কুয়াশা সরিয়ে




কখনো কখনো কুয়াশা নেমে আসে মাটিতে, রাস্তাকে ঢেকে দেয় সাদা বালিশের মতো নরম ঘেরাটোপে। গাড়ি চলতে চলতে হঠাৎ ঢুকে পড়ে সেই কুয়াশার ভেতরে—দূরদৃষ্টি হারিয়ে যায়, চোখ কেবলই সামনের ছোট্ট অংশে আটকে থাকে।

প্রথমে স্নায়ু অস্থির হয়ে ওঠে, চিন্তা জমে যায়, কিন্তু ধীরে ধীরে মনে হয়—ভাবা সম্ভব নয়, কেবল মনোযোগ রাখা জরুরি। এই অবস্থা যেন অচেনা ধ্যানকক্ষে প্রবেশ, যেখানে একমাত্র উপায়—শর্ত মেনে নেওয়া আর সম্পূর্ণ সমর্পণ।

তারপর ঘটে জাদু। যে-মুহূর্তে কুয়াশা কেটে যায়, একেবারে নতুন এক দিগন্ত উন্মোচিত হয়—সব কিছু যেন হাই-ডেফিনিশন পর্দায় ধরা দেয়, অতুলনীয় স্বচ্ছতায়।

আলোকপ্রাপ্তিও এমনই। অজ্ঞতার কুয়াশা ভেদ করার পর জীবন যেন নতুন এক দ্যুতিতে আলোকিত হয়ে ওঠে। মনের উপর বসানো হয় এক অদৃশ্য দিকনির্দেশকের ব্যবস্থা, যেন মাথার চুলের ভাঁজে লুকানো আছে ফেরেশতার পাঁচ আঙুল, যারা চিরদিন পথ দেখাতে থাকে। কুয়াশা যেমন পথ ঢেকে রাখে, তেমনি অজ্ঞতা চেতনা আচ্ছন্ন করে। কিন্তু একবার বেরিয়ে এলে—সব কিছু স্পষ্ট, দীপ্ত ও নতুন হয়ে ওঠে।