কল্পনার জগতে হেঁটে হেঁটে যখন আমি লিখি, তখন আমাকে মাথায় রাখতে হয়, আমি যার হয়ে লিখছি বা আমি যাকে চরিত্র বানিয়ে লিখছি, সে লোকটা কীরকম করে ভাবে, কীরকম করে কথা বলে, কীরকম করে আচরণ করে। ওসব ভেবেই আমাকে লিখতে হয়। যখন আমি কোনও একটা ঘটনা নিয়ে লিখি, কোনও একটা পরিস্থিতি নিয়ে লিখি, কোনও একটা আবেগ নিয়ে লিখি, কোনও একটা অনুভূতি নিয়ে লিখি, তখন আমাকে পুরোপুরি সেটার মধ্যে ঢুকতে হয়। ঢুকে তারপর সেই জায়গা থেকে কথাগুলি লিখতে হয়। সেই কথাগুলি কিন্তু আমার নিজের কথা না। সে কথাগুলি ওই পরিস্থিতির কথা, ওই পরিস্থিতিতে যে মানুষটা আছে, সেই মানুষটার কথা।
কল্পনার বিষয়টা মানুষকে আনন্দে রাখে, সুখে রাখে। বাস্তবে মানুষ যা পায় না, সেরকম অনেক কিছু মানুষ কল্পনাতে পেতে পারে। সে বিষয়গুলো মানুষকে অনেক কিছুই পাইয়ে দেয়, মানুষকে ভালো রাখতে পারে! তাই এই বিষয়টাকে আমি খারাপভাবে দেখি না, বরং ভালোভাবেই দেখি। কল্পনার জগতটা অনেক সুন্দর, অনেক মনোরম। এবং একটা মানুষের প্রাত্যহিক জীবনযাপনের যে গ্লানি, যে যন্ত্রণা, যে ক্লান্তি, সেটাকে ভুলে থাকার জন্য বা সেটা থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেবার জন্য কল্পনার জগতটা অনেক হেল্প করে, মানুষকে অনেকটুকুই এগিয়ে নেয়। এটা আমি মনে করি।
যারা লেখে বা যারা সৃষ্টিশীল মানুষ, তারা ছাড়া সাধারণ মানুষও নিজেকে কল্পনার জগতে নিয়ে গিয়ে অনেক কিছুই পেতে পারে, যা যা সে পেতে চায়, যা যা পেলে তার জীবনযাপনটা একটু হলেও সহজ হবে, একটু হলেও স্বস্তিকর হবে। এগুলো আসলেই পাওয়া সম্ভব। তাই একে আমি খুবই পজিটিভলি দেখি। এমনকী, আমরা যা-কিছু জানি, আমরা যা-কিছুর অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, আমরা যা-কিছু শিখেছি, সেটার চাইতেও কল্পনাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ! যে কল্পনা আমাকে বাঁচিয়ে রাখে, যে কল্পনা আমাকে আমার কাজগুলো করতে দেয়, যে কল্পনা আমাকে আমার জীবনটাকে ঠিকভাবে সাজিয়ে তুলতে দেয়, সেইসব কল্পনা নিঃসন্দেহে অনেক গুরুত্বপূর্ণ।