ভাবনা: ছয়শো চুরানব্বই
...............................................................
কাউকে ভালোবাসেন? কিংবা কারও সাথে প্রেমের সম্পর্কে আছেন? খুবই ভালো কথা। প্রেম-ভালোবাসা ভালো জিনিস, ওসব করলে কেমন জানি খুশি খুশি লাগে, ইচ্ছামতো বাদাম খাওয়া যায়...ডাক্তার জাহাঙ্গীর কবির বলেছেন, মাখন দিয়ে মেখে বাদাম খাওয়া ভালো। তো, আপনার প্রথম কাজই হলো তাকে পেইন না দেওয়া। ব্যাপারটা কীরকম? অনেক রকম। একটা বলি।
আপনি তাকে ফোন করে পাচ্ছেন না। ধরে নিলাম, অনেকক্ষণ ধরেই পাচ্ছেন না। নাম্বার বিজি পাচ্ছেন বা আপনার কলটা ওয়েটিং-এ পাচ্ছেন। অতএব, আপনি ধরেই নিলেন, সে বিপরীত লিঙ্গের কোনও মানুষের সাথে ফোনে বিজি। তার দেহ, তার মন, তার সব কিছু চুরি করে খাচ্ছে কোনও এক বিকট ড্রাগন! নেহিইইই...
মেসেঞ্জারে, ভাইবারে, ইমোতে, হোয়াটসঅ্যাপে বিজি পাচ্ছেন বা কেবলই কানেক্টিং দেখাচ্ছে, রিংগিং দেখাচ্ছে না। তো সে কী করছে? নিশ্চয়ই বিপরীত লিঙ্গের কারও সাথে ফোনে গল্প করছে, তার জীবন-যৌবন শুষেচুষে খাচ্ছে...কে কে কে! ক্রোধে ক্ষোভে আপনার মনে হলো---আইজকা পাইসি তোরে, এক্কেরে কাঁচ্চা খায়ালামু! চেনো মোরে?
এর পর? সে যখন আপনাকে কলব্যাক করল, তখন আপনি মহাউৎসাহে তার চৌদ্দগুষ্টি উদ্ধার করতে শুরু করে দিলেন। সে লুইচ্চা, তার চরিত্র খারাপ, সে বাজে, ইত্যাদি ইত্যাদি। কিংবা তার সাথে এমনভাবে কথা বলতে লাগলেন যেন সে একটা চোর আর আপনি পুলিশ! সে যা-ই বলুক না কেন, আপনি আপনার অবস্থানে অটল অবিচল যেন তাকে আহত রক্তাক্ত করাই আপনার মূল উদ্দেশ্য।
এতে কী হবে, জানেন? পরবর্তীতে সে যখনই আপনাকে কলব্যাক করবে, তখন সে অনেক অপরাধীর স্বরে কথা বলতে থাকবে, এমনকি আপনি যা সন্দেহ করছেন তা যদি সত্যি নাও হয়, তাও! কুকুরকে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখা যায়, মানুষকে নয়। মানুষের গলায় শেকল পরিয়ে দিলে কিন্তু তাকে দেখতে কুকুর কুকুর লাগে। জাস্ট ইম্যাজিন, আপনি একটা কুকুরের সাথে প্রেম করছেন! ঘেউউউ...
আচ্ছা, আসলে কি ওটা অপরাধ ছিল? সিরিয়াসলি? কেউ উপবাস-পালন করছে, তার খাওয়া নিষেধ, ঠিক আছে---তাই বলে কি তার খাবারের মেন্যুর দিকেও তাকানো নিষেধ? এত স্টুপিড কেন আপনি? আপনার ব্রেইনে কোনও মগজ নাই, হার্টে হৃদয় নাই?
কেউ যদি আসলেই বাজেলোক হয়, আপনি তাকে এক কোটিবারও বাজেলোক বলে গালাগালি করলে সে কি ভালো হয়ে যাবে? যদি জানেনই যে সে একটা বাজেলোক, তো তার সাথে থেকে যাচ্ছেন কেন? ছেড়ে দিন না সে বাজেলোকটিকে! ইয়ে মানে, না কি আপনি নিজেও বাজে?
আপনাকে মাথায় রাখতে হবে কেবলই ছেলেদের সাথে প্রেম করার জন্য মেয়েরা পৃথিবীতে আসে নাই, কেবলই মেয়েদের সাথে প্রেম করার জন্য ছেলেরা পৃথিবীতে আসে নাই। আপনার অন্য কোনও কাজ না থাকতে পারে, তার তো আছে, তাই না? মানুষের প্রয়োজনীয় ফোন আসে না? মেসেঞ্জারে প্রয়োজনীয় কথাবলা নিষেধ? চোর কিন্তু সবাইকে চোর ভাবে।
আপনার প্রিয়মানুষটিকে কারও সাথে চ্যাটিং করতে দেখলে তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন? তার সাথে দুর্ব্যবহার করতে শুরু করে দেন? তাকে আঘাত করে করে কথা বলেন? ওকে ফাইন! সে অন্য আইডি থেকে চ্যাটিং করবে বা আপনার সামনে করবে না, লুকিয়ে লুকিয়ে করবে। এইবার ঠিকাছে? মনে রাখবেন, জোর করে মানুষকে আটকে রাখা যায় না, ছাগলকে যায়।
আপনার সাথে থাকার সময় যদি কেউ ভালো ফিল না করে, অস্বস্তিতে ভোগে, নিশ্চিত থাকতে পারেন, সে আপনাকে আসলে ভালোবাসে না, কেবলই ভালোবাসার অ্যাক্টিং করে। ছাড় দিতে শিখেন, স্বস্তি দিতে শিখেন, সে করুক না যা খুশি! মানুষকে একটা আশ্রয়ে ফিরতেই হয়, যদি আপনি সে আশ্রয়টা হয়ে উঠতে পারেন, তবেই আপনি সার্থক। কেবলই ভালোবাসা দিয়ে আটকে রাখতে পারতেন আলমগীর আর শাবানা, সে যুগ শেষ! আরে ভাই, তখন তো মৌসুমীর চোখে ওমর সানীর চোখ পড়লেও প্রেম হয়ে যেত, আর ব্যাকগ্রাউন্ডে বাজতে থাকত...লা লা লা লা...লা লা লা লা...লা লা লা লা...এখন ওরকম স্টাইলে প্রেম হয়ে গেলে তো মানুষ প্রেম করতে করতে টয়লেট করারও সময় পেত না!
মনে রাখবেন চৌধুরী সাহেব, আমাকে আসামি করে রাখলে আমিও আপনাকে পুলিশ করেই রাখব, প্রিয়জন না! আমি গরীব হতে পারি, কিন্তু চোর না!
আচ্ছা, সত্যিই যদি আপনার প্রিয়মানুষটি বিপরীত লিঙ্গের কারও সাথে কথা বলেই থাকে, তা হলে কী হবে? একটা ছেলে একটা মেয়ের সাথে কথা বললে বা একটা মেয়ে একটা ছেলের সাথে কথা বললে প্রলয় হয়ে যায়? যদি তার ইচ্ছে করে কথা বলতে, আপনি তাকে আটকাতে পারবেন? শিওর? একটাই মোবাইল ফোন রাখা যাবে, একটাই আইডি চালানো যাবে, নইলে ফাঁসি হয়ে যাবে---এমন কোনও নিয়ম জগতে আছে? মনে রাখবেন, যত বড় পুলিশ, তত বড় চোর! আপনি ফোন করবেন, রিংও বাজবে, সে ধরবে না, কারণ সে ঘুমাচ্ছে, সে ফোনের কাছে নেই, ইত্যাদি ইত্যাদি। সিম্পল! কোনও সমস্যা? আরে ভাই, শুকরিয়া করেন যে আপনার প্রিয়জনটি সমলিঙ্গের প্রতি আকৃষ্ট নয়। ওরকম কিছু হলে তো সে আপনাকে আর পাত্তাই দিত না বা কম পাত্তা দিত।
প্রেমিক হোন, প্রেমিকা হোন, পুলিশ নয়। পুলিশ হলে কী হবে, জানেন? যখন সে আপনাকে ফোন করবে বা কলব্যাক করবে তখন তার মধ্যে অহেতুকই এক ধরনের হীনমন্যতা বা অপরাধবোধ কাজ করবে। মনের ইচ্ছের বিরুদ্ধে নিতান্ত বাধ্য হয়ে সে আপনাকে ফোন করবে কখনও কখনও। এমনও হবে, ফোনটা করার সময় প্রবল বিরক্তি বা ঘৃণা নিয়ে করছে। মনের মধ্যে এক ধরনের দ্রোহ বা বিতৃষ্ণা পুষে রেখে আপনাকে কল করে যাচ্ছে দিনের পর দিন, তাও হতে পারে।
...তার মধ্য থেকে ভালোবাসাটা হারিয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে কেবলই আপনার সন্দেহ, মানসিক নির্যাতন, বাঁকা বাঁকা কথাবার্তা বা নিয়মিতই তাকে রিমান্ডে নেওয়ার কারণে। তার কাছে আপনি হয়ে উঠছেন একটা মূর্তিমান আতংক! সে অভিনয় করে করে সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখছে। খেয়াল করেছেন ব্যাপারটা? আপনার সাথে কথা বলার সময় বা আপনার সাথে থাকার সময় যার নিজেকে চোর চোর লাগে, আপনার জন্য তার মনে ভালোবাসা জন্মাবে না, এটাই স্বাভাবিক। ভয়ে চুপ থাকা আর ভালোবাসায় চুপ থাকা এক জিনিস নয়।
এটা কি কোনও সুস্থ সম্পর্কের লক্ষণ? যাকে ভালোবাসেন, তাকে তার মতো থাকতে দিন, নিজেও নিজের মতো থাকুন। প্রতিটি মানুষ প্রথমে একজন মানুষ, তার পর একজন প্রেমিক বা প্রেমিকা। তার মন পেতে চাইলে সবার আগে মানবিক হোন, বাকিটা এমনিতেই হয়ে যাবে। কারও ভালোবাসা পাওয়াটা পরম সৌভাগ্যের ব্যাপার। আর স্রষ্টা সব সময়ই মানুষ বুঝে সৌভাগ্য দান করেন। সব সৌভাগ্য সবার জন্য না। আগে ভালোবাসা পাওয়ার মানুষ হয়ে উঠুন, তাকে তার জায়গায় দাঁড়িয়ে বুঝুন, আপনার নিজের জায়গায় নয়।
পয়সা দিয়ে বাসায় যে কাজের বুয়া রাখেন, সেও কিন্তু স্টার জলসায় 'শ্রীময়ী' শুরু হলে ওই সময়টাতে কাজ করে না, টিভির দিকে হাঁ করে তাকিয়ে থাকে। সিরিয়াল দেখতে না দিলে অন্য বাসায় কাজ নিয়ে নেবে। কাজের অভাব নাই, বাসার অভাব নাই। দেখুন, পয়সা দিয়েও আপনি তাকে আপনার ইচ্ছেমাফিক চালাতে পারছেন না। আর পছন্দের মানুষটাকে ভালোবাসার নামে পেইন দিয়ে ইচ্ছেমাফিক চালাতে পারবেন ভাবছেন? জগতে আপনি ছাড়া আর মানুষ নাই?
আপনি যদি আপনার মতো করে শতভাগ আনুগত্য চান, তবে একটা কুত্তা পালেন, মানুষ না।
ভাবনা: ছয়শো পঁচানব্বই
...............................................................
এক। যদি কখনও বিপদে পড়েন, তখন যারা আপনাকে অপছন্দ করে তাদের সক্রিয়তায় আপনি যতটা কষ্ট পাবেন, তার চাইতে বেশি কষ্ট পাবেন যারা আপনাকে পছন্দ করে তাদের নিষ্ক্রিয়তায়।
এবং প্রায়ই দেখবেন, উপরের দুই দলই আপনার দ্বারা কোনও না কোনওভাবে উপকৃত।
দুই। আপনার গালে যদি কখনও রিকশাওয়ালা একটা চড় মারে, তবে...
চড়টা সে ভুল করে মেরেছিল,
সে খারাপ আপনি ভালো,
সে একটা রাস্তার লোক আপনি অনেক বড়ো কিছু,
সে সারাজীবন সাধনা করলেও আপনার পায়ের জুতার সমানও হতে পারবে না,
আপনি চাইলেই তাকে একমিনিটেই পিষে ফেলতে পারেন,
...ইত্যাদি ইত্যাদি কথাবার্তা আপনি হয়তো বলতে পারবেন, নিজেকে সান্ত্বনা দিতে পারবেন ওসব বলে বলে, তবে দিনের শেষে সত্য একটাই---আপনি রিকশাওয়ালার কাছ থেকে একটা চড় খেয়েছেন।
এখানে দুইটা ব্যাপার ঘটবে:
এক, সে সারাজীবন ধরেই বলতে পারবে, সে আপনাকে একটা চড় মেরেছিল। সবার কাছে গল্প করে বেড়ানোর মতো একটা বড়ো অ্যাচিভমেন্ট তার হয়ে গেল কিন্তু!
দুই, রিকশাওয়ালার চড়ের যে শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা, সেটা আপনাকে খুব ভোগাবে। চড়টা সে ভুল করে মেরেছে, এর চেয়ে বড়ো কথা: চড়টা সে মারতে পেরেছে!
জানেনই তো, লাখ টাকার বাগান খায় দুই টাকার ছাগলে! ছাগল দুই টাকারই হোক, আর লাখ টাকারই হোক, দুই ধরনের ছাগলই লাখ টাকার বাগান খেয়ে ফেলে লস করায় ওই লাখ টাকাই!
(এই পোস্টে 'রিকশাওয়ালা' শব্দটি কোনওভাবেই কাউকে ছোটো করার জন্য ব্যবহার করিনি, কেবল আমার বক্তব্যটি বোঝানোর জন্য ব্যবহার করেছি।)
তিন। পাপ পুণ্য দুই-ই নির্ভর করে সময়ের উপর। যদি এমন হতো, মদ (অ্যালকোহল) খেলে কখনও করোনা (কোভিড-নাইনটিন) ধরবে না, তবে আমার বাবাকে প্রতিবেলায় নিয়ম করে মদটা আমিই নিজহাতে খাইয়ে দিতাম। তখন আমার মা কী করত? কী আবার করবে, মদ খাওয়ার অপেক্ষায় থাকত! সিম্পল! ভাগ্যিস, সেভেনটি পার্সেন্ট অ্যালকোহলসমৃদ্ধ স্যানিটাইজারটা হ্যান্ড অবধি এসেই থেমে গেছে!
এটাই বাস্তবতা। একে বলে সময়ের দাবি। খ্যাঁক খ্যাঁক!
আমি শালা মদ খাই বলে তুমি আমাকে মাতাল বলো, আর তুমি শালা মদ খেতে পারো না বলে যে আমি তোমাকে কোনও কিছু বলা দূরে থাক, গোনার মধ্যেই ধরি না, সে খোঁজ রেখেছ কখনও? তুমি শালা তোমার ফুডহ্যাবিট নিয়ে স্বর্গে যেতে চাও তো যাও না, কে ধরে রেখেছে! আমি শালা মদ্যপন্থি মানুষ, আমাকে ধরে টানাটানি করছ কেন? স্বর্গে যদি আমাদের দুজনকে একরুমে রাখে, (মানে, রাখতেও তো পারে, তাই না?) তখন তোমার পেয়ারি রুমমেট তোমার গলায় কিঞ্চিৎ হলেও মদ না-ঢেলে তোমাকে ছেড়ে দেবে ভাবছ?
অন অ্যা ডিফারেন্ট নোট, আমার এক আন্টি মহিলা-গাইনোকলজিস্টকেই দেখাবেন, পুরুষ-ডাক্তার বাদ, প্রয়োজনে উনি বিনা চিকিৎসায় মারা যাবেন, তা-ও বাদ। আবার উনিই, হ্যাঁ, উনিই, মরে গেলেও, নিজের ছেলের বউকে চাকরি করতে দেবেন না।
এটাই রক্ষণশীলতা। একে বলে হৃদয়ের দাবি। খ্যাঁক খ্যাঁক!
চার। সাপ এখন ছোবল দিচ্ছে না, এর মানে কিন্তু এ নয় যে, সাপ আর কখনওই ছোবল দেবে না, কিংবা সাপ ছোবল দেওয়া ছেড়ে দিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, সাপ সাধারণত কখনও তার ধর্ম বদলায় না।
আর-একটা কথা, বাঘ আপাতত না-কামড়ালেও দাঁত কিন্তু ঠিকই ভেতরে আছে, কামড়াতে সে ভুলে যায়নি। এটা মাথায় রেখে চললেই নিরাপদ।
সময় হলেই সব টের পাওয়া যায়।
পাঁচ। মেয়েটি লিখেছিল, তোমার সাথে আমার পরের জন্মেও দেখা হবে!
ছেলেটি লিখেছিল, আই লাভ ইউ, জান!...একদম সাথে সাথেই রিপ্লাই!
ছেলেটি বোঝেনি, মেয়েটি 'ই' লিখতে গিয়ে ভুলে 'ও' লিখে ফেলেছে।
আসলে মেয়েটি লিখতে চেয়েছিল, তোমার সাথে আমার পরের জন্মেই দেখা হবে!
ফলাফল: দুইদিন পর ছেলেটির হাতে মেয়েটির বিয়ের কার্ড; সেই খামের ভেতরে একটি চিরকুট, তাতে লেখা: জান, আই লাভ ইউ টু! বিয়েতে এসো মনে করে, তোমার ফেভারিট কাচ্চি থাকবে!
ছয়। একটা ছেলে যখন তার প্রিয় মানুষটাকে ভয় পেয়ে চুপ করে থাকে, হাসিমুখে সব মেনে যায়, তখন প্রিয় মানুষটা মনে মনে ভাবে, আহা, আমাকে কত্ত ভালোবাসে, কেয়ার করে। অথচ ছেলেটির মনে তখন একসমুদ্র অসহায়ত্ব, ক্ষোভ, বিতৃষ্ণাভাব।
একটা মেয়ে যখন তার প্রিয় মানুষটাকে ভালোবেসে চুপ করে থাকে, হাসিমুখে সব মেনে যায়, তখন প্রিয় মানুষটা মনে মনে ভাবে, আহা, আমাকে কত্ত ভয় পায়, কেয়ার করে। অথচ মেয়েটির মনে তখন একসমুদ্র অসহায়ত্ব, প্রশ্ন, বিরহভাব।
বেশিরভাগ মেয়েই ভালোবাসা আদায় করতে গিয়ে আরও ভয় আদায় করে বসে থাকে!
বেশিরভাগ ছেলেই ভয় আদায় করতে গিয়ে আরও ভালোবাসা আদায় করে বসে থাকে!
ভালোবাসা যখন ভয়ের পিঠে,
ভয় তখন ভালোবাসার মিঠে!
(এটা একটা ভুয়া স্ট্যাটাস! ঠিক কি না বলেন!!)
সাত। আপনি কখনওই যার বিন্দুমাত্রও উপকার করেন নাই, সে আপনার ক্ষতি করতেও পারে, আবার না-ও করতে পারে।
তবে এই দুই ধরনের ব্যক্তি আপনার ক্ষতি করবেই করবে---
এক, আপনি একসময় যার উপকার করেছেন, এখন আর করতে পারছেন না।
দুই, আপনি যার প্রত্যাশা অনুযায়ী তার উপকার করতে পারছেন না, এমনকি প্রত্যাশা অনুযায়ী উপকার করলেও ছাড় যে পাবেনই, এমনটা জোর দিয়ে বলা যায় না।
এককথায়, এই দুর্ভাগা দেশে নিজেকে নিরাপদ রাখার সবচাইতে সহজ উপায়: কখনওই কারও উপকার না করা।
হায়, এই উপায়ে বাঁচা যায় না...!!
(এই জায়গায় কুকুরই ব্যতিক্রম। একবার তার উপকার করবেন, সে আপনাকে সারাজীবনই মনে রাখবে। মানুষ এই একটা জায়গায় কুকুরের স্টাইলটাকে ফলো করতে পারে নাই এখনও পর্যন্ত।)
আট। বিপদে না-পড়লে মানুষ-চেনা অসম্ভব।
এবং, বিপদ কেটে যাবার পর সবাইকে আগের মতো করে হৃদয়ে জায়গা-দেওয়া অসম্ভব।
সম্ভবত, এই দুই অসম্ভবকে চেনার নামই জীবন।
নয়। আমায় প্রশ্ন করে প্রীতিলতা'র মালা, 'আর কতকাল তুমি দিবা আমায় জ্বালা...দিবা আমায় জ্বালা?'
প্রীতিলতা'র প্রভোস্ট আমায় প্রশ্ন করেছিল, 'মালার সাথে তোমার কী সম্পর্ক ছিল?'
জবাব কিছুই তার দিতে পারি নাই শুধু, কাঁপাগলায় বলেছিলাম, 'মালা আমার খালা, মালা আমার খালা...'
(চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টরা এই পোস্টের মানেটা ভালো বুঝতে পারবেন।)
দশ। তারে বলে দিয়ো, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় খুব ভালো মানের রসমালাই পাওয়া যায়।
(সত্যি সত্যিই পাওয়া যায়। খেলে মনে থাকবে।)
ভাবনা: ছয়শো ছিয়ানব্বই
...............................................................
এক। পৃথিবীর প্রায় প্রত্যেকটি 'আই লাভ ইউ'-র মধ্যেই দুটো শব্দ ঊহ্য অবস্থায় থাকে, বুঝে নিতে হয়। শব্দ দুইটি---'শর্ত প্রযোজ্য'।
দুই। From my own experience, I can tell you that actually, this is the real face of man---enjoying to see others suffer. Trust me, this is.
No matter whether you are strong or helpless, if you suffer, others will enjoy. Hmm... you've got the point---man is really cruel by instinct.
Yes, there are exceptions. And so, the world is still liveable.
তিন। হিসাব বলে, পোলাপানদের জন্য সামনে সুখের দিন আসছে।
অনেক গার্ডিয়ানই তাঁদের ছেলেমেয়েকে মেডিক্যালে পড়াবেন না বা পড়তে দেবেন না।
মেডিক্যাল ভর্তিপরীক্ষার কম্পিটিশন আগের চেয়ে কমে যাওয়ার কথা!
চার। একটা বাজে কবিতা কীভাবে লেখা হয়?
যে কবিতাটি আপনি লেখার পর সেটি প্রকাশের অযোগ্য ভেবে ঝুড়িতে ছুড়ে ফেলে দিলেন, সেই কবিতাটিই আমি প্রকাশ করে ফেললাম! ব্যস্, হয়ে গেল একটা বাজে কবিতা!
আর একটা বাজে মানুষ...?
যে মানুষটি চিতায় ওঠার সময়ও পরোয়া করে না, একটু পর কাঠে যে আগুনটা জ্বলবে, সেটা স্রেফ কেনা-আগুন,---ওখানে ভালোবাসার কোনও স্পর্শ নেই, সেই মানুষটি জ্যান্ত থাকে যতক্ষণ, ততক্ষণ পর্যন্তই সে একটা বাজে মানুষ!
পাঁচ। বলছিলাম কী, যখন পাগলামি করছেন, তখন পাগলামিটা করতেই থাকুন...একদম মন দিয়ে! কারও কোনও কথাই শুনবেন না।
পাগলামি চালিয়ে গেলে, একদিন, ওরাই আপনার কথা শুনবে।
আর পাগলামি বন্ধ করে দিলে, সেদিনও, ওরা বলতেই থাকবে।
দ্য চয়েজ ইজ ইয়োরস।
পাগলামি কিন্তু সব সময় মাথায় চাপে না, সাধনা করলেও না।
পাগলামি কিন্তু সবার মাথায় চাপে না, সাধনা করলেও না।
পাগল-হওয়া অত সোজা হলে কত শালাই একবার করে পাগল হতো!
কারও ক্ষতি তো আর করছেন না! তা হলে কার বাপের কী?
ছয়। দুই ধরনের মানুষ অন্যদের পেছনে অহেতুক লেগে থাকে:
এক, যারা ব্যক্তিগত জীবনে অসুখী।
দুই, যাদের তেমন কোনও কাজ নেই।
আপনার আশেপাশে তাকান, মিলিয়ে নিন।
সাত। শহরজুড়ে লকডাউন চলছে,
কোথাও বেরোতে পারছি না।
তোমার আইডি লকড বলছে,
তোমাকে দেখতে পারছি না।
মা, আমি এখন কোথায় যাব?
আট। আমি দুটো সহজ নীতি অনুসরণ করি:
এক, আমার কখনও পরামর্শের দরকার হলে আমি যাঁর কাছে পরামর্শ চাইতাম না (এমনকি তাঁকে চিনলেও...না), তিনি গায়ে পড়ে আমাকে কোনও পরামর্শ দিলে সেটি আমি নিই না, উল্টো বিরক্ত হই। অবশ্য, তিনি আমার ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত কেউ হলে ভিন্নকথা।
দুই, কখনও পরামর্শের দরকার হলে যিনি আমার কাছে পরামর্শ চাইতেন না (এমনকি আমাকে চিনলেও...না), আমি কখনওই তাঁকে গায়ে পড়ে একটিও পরামর্শ দিতে যাই না। অবশ্য, আমি ওঁর ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত কেউ হলে ভিন্নকথা।
কেন, জানেন? কেননা আমি বিশ্বাস করি, এই পৃথিবীতে আমিই একমাত্র প্রাণী নই যে ঘাস খেয়ে বাঁচে না। ঘরে আছি, এখন আপনার আমার সবার কাজ হাত-ধোওয়া। ওটা ফেলে এমন ইতরামি করছি কেন আমরা?
নয়। After a crisis,
Good people become better,
Bad people become worse.
দশ। স্যার, আমি কিন্তু জেনে ফেলেছি, আপনি একসময় কবিতালেখার চেষ্টা করেছিলেন, পারেননি। তাই আপনার এত রাগ!
আজ আমি খুশি এই ভেবে যে, আপনি কবিতা ভালোবাসেন। হয়তো কবিকে সহ্য করতে পারেন না, ওটা তেমন কিছু নয়! আপনার অতীতের ব্যর্থতাটুকু না থাকলে আজ আপনিও তো কিছু মানুষের দেখা পেয়েই যেতেন, আপনাকে দেখলেই যাদের অসহ্য লাগে!
আচ্ছা, আপনি তো ছবি আঁকতে পারেন, স্যার! আপনার দিকে তাকালেই মেজাজ খারাপ করে বসে থাকে, কখনওবা মারতে তেড়ে পর্যন্ত আসে, এমন মানুষের সাথে দেখা আপনার তো হরদমই হয়। ভুল বললাম, স্যার?
ক্ষমা করবেন, স্যার। আপনার ব্যর্থতার জন্য আমি ক্ষমা চাইছি।
আপনি ভালো ছবি আঁকেন। দেখতে ভালো লাগে। আপনি এগিয়ে যান, স্যার। এর বাইরে কিছু বলার বা করার মতো সময় আমার নেই।
আমি ব্যস্ত, বেঁচে থাকতে আমাকে কিছু কবিতা লিখতে হয়...
আপনি ব্যস্ত, বেঁচে থাকতে হলে আপনাকে কিছু কবিতা হত্যা করতে হয়...
(এমন হয়...ব্যাপার নাহ্!)
এগারো। এই রাত তিনটেয়ও করোনাভাইরাস দুটো জিনিস বন্ধ করতে পারেনি: এক, আমার কবিতালেখা। দুই, আপনার বিসিএস গাইডলাইন চাওয়া।
যে যা পারে, সে তা করেই যায়...
বারো। চাকরি এবং স্ত্রী---এই দুই ছেড়ে দিতে পারলে অনেক পুরুষই মহাপুরুষ হয়ে উঠতে পারতেন।
তেরো। Even real love with pain is total bullshit!
Peace even without love is the greatest love.
No love is much much much better than painful love.
চৌদ্দ। তপু ভালোবাসে (পড়ুন, পছন্দ করে) রিমুকে, কিন্তু মুখে বলতে পারে না। তপুর খালি লইজ্জা লাগে!
তপুর 'বেস্ট ফ্রেন্ড' ছিল মিঠু। একদিন মিঠুকে অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে দিয়ে তপু রিমুর কাছে ঠেলে পাঠাল তার ভালোবাসার কথা জানাতে।
বন্ধুর অনুরোধ রক্ষার্থে মিঠু রিমুর কাছে গেল, ভালোবাসার কথাও জানাল---তবে তপুর নয়, তার নিজের!
(বিয়েবাড়িতে যাবার সময় টিফিনবক্সে করে ভাত নিয়ে যায় কোন গাধা?)
অতঃপর? চুয়েট-ক্যাম্পাসে দুইপিস জুটি দাপিয়ে বেড়াতে লাগল।
মিঠু-রিমু...বেস্ট কাপল!
তপু-মিঠু...বেস্ট ফিন্ড!
আগে তপু বলত, মিঠুর নামে আমার সামনে কেউ একটাও বাজে কথা বললে জিভ একদম টেনে ছিঁড়ে ফেলব!
এখন তপু বলে, মিঠুর নামে আমার পিছনে কেউ একটাও বাজে কথা বললে জিভ একদম টেনে ছিঁড়ে ফেলব!
কৃষ্ণ করে লীলা, আর জিভ বেচারা বিপদে!
ক্লাউস কিন্স্কির সাথে তিক্ত সম্পর্কের গল্প নিয়ে নির্মিত ভার্নার হারযগের ডকুমেন্টারি ‘মাই বেস্ট ফিন্ড (১৯৯৯)’ যাঁরা দেখেছেন, তাঁরা একটু মিল পাবেন বেস্ট ফ্রেন্ড কীভাবে বেস্ট ফিন্ড হয়ে যেতে পারে!
পরবর্তীতে,
মিঠু আর রিমু বাঁধা পড়ে চিরদিনের বন্ধনে। রব নে বানা দি জোড়ি!
তপু আর মিঠু বাঁধা পড়ে চিরদিনের বিচ্ছেদে। চুয়েট নে বানা দি দুশমন!
ইয়ে মানে,
তপুর নাম তপু না।
মিঠুর নাম মিঠু না।
রিমুর নাম রিমু না।
তবে, ঘটনাটা পুরাই সইত্য!
মোরাল অব দ্য স্টোরি: মুরগি বর্গা দেবার সময় মনে রাখতে হবে, সময়ের প্রয়োজনে বন্ধুও যে-কোনও সময় শেয়াল হয়ে উঠতে পারে!
ভাবনা: ছয়শো সাতানব্বই
...............................................................
এক। ধরুন, কোভিড-নাইনটিনের ঘায়ে আপনি মৃত্যুশয্যায়। তখনও, মৃত্যুকে পরোয়া না-করে একটি মানুষ নিজেকে বিপন্ন রেখে দিয়ে আপনার পাশে থেকে যাবেন। হ্যাঁ, যাবেনই!
হয়তো সে মানুষটিকে আপনি দিনের পর দিন তাচ্ছিল্য বা অবহেলা করে এসেছেন, ঠিকমতো সময় দেননি তেমন একটা, তাঁর ভালোলাগা বা মন্দলাগা নিয়ে মাথাব্যথা কখনও ছিল বলে আপনার মনেও পড়ে না। এমনকি, 'ভালোবাসার মানুষটি' শব্দগুচ্ছ দিয়ে যার চেহারা আপনার চোখে সবার আগে ভেসে আসে, তিনি সে মানুষটিও নন!
এই বেহায়া, নির্বোধ, পাগল মানুষটির নামই...মা!
'ভালোবাসা' শব্দটি সত্যিই খুব ছোটো হয়ে যায় মায়ের বেলায়। কেন?
আপনার সেই তথাকথিত 'ভালোবাসার মানুষটি'কে..
.
তার পছন্দমতো সময় না দিয়ে দেখুন দেখি কী হয়!
তার মনের মতো করে না চললে সে কদিন থাকে দেখুনই না!
সে যা চায়, তা দিতে না পারলেও থেকে যায় কি না দেখুন তো!
আপনাকে ঠিক আপনার মতো করে গ্রহণ করতে পারার অদৃশ্য চ্যালেঞ্জটা ছুড়ে দিন তো!
তার ক্রোধ, তার অভিমান, তার ইগো...এসবকে বুঝে সুঝে না চললে আপনাকে লাত্থি মেরে চলে যাবে আপনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই!
...হ্যাঁ, সকল 'নিঃস্বার্থ ভালোবাসা'র মধ্যেই কিছু শর্ত প্রযোজ্য থাকেই! সেই শর্তগুলি বাঁচতে হয়তো দেয়, কিন্তু ঠিক স্বস্তিতে বাঁচতে দেয় না।
একটা গান ছিল না...নাচ আমার ময়না, তুই পয়সা পাবি রে!
সে গানটাকে একটু পালটে গাই?...নাচ আমার বান্দর, তুই প্রেম পাবি রে!
ভাবছেন, আমার ভুল হচ্ছে? আর-একবার ভাবুন!
...যদি এবারও আপনার ভাবনা একই থেকে যায়, তবে আমি বলব, আপনি সৌভাগ্যবান।
ভালো তো অনেকেই বাসে, শেষ পর্যন্ত আঁকড়ে ধরে রাখে কজন?
শয্যাসঙ্গী তো অনেকেই হতে চায়, মৃত্যুশয্যাসঙ্গী হতে রাজি থাকে কজন?
সাথে বাঁচতে তো অনেকেই চায়, সাথে মরতে চায় কজন?
পুনশ্চ। এখানে 'মা' শব্দটির জায়গায় 'বাবা' বসিয়ে দিলেও ভুল হবার কথা নয়।
দুই। যখন দুধ দেওয়াটা গরুর জন্য বাধ্যতামূলক কিছু নয়, কিন্তু দুধ পাওয়াটা আপনার জন্য দরকারি, তখন তো গরুর লাথিটা সহ্য করতেই হবে। বুঝেন নাই ব্যাপারটা?
আমার কোন একটা লেখায় যেন লিখেছিলাম, আমাদের ছোটোবেলায় শেখা---গরু আমাদের দুধ দেয়।...দ্য কাউ গিভস আস মিল্ক।---এর চাইতে ভুয়া কথা আর নাই। গরু আমাদের দুধ কেন দেবে? কোন সুখে? তার খেয়ে দেয়ে আর কাজ নাই? সত্যটা হচ্ছে, আমরা গরুকে দিয়ে দুধ দেওয়াই।...উই মেইক দ্য কাউ গিভ আস মিল্ক।
তাই সবার আগে বুঝতে হবে, দরকারটা কার? আমার, না কি গরুর?
তিন। 'ভাই, আপনি আমার/আমাদের হৃদয়ে আছেন, থাকবেন।'
এই জাতীয় কথাবার্তা শুনলে রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়ি! আমি অভিজ্ঞতায় দেখেছি, হৃদয়ের মানুষকে লাথি মারা সবচাইতে সহজ, কেননা দ্রুত খুঁজে পেতে সুবিধা হয়।
তাই কারও হৃদয়ে থাকতে ভয় করে।
চার। ভালোবাসা দিবি কি না বল!
এবং,
আলোকিত হবি কি না বল!
---দুই-ই একই রকমের বিরক্তির উৎপাদন করে।
এই সহজ জিনিসটা গাধারা আর কবে বুঝবে?
জোর করে নিজের ইচ্ছা, পছন্দ বা মতামত চাপিয়ে দিতে চায় যারা, ওদের দেখলেই কেমন একটা করুণা হয়।
চৌধুরী সাহেব, ভয়ে আপনার সামনে কেউ কিছু না বললেও আড়ালে যে সবাই আপনাকে বলদ ডাকে, সেটা কি আপনি জানেন? আপনাকে দেখলেই আমরা কী বলি, তা শুনে নিন...
আসুন আমাদের গাড়ির নিকট, দেখুন আমাদের মলমগুলো!
(আপনি আর ওই ব্যাটা---জিনিস একই!)
পাঁচ। আমাকে ভালো ও শুদ্ধ করার চাইতে বরং আপনার নিজেকে ভালো ও শুদ্ধ করা আপনার জন্য বেশি প্রয়োজন। আপনি নরকে/দোজখে যাবেন আমার পাপের কারণে নয়, আপনার নিজের পুণ্যের অভাবে।
আমি এ জীবনে কী করতে পেরেছি, তা দেখার চাইতে বরং আপনি এ জীবনে এখনও কী কী করতে পারেননি, সেদিকে নজর দিন। আপনার দুচোখের দৃষ্টি সামনে থেকে সরিয়ে নিয়ে ভেতরে ফেরান।
এতে আপনার আমার দুজনেরই মঙ্গল।
ছয়। বন্ধুত্ব, প্রেম, বিয়ে।
এই তিনের ক্ষেত্রে সমানে সমানে কিংবা নিজের চাইতে শ্রেয় কারও সাথে করাই সমীচীন। কোন দিক দিয়ে সমতুল্য বা শ্রেয়? জ্ঞানে, মানসিকতায়, বুদ্ধিতে, চিন্তায়।
নিজের চেয়ে নিচু বা মূর্খ কারও সাথে সম্পর্ক করলে, তাকে সময় দিলে, তার কথা ভাবলে ধ্বংস মোটামুটি অনিবার্য। এমন কারও সাথে বন্ধুত্ব ও শত্রুতা, দুই-ই ক্ষতিকর, তা সে আর্থিক- ও সামাজিকভাবে যে অবস্থানেরই হোক না কেন।
আর যদি ওরকম যোগ্য কাউকে পাওয়া না যায়, তবে নিঃসঙ্গ চলাই ভালো। নিঃসঙ্গতাই এক্ষেত্রে পরম আশীর্বাদ।
সংকীর্ণমনা ও মূর্খ ব্যক্তি কয়লার মতো---ঠান্ডা অবস্থায় হাত নোংরা করে দেয়, গরম অবস্থায় হাত পুড়িয়ে দেয়। একজন নীচ ব্যক্তির সাথে সম্পর্ক রাখলে আপনি নিজের অজান্তেই তার পর্যায়ে নেমে যাবেন, সে আপনাকে তার পর্যায়ে টেনে নামাবেই।
মূর্খের সাথে থাকতে হওয়ার চাইতে বড়ো দুঃখ আর হয় না।
বাজে মনমানসিকতার কারও সাথে সম্পর্ক রাখতে হওয়ার চাইতে বড়ো দুর্ভাগ্য আর নেই।
তারপর বলো,...নয়া-টিয়াপাখি, আগে তো মানুষ ছিলা, এখন হইসো পাখি!
এটা নিয়া তোমার অনুভূতি কী? এই নতুন পক্ষীজীবন কেমন লাগতেসে?
সাত। তোমার মানা না মানা নিয়া তুমি স্প্রাইট দিয়া ভিজাইয়া মুড়ি খাও। এই দুনিয়া উচিত অনুচিতে চলে না। আগেও চলে নাই, এখনও চলে না। সামনের কথা জানি না।
এখানে মাত্র দুইটা জিনিস আছে। এক, কী ঘটে। দুই, কী ঘটে না।
বাকি যা আছে, তার সবই তোমার আমার মাথায় আর বিশ্বাসে। এইগুলা দিয়া কারও কিছু ছেঁড়া যায় না। এটাই দুনিয়া
আট। সাম্প্রতিক সময়ে যে কয়েকটি কবিতা লেখার সময় চোখের জল ঝরেছে, একবসায় লিখে শেষ করতে পারিনি, ল্যাপটপের সামনে থেকে উঠতে হয়েছে একাধিকবার, সেগুলির মধ্যে দুটোর কথা মনে পড়ছে এই মুহূর্তে: এক, ভাত দে। দুই, মধ্যবিত্ত।
নয়। আমি সারারাত জেগে আছি...
কিছু দুঃখ পেতে,
কিছু গান শুনতে,
কিছু কান্না ঝরাতে,
কিছু লাইন লিখতে।
আপনি...?
কয়েকটি গান শুনছি। কয়েকটি গান শুনতে হচ্ছে।
রেইনকোট। মেমোরিজ ইন মার্চ। আরও কিছু মুভির গান।
...শেয়ার করতে ইচ্ছে করল, সুযোগ হলে শুনুন।
এইসব কী লিখছি! ভোর হচ্ছে...কিংবা এখন ভোরই!
ভাবনা: ছয়শো আটানব্বই
...............................................................
এক। নিজেকে নিয়ে যারা সুখী নয়, তারা অন্যের দিকে বেশি নজর দেয়।
আমি কেমন, বলি।
আমি নিজেকে নিয়ে সুখী নই। (এই পৃথিবীর একজনও সৃষ্টিশীল মানুষ সুখী নয়।)
তবে, আমার ব্যস্ততা ভয়ানক রকমের বেশি। অন্য কারও পেছনে অহেতুক লাগব, এটা আমার ভাবনাতেও আসে না।
যে সমস্ত মানুষ সুখী, তা-ও অন্যের পিছনে লেগে থাকে, বুঝতে হবে, ওরা ভাদাইম্যা, আকাইম্যা, আজাইরা...
দুই। বরিশালের মানুষ জীবনানন্দ দাশ কেন বরিশাল ফেলে সেই নাটোরে দুদণ্ড শান্তির খোঁজে গিয়েছিলেন, তা আগেই ভাবা উচিত ছিল!
তিন। প্রশ্ন- ভাবসম্প্রসারণ করো: সুখের চেয়ে শান্তি বড়।
উত্তর- আমার বউ এখন বাপের বাড়িতে।
(দশে দশ! ফুল মার্কস!)
চার। প্রতিটি মেয়েরই উচিত...তার বাপের বাড়ির সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা...দিনের পর দিন, মাসের পর মাস ওখানে থেকে গিয়ে।
পাঁচ। যখন আমি অসুস্থ খুব,
ডাক্তার বলবেন, আজ থেকে
তোমার মিষ্টিখাওয়া বারণ,
তখনও যদি মিষ্টি আসে,
তাও আবার গোপালগঞ্জের দত্ত সুইটস-এর,
আমি হাসিমুখেই, মিষ্টিখাওয়ার,
বানিয়ে ফেলব কারণ!
আমি সন্দেশ খেতে ভীষণ ভীষণ ভালোবাসি। কোথাও গেলে প্রথমেই খোঁজ করি, ওখানে বিখ্যাত খাবার কী কী আছে। এবং তা তা খেয়ে নিই। মরার আগে যেখানে যেখানে যাব, সেখানকার নামকরা খাবারটা খাবই খাব, সেটা খাওয়া বারণ হলেও খাব। এখনও পর্যন্ত আমার খাওয়া সেরা সন্দেশ হলো গোপালগঞ্জের দত্ত সুইটস-এর সন্দেশ।
ছয়। তুমি যখন বেঁচে ছিলে,
তখন আমার সামনে দিনযাপনের একটাই রাস্তা খোলা ছিল: তোমাকে ভালোবাসা।
তোমার মৃত্যুর পর,
এখন আমার সামনে বেঁচেথাকার একটাই রাস্তা খোলা আছে: তোমাকে ভালাবাসা।
তুমি এই ভালোবাসার কথা কখনো জানতে পারোনি ভেবে আমার একধরনের স্বস্তি হয়, কেননা যদি সত্যিই জানতে পারতে, তবে আমায় একা ফেলে রেখে যাচ্ছ মাথায় এনে মৃত্যুর আগমুহূর্তটা অনেক যন্ত্রণায় কাটাতে হতো তোমাকে। তুমি বেঁচে ছিলে আমার ভালোবাসার ভারমুক্ত হয়ে, চলেও গেছ তেমনি করেই, এটা আমাকে সত্যিই অশেষ আফসোস থেকে মুক্তি দিয়েছে। ভালোবাসা না পাওয়ার বেদনা নিয়েও বাঁচা যায়, কিন্তু ভালোবাসার মানুষটির বেদনা সহ্য করে বাঁচা খুব কঠিন।
সাত। ভাবছ তুমি,
কী এক বিশাল কাজ করেছ,
আমার রাতের ঘুম কেড়েছ!
গাধা একটা!
তুমি তো আর জানোই না,
রাতে আমি ঘুমোই-ই না!
আট। তার পর বলো, ফরসা করে সেলফি তুলে ওয়ালে কয়টা লাইক পেলে?
কোন ছাগলে আসবে কাছে ভুলেও আবার...একটিবারও কাছে গেলে?
নয়। তাঁদের সাথে বেশি মিশবেন, যাঁরা আপনার সামর্থ্যের উপর বিশ্বাস রাখেন।
ভাবনা: ছয়শো নিরানব্বই
...............................................................
যাকে-তাকে স্যালুট করার কিছু নেই। স্যালুট করবে মানুষ বুঝে। সব শালাই কিন্তু তোমার স্যালুটের যোগ্য নয়। যাকে-তাকে স্যালুট করলে নিজের ক্ষমতার প্রতি একধরনের অবিশ্বাস তৈরি হয়। তো? দুর্ব্যবহার করবে? আরে নাহ্! প্রশ্নই ওঠে না! কারও সাথেই দুর্ব্যবহার করার দরকার নেই। নিজেকে এমন একটা দূরত্বে রেখে দেবে, যাতে দুর্ব্যবহার করার জন্য ওদের কাউকে কাছেই না পাও! ওদের কাছে ঘেঁষতে দেবে না, নিজেও ওদের কাছে ঘেঁষবে না।
কিছু মানুষ আছেন, যাঁদের বুঝে হোক না বুঝে হোক, স্যালুট করতে হবে, এবং করতেই হবে।
তোমার বাবা-মাকে স্যালুট করবে, ওঁরা না থাকলে তুমি পৃথিবীতে আসতে পারতে না। আনন্দ থেকে হোক, দুঃখ থেকে হোক বা অনিচ্ছাতেই হোক, ওঁরা তোমাকে পৃথিবীতে এনেছেন, তাই ওঁরা সব প্রশ্নের ঊর্ধ্বে নমস্য। তুমি শালা আজকে যে খুব লাফাচ্ছ, সেটাই-বা করতে কী করে, যদি ওঁরা তোমাকে এই দুনিয়ায় ল্যান্ড করার ও বেড়ে-ওঠার সুযোগটাই না দিতেন?
তুমি যাঁর বা যাঁদের জন্য আজকের এই তুমি, তাঁদের স্যালুট করবে। তোমার বড় ভাই, বড় বোন, কাকা, মামা, শিক্ষক, কিংবা অন্য যে-কেউই। উনি তোমার পাশে না থাকলে তোমার বেঁচে থাকতেই অনেক কষ্ট হতো। উনি নিজে কষ্ট করে তোমার জীবনটাকে ওঁর সাধ্যমতো সহজ করে দিয়েছেন। তাঁকে প্রণামটা করার সময় যদি তোমার মাথায় ভুলেও আসে, ওই পায়ে তো ধুলো, ময়লা...প্রণামটা করি কী করে?...তবে আমি বলব, তুমি মানুষের শরীরে স্রেফ একটা জানোয়ার, একটা শুয়োরের বাচ্চা, আর কিছুই না।
যাঁকে বা যাঁদের তোমার দুঃসময়ে তোমার পাশে পেয়েছ, তাঁদের স্যালুট করবে। তাঁরা পাশে না থাকলে তোমার ওই খারাপ সময়টা থেকে বেরিয়ে আসতে অনেক কষ্ট হতো, হয়তো বেরিয়ে আসতে পারতেই না! ওঁদের সারাজীবনেও ভুলো না। ওঁরা মানুষের রূপে দেবতা। ওঁদের কথা মাথায় এলেও যেন তোমার সারাশরীর একবার হলেও শ্রদ্ধায় সম্ভ্রমে কেঁপে ওঠে! ওঁদের বয়স বা যোগ্যতা তোমার চেয়ে বেশি কি কম, সেটা মুখ্য নয়, তোমার জায়গা যেন সারাজীবনই থেকে যায় ওঁদের পায়ে।
যাঁরা তোমায় ভালোবাসেন, স্নেহ করেন। তেমন কোনও কারণ ছাড়াই তোমাকে নিত্যপ্রার্থনায় রাখেন, এমন কিছু মানুষ আছেন। সত্যি সত্যি আছেন। ওঁদের হয়তো তুমি চিনই না, যদি চিনতে পার কখনও, তবে তুমি মহাভাগ্যবান। ওঁদের মনে কষ্ট দিয়ো না পারতপক্ষে। এই পৃথিবীতে, ভালোবাসতে জানে, এমন মানুষ দিনদিন কমে যাচ্ছে। তাই ওরকম মানুষ যাঁরা আজও আছে, ওঁদের সামনে তোমার অহংকারের টুপিটা খুলে রেখো। খুলতে ইচ্ছে করল কি করল না, এটা নিয়ে ভেবো না, জাস্ট খুলে রেখো, ব্যস্!
বড় মানুষ যাঁরা, তাঁরা হয়তো তোমার কিছুই হন না, তবে তাঁরাই তোমার সব কিছু হন। কীরকম? এই যে তুমি প্রতিদিনই নিজেকে একটু একটু করে তৈরি করছ, সেটা কেমন করে? তাঁদের পথ অনুসরণ করে কিংবা তাঁদের কাছ থেকে প্রেরণা নিয়েই তো, তাই না? তাঁদের তুমি স্যালুট করলে কি করলে না, ওতে ওঁদের কিচ্ছু এসে যায় না। তোমার নিজের প্রয়োজনেই স্যালুটটা করো, এতে তুমি মনের মধ্যে অনেক শক্তি অনুভব করতে পারবে, তার চেয়ে বড় কথা---এতে তোমার পা-টা মাটিতে থাকবে। আকাশে ওড়ার আগে পা মাটিতে থাকতে হয়, আকাশে নয়।
আমি নিজে উপরের পাঁচ ধরনের মানুষকে স্যালুট করি, অন্ধভাবে, নিঃসংশয়তায়। এতে আমার নিজের লাভ অনেক অনেক বেশি। পঞ্চম ধরনের মানুষের কথা একটু আলাদা করে বলি, কেমন? আমি ওঁদের লাইফস্টাইল সম্পর্কে জেনে নিই, ওঁদের পুরনো দিনের কথা জেনে নিই। কতটা ডেডিকেশন নিয়ে ওঁরা আজকের জায়গায় এসেছেন, তা বোঝার চেষ্টা করি। একজন প্রসেনজিৎ যখন পর্যন্ত প্রসেনজিৎ হয়ে ওঠেননি, স্রেফ বুম্বাদা-ই ছিলেন, তখন তাঁকেও একবেলা খেয়ে আর একবেলা অভুক্ত কাটাতে হতো যাতে সে টাকা দিয়ে তাঁর মা-বোনের জন্য খাবার কিনতে পারেন। কতটা সাধারণ অবস্থান থেকে এমন মানুষরা উঠে এসেছেন, তা জানতে পারলে আনন্দ হয়, উৎসাহ পাই। ওঁদের মাথায় নিজের কাজ ও কমিটমেন্ট বাদে আর তেমন কিছুই ঘুরত না, এখনও ঘোরে না। প্রচণ্ড পরিশ্রম, ধৈর্য ও আবেগ, এই তিন দিয়েই ওঁরা আজকের ওঁরা। ওঁদের প্রতি আমার একটুও ঈর্ষা জন্মায় না, বরং ওঁদের আমি ভালোবেসে ফেলি। এ ভালোবাসা পুরোপুরি অন্ধ, এবং এটা নিয়ে আমার মধ্যে কোনও আফসোস বা আপত্তি নেই, এটা নিয়ে আমি কোনও মূর্খ বা পণ্ডিত শালার সাথে তর্কে যেতে চাই না।
এই পাঁচ ধরনের লোকের বাইরে আর কারও সামনেই আমি মন থেকে মাথানত করি না। যে শালার মাথায় মাল নেই, তার সামনেও মাথা নোয়ানোর কী আছে? হ্যাঁ, কখনও কখনও এমন লোকের সামনে মাথা নোয়ানোর অ্যাক্টিং করি, যার মাথায় মাল না থাকলেও পকেটে মাল আছে---তাও যদি নেহায়েত দায়ে পড়ে যাই, তখন।
এঁদের বাইরে যত মানুষ আছেন এই পৃথিবীতে, তাঁদের সবার জন্যই আমি একটা দেয়াল তৈরি করে রাখি। ওদের কাছেই ঘেঁষতে দিই না। আমি ওদের জন্য জাস্ট ফ্রেন্ডলি, আমি ওদের কারও ফ্রেন্ড নই। ওদের হাতটা আমি বড়জোর আমার হাতে রাখতে দিই, কাঁধে নয়। ওদের জায়গাটা আমার ঘরের দরজার বাইরেই শুধু। আরে ভাই, সময়ের চাইতে দামি তো আর কিছুই নেই, তাই না? যদি তা দিতেই হয়, তবে ওই পাঁচ ধরনের মানুষকেই দিয়ে দেবো, আর অবশ্যই দেবো নিজেকে, যাকে-তাকে দেবো কেন? হ্যাঁ, আর দুটো জায়গায় আমি সময় দিই। এক, আমার যা করতে ভালো লাগে। দুই, যা আমার করা প্রয়োজন। এইটুকুই, ব্যস্!
আপনাকে যখন বলছি, 'সরি, আমার সময় নেই।' তখন এর মানে হলো, আমার সময়টা আমি আপনাকে দেবো না, এটা বোঝার ঘিলু যেন মাথায় থাকে, বস!
আবারও বলছি, ওই পাঁচ ধরনের মানুষকে স্যালুট করার সময় কেন করছি, করাটা আদৌ দরকার কি না, এসব কিচ্ছু ভাবি না, স্যালুট করিই, এবং করেই যাব আমৃত্যু। একেবারে নিঃশর্তভাবে, অন্ধভাবে। আমি আমার জীবনটা কিছু মানুষের সামনে মাথানত করেই কাটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর কোনও ব্যাখ্যা বা যুক্তি আমার কাছেও হয়তো নেই, এর কোনও ব্যাখ্যা বা যুক্তি আমার লাগবেও না। এটা আমার একধরনের বিশ্বাস, বড় প্রিয় বিশ্বাস---এ বিশ্বাস আমায় বাঁচিয়ে রাখছে!
ভাবনা: সাতশো
...............................................................
এক। মানুষের দুটো জিনিস আমার মধ্যে তেমন কোনো অনুভূতি তৈরি করে না। এক, অপরিচিত মানুষের স্যালুট। দুই, অপরিচিত মানুষের লাথি।
দুই। যার কাছে পরামর্শ চাইছেন, তিনি পরামর্শ দেওয়ার জন্য সঠিক ব্যক্তিটি কি না, তা আগে ভাবুন।
তিন। প্রতিটি ইবাদতই কিছু নির্ঘুম রাতের দাবি রাখে।
চার। : বাবু, চলো দুজন মিলে পালাই!
: পালায়ে কই যাব?
: অনেক দূরে চলে যাব।
: অনেক দূরে'টা কোথায়?
: যেখানে কেউ আমাদের আর খুঁজে পাবে না।
: বুঝলাম, কিন্তু জায়গাটা কই?
: বাবু, তুমি একটা ছাগল! মুড পুরাই নষ্ট করে দাও!
পাঁচ। জীবনে মানুষ হিসেবে বড় হতে গেলে দুইটা জিনিস থাকা খুব দরকার:
এক। না জেনে কোনও কথা বলা যাবে না। অনেককেই দেখি কোনও একটা ব্যাপার সম্পর্কে না জেনেই খুব কনফিডেন্টলি সেটা নিয়ে কথা বলতে। সত্যিই ভীষণ বিরক্ত লাগে। পৃথিবীর সব কিছু নিয়ে জেনে বসে আছে যারা, তাদের দেখলেই হাসি পায়। যারা 'জানি না' বলতে জানে, তাদের সাথে মিশলে সিদ্ধান্ত নিতে অনেক সুবিধা হয়। যারা কোনও বিষয় নিয়ে না জেনেও সেটা নিয়ে পরামর্শ দেয়, তাদের থেকে সাবধান!
দুই। 'পারি না' বলতে শেখা। যা-কিছু আমার আয়ত্তের বাইরে, তার দায়িত্ব আমি নেব না। যা করতে পারব না, তা করতে পারব বলে কারও কাছেই কিছুতেই কমিটমেন্ট দেবো না। যে কমিটমেন্ট রাখতে পারে না, তাকে শুরুতে ভালো মনে হলেও পরবর্তীতে ফালতু মনে হয়। আর যে প্রথমেই সারেন্ডার করে দেয়, তাকে শুরুতে খারাপ মনে হলেও পরবর্তীতে দায়িত্বশীল মনে হয়। এমনকি জোর করে কাজ চাপিয়ে দিলেও তা নেওয়া যাবে না যদি সে কাজটা আমি ঠিকভাবে করতে না পারি।
দায়িত্বশীলতা অনেক বড় গুণ।
ছয়। আপনাকে কেউ অবমূল্যায়ন করলে নিজেকে এমনভাবে তৈরি করুন, যাতে ওই ব্যক্তিকে মূল্যায়ন করারই (গোনারই) সময় আপনার না থাকে। এটাকেই বলে জেদ, ভালো জেদ। জীবনে ভালোভাবে বাঁচার একটাই মূলমন্ত্র: সিটিএন!! (ব্যাখ্যা জানিতে চাহিয়া লজ্জা দিবেন না, পাইবেন না।)
সাত। ডাক্তার শুধুই রোগীর রোগটা বোঝেন, দুঃখটা বোঝেন না। অত সময় দেওয়া সম্ভব নয় এবং এটাই স্বাভাবিক।
আমি আপনার সমস্যাটা বুঝি, দুঃখটাও কিছুটা বোঝার চেষ্টা করি। কেন? আমার সময় অফুরন্ত, তাই? না। আপনার দুঃখ আমার লেখার উপজীব্য, নিজের মনের দায়েই আমি আপনার এবং আমার নিজের দুঃখ নিয়ে গভীরভাবে ভাবি।
আমার অনেক দুঃখ, তাই আমার দুঃখের ডাক্তারি করতে ভালো লাগে।
সাত। A clever man knows how to cheat, an intelligent man knows how to make others let him cheat.
আট। You need some enemies in your life. If you don't have any, create some.
You have only friends? Well, it means no one gives a fuck about you.
নয়। ছোটোলোকের সাথে থেকে কখনওই বড়ো কিছু হওয়া যায় না। নতুন কিছু করতে হলে নতুন ঘিলু লাগে। যার মধ্যে এটি নেই, যে নিজের পুরান ঘিলু নিয়ে বা অন্যের ঘিলু ধার করে বাঁচে, তার সাহচর্য দেরি হয়ে যাবার আগেই ত্যাগ করুন। Be very very careful about the persons you keep around yourself. Your subconscious mind always adjusts you with their mindset. Being alone is far far better than being with a cheap person or a brainless creature.
দশ। নিঃস্বার্থভাবে মানুষের সত্যিকারের প্রশংসা পাবেন আপনার মৃত্যুর পরই।
তবে সেই প্রশংসা অর্জনের কাজটা আপনাকে করতে হবে মৃত্যুর আগেই।
এই পৃথিবীতে সবচাইতে বড়ো সার্থকতাটি হলো, একজন ভালো মানুষ হতে পারা। ভালো মানুষ বাদে আর কারও জন্যই কেউ তাঁর মৃত্যুর পর চোখের জল ফেলে না, সে উনি যতই যা-ই বড়ো কিছু হোন না কেন। আবার কিছু মানুষের অসুস্থতার খবরেও লোকে খুশি হয়ে ওঠে! আহা, ওঁরা কি একটুও বুঝতে পারেন না যে কী ব্যর্থ নিকৃষ্ট একটা মানবজীবন কাটাচ্ছেন ওঁরা! ছিঃ!
এগারো। ছেলে মেয়েতে বন্ধুত্ব একটা মিথের মতো ব্যাপার। এর কোনও অস্তিত্ব নেই। এই ধরনের বন্ধুত্ব হচ্ছে দুইজন মানুষের মধ্যকার যোগাযোগ, যারা পরস্পরকে সত্যটা বলতে যে কারণেই হোক, ভয় পায়। দুজনের মধ্যে একজন মনে মনে কিছু একটা আশা করে যায়, অপরজন তখন তাকে মুখের উপরই অবহেলা করে। অবশেষে, ওদের দুজনকে আলাদা হয়ে যেতেই হয়। কখনওবা, ওরা আলাদা হয় না, একসাথেই থেকে যায়। একটা মীমাংসায় ওদের আসতেই হয় শেষপর্যন্ত, মেনে নিতে হয়, বন্ধুত্বটি আর শুধুই বন্ধুত্ব নেই।
তো একটা ছেলে আর একটা মেয়ের মধ্যে বন্ধুত্ব থাকেই না? অবশ্যই থাকে। কখন? পরিচয়ের শুরুতে, যখন বন্ধুত্বটা মাত্রই হয়। আর-এক ক্ষেত্রে থাকে, যখন দুজনের প্রেম শেষ হয়ে গেছে বহুদিন আগেই, তখন সম্পর্কটা কেবলই বন্ধুত্ব থেকে যায়।
এর কারণ কী? প্রধান কারণ হচ্ছে, ভয়। 'আমি প্রেমে পড়েছি।' এটা এক পক্ষ বলতে চায় না, আর-এক পক্ষ মানতে চায় না। যখন বলতে চায় বা মানতে চায়, ততদিনে অনেক দেরি হয়ে যায়, তখন আর কিছুই করার থাকে না।
বারো। কাউকে ফ্রেন্ড-রিকোয়েস্ট পাঠানোর ন্যূনতম দুইটি ভদ্রতা, যা আমি সব সময়ই মেইনটেইন করি:
এক। যদি আমার কাছে মনে হয়, আমাকে এই ব্যক্তির ফ্রেন্ডলিস্টে রাখার একটিও কারণ নেই, তবে আমি তাঁকে কখনওই রিকোয়েস্ট পাঠাই না। এমনকি, কোনও সুন্দরীকেও না! (তবে বিসিএস বা ক্যারিয়ার বিষয়ক আলাপবর্জিত কোনও সুন্দরী ফ্রেন্ড-রিকোয়েস্ট পাঠালে পুলকিত অনুভব করি।)
দুই। আমার কলিগ, পুরনো বন্ধু বা পরিচিতজন কিংবা কোনও-না-কোনও সূত্রে তিনি আমার ব্যাপারে আগ্রহবোধ করলেও করতে পারেন,---এঁদের বাইরে অপরিচিত কাউকে রিকোয়েস্ট যদি পাঠাই, তবে নিশ্চয়ই তাঁর সাথে ইনবক্সে দু-লাইন কুশল-বিনিময় করে নিই।
আমাকে ফ্রেন্ডলিস্টে রাখার কোনও কারণ নেই যাঁর, তাঁকে ফ্রেন্ড-রিকোয়েস্ট পাঠানোর মানেই তাঁকে বিরক্ত করা, নিজেকে হালকা হিসেবে তুলে ধরা। এই অতিসাধারণ কমনসেন্সটি ফেইসবুকিং-এর সময় সবারই থাকা খুব প্রয়োজন।
হ্যাপি ফেইসবুকিং!
তেরো। আপনার বেপরোয়া কার্যকলাপ আপনার সাথে সাথে আপনার এলাকা, আপনার প্রতিষ্ঠান, আপনার সংগঠন, এমনকি আপনার পরিবারকেও লোকের কাছে চরমভাবে ঘৃণ্য করে তুলতে পারে। এমন তীব্র ঘৃণা সারাজীবনেও লোকের মন থেকে চলে যায় না। আপনার বা আপনার সাথে সংশ্লিষ্ট যে-কোনও কিছু চোখের সামনে এলেই ঘৃণাটা দপ্ করে জ্বলে ওঠে। মনের অজান্তেই লোকের অনুভূতি তখন বলে ওঠে---থুঃ!
এমনও দেখবেন, আপনার বা আপনার কাছের কারও মৃত্যুতেও আপনার কাছের মানুষদেরকে বা আপনাকে লোকজনের ঠাট্টা বিদ্রুপ সহ্য করতে হচ্ছে। সেদিন কিন্তু, আপনি যে খুঁটির জোরে লাফাতেন একসময়, সেই খুঁটিটা অন্য কোনও ছাগলকে লাফালাফির জন্য প্রয়োজনীয় জোর সরবরাহ করতে ব্যস্ত। লোকে বলে, খুঁটির জোরে ছাগল নাচে। আমি বলি, ছাগলের জোরে খুঁটি বাঁচে। মাথায় রাখুন, নতুন ছাগলের আগমনে পুরান ছাগল বিস্মৃত হয়ে যায়।
আজ যাকে মারছেন, সে একা হয়তো ব্যথাটা পাচ্ছে, কিন্তু যখন আপনার লাশের উপর তার থুতুটা এসে পড়বে, তখন আপনার কাছের প্রতিটি মানুষ ব্যথা পাবে। সেদিন আর কিছুই করার থাকবে না। একজন বাজে মানুষ তার মৃত্যুতেও ক্ষমা পায় না। বাহুশক্তি বা অবস্থানের দাপট দেখিয়ে জোর করে ভয় আদায় করতে পারবেন, ভালোবাসা নয়। পাড়ার একটা কুকুর মরলে মানুষ যতটা কষ্ট পায়, পাড়ার একটা খারাপ লোক বা তার কাছের কেউ মরলে মানুষ ততোধিক খুশি হয়।
ভালো মানুষের একধরনের শক্তি আছে। সেই শক্তির কাছে সমস্ত জাগতিক তাণ্ডবের ক্ষমতা অতি তুচ্ছ।
Be courageous enough to fight your fight alone.
Be strong enough to cry your cry alone.
Be patient enough to win your win alone.
Be adamant enough to stand your stand alone.
Be kind enough to laugh your laugh with others.
This is life!
We live in a world of inferior people. Prove yourself superior and forgive the inferior. Yes, I mean it. Never ever are all the people same. Some are born to stay superior, some are born to stay inferior. It's your choice where you make yourself belong to.
They hate you because they cannot have the life you have. It's okay to live hated by some. Extraordinary people can never live unhated.