বহুদিন শব্দহীন রাতের আঁধারে
রেখেছি নিজেকে ঢেকে
লজ্জায় হীন-মৌন দৈন্যের পাশে।
শ্মশানের বাতাসে
হু-হু করে প্রেতাত্মার মতো
নিরাবরণ, নিরাভরন, সংকল্প-চেতনাহীন
বহু বাস ঘুরে-ফিরে অযোধ্যার রাম—
মিথ্যের জালে নিবেদিত প্রাণ।
এখানে বিজন বাতাসে উড়ন্ত ধূলিকণা আমি
রুদ্র-রুক্ষ খরতাপে দগ্ধ, ক্ষত-বিক্ষত;
মুখ থুবড়ে পড়ে আছি,
কতকাল কত বছর ধরে—
না জানি কত শিশুর জন্ম হলো এতকাল!
গোপন ক্ষতস্থানে তাকিয়ে দেখেছি
জরায়ুর বধিরতা, শূন্য ভিটেয়
তক্ষকেরা বেঁধেছে বাসা
আমি মৃত্যুর দিন গুনেছি বহু বার
আসেনি তবু মৃত্যু ভয়ংকর অবয়বে!
কেবলই বেঁচে থাকার যন্ত্রণা-অনুভব,
অপমান ঠায় দাঁড়িয়ে দরজায়।
ফাগুন এসেছে বার বার ঘুরে-ফিরে…
কেন্দ্রীয় মিনারের চারপাশ জুড়ে
যত ধনী বণিকের ভিড়,
আগে-পিছে অনুচর পঙ্গপাল সারি…
অগ্রাধিকার ওদের—এ-ই রেওয়াজ!
আমি যে পরিত্যক্ত থালার শুকনো ছেঁড়া রুটি
কিংবা এঁটো-কাঁটা খেয়ে বেঁচে আছি।
প্রশ্ন আমার বহু বার গুমরে মরেছে
না জানি কতকাল কত বছর ধরে!
বিস্তীর্ণ এই মরুবালুকায়
শুধু থরে থরে সাজানো…
ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই—এখানে কোথাও ঠাঁই নাই।
ইচ্ছের চারাগাছগুলো (ছাই-ফোঁড়া আগুনের মতো)
কোনোদিনই কোনোকালেই
করেনি আত্মবিকাশ, বরং
হতাশার ঋণ জন্মেছে বার বার…
শুধু ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই—এখানে কোথাও ঠাঁই নাই।