অন্তরের আদি-স্বর




কোনো বিষয় যত বড়োই মনে হোক না কেন, শেষপর্যন্ত তা তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়; কারণ যখন আমরা জীবনের কোনো বিষয় নিয়ে অকারণ দুশ্চিন্তায় ভুগি, তখন আসলে আমরা চোখ সরিয়ে রাখি সত্যিকার পুরস্কার থেকে।

আর সেই পুরস্কার কী? এটি হলো—পূর্ণ জাগরণের দান। যখন আমরা সেই জাগরণকে প্রাপ্ত হই, তখন স্পষ্ট উপলব্ধি হয়—জগতের বিষয়গুলো শেষপর্যন্ত কোনো বিশেষ মূল্য রাখে না।

যা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো জাগ্রত হওয়া এবং জেগে থাকা—আমাদের আসল সত্তাকে চিনে নেওয়া।

মানুষরূপী দেহে থেকে আমরা পৃথিবীতে আছি—কিন্তু আমাদের প্রাথমিক পরিচয় এই পৃথিবীর নয়। আমাদের আসল পরিচয় হলো এক অমলিন স্বচ্ছতা, যা জগতের ঊর্ধ্বে, অপরিবর্তনীয়।

যখন আমরা সত্যিই বুঝে যাই, কী আসল গুরুত্বপূর্ণ, তখন উপলব্ধি করি—আমাদের সমস্ত ভয়, আমাদের একাকিত্বের গোপন স্রোত—এ সবই জন্মেছে ঈশ্বরের ভেতরে আমাদের আসল অবস্থান ভুলে যাবার কারণে।

আমরা ভুলে যাই—আমরা আসলে ঈশ্বরেরই আগুন থেকে নির্গত এক-একটি জ্যোৎস্না-শিখা। যখন আমরা এই উপলব্ধির ঘরে ফিরে আসি, তখন আর কোনো প্রশ্ন থাকে না, কোনো উদ্‌বেগ থাকে না। থাকে কেবল সরাসরি দর্শন—এক জাগ্রত চেতনা—আমরা সর্বদাই সুরক্ষিত, দিব্যনির্দেশে পরিচালিত, আর চিরকাল নিরাপদ—প্রিয়তমের (ঈশ্বরের) আলিঙ্গনে।

জগতের সমস্ত ‘বিষয়’কে ছাড়িয়ে যেতে হবে, কারণ যা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো—নিজেকে জানা, বিভেদের ভ্রান্তি ভাঙা, আর ঈশ্বরীয় আশ্রয়ের মধ্যে চিরসুরক্ষিত হয়ে থাকা।