ধূসর মৃত্যুর মুখ: ৪

সে কোর্টে প্র্যাকটিস করছে, আমি এখনও যাইনি কোর্টে। সে আমাকে সবসময় বলত, কত টাকা পেয়েছে, কত খরচ হয়েছে। আমার সামনে তার দুঃখ দুঃখ ভাবটা সবসময় দেখাত, কেবলই অভাব অভাব করত। যখনই দেখা হতো, হাজার পাঁচ-শো হাতে যা থাকত, তা-ই গুঁজে দিতাম পকেটে। কিছু দেখলে আমি তার জন্য কিনে নিতাম। একজামের জন্য যা যা শিট দরকার, সব আমি প্রোভাইড করতাম অনেক দূর থেকে গিয়ে। তার ভাগনের জন্য কাপড় লাগছে, আমার কাছে থাকা টাকাটার প্রয়োজন ছিল খুব, ডাক্তারকে চোখ দেখানোর কথা, অনেক বৃষ্টিতে গিয়ে বেবিটার জন্য তবু তা খরচ করে অনেক কাপড় কিনি। সে এক বারও পরে জানতে চায়নি, ডাক্তার দেখিয়েছ? আমার চশমাটাতে একদম দাগ পড়ে গেছে। চোখে দেখতে অনেক অসুবিধে হচ্ছিল, কিন্তু টাকা তাকে দিয়ে দেওয়াতে আমার চশমা চেইঞ্জ করা সম্ভব ছিল না। এটা অনেক দিন কষ্ট করে ব্যবহার করে পড়াশোনা করতে হয়েছে।




সে তার কাজিনের চিকিৎসার জন্য ভারতে যাবে, আমাকে বলল, তোমাকে কিছু কাজ দিচ্ছি।…এটা বলে যা যা লাগবে একটা ছেলের, যেমন স্যান্ডেল, পারফিউম, জুতা, টিশার্ট, টাওয়েল, লুঙি ব্লা ব্লা যা দরকার, সব কিছুই শপিং করিয়ে নিয়েছে। এক বারও ভাবেনি, আমার টাকা আছে তো? আবার ভারতে যেদিন যাবে, আমাকে তার সাথে বিমানবন্দরে যেতে বলে, আমাকে মিষ্টি নিতে বলে। আমি অনেক মিষ্টি কিনে নিই। তখন আমার টাকার অনেক সমস্যা। আবার ভারত থেকে আসার সময় তার গাড়িভাড়া আর তার বোনের জন্য ব্যাগ কিনে রাখতে বলে, ওটাও নিই। আবার পথে চকোলেট কিনে আমার টাকায়। অথচ আমি বার বার বাসা থেকে টাকা নিচ্ছি আমার ইদের জামাটা সেলাইশেষে আনব বলে। ওটা অনেক বার নিতে গিয়ে তার কারণেই নেওয়া হয়নি। তার অনেক অভাব। কোর্টে যাচ্ছে, প্যান্ট আর শার্ট নেই। বাসা থেকে দেড় হাজার নিই; ভাবলাম, অন্তত লোয়েস্ট মানের একটা প্যান্ট হলেও কিনতে পারবে।




যখন অনার্স শেষ হয়, তখন মাস্টার্সে ভর্তি হবার জন্য তাকে বললাম। সে বলেছে, সে ভর্তি হতে পারবে না। আমি বলেছি, তা কী করে হয়! তুমি না হলে আমিও হব না। আমি তোমাকে ছাড়া এগোব না কখনোই। আমি আমার সেমিস্টার ফি থেকে তাকে সাহস করে ভর্তি করিয়ে দিই। আমি তার সেমিস্টার ফি অ্যারেঞ্জ করার জন্য অনেক চিন্তার মধ্যে ছিলাম, অনেক মানুষের কাছে ছোটো হয়েছি, এমনকী ফ্রেন্ডের মায়ের কাছে পর্যন্ত। কোনো সাহায্য পাইনি কার‌ও কাছে। নিজে নিজেরটার রিস্ক নিয়ে তাকে ভর্তি করিয়েছি। তখন দুইটা চ্যালেঞ্জ ছিল। ইদে তার সব খরচ আমি বহন করেছি, আবার একই সময়ে তাকে ভর্তিও নিয়ে দিচ্ছি।




প্রথম সেমিস্টারটা মোটামুটি আমিই বহন করি, সাথে সে কিছু দেয়। আমি সবসময় সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছিলাম। আমার মায়ার কোনো কমতি ছিল না। তার দুঃসময়ে আমি তার পাশে ছিলাম। খুব খারাপ লাগত, যখন এত কিছুর পরও সে আমাকে অন্য কারও সাথে তুলনা করত। আমাকে বলত, অমুকের মতো হও না! তার এক্স ছিল, আমাকে পরে বলেছে; তার সাথে এবং তার বোনের সাথে আমাকে তুলনা করত। বলত, তাদের উপস্থিত বুদ্ধি অনেক বেশি। তার এক্সের কথা বলে বলে সবসময় আমার সাথে তুলনা করত। আমার খুব খারাপ লাগত। আমাকে এমনিই বলো শোধরাতে, আমি শোধরাব। কেন আরেক জনকে আনো? আমাকে বলত, তার এক্সের সাথে নাকি এমনভাবে চ্যাট করত, তার ফ্রেন্ড নাকি বুঝতে পারত না। কেন এটা বলল সে আমাকে? সে যেমন চ্যাট করেছে শুরু থেকে, আমিও তেমন করি। সবখানে আমাকে মানসিকভাবে কষ্ট দিত।




একদিন রেস্টুরেন্টে আমি, সে, আমার ফ্রেন্ড বসে আছি। সে আমার ফ্রেন্ডের সামনে বলা শুরু করল, তোমার পরিবার ও আমার পরিবার কারও জন্য একটাকাও খরচ করব না। আমি আর আমার ফ্রেন্ড থ তার কথা শুনে। আমি তো কোনোদিন তার কাছ থেকে টাকা চাইনি, উলটো আমি টাকা দিয়ে আসছি। আর কথাটা বলতেই হলে, সে আমাকে একা একা বলত, আমার ফ্রেন্ডের সামনে বলার কী দরকার ছিল?




আমাকে সে আগের মতো টেক্সট করে না, কেমন জানি আচরণ করে। হঠাৎ এত পরিবর্তন আমার মানতে কষ্ট হচ্ছিল। আমাদের যে শারীরিক সম্পর্ক, সেটাও না। আগে যার কাছে আমার জন্য সময় থাকত, সে অনলাইনে থাকলেও আমাকে এখন আগের মতো একটু টাইম নিয়ে হলেও টেক্সট করে না। আমি মানছি, তুমি ব্যস্ত সারাদিন, তবু অন্তত দশ মিনিট ভালো করে টেক্সট করো। মানুষ ব্যস্ত হলে সম্পর্ক যে নষ্ট হয়, সেটা কিন্তু নয়। সে আমাকে কেমন জানি এড়িয়ে চলছে—আমার অনুভব হচ্ছে এটা, তাই খুব খারাপ লাগছে।




কোর্টে একদিন আমি যাই; সে আমাকে বলেছে, দেখো, আল্লাহ যদি চায়, আমরা রাজি না থাকলেও বিয়েটা হবে। এখন তার নিয়ত খুব সাফ সাফ প্রকাশ পাচ্ছে। তুমি আল্লাহকে এত মানো, তাহলে কেন আগে এসব খেয়াল রাখোনি! এখন কেন এসব বলছ?




আমাকে বলছে, তোমার না অনেক আগে বিয়ে হয়ে যাওয়া দরকার ছিল। আমার ফ্রেন্ডের বাসা আর তার বাসা একই রোডে। আমি একদিন ফ্রেন্ডের বাসায় যাই, সে আমাকে দেখা করতে বলে। আমি আর সে দাঁড়িয়ে কথা বলছি। সেসময় একটা মেয়ে বোরকা পরে হেঁটে যাচ্ছিল। সে মেয়েটাকে দেখে একটু বিচলিত হয়, যেন চোর ধরা পড়েছে। আমার কেমন জানি লাগল তখন। মনে সন্দেহ এসেছে। কিছুদিন পর তার সাথে আমার দেখা হয়, তার মোবাইল নিই আমি। দেখি, বোরকা-পরা মেয়েটা তাকে চুলখোলা ছবি দিয়েছে। আমি অবাক হয়ে বলি, মেয়েটাকে তো আমি পর্দা করে দেখেছি, সে কেন তোমাকে চুলখোলা ছবি দিয়েছে? সে জবাবে বলেছে, এটা আমাকে সেন্ড করেনি তো, আমার ফ্রেন্ডকে সেন্ড করেছে, ভুলে এখানে এসে গেছে। কেমন মিথ্যুক!




আর একদিন আমার ফ্রেন্ড হোয়াটসঅ্যাপে একটা আকর্ষণীয় ছবি দেয়। সে তার চোখ আর সৌন্দর্য নিয়ে আরও কিছু কমেন্ট করে। তাকে তার ছবিটা ইনবক্স করে বিভিন্ন কথা বলে। আমি বলি, কেন করছ এসব? সে আমাকে জবাবে বলেছে, এটার নাম মানবিক দুর্বলতা।




কেমনটা যে লাগে! এটা নাকি তার মানবিক দুর্বলতা। আমি নিজের চোখেই দেখেছি, সে মেয়েদের দিকে আমার সামনেই তাকায়। আমার খুব কষ্ট হচ্ছিল। পরে আমি বলি, তুমি এমন করে দেখো কেন? জবাবে আমাকে বলেছিল, এখন তো আর তাকাই না। আমি বলেছিলাম যে, দেখো, তুমি এত মেয়ের সাথে কথা বলো বা চ্যাট করো, আমার খারাপ লাগে। সে বলেছিল, আমাকে আমার আগের জন কখনও এসব নিয়ে রেস্ট্রিকশন দেয়নি।




সে কাউকেই রেসপেক্ট করত না। আমার আপু, ভাইয়া কী পরিমাণ কষ্ট করে যে পড়াশোনা করেছেন, সে তাদের নিয়ে অবমূল্যায়ন করত। আবার আমার ফ্রেন্ডদের নিয়েও অনেক বাজে মন্তব্য করত।




আমার সাথে আগে যার সম্পর্ক ছিল, সে দেশে এসেছে। তখন সে একদিন আমাকে ফলো করে এবং কান্না করে বলে, আমি তাকে ছাড়া কীভাবে আছি! আমাকে সে ছাড়ছিল‌ই না। অনেক কষ্টে রেহাই পাই সেদিন। আমি সেদিন কোর্টের প্রোগ্রামে যাচ্ছিলাম। তো ঘটনাটার কথাও তাকে আপন মনে করে বলি। সে তার পরের দিন আমার ফ্রেন্ডকে ফোন দিয়ে বলে, আচ্ছা, তার সাথে সম্পর্ক রাখাটা কি ঠিক হবে? তুমি কী বলো? তোমার মতামত কী? আমার ফ্রেন্ড তাকে বলেছিল, দেখো, তার রিলেশন ছিল, এটা ঠিক আছে, কিন্তু সে অনেস্টলি তোমাকে চায় এবং ভালোবাসে। তখন সে আমার ফ্রেন্ডকে বলেছিল, ও আচ্ছা, তুমি তো তার ডাক্তার। আমি নাকি আমার সেই ডাক্তার ফ্রেন্ডের কথা মতো চলি।




সে আমার সাথে আমার যে-কোনো ফ্রেন্ডের ঘনিষ্ঠতা অপছন্দ করত। সবসময় আমাকে আর আমার ফ্রেন্ডকে বলত, আমি নাকি আমার ফ্রেন্ডের বুদ্ধি দিয়ে চলি। আচ্ছা, আমি যদি আমার ফ্রেন্ডের বুদ্ধি নিয়ে চলি, তাহলে রিলেশন শুরুর আগে আমার ফ্রেন্ড তার সাথে রিলেশন না করার পরামর্শ দিয়েছিল, এটা তো আমি ফলো করতাম, রিলেশন না-ও করতে পারতাম। আমি তো ফ্রেন্ডের কথা শুনিনি।




এত হাজার হাজার টাকা আমি তো ফ্রেন্ডের সাথে পরামর্শ করে দিইনি ওকে।




আমাকে তার এক্সের সাথে তুলনা করে বলত, আমার আর তার এক্সের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য হলো: আমাদের দু-জনের মধ্যে সব মিল, কিন্তু আমি নাকি চ্যালেঞ্জ নিতে পারি না। এভাবে আরও অনেক মেয়ের সাথে তুলনা করত।




ছয় মাসের কাছাকাছি আমার খুব অস্থির লাগছিল। তার সাথে অনেক দিন খোলা আকাশের নিচে কথা হয় না। আমি বলি, একদিন চলো দেখা করি। অনেক অনুরোধ করেছি। সে ব্যস্ত ছিল, মানতাম। আমি তাকে বলতাম, সকালে বের হব এবং সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরব। সে আমাকে বলত, না, এমন হবে না। আমরা দু-দিনের জন্য দূরে কোথাও যাব। আমি বলতাম, দেখো, আমি এমন যেতে পারব না। আমরা সারদিন ঘুরব, এটাই বেষ্ট। সে আমাকে বলত, টাইম নেই, একদিন ঘোরার টাইম নেই। ওদিকে সে দু-দিনের জন্য দূরে যেতে রাজি। আমার ফিগার নিয়েও কমেন্ট করত। আমাকে তার সামনে কান্না করাত কমেন্ট করে করে।




আমার স্বপ্ন ছিল: জাজ হওয়া। সে একদিন আমাকে রাস্তায় বলল, তুমি কি বিসিএস ক্যাডার হবে না? আমি বলেছি, না। এ নিয়ে বলার পর সে বাকি একটা শব্দও শোনেনি। চলে যায়। আমি জাজ হব, সে কথাটা বলার চান্স দেয়নি। আমার বিসিএস নিয়ে ভাবনা ছিল না। কিন্তু সে যে এমন ব্যবহার করছে, আমার এখন ওটাও হয়ে দেখিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে।




সেসময় বললাম, আমি জাজ হব। সে আমাকে ব্যঙ্গ করে বলল, হলে তো সবাই জানবে। তুমি তো আর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে না। তার যে শিবিরের সাথে সম্পৃক্ততা, তার বিরুদ্ধে এত অ্যালিগেশন, সে এটার প্রখরতা জানত। তার পরেও সে নিজের অনিশ্চিত লাইফের সাথে আমাকে জড়িয়েছে, আমাকে মিথ্যে স্বপ্ন দেখিয়েছে।




তার টাকাপয়সা কম, আমাকে বলত। বলত, অঢেল কিছু দিতে না পারি, কিন্তু একটা শান্তিনীড় হবে। ওইখানে প্রশান্তির অভাব হবে না; অথচ প্রতিনিয়ত কথায় কথায় আমাকে আঘাত করত। পরিস্থিতি এমন করে ফেলেছে, সে আমাকে বাঁশ দেবার পর‌ও আমি তার পকেটে টাকা গুঁজে দিতাম। টাকা নেবার ব্যাপারে তার কখনোই কোনো লজ্জা ছিল না, বরং বিভিন্ন কৌশলে চেয়ে নিত।




যখন আমি তার এড়িয়ে চলা সহ্য করতে পারছিলাম না, তখন বার বার ফোন দিয়ে কান্না করতাম, দেখা করে কান্না করতাম। সে আমাকে বলত, তোমাকে এত নিষেধ করার পরও দেখা করো কেন? তার বাবা নাকি তাকে দেখে বলছে যাতে সম্পর্ক করে বিয়ে না করে, আর পরিবার থেকে যাকে ঠিক করে, সে-ই তার জন্য রাইট পারসন।




পরিবারে অনেক আলোচনা হতে পারে, তাই বলে এ কথাটা কেন আমাকে শোনাল? কথাটা শুনে আমার ভেতরটায় এমন খারাপ লাগছিল! তার জন্মদিনে কিছু উপহার দিই, ডিনার করি একসাথে, ছোটোখাটো সারপ্রাইজ দিই। সবশেষে, সে আমাকে আরেক জনের সাথে তুলনা করে। আমার তখন মনে হচ্ছিল, যা করেছি, তার সবই মাটি। আমার অস্থিরতা দেখে আমার ফ্রেন্ড খোঁজ নেয় তার পরিচিত জন থেকে। সেই লোকটা বলে, সে অনেক মেয়ের সাথে ফ্লার্ট করেছে। আর মেয়েরা তার কথায় পটে যায়। সে বিভিন্ন ধরনের ধর্মীয় কথাবার্তা বলে মানুষকে কনভিন্স করে ফেলতে পারত। সে যে আরও মেয়ের সাথে এমন করে বেড়ায়, এই একটা কথা আমার বিশ্বাস করতে আমার অনেক দিন সময় লেগেছে।




একদিন হাতেনাতে আরেকটা প্রমাণ পাই, আমি অন্য একটা আইডি থেকে নক দিই। তার অমায়িক ব্যবহারে বুঝেছি, সে অনেক মেয়ের সাথে ফ্লার্ট করে বেড়াচ্ছে।




সে নাকি এক্সকে অনেক ভালোবাসত। অথচ আমাকে বলেছিল, তার নাকি তার এক্সের চাইতে বেটার কাউকে পেতেই হবে। আমি একদিন দেখা করি তার সাথে। আমি বলেছি, যদি আমাদের পারিবারিকভাবে মিল না হয়, তাহলে বিয়েই করব না আমরা। তুমি কী বলো? আর আমি তখন আমার একটা ফ্রেন্ডের রিলেশনশিপের কথা বলেছিলাম; বললাম, ওরা দু-জন নাকি পারিবারিকভাবে মেনে না নিলে বিয়ে না করে থেকে যাবে। তখন সে আমাকে বলল, তুমি আমার জন্য অপেক্ষা করছ। আমি প্রতিষ্ঠিত হলে প্রথম প্রপোজালটা তোমাকে পাঠাব। আমি তখন বললাম, নেক্সট প্রপোজাল কাকে পাঠাবে? সে বলল, নেক্সট প্রপোজালের প্রসেস তার বাসা থেকে শুরু করবে। তার কথাটা শুনে এমন কষ্ট পেয়েছি, তার সামনে কেঁদে দিয়েছি। চোখ দিয়ে অবিরত ধারায় পানি পড়েছিল। মনে হচ্ছিল যেন ওখানেই পড়ে যাব। সব শক্তি হারিয়ে ফেলেছি। সে বলেছিল, এখানে কাঁদার কী আছে? আমার ইচ্ছে করছিল, আমি তাকে ধরে একটা থাপ্পড় দিই!




অনার্স কমপ্লিট করে জুডিসিয়ারি কোচিংয়ে ভর্তি হব, পুরোদমে প্রিপারেশন নেব, এমন প্ল্যান ছিল। কোচিংয়ের টাকাটা নিয়েছিলাম বাসা থেকে। কিন্তু সব টাকা তাকে মাস্টার্সে ভর্তি হবার জন্য দিয়ে দিয়েছিলাম। আমার মনে আছে, সেদিন তাকে তার একটা ক্লাসমেট মেয়েকে ব্লক করে দিতে বলি। সে মেয়েটার সাথে চ্যাট করলে আমার কেমন জানি খারাপ লাগত। ব্যাপারটা তাই তাকে বলেছিলাম। অনেক রাগ করেছিলাম। তবুও সে রাখেনি আমার কথা।




আমার পুরো টাকাটা তাকে দিয়েছিলাম, তারপর সে আমাকে বলেছে, মেয়েটাকে ব্লক দিয়ে দেবে। পরে আরও একদিন আরেক দফা এটা নিয়ে কথা হয়, মন খারাপ হয়ে যায়, মেয়েটাকে সে এখনও ব্লক দিতে পারেনি। তৃতীয় বারে সে নাকি ব্লক করে। আবার পরে কীসের প্রয়োজনে নাকি মেয়েটাকে আনব্লক করতে হয়েছে। তার অজুহাত সবসময় তৈরিই থাকত। এই সামান্য অনুরোধটা সে রাখতে পারেনি। সে মেয়েটার সাথে এখনও চ্যাট করে। আমার মনে হলো, সে আমাকে এ কেমন প্রায়োরিটি দিচ্ছে!
Content Protection by DMCA.com