আত্মার গুণাবলী (আত্ম-গুণ): আত্মার অন্তর্নিহিত গুণাবলী, যেমন সুখ (সুখম) এবং দুঃখ (দুঃখম), দুই-ই উপশমের অধীন। বৈরাগ্য বা আধ্যাত্মিক আলোকসম্পাত (মোক্ষ) অর্জনের মতো আধ্যাত্মিক অনুশীলনের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি এই আবেগগুলির অভিজ্ঞতাকে অতিক্রম বা উপশমিত করতে পারে। এই ধারণাটি আত্ম-অনুসন্ধান এবং আধ্যাত্মিক উপলব্ধির গুরুত্বকে তুলে ধরে, যেখানে অভিজ্ঞতালব্ধ জগৎ এবং তার সাথে যুক্ত আবেগগুলিকে সাময়িক ও মায়াময় বলে মনে করা হয়।
যদি মিথ্যাত্বের এই সংজ্ঞাটি ধরে রাখা হয়, তবে আত্মার এই অন্তর্নিহিত এবং প্রায়শই গভীর অভিজ্ঞতাগুলিকেও মিথ্যা বলে গণ্য করা হবে, যা আত্মার (আত্মান) স্থায়ী এবং চূড়ান্তভাবে আনন্দময় প্রকৃতির অদ্বৈতবাদী উপলব্ধির সাথে সরাসরি বিরোধপূর্ণ। অদ্বৈত বেদান্ত দর্শনের মূল ভিত্তি হলো 'ব্রহ্ম সত্যং জগন্মিথ্যা'—অর্থাৎ ব্রহ্মই একমাত্র সত্য এবং জগৎ মিথ্যা। এই দর্শন অনুসারে, আত্মা হলো ব্রহ্মের অভিন্ন অংশ এবং জন্ম-মৃত্যু, সুখ-দুঃখের চক্রের বাইরে এর স্বরূপ হলো সচ্চিদানন্দ (সৎ-চিত-আনন্দ)।
অতএব, সুখ এবং দুঃখের মতো গুণাবলীকে যদি মিথ্যা বা উপশমযোগ্য বলে ধরা হয়, তবে তা আত্মার প্রকৃত স্বরূপকে অস্বীকার করার সমতুল্য হবে। আত্মার প্রকৃত প্রকৃতি হলো নিত্য, শুদ্ধ, বুদ্ধ, মুক্ত স্বভাব। এই দৃষ্টিভঙ্গি থেকে, দুঃখ বা সুখের অনুভব জাগতিক মায়ার ফসল মাত্র, যা আত্মাকে তার চিরন্তন আনন্দময় অবস্থা থেকে বাহ্যিক বিচারে বিচ্যুত করে। আত্মজ্ঞানের মাধ্যমে যখন ব্যক্তি এই মায়ার আবরণ ভেদ করে, তখন সে তার প্রকৃত স্বরূপ উপলব্ধি করে এবং সকল জাগতিক গুণ থেকে মুক্ত হয়। মোক্ষ লাভের অর্থ হলো এই সকল বন্ধন থেকে মুক্তি এবং আত্মার স্বরূপে প্রতিষ্ঠিত হওয়া, যেখানে কোনো প্রকার দ্বন্দ্ব বা বৈপরীত্য থাকে না, কেবল অবিচ্ছিন্ন আনন্দ বিদ্যমান। এই প্রক্রিয়ায়, আত্মার গুণাবলীকে মিথ্যা বা উপশমযোগ্য হিসেবে দেখা হয় না, বরং সেগুলোকে মায়াগত বা অজ্ঞানপ্রসূত মনে করা হয়, যা আত্মজ্ঞানের দ্বারা দূর হয় এবং আত্মা তার অদ্বৈতবাদী, আনন্দময় অবস্থায় ফিরে আসে।
পালটা যুক্তি এবং খণ্ডন: একটি পালটা যুক্তি, যা প্রায়শই উত্থাপিত হয়, তা হলো, “জগতের (প্রপঞ্চম) সৃষ্টি এবং পরবর্তী উপশম ঈশ্বরের (ঈশ্বর) জ্ঞানের কাঠামোর মধ্যে বিবেচিত হয়, এবং জগতের 'বাস্তবতায়' (সত্যত্বম) এই ঐশ্বরিক উপশম স্বীকৃত।” এই যুক্তিটি মায়ার ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে এটা বলে যে, যদি ঈশ্বর জগতের সৃষ্টি ও বিনাশকে জানেন এবং সেটিকে সত্য বলে স্বীকার করেন, তবে জগতকে মিথ্যা বা মায়াময় বলা যায় না। কারণ, ঈশ্বরের জ্ঞান ত্রুটিমুক্ত এবং তাঁর দ্বারা যা স্বীকৃত, তা অবশ্যই সত্য।
যা-ই হোক, এই যুক্তিটি ব্যক্তিগত বা অভিজ্ঞতামূলক জ্ঞানের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হলে অতিব্যাপ্তির (overextension) মৌলিক সমস্যাটি ঠিকভাবে সমাধান করতে ব্যর্থ হয়। এই সমস্যাটি থেকেই যায়: যদি প্রতিস্থাপিত হয়, এমন যে-কোনো জ্ঞানকে মিথ্যা বলে গণ্য করা হয়, তবে সংজ্ঞাটি সত্যিই মায়াময়কে কেবল ভুল বা ত্রুটি (error or illusion) থেকে পৃথক করার ক্ষেত্রে তার নির্দিষ্ট উপযোগিতা হারায়। যদি “মায়া” বলতে কেবল এমন কিছু বোঝানো হয়, যা পরবর্তীতে প্রতিস্থাপিত হয়, তাহলে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক অভিজ্ঞতাও মায়ার অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। যেমন, রজ্জুতে সর্পভ্রম, শুক্তিতে রজতভ্রম—এগুলো প্রতিস্থাপিত হয় বটে, কিন্তু এগুলি কেবল ভ্রম বা ভুল, যা সচেতন মন দ্বারা দূর করা যায়। কিন্তু মায়া আরও গভীর কিছুকে নির্দেশ করে।
মায়া শুধুই একটি ব্যক্তিগত ভুল নয়, এটি একধরনের মৌলিক অজ্ঞতা বা অবিদ্যা, যা জগতের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে প্রভাবিত করে। জগৎকে আমরা যেভাবে দেখি, তা আসলে তার চূড়ান্ত সত্য রূপ নয়। একটি স্বপ্নের মতো, জগৎ আমাদের কাছে বাস্তব বলে প্রতীয়মান হয়, যতক্ষণ না আমরা জাগ্রত হই। স্বপ্নের বস্তুগুলি স্বপ্নের মধ্যে বাস্তব মনে হলেও, জাগ্রত অবস্থায় তারা মিথ্যা প্রমাণিত হয়। একইভাবে, ব্রহ্মজ্ঞানের অভাবে জগৎকে আমরা সত্য বলে মনে করি। কিন্তু যখন ব্রহ্মজ্ঞান লাভ হয়, তখন জগতের এই আপেক্ষিক বাস্তবতা তিরোহিত হয়।
ঐশ্বরিক জ্ঞানের প্রেক্ষাপটে এই পালটা যুক্তিটি আরও জটিলতা সৃষ্টি করে। ঈশ্বর যদি সর্বজ্ঞ হন এবং জগতের সৃষ্টি ও উপশম উভয়ই তাঁর জ্ঞানের অংশ হয়, তবে জগৎকে কীভাবে মায়া বলা যায়? এর উত্তরে বলা যেতে পারে যে, ঈশ্বরের জ্ঞান আমাদের ব্যক্তিগত বা অভিজ্ঞতামূলক জ্ঞানের মতো নয়। ঈশ্বর ব্রহ্ম বা পরম সত্যের সঙ্গে অভিন্ন, এবং তাঁর জ্ঞান মায়ার দ্বারা প্রভাবিত নয়। ঈশ্বর জগতের স্রষ্টা হলেও, তিনি মায়ার অতীত। তাঁর কাছে জগৎ মায়াময় বা মিথ্যা নয়, বরং তাঁর লীলা বা প্রকাশ। কিন্তু আমাদের মতো জীবাত্মার কাছে, যারা মায়ার দ্বারা আবৃত, তাদের কাছে জগৎ সত্য বলে প্রতীয়মান হয়। যতক্ষণ না আমরা সেই মৌলিক অজ্ঞতা থেকে মুক্ত হই, ততক্ষণ জগতের আপেক্ষিক বাস্তবতা থেকে আমরা বিচ্যুত হতে পারি না।
সুতরাং, মায়া কেবল একটি প্রতিস্থাপিত জ্ঞান নয়, এটি সেই মৌলিক অজ্ঞানতা, যা জগৎকে তার আপেক্ষিক রূপে উপস্থাপন করে। এই অজ্ঞতা দূর হলে তবেই জগতের সত্য স্বরূপ উন্মোচিত হয়, এবং তখনই মায়ার ধারণাটি তার গভীর তাৎপর্য ফিরে পায়।
২. তার নিজের আশ্রয়ের ওপর তার নিষেধের প্রতিযোগী হিসাবে মিথ্যাত্ব (প্রতিপন্ন-উপাধৌ নিষেধ-প্রতিযোগিত্বম মিথ্যাত্বম): আরও জটিল এই সংজ্ঞাটি প্রস্তাব করে যে, কোনো কিছু মিথ্যা, যদি তা একটি নির্দিষ্ট আশ্রয়ের (তদ-অধিষ্ঠান) ওপর বিদ্যমান বলে অনুভূত হয়, এবং পরবর্তীতে তা একই আশ্রয়ের ওপর তার নিজের নিষেধের প্রতিযোগী হয়। এর অর্থ হলো, একটি সত্তা একটি নির্দিষ্ট স্থানে উপস্থিত হয় যেখানে, চূড়ান্ত সত্যে, এটি বিদ্যমান নয় এবং থাকতে পারেও না, এবং সেই নির্দিষ্ট স্থানে এর অনস্তিত্ব একই সাথে নিশ্চিত হয়।
সমালোচনা: এই সংজ্ঞাটি, সুনির্দিষ্টতার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, গুরুত্বপূর্ণ যৌক্তিক বাধা, বিশেষত উপলব্ধি এবং আশ্রয়ের প্রকৃতি সম্পর্কিত সমস্যার সম্মুখীন হয়।
আশ্রয়ের ভ্রান্ত জ্ঞান (অযথার্থ-জ্ঞান): এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ত্রুটি চিহ্নিত হয়—আশ্রয়টি নিজেই ভ্রান্ত জ্ঞানের মাধ্যমে উপলব্ধ হতে পারে। যদি একটি বস্তুর নিষেধ এমন একটি আশ্রয়ের ওপর ঘটে, যা ভুলবশত অনুভূত হয় (ভ্রান্তি-প্রতিপন্ন-উপাধৌ), তবে প্রশ্নযুক্ত বস্তুটি চূড়ান্ত অর্থে অগত্যা মিথ্যা নয়; এটি কেবল অন্যত্র বিদ্যমান থাকতে পারে। সংজ্ঞাটি অন্তর্নিহিতভাবে আশ্রয়ের সঠিক উপলব্ধিকে অনুমান করে, যা মায়ার ক্ষেত্রে প্রায়শই সত্য হয় না। উদাহরণস্বরূপ, যদি কেউ মরুভূমিতে একটি ঝলমলে মরীচিকাকে জল বলে ভুল করে, তবে কাছাকাছি পরিদর্শনের পরে জলের "নিষেধ" এমন একটি আশ্রয়ের (মরুভূমির ভূমি) ওপর ঘটে, যা প্রাথমিকভাবে জলের আধার হিসাবে ভুলবশত অনুভূত হয়েছিল।
অর্থান্তরের সমস্যা (অন্য কিছু প্রমাণ করা): এটি অর্থান্তরের সমস্যার দিকে নিয়ে যায়, যার আক্ষরিক অর্থ হলো "অন্য কিছু প্রমাণ করা"। যদি একটি বস্তু একটি ভুলবশত অনুভূত আশ্রয়ের ওপর বাতিল হয়, কিন্তু তা সত্যিই অন্য একটি স্থানে বিদ্যমান থাকে, তবে সংজ্ঞাটি অনিচ্ছাকৃতভাবে ইঙ্গিত করে যে, বস্তুটি নিজেই মিথ্যা। এটি সমস্যাযুক্ত, কারণ বস্তুর বাস্তবতা অস্বীকার করা হচ্ছে না; কেবল একটি নির্দিষ্ট, ভুলভাবে অনুভূত স্থানে এর উপস্থিতি বাতিল করা হচ্ছে। মরীচিকার উদাহরণটি চালিয়ে গেলে—যদি কেউ মরুভূমিতে জলকে "বাতিল" করে, তবে জলটি নিজেই মিথ্যা নয়; এটি কেবল সেই নির্দিষ্ট মরুভূমির স্থানে বিদ্যমান নয়, তবে অস্বীকার করার উপায় নেই যে, এটি অন্যত্র বিদ্যমান। অতএব, সংজ্ঞাটি ভুলভাবে একটি বাস্তব সত্তাকে মিথ্যা হিসাবে লেবেল করে কেবল এই কারণে যে, এটিকে ভুলভাবে একটি আশ্রয়ের ওপর প্রক্ষেপ করা হয়েছিল। এইভাবে প্রকৃত মায়া এবং একটি বাস্তব সত্তা—বস্তুর ভুল অধিষ্ঠানের মধ্যে পার্থক্য করতে ব্যর্থ হয়।
৩. বাধ্যতা হিসাবে মিথ্যাত্ব (বাধ্যত্বম মিথ্যাত্বম): এটিকে একটি আরও সাধারণ এবং মৌলিক সংজ্ঞা হিসাবে উপস্থাপন করা হয়, যা দাবি করে যে, মিথ্যাত্ব কেবল উপশমযোগ্য হওয়ার অন্তর্নিহিত বৈশিষ্ট্য। এটি একটি মিথ্যা সত্তার প্রতিস্থাপিত বা বাতিল হওয়ার অন্তর্নিহিত প্রকৃতির উপর জোর দেয়, যা এটিকে পূর্ববর্তী সংজ্ঞাগুলির চেয়ে আরও এগিয়ে রাখে।
উপশমযোগ্যতার বিস্তারিত ব্যাখ্যা: এই সাধারণ সংজ্ঞাটি আরও দুটি নির্দিষ্ট এবং পরিপূরক আকারে পরিশোধিত হয়, যা উপশমের প্রক্রিয়া এবং দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট করে:
বাধক জ্ঞানের বিষয় হিসাবে মিথ্যাত্ব (বাধক-জ্ঞান-বিষয়ত্বম মিথ্যাত্বম): এই পরিশোধনটি মিথ্যা সত্তার নিষ্ক্রিয় ভূমিকার উপর জোর দেয়। কোনো কিছু মিথ্যা, যদি তা এমন বস্তু হয়, যা একটি অধিক গভীর বা সঠিক জ্ঞানের (বাধক-জ্ঞান) দ্বারা প্রতিস্থাপিত, বাতিল বা সংশোধন করা হয়। এটি সেই লক্ষ্যবস্তু, যার উপর সংশোধনমূলক উপলব্ধি কাজ করে, যা সত্যের মুখোমুখি হলে মায়াময় উপলব্ধির অনিত্যতাকে তুলে ধরে।
বাধক জ্ঞান দ্বারা উপশমযোগ্যতা হিসাবে মিথ্যাত্ব (বাধক-জ্ঞান-নিবর্ত্যত্বম মিথ্যাত্বম): এই সংজ্ঞাটি সংশোধনমূলক জ্ঞানের সক্রিয় ভূমিকার উপর জোর দেয়। মিথ্যা সত্তা হলো যা এই ধরনের জ্ঞান দ্বারা সমাপ্তিতে আনা হয়, বাতিল বা দ্রবীভূত করা হয়। এটি বিভ্রম অপসারণে সংশোধনকারী জ্ঞানের কর্তৃত্বকে তুলে ধরে, দাবি করে যে, বিভ্রমের প্রকৃতিই হলো সত্য অন্তর্দৃষ্টির দ্বারা অতিক্রান্ত হওয়া। এই দুটি রূপ একত্রে জ্ঞান এবং বাস্তবতার প্রসঙ্গে মিথ্যাত্ব কীভাবে কাজ করে, তার একটি ব্যাপক উপলব্ধি প্রদান করে, যা মিথ্যার অন্তর্নিহিত প্রকৃতি এবং মুক্তিদায়ক জ্ঞানের ক্ষমতা উভয়ের উপর জোর দেয়।
৪. তার পরম অনস্তিত্বের সাথে সহ-স্থিতি হিসাবে অনুভূত হওয়া হিসাবে মিথ্যাত্ব (স্ব-অত্যন্তাভাৱ-সমানাধিকরণতয়া প্রতীয়মানত্বম): এটি অদ্বৈত বেদান্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যাপকভাবে স্বীকৃত সংজ্ঞা, যা সবচেয়ে নির্ভুল এবং শক্তিশালী বলে বিবেচিত। এটি বলে যে, কোনো কিছু মিথ্যা, যদি তা সেই একই অধিকারণে (অধিকরণম) বিদ্যমান বলে অনুভূত হয়, যেখানে তার পরম অনস্তিত্ব (স্ব-অত্যন্তাভাব্)-ও চিরতরে উপস্থিত থাকে।
ব্যাখ্যা: এই সংজ্ঞাটি কেবল ত্রুটি বা সাময়িক উপশমের বাইরে গিয়ে অদ্বৈতের মায়ার সারমর্মকে সুনির্দিষ্টভাবে ধারণ করে। এর অর্থ হলো, একটি মিথ্যা সত্তা এমন একটি স্থানে প্রকাশ করে বলে মনে হয়, যেখানে, চূড়ান্ত দৃষ্টিকোণ থেকে, এটি অন্তর্নিহিতভাবে বিদ্যমান নয় এবং সময়ের কোনো বিন্দুতে থাকতেও পারে না।
"দড়িতে সাপ" উপমা: এই সংজ্ঞাটিকে শক্তিশালীভাবে ব্যাখ্যা করে, এমন একটা ক্লাসিক উদাহরণ হলো "দড়িতে সাপ" (রজ্জু-সর্প)। যখন একজন ব্যক্তি গোধূলিতে একটি সাপ উপলব্ধি করে, তখন আবার সেই স্থানে দেখা যায়, যেখানে আসলে একটি দড়ি পড়ে আছে। যা-ই হোক, সঠিক জ্ঞান অর্জনের পরে (যেমন, আলো এনে বা স্পর্শ করে), এটি উপলব্ধি করা যায় যে, সাপের পরম অনস্তিত্ব সেই নির্দিষ্ট দড়িতে চিরতরে উপস্থিত। এইভাবে সাপের উপস্থিতি সেই নির্দিষ্ট অধিকরণে তার পরম অনস্তিত্বের সাথে সহ-স্থিতি করে। সাপটি কখনোই সত্যিই সেখানে ছিল না, এমনকি তার উপলব্ধির সময়কালেও; এর অস্তিত্ব ছিল সম্পূর্ণরূপে মায়াময়, দড়ির বাস্তবতার ওপর অধ্যাস (superimposed)।