ঘরের মধ্যে ঘর

এক।



কে লুকোলো মুখ?
মুখোশের আড়ালে কে দিল ঢাকা?
পারিজাত ভালোবাসার অপরিণত সত্য, কে করল অস্বীকার?
এ দহনের অন্তরালে কে কাকে দেখে সন্দিগ্ধ চোখে?
উইপোকা বাঁধে ঘরের মধ্যে ঘর,
ওদিকে ঘুণে কাটে সব আসবাব!



সবই কেটে নেয় কেউ-না-কেউ,
এইসব জানা আছে, এমন অজানা কারও কাছে,
যার কাছে নৌকো পড়ে আছে বৈঠাহীন,
যার কাছে আছে ফসলের ধু ধু মাঠ, অথচ বীজ বোনে কে?
তিনিই কি, যিনি কেবলই লিখেন, আর চুপটি করে দেখেন?



দুই।



চাইনি কিছুই তোমার কাছে এক কেবলই তোমাকে ছাড়া,
এই হৃদয়ের সবটুকু ভালোবাসা নিংড়ে দিয়েও তোমার পাই যতটা,
ঠিক সেটুকুই চেয়েছি তোমার;
অন্তর্দহনের তীব্র স্রোতে ভেসে যেতে যেতে এই হৃদয়ের নৌকোখানির---
তোমার বুকের ঠাঁই হয় যেখানটাতে,
ঠিক ওখানেই বাঁধতে চেয়েছি ঘর;
তোমার ঠোঁটের যতটা স্পর্শ এই ঠোঁট আগলে রাখে,
ঠিক ততটুকুই যে স্বর্গ আমার;
হৃদয় তোমার পেলে, আলগোছে দেবো দিয়ে এই হৃদয়ের বৈঠা;
কেবলই তোমাকে পেলে এই জীবনে,
মৃত্যুকে নেব মেনে খুব সহজেই---
আনন্দের আবদারে এটুকু শুধু জানি!



প্রিয়, নিয়ো না ফিরিয়ে মুখ এই ভালোবাসা থেকে;
এঁটো না খিল রুখতে এ ভালোবাসা,
ফিরিয়ো না এই হৃদয়টিকে তারই হৃদয়ের সমাধিফলকের জন্য।
নাহয় আঘাতেই জানাও ভালোবাসা, তবু গ্রহণ করো,
ঘৃণায় বেঁধো না, পারো যদি, বেঁধো তবে ভালোবাসায় কিংবা আদরে, তোমার স্পর্শের,
যেন এই, যখন ছুঁয়ে দাও
যেন জোছনার কোলে আরামে ঘুমোই;
যখন বুকে জড়াও, তখন মনে হয় যেন পুরো পৃথিবীই আমার;
চাইলে নাও রাজ্যটুকু, তবু কেড়ো না সিংহাসনটা আমার।



তিন।



এই যে পথ একলা চলে,
এই যে পথিক একলা একলাই কথা বলে,
কি পথ, কি পথিক,
দুজনেই বেশ একলা কথা বলে,
একলা একাই দারুণ চলে,
ওঠে কিংবা নামে,
চলতে গিয়ে হোঁচট খেয়েও,
কখনও কি থামে?



হঠাৎ পথিক একলা কষে স্মৃতির যত ঘা,
পথিক নিজেও ভালোই জানে, বুকের মধ্যে যা!
পথিক একলা কথা কয়,
পথিক একলা একা সয়,
বুকের মধ্যে লুকায় পথিক একলা পোড়া দাগ।
দেখে কেবল কবি,
গাছের যেমন ছবি।
আকাশমালায় বেঁকে,
ডালপালা যায় এঁকে।



 
Content Protection by DMCA.com