যদি ব্যথার দিকে তাকাতে মন না চায়, তাতে কিছু এসে যায় না; তাহলে বুদ্ধি করে বরং মনটার দিকেই তাকাও। ব্যথা শুরু হওয়ার ঠিক সেই মুহূর্তে তোমাকে মনকে পর্যবেক্ষণ করা শুরু করতে হবে—যখন ব্যথা প্রবল হয়ে উঠেছে, তখন নয় কিন্তু; কারণ তখন মনকে দেখা অনেক কঠিন হয়ে যায়।
মনকে দেখো—সে কতটা প্রতিক্রিয়া জানায়, কেমন অনুভব করে, কীভাবে তোমার সঙ্গে কথা বলে। তখন দেখবে, ব্যথা কোথায় যেন মিলিয়ে গেল।
পদ্ধতিটা কাউকে বা কোনো কিছুকে পছন্দ-অপছন্দের ক্ষেত্রেও সমানভাবে কার্যকর। মনকে সময় দিলে মন কথা বলে।
মনকে দেখার ব্যাপারটাতে একটু বেশি সূক্ষ্ম দক্ষতা লাগে, কারণ মন তো আর ব্যথার মতো স্পষ্ট কিছু নয়। ব্যথা দেহে জ্বলজ্বল করে ওঠে, না চাইলেও ঠিক টের পাওয়া যায়; কিন্তু মন যে নিঃশব্দে লুকিয়ে থাকে। এর জন্য জরুরি ক্রমাগত চর্চা। চর্চা ভালো লাগার জিনিস নয়, মনের বিরুদ্ধে গিয়ে হলেও করার জিনিস।
যদি মনকে দেখতে গিয়ে এখনও ব্যথাটাকেই দেখতে পাও, তাহলে দৃষ্টি বদলাও—এবং সেই অসুবিধের অনুভূতি-র দিকে তাকাও।
সেখানে অসুবিধেরও অনেক স্তর আছে; যে-কোনো একটিকে বেছে নাও, কোনোভাবে কানেক্ট করো। ব্যথার মোকাবিলায় সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো—নিজেকে শিথিল করা, মন পরিষ্কার রাখা, এবং অস্থিরতাকে বাড়তে না দেওয়া।
যদি তুমি সিদ্ধান্ত নাও যে, ব্যথার অনুভূতিটাকেই দেখবে, তাহলে শুধু তার মধ্যে শিথিল হয়ে থাকো।
“ব্যথা” শব্দটি মনে মনেও উচ্চারণ কোরো না—এতে বিষয়টা আরও কঠিন হয়ে যাবে। ব্যথা নিয়ে যত বলবে, তত ভুগবে।
তুমি কেবল তার সঙ্গে আছ—তার ভেতরে স্থিরভাবে শিথিল হয়ে। তোমার সব ধরনের কথাবার্তা চলছে মনের সাথে।
এখন হয়তো তুমি বুঝতে পারছ—‘ব্যথা’ বা অন্য কোনো অনুভূতি আসলে “তোমার” নয়। এর সঙ্গে তোমার কোনো ব্যক্তিগত সম্পর্ক নেই। এটি শুধু একটি অনুভূতি, যা তার নিজের পথেই প্রবাহিত হচ্ছে।
তুমি তোমার কাজ করো, তাকে তার কাজ করতে দাও। তুমি তাকে না ঘাঁটালে সে-ও তোমাকে ঘাঁটাবে না। ব্যথা খারাপ, তবে মানুষের মতো নির্লজ্জ নয়।
মন চাক না চাক, মনের সাথে গল্প করো। মনকে ম্যানেজ করতে পারলে বাকি সব কিছুই ম্যানেজড হয়ে যায়।