: অনেক বেশিই চেয়েছি তোমার থেকে— কারণ তোমাকেই তো পেয়েছিলাম নিজের গভীরে, যেখানে তোমার একান্ত অনুভূতির বাস।
কেন চাইব না বলো, তোমার অনুভবের নির্বিশেষ স্পর্শ পেতে?
আমি যে ভালোবাসি তোমায়— তবে ভালোবাসার প্রতিদানে ভালোবাসা চাওয়া কি আজও এই জগতের চোখে অন্যায়?
যা-কিছু হারিয়েছি, তা তো এইখান থেকেই পাওয়া। অন্য কারও পাওয়া সেই ‘তুমি’, হারিয়ে গিয়েও যে ফিরে এসেছ আমার ভেতরে— তুমি হয়েই!
আমার অপূর্ণতার ভেতর দিয়েই তোমার পূর্ণতার ছোঁয়া পেয়েছি।
তোমার চোখে তাকিয়ে ভাবতাম— রহস্যময় সেই নীল-বাগিচায় কেউ কি আমৃত্যু প্রবেশ করতে পেরেছে কখনও?
মুহূর্তেই মিলিয়ে গেলো অন্ধকারে... তোমার বেদনার পঙ্ক্তিমালা।
হারানো মুহূর্তের রেশ ধরে রাখতে চাওয়া মানুষ তুমি নও— বুঝি।
তবে এই মুহূর্ত থেকেই সমস্ত অপ্রাপ্তি তোমার পূর্ণতায় মিলিয়ে দিলাম।
এ ক্ষণে তুমি শুধুই আমার, আবারও আমরা মিলিয়ে যাব এই ভুবনে।
: ভীষণ অভিমানে কীভাবে খুঁজে পাবো তবে তোমায়?
অন্য কারও মনের ভেতর আর দেখতে পারব না এ জীবনে।
তোমাকেই তো ছুঁয়ে যেতে চেয়েছিলাম বার বার— অথচ তুমি মিলিয়ে যাবে চেনা গন্তব্যে।
জানি, তোমায় ডেকে আর পাবো না।
আচ্ছা, যদি বিচ্ছিন্নই হতাম, তবে এই খড়কুটোয় জড়ো হয়েছিলাম কেন?
: তোমায় পূর্ণ করেছিলাম— শূন্যতার বিস্তার দৃশ্যমান করতেই।
বিচ্ছিন্নতাকে মেনে নিয়েছিলাম বলেই, ক্ষতের শেষটুকু বলতে পেরেছি তোমায়।
তোমার ভেতরটা জানতে এ মন ছিল ব্যাকুল— জানো কি তুমি?
: ভুলে যাও তবে তোমার অতীত, জানতে চেয়ো না তোমার ভবিষ্যৎ।
তুমি শুধু অস্তিত্বে ধারণ করতে চেয়েছিলে আমায়— বুঝতেই পারোনি, তার জন্য ভালোবাসতে জানতে হয়।
: সে ক্ষমতাই-বা ক-জনের ছিল?
নিশ্চয়ই যা ঘটছে, তার ভার বইতে হবে না— আর যা ঘটেছিল, তা ছিল তোমার আয়ত্তের বাইরে।
যা অবধারিত, তা-ই ভবিতব্য।
এই সীমারেখার মধ্যেই আমাদের অবস্থান— আর এই সীমানার ঊর্ধ্বেই তোমার সন্ধান।
হারানো সেই ঠিকানাই আমাদের বর্তমান অবস্থান এনে দিয়েছে।
আমি এই মুহূর্তে— কেবল এই মুহূর্তজুড়ে, শুধু তোমারই।
আমাদের অস্তিত্বে টিকে-থাকা ভালোবাসার স্মৃতি, অদৃষ্টে মিলিয়ে দেবার জন্যই প্রস্তুত হচ্ছি।
তবে, সুখের অনুভব এই যে— আমরা যে-পথেই হেঁটেছি, আমাদের গন্তব্য ছিল একই।
: অদৃশ্য এক যোগসূত্রে আজ তোমার অন্তরও আমাকে ছুঁতে ব্যাকুল।
আমাদের প্রাণের স্বরূপ যদি টিকে থাকে— তবে অসংখ্য বার এই ভুবনে মিলিয়ে যাব কেবল তোমাতেই।
এই সংশয়ের ক্ষণে, তোমার সাক্ষাৎ বদলে দিয়েছে আমার সমগ্র সত্তাকে।
তোমার কার্য সম্পন্ন হলে— তুমি কি নিজেই মিলিয়ে যেতে চাও?
: তোমার অনুভূতি আলোকিত করেছে আমার হৃদয়—
এই আলোড়ন মিথ্যে মায়ার আবরণে ঢেকে রাখা যায় না।
যদি ভবিতব্য তোমার স্থায়িত্ব রক্ষা করতে পারে, তবে আমি কে— এ আবেশ উপেক্ষা করবার?
নিশ্চয়ই আমরা মিলিয়ে যাব ভবিষ্যতের বিস্তৃত গন্তব্যে।