে বড়ো সেই সুখ; সমস্ত বাজারই হবে তখন আমার তালুক!
সুখ! আহা, বড়ো সুখ! সমস্ত জীবন ধরে ভরে রবে বুক। জুড়োবে না, ফুরোবে না ওম্ ওম্ তাপ, আর কখনও ঝড়-জল বসাবে না দাঁত।
অনেক ছাইয়ের গাদা, চাপা-দেওয়া মাটি; ওদের নিচে পড়ে-থাকা বীজের ভ্রূণটি অঙ্কুরিত হবে, ফোটাবে আমায়… দুলব সুখে তখন গোলাপকুঁড়ির মতন।
এখানে-ওখানে সওদা সুখের… চলে তো সদাই, চলে হরদম; কেনা যা-কিছু যায়, সুখ ওতে বরাবরই যে বেশটুকু কম!