পুনশ্চ ভালোবাসা


এক। কাউকে ভালোবাসার পর, আপনার মধ্যে যদি অন্তত একটি নতুন ভালো গুণ কিংবা বৈশিষ্ট্য তৈরি না হয়, তাহলে নিশ্চিতভাবেই, সেটা কোনও ভালোবাসাই নয়। আবার এরকমও দেখা যায়, ভালো গুণ তৈরি হওয়া তো দূরের কথা, কেউ কেউ, প্রেম-ভালোবাসা হবার পর কিংবা ব্রেকআপের পরে একজন জঘন্য ধরনের মানুষ হয়ে ওঠে! তাদের ভালোবাসাটা আদৌ কি ভালোবাসা, না কি কোনও লেনদেনের সম্পর্ক, এটার উত্তর শুধু তারাই দিতে পারবে!


দুই। ভালোবাসার মানুষের সাথে একসাথে হাসতে পারা খুবই সুন্দর একটা ব্যাপার, তবে ভালোবাসার মানুষটার সামনে কাঁদা কিংবা দুজনে মিলে কাঁদা, এটা বিরাট সৌভাগ্যের ব্যাপার, এবং একইসাথে, সেটা একটা মোহনীয় দৃশ্য। কান্না মাঝে মাঝে হাসির চেয়েও সুন্দর আর তৃপ্তিদায়ক অনুভূতি। কান্নায় হৃদয় হালকা হয়, এবং সে কাজটা যে কারও সামনে বা সাথে করা সম্ভব নয়। যার সাথে কাঁদা যায়, তাকে অনেক বেশিই ভালোবাসা যায়।


তিন। কখনও কোনওভাবেই নিজের কাছের মানুষটির কাছে নিজেকে জাহির করতে হয় না, কিংবা অনেক বড়ো কিছু প্রমাণ করতে হয় না। তার কাছে যুক্তি, বুদ্ধি, ব্যাখ্যা, জ্ঞান সব কিছুতেই নিজেকে ছোটো হিসেবে প্রকাশ করতে হয়, ওতেই পরমসুখ পাওয়া যায়। তবে এর বিপরীত ব্যাপারও আছে। কেউ কেউ এই ছোটো হয়ে থাকাকে খুবই তুচ্ছ মনে করে, নিজের প্রিয়জনকে ছোটো হিসেবে দেখে একরকমের মানসিক তৃপ্তি পায়, আর তাকে সবসময় ছোটোখাটো আর নোংরা মানুষের সাথে তুলনা করতে থাকে। এ ধরনের মানুষের কাছে ছোটো হয়ে থাকাটা সত্যিই বোকামো। শতভাগ নিশ্চিত কণ্ঠে বলতে পারি, এ ধরনের কেউ আসলে ভালোবাসতেই জানে না, কিংবা ওই মানুষটিকে ভালোইবাসে না যার সম্পর্কে সে ওরকম বলে। যে মানুষ কোনও বিশেষ রত্নের দাম জানে না, তার কাছে সেই রত্নের দাম চারআনার চাইতেও কম।


চার। প্রকৃত ভালোবাসা কী, সেটা বুঝতে কিংবা সেটা নিয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে একশোজন মানুষের প্রয়োজন পড়ে না, একজনই যথেষ্ট। যে মানুষটা আসলেই ভালোবাসার ওই রাস্তায় ঢুকে পড়ে, সেই মানুষের কাছে একজন মানুষকেই নিজের ভালোবাসার সবটুকু দেবার জন্য পুরো জীবনটা খুব ছোটো মনে হয়।
Content Protection by DMCA.com